নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম শ্রেণীর শরীয়তপুর পৌরসভার নাগরিক হিসাবে গর্বিত ---জলাবদ্ধতা, অপরিচ্ছন্নতা, ভাঙ্গা রাস্তা ঘাট, কি সেবা আর বাকি!!

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:২৪

তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে যাত্রা শুরু করে আমাদের শরীয়তপুর পৌরসভা। আস্তে আস্তে ডিমোশন পেয়ে দ্বিতীয় থেকে আজ প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নেমে এসেছে শরীয়তপুর পৌরসভা! এক এর চেয়ে নিরানব্বই অনেক বড় সংখ্যাতত্বের ভিত্তিতে! আবার ক্লাসে নিরানব্বই পাওয়া ছাত্রের রোল হয় এক আর এক নম্বর পাওয়া ছাত্রের রোল হয় একশ বিশ! আসলে সংখ্যার ব্যবহারে রয়েছে নানা জটিলতা। আমরা যারা সাধারণ আম জনতা এসব সংখ্যাতত্বের জটিলতা খুব একটা বুঝি না। ক্লাসের এক রোল যার সে ভাল ছাত্র, প্রথম শ্রেণী পাওয়া ছাত্রকে আমরা বলি মেধাবী আর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নাকি তৃতীয় শ্রেণীর চাইতে ভাল। কিভাবে যে এর মূল্যায়ন করে সেটাই আমার মত আধা পড়ার মাথায় ঢোকে না!

আমি শরীয়তপুর পৌরসভার একজন বাসিন্দা। আমার বসবাস শরীয়তপুর পৌরসভার এক নাম্বার ওয়ার্ডে। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার প্রথম নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসাবে নিজেকে গর্বিত মনে করতাম। কিন্তু আস্তে আস্তে সুযোগ সুবিধা দেখে আমার কাছে মনে হচ্ছে ক্লসে পরীক্ষার খাতায় এক নাম্বার পাওয়া ছাত্রের মত আমিও এক নাম্বার পৌরসভার এক নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসাবে মূল্যায়িত ও সুযোগ সুবিধা ভোগী।
পৌরসভার চেয়ারম্যান বা মেয়রকে আমরা আদর করে বলি পৌর পিতা। এই পৌর পিতার নয় ঘর মানে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে সংসার। নয় সংসারে তাহার রয়েছে অসংখ্য সন্তান! এই সন্তানদের দেখাশোনা করবে বলেই আমরা তাকে পিতার আসনে বসাই। শরীয়তপুর পৌরসভার জন্ম লগ্ন থেকে একাধিক চেয়ারম্যান, মেয়র দেখার সুযোগ হয়েছে। আমাদের তো আসলে মুড়িতেও (উরুমে) ভরে না!! পূর্বের ওল্ড ম্যান চেয়ারম্যান, মেয়ররা এসে যা করেছে তাতে আমাদের খুশি করতে পারেনি। বৃদ্ধ নগর পিতাদের হয়তো দৃষ্টি শক্তি কমছিল, কারো সুযোগ কম ছিল, কেউ লোভি ছিল, কারো দৃষ্টি শক্তি কম ছিল, এমন নানা কারনে আমাদের ভালভাবে দেখভাল করতে পারেনি। সম্প্রতি আমাদের পৌরসভায় এসেছে এক ইয়াং এনার্জিটিক মেয়র বা নগর পিতা। আমরা সবাই খুশিতে আটখানা হয়ে গেছি। এবার অন্তত একটা পরিবর্তন আসবে! আধুনিক যুগের ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা করে আসা ইয়াং এনার্জিটিক মুক্ত মনা ডিজিটাল চিন্তাধারার মেয়র পেয়ে বেশ পুলকিত আমরা। ভেবেছিলাম নগরির জঞ্জাল দেখে এ মেয়র নিশ্চয়ই নেমে পড়বে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায়, পৌরসভার আনাচে কানাচে হেটে বেড়াবে, নাগরিকদের সুখ দুঃখ দেখবে নিজের চোখে। আর নিজেকে একজন নাগরিকের স্থানে বিবেচনা করে নাগরিকদের সমস্যার সমাধান করবে। সমস্যার সমাধানে কাউকে না পেলে নিজের পরিষদের কাউন্সিলরদের নিয়ে চেষ্টা করবে। তার পরে কতটুকু করা যায়, কতটুকু করতে পারলো তার মূল্যায়ন করবে জনগন। আসলে মূল্যায়ন করার সুযোগই বা কে দেয়, মূল্যায়ন তারা চায়ইবা কতটুকু?
