নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই ভালো সেই ভালো আমারে না হয় না জানো...

গুলশান কিবরীয়া

ফেসবুকে চারুলতা আরজু নামে পরিচিত।

গুলশান কিবরীয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর্ট

১৭ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৭


উজেন ডোলাকোয়ারের (Eugène Delacroix) Liberty Leading the People আর্টটি একটি বিখ্যাত আর্ট। যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন নারী খালি পায়ে হাতে ফ্রান্সের পতাকা নিয়ে উন্মুক্ত বক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি একটি সিম্বোলিক আর্ট। ১৮৩০ সালে ফ্রান্সে সোশ্যাল ক্লাস এবং ডিভাইড নিয়ে যে রিভলিউশন হয়েছিল সেটারই একটি রিফ্লেক্টিভ আর্ট, যেটা বিশ্বজুড়ে ডেমোক্রেসি এবং লিবার্টির প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হয়। এই ছবি কারো কাছে অশ্লীল মনে হলেও হতে পারে বা কেউ কেউ এটাকে ইরোটিক আর্টও বলতে পারেন। কিন্তু আমি যতটুকু আর্ট বুঝি তাতে এটাকে আমার কাছে ইরোটিক তো নয়ই বরং বীরত্বপূর্ণ একটি আর্ট মনে হয়। এই ছবিতে একদম ফোকাল পয়েন্টে একজন টপলেস নারী পতাকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বহুদিনের একটি শ্বাসরুদ্ধকর লিগ্যাল, সোশ্যাল, এবং পলিটিক্যাল সিস্টেম থেকে নির্ভয়ে উন্মুক্ত বক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে । এখানে স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির একটি আবহ রয়েছে। এখানে উন্মুক্ত বক্ষকে অনেকে বলে থাকেন সব শৃঙ্খল উপড়ে ফেলে এগিয়ে যাওয়াকে বোঝায়।

আরও একজন ভিজুয়াল আর্টিস্ট Leena McCall এর একটি ইরোটিক আর্ট ‘Portrait of Ms Ruby May’ বেশ সমালোচিত হয় এবং লন্ডনের একটি এক্সিবিশন থেকে সে ওটা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। ঐ আর্টে আসলে পর্নোগ্রাফিক এলিমেন্টস রয়েছে বলে মনে করা হয়, যেটা শিশুকিশোর এবং ভালনারেবল এডাল্টদের জন্য ডেমেজিং হতে পারে। তাই ওটা সরিয়ে নেয়া হয়েছিল । শিল্পী যদিও সম্মত নয় যে এটা পর্নোগ্রাফি। সে বলতে চায় যে সে আসলে নারীদের ইরোটিক আইডেন্টিটি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করে। তার মতে ওটা আসলে একটি ইরোটিক আর্ট। কিন্তু সমাজ সেটা এক্সেপ্ট করে না। আসলে একেক সমাজের এক্সেপ্টেন্স একেক রকম হয়। এটাই স্বাভাবিক। আর যেহেতু সামাজিক ইন্সটিটিউশনগুলোর সমাজের বিশৃঙ্খলা দূরীকরণ নিয়েই কাজ, তাই তারা সেভাবেই আচরণ করবে, এটাও স্বাভাবিক।
ইরোটিক আর্ট নিয়ে সব সময়ই বিতর্ক থাকবে - আর্টিস্ট বলবে আর্ট আর সমাজ বলবে পর্নোগ্রাফি। তবে ইরোটিক ডিজায়ার থেকে কেউ যখন ভিজুয়াল আর্ট তৈরি করতে গিয়ে নগ্নতা প্রকাশ করে তখন সেটা পর্নোগ্রাফিই হয় যেটা হয়তো Portrait of Ms Ruby May এই আর্টে হয়েছে( কেউ চাইলে গুগোল করে আর্টটি দেখতে পরেন, ওটা গুগোলে পাওয়া যায় সহজেই) আর সাহিত্যে নগ্নতা প্রকাশ পেলে সেটা চটি কিংবা পর্নোগ্রাফিতে পরিণত হতে পারে। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইরোটিক আর্ট সৃষ্টির ক্ষেত্রে অবশ্যই শিল্পীকে তার artistic instrument ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ট্যাকনিকটি সঠিক ভাবে রপ্ত করা । তা না হলে শৈল্পিক উপাদানের অনুপুস্থিতিতে একই বিষয় হয়ে যেতে পারে পর্নোগ্রাফি অথবা চটি।

