নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাগরে ভাসছে মানবতা : কোথায় এখন মানবাধিকার?

২৩ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮

আসাদুজ্জামান জুয়েল

সম্প্রতি সময়ে দেশে সবচেয়ে আলোচিত খবর অবৈধ ভাবে মানব পাচার। জীবিকার তাগিদে ছোট নৌকাযোগে উত্তাল সাগর পারি দিয়ে কর্মের সন্ধানে ছোটা মানুষগুলো পড়ছে বিপদে। অতপর গ্রেফতার, মৃত্যু, গণকবর! ভূখা নাঙ্গা হাড্ডিসার কিছু মানুষের প্রতিচ্ছবি বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই ঘটনা যখন চরম অবস্থায় পৌচেছে তখন সরকার সহ বিশ্ব বিবেকের গায়ে সামান্য সুরসুরি লাগছে। আসলে এমন কেন হচ্ছে?
আজ থেকে দশ-পনের বৎসর আগেও লোক মুখে শুনেছি, মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি মানুষ ইটালী যাচ্ছে মাছের ফ্রিজিং গাড়িতে করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌছাতে না পারলে মানুষ হিমায়িত অবস্থায় গিয়ে পৌছায়। হিমায়িত মাছের মূল্য আছে কিন্তু হিমায়িত মানুষের মূল্য নাই দুই পয়সাও! আবার দিনের পর দিন পায়ে হেটে, বন জঙ্গল পার হয়ে বরফের চাদরের উপর দিয়ে হেটে যায়, স্থানীয় ভাবে তাকে বলে ডাংকিমারি!! প্রকৃত শব্দটা কি হবে আমি নিজেও জানি না। ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞেস করলে বলে ঐ এলাকায় বরফের খাল, নদী পায়ে হেটে পার হওয়াকে ডাংকিমারি বলে।
সেই সময়কার ডাংকিমারি করে যারা দেশে খালি হাতে শুধু জীবন নিয়ে ফিরে আসছে তাদের অনেকের সাথে আমার কথা হয়েছে পেশার কারনে। একসময় আমি সাংবাদিক ছিলাম। প্রথম আলো, কালেরকন্ঠ পত্রিকায় কাজ করেছি দীর্ঘদিন। পেশার কারনে মানুষের সাথে কথা বলেছি, মিশেছি, তাদের হৃদয় ভাঙ্গার গল্প শুনেছি। এই ঘটনায় আমার পরিচিত জন, আত্মীয় স্বজন, কন্ধু বান্ধবও ছিল। আমার এক বিয়াই এভাবে অবৈধ পথে ইটালী যাওয়ার চেষ্টা করে জীবন নিয়ে দেশে ফিরত এসেছে। দেশ থেকে পাকিস্তান হয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে প্রথমেই পড়ে মাফিয়াদের হাতে। সেখানে মাফিয়ারা আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণ দিয়ে আবার পাড়ি দেয়। বরফের নদী পায়ে হয়ে যখন আলোর সন্ধান পাবে সেই মুহুর্তে গ্রেফতার। অতঃপর দেশে ফেরত।
আরেক পরিচিতজন এভাবেই দিন রাত বরফের উপর দিয়ে পায়ে হেটে এক স্টেশনে পৌছার পর দেখে পায়ে আর জোর নেই। পাটাই যেন বরফ হয়ে গেছে। আগুনে ছেকার জন্য পা রাখে আগুনের উপর। আস্তে আস্তে পা একটু গরম হয় ঠিকই কিন্তু আগুনের তীব্রতা অনুভব করতে পারে না। অনুভবের সেই বোধ শক্তি হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে দেখা গেল তার পায়ে পচন ধরেছে। যতটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পা গরম করা উচিত ছিল ততটা দ্রুত পা গরম করায় তার পায়ে পচন ধরে। পরবর্তীতে তাকে দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হলো। চিকিৎসা শেষে তার দুই পায়ের অর্ধেকটা করে কেটে ফেলতে হলো। জীবন জীবিকার টানে সুস্থ্য অবস্থায় বিদেশের পথে পাড়ি জমালেও পঙ্গু হয়ে গেল সে। এখন আর স্বাভাবিক অন্য দশজনের মত হাটতে পারে না, পছন্দ মত জুতা পড়তে পারে না। এভাবেই মানুষগুলো পণ্যের মত বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে কেউ জীবন নিয়ে পালায় আবার কেউ জীবন দেয়। পিছনে ফেলে যায় অনেক স্মৃতি, পরিবার, ভালবাসার মানুষগুলো আর একরাশ স্বপ্ন।
জীবন্ত কঙ্কাল হেটে যাচ্ছে। এদের জন্য কি কারে মায়া হয় না??