আমি আগেই বলেছি আমি থাকি শরীয়তপুর পৌরসভার এক নাম্বার ওয়ার্ডে নাগরিক। আমি আমার এলাকার নাগরিক সুবিধাদির কথাই আজ শোনাতে চাই! আমিতো আর পৌর পিতার মত ঘুরে ঘুরে নয় ঘরে লালিত, বসবাসরত সন্তানদের খবর নিতে পারি না। পালং মডেল থানার সামনে দিয়ে একটা রাস্তা চলেগেছে কোতোয়াল বাড়ি পর্যন্ত। রাস্তাটাকে কোতোয়াল বাড়ি রোড বললেই সবাই চিনে। গ্রামের নামের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আশ পাশের অনেকে নিজেদের এলাকার নাম কেউ শান্তি নগর, কেউ নিরালা, কেউ আরালা নানান নাম রেখেছে। আমরা থেকে গেছি সেই আদী নামেই। আমরা এখনও পালংয়েই আছি। পালং বাজার সড়ক থেকে থানার সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা পূর্ব দিকে ঢুকে গেছে সেই রাস্তা দিয়ে ঢুকলে কোতোয়াল বাড়ি হয়ে কালিখোলা পর্যন্ত ওটাকে রাস্তা বললে ভুল হবে। রাস্তা এতটাই খানাখন্দে ভরা যে রিক্সাওয়ালারা এখন আর আমাদের এলাকায় যেতে চায় না, আর গেলেও ভাড়া চার গুন নেয়। একটা ভাড়া নেয় যাত্রীর আর বাকী তিনগুন ভাড়া নেয় ভাঙ্গা রাস্তায় রিক্সার যে ক্ষতি হবে তার ক্ষতিপূরন বাবদ। কিন্তু কি আর করা? যেতে যখন হবেই তো দিতেও তখন হবে। আর রিক্সা চালকদেরই বা কি দোষ! তারা সারাদিন কতটাকাই বা আয় করে? রিক্সার যে ক্ষতি হয় তাতো আর মেয়র মহোদয় দিবে না!! রাস্তাটার প্রয়াত হারুন বেপারীর সাহেবের বাড়ির সামনে বিশাল গর্ত। পনের মিনিট বৃষ্টি হলে গর্তে এক গিড়া পানি জমে যায়। তার পর একটু এগুলে মসজিদ ও এডভোকেট খান মোঃ আসাদ আলী সাহেবের বাড়ি। এখানে সারা বছর পানি জমে থাকে তাতে বৃষ্টি লাগে না। এডভোকেট খান মোঃ আসাদ আলী সাহেবের বাড়ি পার হয়ে মোড় থেকে শুরু যে রাস্তাটুকু আমি তার নাম দিয়েছি বিছানার কান্দি। সিলেটের বিছানা কান্দির অপরূপ দৃশ্য আমাদের জানা আছে। বিছানো পাথরের উপর দিয়ে পরিস্কার পানির প্রবাহ ঝির ঝির করে বয়ে চলেছে। সেটা দেখার জন্য অনেক পর্যটকই যায় টাকা খরচ করে। আমি যাইনি, বাড়ির কাছে বিছানা কান্দি থাকলে টাকা খরচ করে যে যায়? রাস্তা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে হাটু পানি জমে গেছে, দয়াপরবশ হয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর কিছু রাবিশ টাইপের ইটের আধলা ফেলেছিল। সেই ইটের আধলা পানির নিচে ডুবে আছে বারো মাসের প্রতিটি দিন প্রতিটি রাত। এ অবস্থা চলছে আমার বাড়ি পর্যন্ত। এক ঘন্টা যদি মনোযোগ দিয়ে বৃষ্ট পড়ে তবে মটর সাইকেলের ইঞ্চিন পর্যন্ত ডুবে যায়। চলতে চলতে গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়, রিক্সার চাকা ফেসে গিয়ে উল্টে যায়, মানুষে হাত পা ভাঙ্গে, সুটেট বুটেট হয়ে বেরহওয়া ব্যক্তির জুতার ভিতর পানি ঢোকে। আমি একাধিক দিন ভিজা জুতা মোজা পায়ে দিয়ে কোর্টে