নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই ভালো সেই ভালো আমারে না হয় না জানো...

গুলশান কিবরীয়া

ফেসবুকে চারুলতা আরজু নামে পরিচিত।

গুলশান কিবরীয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে রাতে আমি কিছুটা সময় মৃত ছিলাম।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০০



নিতান্তই বাধ্য হয়ে চাকুরীটি করতে হয়। কাজের মধ্যে উদ্দীপক, উত্তেজক বিষয়বস্তু, কিংবা দুরন্তপনা না থাকলে সে কাজে আনন্দ নেই। ছাপোষা অর্থ উপার্জনের জীবন একঘেয়ে লাগে। কিন্তু এই অর্থ উপার্জনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে জীবন অর্থহীন করাটাই যেন ছাপোষা মানুষদের জীবনের একমাত্র গন্তব্য।

ডাইরি লেখা আমার ছোটবেলার অভ্যাস।মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যদি শুধুই লিখে যেতে পারতাম! সব কাজ বাদ দিয়ে শুধুই লিখে যেতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু কোথা থেকে যেন একটি বিরামচিহ্ন দ্বিধা নিয়ে দণ্ডায়মান হয় ঠিক নাক বরাবর। এটা সেটা চিন্তা হয়। ভবিষ্যৎ চিন্তা, রুটিরুজির চিন্তা, ইত্যাদি । আর সেই কারণেই একঘেয়ে কাজটি বাদ দেয়া আর হয়ে ওঠে না। রোজ সকালে সেই এক ঘেয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরতে হয়।

আমাকে উপর থেকে যতখানি শান্ত ও নীরব মনে হয় , আমি ঠিক ততটাই চঞ্চল এবং ছটফটে, আমার খুব ভেতরের আমিতে। হাইপার এনারজেটিকও বলা যেতে পারে। এতো এনার্জি থাকলে সেটিকে বার্ন করে স্থিরতা আনতে হয়। আর এই কারণেই প্রতিদিন কাজ থেকে ফিরে সন্ধ্যায় আমি দৌড়াতে যাই পার্কে। এতো দৌড়ঝাপ করে বাড়ি ফিরে তখনো অনেকটা এনার্জি অবশিষ্ট থাকে। সেটি দিয়ে আমি গল্প লিখি, কবিতা লিখি এবং ডাইরি লিখি।


আমি যে পার্কটিতে প্রতিদিন দৌড়াতে যাই, সে পার্কে একটি ছোট জলাধার রয়েছে, যেখানে মাছ সাঁতার কাটতে দেখা যায় । প্রতিবারই যখন আমি ঐ জলাধারের পাশ দিয়ে যাই, মাছ গুলো চির খোলা চোখ দিয়ে আমার দিকে তাকায়। হয়তো মাছের ভাষায় চোখের ইঙ্গিতে হায় হ্যালোও বলে।

এক সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে আমি পার্কের ভিতর দৌড়াচ্ছিলাম। কিন্তু সেই সন্ধ্যায় মাছের বদলে আমি হঠাৎ দেখতে পেলাম একটি মানুষ ডুবে যাচ্ছে জলাধারে । হাত নেড়ে প্রাণ পণে বাঁচতে চাইছে। সন্ধ্যায় পার্কটি একেবারেই জনশূন্য। আমি একটু দ্বিধায় পড়ে গেলাম। লোকটি কি আসলেই ডুবে যাচ্ছে, নাকি কোন ফাঁদ! কিন্তু বেশী সময় নেই, লোকটিকে এখনি না ওঠালে সে ডুবে মারা যেতে পারে। তখন ঐ লোকটির মৃত্যুর জন্য নিজেকে সারা জীবন দায়ী মনে হবে। সেই অপরাধ বোধের দংশন মৃত্যুর চেয়েও কম নয়। তাই আর বেশী চিন্তা না করে আমার বাম হাতটি দিয়ে জলাধারে ঝুঁকে পড়া একটি গাছের ডাল শক্ত করে ধরে ডান হাতটি বাড়িয়ে দিলাম লোকটির দিকে । কারণ আমার সন্দেহ হচ্ছিলো লোকটি যদি আমাকে টান দিয়ে জলাধারের ভেতরে নিয়ে যায়! তাই আত্মরক্ষার্থে গাছের ডালকে আঁকড়ে ধরে ডান হাত বাড়িয়ে দিলাম। হাত বাড়াতেই লোকটি আমার দিকে রহস্যময় ভঙ্গিতে তাকালো। তারপর সে আমার ডান হাতটি ধরে সত্যি সত্যিই পানির ভেতরে টেনে নিলো। তারপর নিজে উপরে উঠে দৌড়ে পালালো।