আমাদের সকলের মনে একটাই প্রশ্ন, কেন মানুষগুলো এভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে? বন জঙ্গল বরফের উপর দিয়ে জীবনকে সংকটে ফেলছে? এর অনেক কারন আছে যা বোধ্যারা ভাল বলতে পারবেন। তবে আমার কাছে যে কারনগুলো মনে হয় তা আমি আপনাদের সাথে একটু শেয়ার করে নিতে পারি।
অশিক্ষাঃ যারা জীবনের ঝুকি নিয়ে সমুদ্র, বন জঙ্গল বাড়ি দিচ্ছে তাদের বেশির ভাগ মানুষই অত্যন্ত অশিক্ষিত। অশিক্ষিত মানুষগুলো দেশে তেমন ভাল কোন কাজ করতে পারে না। তাদের ধারনা দেশে যেহেতু কিছু করতে পারলাম না তাই বিদেশ গিয়ে নিজের ভাগ্যটা পরিবর্তন করে ফেলবো দ্রুত সময়ে। বিদেশে গিয়ে যে কোন কাজই করবো কেউ দেখবে না। বিদেশের ঐ কাজই দেশে করলে একটু শরম লাগে!! তাই বিদেশে গিয়ে নিম্নমানের কাজই হোক আর উচ্চমানের কাজই হোক করে মোটা টাকা নিয়ে দেশে এসে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকিব!!
অগ্যতাঃ অশিক্ষিত এই মানুষগুলো জ্ঞান গরিমায়ও ছোট, কাজের অভিজ্ঞতাও কম, অনেকেই একদম অযোগ্য। বিদেশ বিভূইয়ে কি করতে পারবো, কি করতে হবে, কিভাবে যাওয়া যায়, কোন পথ বৈধ কিছুই জানা নেই। আর অগ্য-অনভিজ্ঞ এই মানুষগুলো বিদেশ পাড়ি দিয়ে বিপদে পরে নিজে, বিপদে ফেলে পরিবারকে, বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেশ ও জাতিকে।
কাজের অভাবঃ দেশে জনসংখ্যা অনুপাতে কাজের অভাব। এক্ষেত্রে সরকারের বিশাল গাফিলতি আছে নিঃসন্দেহে। সরকার উদ্যোগি হয়ে নাগরিকদের পর্যাপ্ত কাজের ক্ষেত্র, সুযোগ করে দিতে ব্যার্থ হওয়ায় মানুষগুলো পিপিলিকার মত দল বেধে বিপদের মুখে ঝাপ দিচ্ছে।
এভাবেই ক্যাম্পে ঠাই হয় মানবতার
উচ্চাভিলাশী মনঃ আমাদের দেশের সাধারণ মানুষগুলোর উচ্চাভিলাশী মন আজকের এই পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ী। দেশে কাজ করতে মন চায় না। দেশের কাজকে ছোট করে দেখে। একই কাজ ক্ষেত্রবিশেষ নিম্নমানের কাজ বিদেশে করতে মন্দ লাগে না। দেশে নিজের উদ্যোগে, নিজের মেধা খাটিয়ে, অল্প পূজি দিয়ে কাজ করতে উদ্যোগি হয় না এই মানুষগুলো। সবসময় চেয়ে থাকে উচু তলার মানুষের দিকে। তাকিয়ে তাকিয়ে মনের ভিতরে হিংসা পয়দা করে আর বলে আমারও এমন বাড়ি হতে হবে, আমারও এমন গাড়ি থাকতে হবে, আমিও দুহাত খুলে টাকা খরচ করবো!!! কিন্তু সবসময় যদি উপর দিকে না তাকিয়ে নিচের দিকে তাকাই তবে আজকের পরিস্থিতির মত উষ্ঠা খাওয়ার সম্ভাবনা থাকতো না। দ্রুত বড়লোক হওয়া যায় না। আস্তে আস্তে হলে সেটা মজবুত হয় এবং বেশিদিন টিকে থাকে। অন্যের অর্থবিত্তের দিকে না তাকিয়ে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী চলার মানসিকতা থাকলে কেউ বিপদে ঝাপ দিত না। তাই উচ্চাভিলাসী মনকে সংযত করতে হবে।
সরকারের ব্যর্থতাঃ সবচেয়ে বড় সমস্যা সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতা। সরকারের কাজ প্রতিটি নাগরিকের জীবন জীবিকার খেয়াল রাখা। প্রতিটি নাগরিককে যথাযথ ভাবে শিক্ষিত করে, কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা। শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের পর যার যার যোগ্যতা অনুযায় কাজের ব্যবস্থা করা। আমাদের সরকার কি সেটা নিশ্চিত করতে পেরেছে? আমাদের সরকার কখনোই সেটা করতে পারেনি। পারলে আজকের এ দৃশ্য দেখতে হতো না। লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার পড়ে আছে কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। লাখ লাখ বেকার কর্মী পরে আছে কাজে লাগছে না। কাজের সুযোগ করে দিলে এভাবে কেউ বিপথগামী হতো না। সরকারের উদাসীনতা চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে। ঘুষ, দুর্নিতি