এসেছি। ভিজা জুতা মোজা পায়ে শুকিয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, এ রাস্তাটা যদি কেটে দিত তাহলে আমরা কোসা নৌকা কিনে নিতাম। বর্তমান অবস্থা নৌকা চলার মতও না আবার পায়ে হাটার মতও না! কোতোয়াল বাড়ির ব্রিজ থেকে কালিখোলার রাস্তা এতটাই খারাপ যে রিক্সা তো দুরের কথা হেটেও ওয়ায়া যায়না। পিচ ভেঙ্গে সুরকি খসে মাটি পর্যন্ত বের হয়ে গেছে। তাতেও কোন নজর নেই মেয়র নামের নগর পিতার।
সম্প্রতি আমাদের রাস্তার কাজ ধরবে শুনেছি। কাজের নাকি টেন্ডারও হয়ে গেছে। কাজ পেয়েছেন মেয়র মানে নগর পিতার ভাই। সেই সূত্রে ঠিকাদার আমাদের নগর কাকা!! পিতা যেখানে খেয়াল রাখেন না চাচা সেখানে কি খেয়াল রাখবেন। একদিন বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় দেখি রাস্তার দুধার বেশ পরিস্কার। ঘাসগুলো ছেটেছুটে রেখেছে। রাস্তার দুধারের ইটগুলো দেখা যাচ্ছে। দেখে খুব খুশি লাগলো। আনন্দে মনটা ভরে উঠলো। এবার দুঃখের দিন শেষ!! রাস্তার কাজ ধরবে। তার পরে কয়েকদিন গত হলো। আবার এক সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় একটা নসিমন ভটভট আওয়াজ করে বাড়ির রাস্তার সামনে দাড়িয়ে আছে। নসিমনের উপর কিছু ইট। সব মিলিয়ে দেড় থেকে দুশ ইট। আমি ভাবলাম কোন লোক হয়তো বাড়ির কাজ ধরেছে। ইটগুলো রাস্তার উপর না ফেলে একটু পাশে ফেলতে বললে নসিমনের ড্রাইভার ও হেলপার বললে, এগুলো রাস্তার কাজে ব্যবহার হবে, দুএকদিনের মধ্যে চলে যাবে। তার পরেও আমি বললাম বাড়িতে ঢোকার রাস্তাটা রেখে পাশে রাখো। ওরা আমাকে বললো ঠিক আছে। আমি চলে গেলাম আমার কর্মস্থলে। এসে দেখি বাড়িতে ঢোকার রাস্তা অর্ধেকটা ব্লক করে ইটগুলো স্তুপ করে রেখেছে। রাস্তার স্বার্থে আমি মেনে নিলাম। কদিনই বা লাগবে। সেই ইট আজ তিন মাস ধরে পড়ে আছে আমার রাস্তার উপর। বাড়িতে ঢুকতে বেরুতে বেশ কষ্ট হয়। আর নসিমন চালকদেরই বা কি দোষ। সারা রাস্তার মধ্যে আমার বাড়িতে ঢুকার রাস্তাই আছে শুকনা। আর অন্য কেউ তো বাড়ির সামনে একফুটও জায়গা রাখেনি। কোথায় রাখবে? আসলে বাড়ির সামনে ফাকা জায়গা রাখলেও বিপদ, কেউ কেউ গাড়ি এনে ঘুরায় আমার বাড়ির রাস্তা দিয়ে, কেউ ইট রাখে, কেউ বালি রাখে। যে দেশে ঘি আর তেলের দাম সমান সমান সে দেশে চিকন আলীকে সূলে চড়ানোর পর যদি পাছা দিয়ে সূল ওজন স্বল্পতার কারনে না ঢোকে তবে আমার মত মোটা লোকইতো খুজে বের করবে, কারন পর্যাপ্ত ওজনের কারনে সূল ঢুকবে ভাল!! রাস্তার দুধার পরিস্কার আর কয়েক জায়গায় ইট রাখার কারন হিসাবে পরে লোক মুখে শুনেছি এগুলো করে নাকি প্রাথমিক একটা বিল উঠিয়ে নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বা নগর চাচা। তবে তা কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা আমি জানিনা, ভগা জানে!!