আর, এদিকে আমি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছি। আমি সাঁতার জানি। কিন্তু কেন যেন ঐ মুহূর্তে সাঁতরাতে পারছি না। কি একটি শক্তি যেন আমাকে নীচের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে ডুবিয়ে মারছে। আমি তলিয়ে যাচ্ছি। মনে হলো আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আমি মারা গিয়েছি। চারকুল ছাপিয়ে তখন আঁধার আর নিস্তব্ধ। হঠাৎ একটি প্রবল গতিতে আমি কোথায় যেন চলে যাচ্ছি। আসলে আমার আত্মাটি শরীর থেকে তখন আলাদা হয়ে বিদ্যুৎ বেগে ছুটছে। মনে হলো ওয়ার্ম হোল ধরে এ জগত থেকে অন্য জগতে পারি দিচ্ছে । আমাকে ছেড়ে এবং এই পৃথিবী ছেড়ে আত্মাটি কোথায় যেন চলে যাচ্ছে । একটু পরেই মাথার উপরে এক বিন্দু আলো চিক চিক করছে। সব কিছু আবার স্থির মনে হচ্ছে। দ্রুতবেগী সেই অনুভূতিটি আর নেই । আমার বুকের খাঁচায় সেই দ্রুতবেগী আত্মাটিকে কে যেন পুরে দিলো। আত্মাটি শান্ত হয়ে বুকের খাঁচায় বন্ধী হয়ে রইল।আমার হৃদপিণ্ড আবার টিক টিক শুরু করলো। আমি জোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ মেলে তাকালাম।

আমি আসলে স্বপ্ন দেখছিলাম। আর এই স্বপ্নের ভেতরই আমার কয়েক সেকেন্ডের মৃত্যু হয়েছিলো। এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। কত কি যে লেখার আছে আমার। ভাবছি সব ছেড়েছুড়ে শুধুই লিখবো। কখন না জানি আবার আত্মটি ছুটে পালায়।

মন্তব্য ৩১ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালোলাগা !

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৮

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৩

রাহাত আরা স্বর্ণা বলেছেন: স্বপ্নে মারা গেলে ঘুম ভাঙ্গার পরে নিজেকে এত ভাগ্যবান মনে হয় হাহা!

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৮

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আসলেই। ঠিক বলেছেন।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: বর্ণনায় মুগ্ধতা। ভালো লাগলো।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৯

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। মুগ্ধতা রইলো মন্তব্যে।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: লিখতে থাকুন। ভালো হয়েছে :-) ভালো লেগেছে :-)

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৯

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১৫

শায়মা বলেছেন: আমি অবশ্য বুঝেছিলাম তুমি স্বপ্নই দেখছো।

তবে এমন প্রায় সবারই হয়।

লোকে বলে বোবায় ধরা।

স্লিপ প্যারালাইসিস।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০০

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। আসলে দুই রাত আগেই এই স্বপ্নটি দেখে ভয় পেয়েছি।

৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: কাজে আনন্দ না পেলে সেই কাজ না করাই ভালো। মাস শেষে কিছু টাকা বড় কথা নয়।
মানুষের বিপদে সব সময় এগিয়ে যাওয়া উচিত। আপনি জ্ঞানী মানুষ। কেউ ডুবে যাচ্ছে না না ডুবে যাওয়ার ভান করছে সেটা বুঝা আপনার জন্য কঠিন কিছু না।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০১

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আপনি ঠিকি বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখার শিরোনাম দেখেই পড়তে আগ্রহী করলো। সুন্দর লিখলেন

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০২

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: ঐ জন্যই এরকম শিরোনাম দিয়েছি, যাতে সবাই পড়তে আসে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:১০

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আত্নারা দুষ্ট হলে বিপদ আছে
তাই !
সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!!