এমন রূপ ধারণ করেছে যার কারনে রাতের আধারে, দিনের আলোয় মানুষ ছোট্ট নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিতে যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তর থেকে অবৈধ ভাবে মানুষ বাইরে যাবে আর বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকবে এটা কি করে সম্ভব হয়? তাহলে দেশে নিরাপত্তার জন্য হাজার কোটি টাকা খরচ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন পোষা হয়? দেশের ভিতর প্রতারক চক্র ঘুরে ঘুরে মুরগি কেনার মত করে বোকা-অগ্য মানুষগুলোকে কিভাবে বিদেশে পাচার করে? দালালরা কিভাবে পার পেয়ে যায়। দালালদের টাকার ভাগ কি প্রশাসনের লোকজন পায় না? না পেলে কেনই বা তাদের বাধা দেয় না? সাধারণ মানুষ তার শেষ সম্বল ভিটে মাটি বিক্রি করে, স্থানীয় এনজিওর কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। প্রতারিত হয়ে কি শুধু অর্থ বিত্তই হারায়, হারায় তার স্বপ্নও। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে চোখে শরষে ফুল দেখে গৃহকত্রী। পিতা-ভাই হারিয়ে নিঃশ্ব হয় সন্তান-স্বজন। সামান্য রোজগারের জন্য বিদেশে পারি দিয়ে কত মায়ের বুক খালি হলো, কত স্ত্রী স্বামী হারা হলো, কত সন্তান পিতা হারা হলো, গভীর সমুদ্রে মাছের খাবারে পরিনত হল আপনজন।
অবৈধ অভিবাসী হিসাবে সাগর পারি দিতে গিয়ে লাশ হয়
ঝুকিপূর্ণ বিদেশ পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে শুধুকি পুরুষই নারী-শিশুরাও সামিল হয়েছে। নারীরা হয়ে যাচ্ছে ভোগের পন্য। নির্যাতন স্বীকার করে উজ্জল ভবিষ্যতের আশায় ছুটে যাচ্ছে সমুদ্র পাড়ি দিতে। ভবিষ্যতের উজ্জলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে মুহুর্তেই। দালালের ক্ষপ্পরে পরে জিম্মি হয়ে দেশে কিছু থাকলে তা বিক্রি করে টাকা তুলে দিচ্ছে মাফিয়ার হাতে। সেই টাকাও যাচ্ছে অবৈধ পথে। দীর্ঘদিন যাবৎ এমনটা হচ্ছে সরকার কি কিছুই জানে না? আর কত না জানার ভান করে থাকবে সরকার। আর কত??
দেশে একজন মানুষ ক্রসফায়ার হলে বা অবহেলায় মৃত্যু হলে বা অপঘাতে মৃত্যু হলে আমরা জেগে উঠি। জেগে ওঠাই স্বাভাবিক। আমাদের সাথে বিশ্ব বিবেকও জেগে ওঠে। আজ হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, গণকবর আবিস্কার হচ্ছে, সমুদ্রে অনাহারে থাকা মানুষগুলোকে তীরে ভিরতে দিচ্ছে না।
এভাবেই সবাই পায়ে ঠেলে দেয় মানবতা।
কেন এখন বিশ্ব বিবেক জেগে উঠছে না। কেন কঠর ভাবে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা হচ্ছে না? সাগরে ভাসমান মানুষগুলো হোক বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের। তারাওতো মানুষ। বিশ্ব বিবেক কেন প্রচন্ন চাপ সৃষ্টি করছে না আজ। এক পৃষ্ঠা প্রেস রিলিজ বা একটু চোখ রাঙ্গানি দিয়েই কি তাদের দায়িত্ব শেষ? হাড্ডিসার কঙ্কালের মত মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকালে বড় মায়া হয়। এই মানুষগুলো যেখানে যেতে চাইছিল সেখানে গিয়েও কোন কাজ করতে পারবে বলে আমার মনে হয়না। আর এ মানুষগুলো দেশে এসেও কোন কাজ করতে পারবে কিনা আমি জানি না।
অসহায় মানুষগুলো দেখে বড় মায়া হয়। নিজের বিবেকের কাছে কেন যেন প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, কোথায় আজ মানবতা? মানুষ হিসাবে আমাদের কি এ ঘটনা চেয়ে চেয়ে দেখতেই হবে? কিছুই কি করার নেই? ঠুটো জগন্নাথরা কি বিবৃতি দিয়ে পেয়ালায় পেয়ালায় চিয়ার্স করবে? দালালরা কি বহাল তবিয়তেই তাদের কাজ চালিয়ে যাবে আর আমাদের রাষ্ট্রীয় জানোয়াররা কি দালালদের টাকায় শরীরের মেদ বারাবে?