নগরির জলাবদ্ধতার কথা আর কি বলবো নতুন করে। গত তিন চার বছর যাবত আমাদের ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারন করেছে। ঘর আর ঘরের আশ পাশের দুএক ফুট ভূমি ছাড়া বাকী সব জমি তলিয়ে আছে পানির নিচে। বর্ষা আসে বর্ষা যায়, শীত আসে শীত যায় কিন্তু আমাদের এলাকায় পানি এসেছে পানিতো আর যায় না!! বাড়িতে যত গাছ ছিল তার অর্ধেকের বেশি মরে ভুত হয়ে দাড়িয়ে আছে। বাকী যা আছে তা মরার অপেক্ষায় দিন গুনছে। আমাদের এলাকার এ জলাবদ্ধতা নিয়ে পৌর পিতার কোন নজর নাই। পিতার নজর যদি এতই ঘোলাটে হয় তবে কি আর করা? এলাকার কোথাও কোন ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান নেই। তাই জোড়াভবনের কোনে সকলে ময়লা ফেলার স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। একেতো ভাঙ্গা রাস্তা তার উপর ময়লা ফেলতে ফেলতে মানুষ এখন আর ময়লার স্থানে ময়লা ফেলে না। ময়লা রাস্তার উপরই জমা হয়ে আছে। আসতে যেতে সেকি ফ্লেভার!!! পেটের ভিতর থেকে সব বেরিয়ে আসতে চায়।
এলাকায় আরেক যন্ত্রনা ড্রেনেজ ব্যবস্থা। পালং থানা থেকে কুয়েতি মোড় হয়ে শান্তি নগর দিয়ে তুলাসার স্কুল রোড পর্যন্ত ড্রেন তৈরীর কাজ হাতে নিয়েছেন আমাদের পৌর মেয়র। কাজ দিয়েছেন কাকে সেটা বড় কথা নয়, কত বছরের জন্য কাজটা দিয়েছেন সেটা কারো জানা নেই। এত ধীর গতিতে কাজ করা যায় এমন ধারনা আমার আগে কখনো হয়নি। ড্রেনের জন্য রাস্তার ধার খুড়ে রেখেছে তাও বছর হয়ে গেলো। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে একটা কাজ কত বছরের জন্য দেয়া যায় তার হিসাব জানা দরকার। কিন্তু জেনে কি হবে, মেয়র মহোদয় যে দিয়েছেন, বুঝেই তো দিয়েছেন, তাই না?
সড়ক বাতি পৌর এলাকার একটা সেবার মধ্যেই পড়ে। আমাদের সড়ক আছে হোক সে ভাঙ্গাচোরা কিন্তু বাতি কই? বাতি থাকে না। আসলে বাতিগুলো লোহার তৈরী হলে ভাল হতো, একবার কাটলে আর জোড়া লাগে না। তাই আমাদের এলাকায় সড়ক বাতির ব্যবস্থা আছে কিন্তু বাতি কেটে গেলে মেয়র কি করবেন? এ ফলে আমাদের এলাকায় নির্বিঘেœ চলে চুরি চামারি। আর চোরের কি দোষ, বড় বড় লোক গুলোই যেখানে চুরিতে ব্যস্ত সেখানে এলাকার চোরের দোষ ধরে কি লাভ?