..............................................................................

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৬

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: হা হা হা । আসলেই । ঠিক বলেছেন। :)

৯| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পানির লোকটা মনে হয় গাজী সাব ছিল।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৭

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: হা হা হা । কোন গাজী সাব? আমাদের চাঁদ সাব? ;) :P

১০| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: খুবিই ভয়ানক দুঃস্বপ্ন।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৮

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: জি, খুবই ভয়ংকর!!

১১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি ঠিকি বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। জীবন হোক আনন্দময়।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৮

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৪

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ভালো লাগলো।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৮

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: “আল্লাহ মানুষের প্রাণ সম্পূর্ণরূপে হরণ করেন তার মৃত্যুর সময়, আর যে মরে না, তার (প্রাণ হরণ করেন) নিদ্রাকালে। অতঃপর যার মৃত্যু অবধারিত করেন, তার প্রাণ ধরে রাখেন এবং অন্যান্যের (প্রাণ তাদের দেহে) ফেরত পাঠান এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। নিঃসন্দেহে এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে (আল্লাহর শক্তিমত্তার) নিদর্শনাবলী রয়েছে।” (সুরা জুমার আয়াত ৪২)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৪০

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

১৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। আমি দুঃস্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি। বেশ কিছু গল্পও লিখেছি দুঃস্বপ্ন অবলম্বন করে।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:৪১

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: জি , আমিও দুঃস্বপ্ন পছন্দ করি, কারণ এগুলো গল্প লিখতে সাহায্য করে। আমারও কয়েকটি গল্প স্বপ্নে পাওয়া। :)

১৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:০১

আহমেদ জী এস বলেছেন: গুলশান কিবরীয়া ,




স্বপ্নেরা অমনই হয় , দুঃস্বপ্ন হয়ে আ
আমিও মাঝে মাঝে শ্বাস ঘন হয়ে আসা অমন স্বপ্ন দেখি । স্বপ্নে কতোবার যে মরতে মরতে বেঁচে গেছি ! দেখি, অস্পষ্ট কেউ তাড়া করছে খুব, ধরতে পারলেই মেরে ফেলবে। দৌঁড়ুচ্ছি তো দৌঁড়ুচ্ছি, মাঠ-ঘাট, বন বাদার, পাহাড়-নদী সব ছাড়িয়ে। শেষমেষ বিশাল এক মাঠের মাঝে। পেছনে পেছনে ধেঁয়ে আসছে সেই হন্তারক। কোথা যাই ? শেষে মাঠের ঘাস ধরে ধরে উপরে ওঠার চেষ্টা। বাঁচার আশায়। কিন্তু এগুনো যাচ্ছেনা কিছুতেই। ঘাস ধরে ধরে টেনেই যাচ্ছি , ঘাম ঝরছে দরদর, শ্বাস টানতে পারছিনে অথচ এক ইঞ্চিও এগুনো যাচ্ছেনা।
এমন ক্লাইমেক্সে এসে ঝট্‌ করে ঘুম ভাঙে, বুক ধরফর করে , গলা শুকিয়ে কাঠ। পানি খেতে হয়। তারপরে আবার ঘুম.. একটি মধুর স্বপ্নের আশায়। কিন্তু মধুর কোনও স্বপ্নেরা আর আসেনা পঙ্খীরাজে চড়ে.................

অনেকদিন পরে এলেন। স্বপ্ন নয়তো !!!!!!!!!!!!!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৫৫

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার স্বল্প নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা জেনে বেশ ভালো লাগলো ।

না , স্বপ্ন নয়। সত্যি সত্যিই এসেছি। :)

আপনি ভালো আছেন তো?

১৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৮

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: স্বপ্নের সাথে বাস্তব সম্পৃক্ত।

আমার লেখালেখি স্বপ্ন থেকে শুরু হয়েছিল।

কিছু স্বপ্ন আমাদেরকে পথ বাতলে দেয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.