আসাদুজ্জামান জুয়েল
আইনজীবী
১৯ মে ২০১৫

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৬

আলফ্রেড বি বলেছেন: মানবপাচার কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো?নয়তো এ বিষয়ে সরকার এখন পর্যন্ত চুপ কেন?

২| ২৪ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনার কারণগুলোর সাথে আরেকটি কারণ ছুটে গেছে!!!!

একঘরে সরকার !
জাতিসংঘ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, হিলারী, ওবামা সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে-
মুই কি হনুরে ভাবে একল চলতে গিয়েই আজকের এই করুন পরিণতি!!

বৈধ ভাবে শ্রম রফাতানির করুন হালই বলে দেয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কত শীতল!

কিন্তু তারা বগল বাজিয়ে গরম ভাব দেখাতে চাইছে! চাপাবাজি আর মিথ্যা বাগারম্বর, প্রলাপ বকে বকে পুরো জাতিকে স্তব্ধ বানিয়ে নিজেরা ভাবছে -মোরা কত চালাক রে!!!!!

কিন্তু শাস্ত্রেই আছে অতি চালাকে গলা দড়ি!

তাদের অতি চালাকির প্রথম বলি হচ্ছে আমজনতাই আগে- গণকবরে লাশ হয়ে!!!!!!!!!!!!!!!! এবং উল্টো আজকে বলে শ্রমিকদেরও নাকি শাস্তি হবে??? যাদের রেমটেন্সে নিজার্ভ ফান্ডের বাহাদুরি! আজ রাষ্ট্রের প্রধান বললেন তাদেরও নাকি শাস্তি হবে!!!!!!!!!!!!
শ্রমিক ও দালাল উভয়েরই শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - See more at: Click This Link

মানসিকভাবে যারা অসুস্থ তারাই দালাল ধরে অনিশ্চয়তার পথে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই জন্য শ্রমিক ও দালাল উভয়েরই শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অথচ উনাকে কে বলবে- আপনার একরোখামির জন্য অনির্বাচিত স্বৈরাচারিতা জন্যই মধ্যপ্রাচ্যের দরজা আজ বন্ধ ?
দরজা খোলে না কেন? এই শাস্তি কে কাকে দেবে!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

৩| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:৫৫

মুরশীদ বলেছেন: সাগরে ভাসছে মানবতা আর ডুবেছে মানবাধিকার। সময়োপযোগী পোস্ট। ভাল লাগলো। মন্তব্য গুলো ও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.