আসলে পর্নোগ্রাফি এবং ইরোটিক আর্টের মধ্যে স্লিম একটি পার্থক্য আছে সেটা বুঝতে গেলেও শিল্পমন থাকতে হয়। এ ও ঠিক পরিবেশ, পরিস্থিতি, সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করেও শিল্পিত চিন্তা ও মনন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এক কালচারে যেটা সেক্সুয়াল ইস্টিমিউলেটিং ইন্সট্রুমেন্ট , অন্য কালচারে সেটাই আর্ট। তবে ইউনিভারসালি শিল্পীদের অন্ততপক্ষে একটি বিষয় খুব কমন থাকে, সেটি হচ্ছে উদারতা। অন্য কালচার, সাহিত্য, শিল্পকে বোঝার একটি আগ্রহী মন থাকে প্রকৃত শিল্পীর। নানান কালচার, শিল্প সাহিত্য সম্পর্কে জানলে এই এক্সেপ্টেন্সে সমস্যা সাধারণত হয় না।

ছবিটি সংগ্রহ করেছি গুগোল ইমেজ থেকে।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৩

শায়মা বলেছেন: আমারও ছবিটা দেখেই মনে হয় এই ছবির মেয়েটা সমাজের অনুশাসন চোখ রাঙ্গানী, আবদ্ধতা সকল পুরুষ তান্ত্রিক বাধা বিপত্তিকে পায়ে দলে ও পিছে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে নিজের ইচ্ছা স্বাধীনতার ঝান্ডা উঁচিয়ে.....

১৭ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:০২

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: একদম ঠিক।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৫০

শেরজা তপন বলেছেন: যা দেখে সাধারণভাবে অভ্যস্ত নই তা দেখলে একটু অন্যভাবে ভাবনা-চিন্তা কল্পনা করা অস্বাভাবিক নয়।
বিষয়টা খুবই সিম্পল। কে কোন মন নিয়ে ভাবছে সেইটা বড় ব্যাপার। কারো চোখ যাবে শুধু উন্মুক্ত বক্ষের দিকে- অন্য কোথাও নয়-সে শুধু বুকের আঁকার আকৃতি রঙ নিয়ে ভাববে- তার ভাবনাটাও অশ্লীল কিনা ভেবে দেখার বিষয় আছে। শিল্পী এখানে তাঁর শিল্পে ভয়াবহ একটা দৃশ্যের পাশাপাশি একটা যুবতী নারীর সৌন্দর্যকে অবমুক্ত করেছেন। শিল্পীদের মন ও খুব স্বচ্ছ নয়-তিনি এখানে ক্লিশ-দুর্বল ঝুলে পড়া স্তনের কোন নারীর ছবিও আঁকতে পারতেন। কিন্তু সেটা করলে শিল্পমান যা-ই হোক তাঁর আবেদন অনেকাংশেই কমে যেত নিশ্চিত। নারী দেহ উন্মুক্ত করলেই কেন একটা সমাজ সভ্যতার সর্বোচ্চ কাতারে পৌছুতে পারবে যে ধারনা সেটা আমার বোধগম্য নয়।
তবে আপনার বক্তব্য নিয়ে আমার খুব একটা দ্বীমত নেই।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৩

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এখানে যে নারীটিকে আঁকা হয়েছে সে আসলে সাদারণ নারী নয়, সে একজন দেবী হিসেবে উদিত হয়েছে এখানে। একারণেই তার পা খালি এবং তার স্ব কিছুই দেবীদের মত করে সুন্দর করে দেখানো হয়েছে।
আসলে যে কোন আর্ট কিন্তু একেক জন একেক ভাবে ব্যাখ্যা করবে, এটাই স্বাভাবিক। যার যেমন মন মানসিকতা বা সামাজিক শিক্ষা সে ঠিক সেভাবেই একে ব্যখা করবে।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: এই পোষ্টে আরো কিছু ছবি ব্যবহার করে, পর্নগ্রাফী, ইরোটিক বা আর্ট/স্লিম পার্থক্য গুলো- আমার মতো বোকা পাঠকদের বুঝানোর জন্য- ভালো হতো।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৬

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: হায় আল্লাহ্‌ !! বেশী খুলে খুলে ব্যাখ্যা করলে সমস্যা আছে।

এজন্যই আরও একটি ছবি এখানে ইনক্লুড করিনি, ওটা দিলে মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যাবে , বিশেষ করে ভালনারেবল এডাল্টও তো আছে এখানে , তাই না?

যে ছবিটির কোথা উল্লেখ করেছি কিন্তু এখানে দেইনি সেটা হচ্ছে ইরটিক আর্ট আর যেটা দিয়েছি সেটা হচ্ছে হেরইক আর্ট ।

#:-S

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.