শরীয়তপুর পৌরসভা একটা প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। ছোট্ট এ নগরী একটু পরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠলে নাগরিকরা কতই না সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবন যাবন করতে পারতো। নগরিতে নেই কোন পরিকল্পনা। যে যার মত স্থাপনা করছে। আর বাড়ির সীমানা প্রাচীর এমন ভাবে করছে যে রাস্তা কেটে দুই ফিট ঢুকতে পারলে কেউ পিছাচ্ছে না। রাস্তা ঘেষে সীমানা প্রাচীর, বাড়ির গেট থেকে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত নিজেরাই ঢালাই করে রাস্তা তৈরী করেছে। এসব দেখার দায়িত্ব কি মেয়র মহোদয়ের? সে কি এতটা নিচে নামতে পারে? তাইতো যার যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে।
আমাদের এলাকার এত সমস্যা দেখার জন্য মেয়র আছে যাকে নগর পিতা বলে ডাকি। কিন্তু সে আমাদের এলাকায় কেন আসেনা? পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসে মানিক বন্দোপাধ্যায় লিখেছিলেন “ঈশ্বর থাকেন ঐ গ্রামে, ভদ্র পল্লীতে, এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।” তবে কি লেখকের এই আক্ষেপপূর্ণ উক্তিটিই আমাদের এলাকার জন্য প্রযোজ্য? নগর পিতা কি ভদ্র পল্লীতেই থাকে? আর ভদ্র পল্লীই বা কোনটা? কোন এলাকায়ইতো তিনি যান বলে মনে হয় না। যে এলাকায় যান সেই এলাকাকেই বা ভদ্র পল্লী বলি কিভাবে। ঢাকা তো ভদ্র পল্লীর মধ্যে পড়ে না! সেখানেও তো বাজে অবস্থা, সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে! ওহ! সেখানে ভদ্র পল্লী আছে, গুলশান, বনানী, বাড়িধারা, ধানমন্ডী, উত্তরা সহ নানান ভদ্র পল্লী আছে!! আমাদের এখানে ঘুরে কি লাভ?
শুরুতে তো ওল্ড-ইয়াং এনার্জিটিক চেয়ারম্যান মেয়র সম্পর্কে অনেক বলেছি। এবার একটি গল্প বলি, এক ব্যক্তি সারা জীবন মানুষের বাড়ি বাড়ি চুরি করেছে। চুরিই ছিল তার পেশা। সেই চোর মৃত্যুশয্যায়। শয্যাপাশে তার সন্তানেরা। চোর তার সন্তানদের ডেকে বললো, বাবারা, আমিতো সারা জীবন মানুষের বাড়ি বাড়ি চুরি করেছি যা তোমরা জান এবং তোমরা আমাকে সব সময় সহযোগীতাও করেছো। আমি আর বেশিক্ষণ মনে হয় তোমাদের মাঝে নাই। সময় হয়ে গেছে। তোমরা দুনিয়ায় এমন কাজ করবে যাতে সবাই আমায় ভাল বলে। এই বলে কিছুক্ষণ পর চোর বেটা মারা গেল। শোক কাটিয়ে উঠে চোরের সন্তানেরা চিন্তা করে, কি এমন কাজ আমরা করতে পারি যাতে বাবাকে মানুষ ভাল বলবে! তারা এতদিন বাবার সাথে চুরিতে সহযোগীতা করত। বাবা মারা যাওয়ার পর এখন তারাও চুরি করা শুরু করেছে। একদিন ভাইয়েরা মিলে আলোচনায় বসল। সবাই মিলে চিন্তা ভাবনা করলো, কি কাজ করলে মানুষ বাবাকে ভাল বলতে পারে। চিন্তা ভাবনা শেষে এবার তারা চুরি ছেড়ে ডাকাতি শুরু করলো। কয়েক দিন ডাকাতি করার পর মানুষের মুখে বাবা সম্পর্কে ভাল কথা শুনতে না পেয়ে এবার কাজের ধরণ পরিবর্তন করলো। সবাই মিলে ডাকাতি করা শেষে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে দেয় এবং ঘরে যুবতী মেয়ে, বাড়ির বউদের পালাক্রমে ধর্ষণ শুরু করলো। এবার ফল পেল হাতে নাতে, নগদে! সবাই বলাবলি করছে, আহারে! ওদের বাবা কত ভাল মানুষ ছিল! শুধু চুরি করতো! আর তার ঘরে কি কুলাঙ্গার হয়েছে, ডাকাতি করে, ডাকাতি শেষে ঘরে আগুন দেয়, জুয়ান বুড়া মানে না, ধর্ষন করে। ওদের চাইতে ওদের বাবা অনেক ভাল ছিল।
ভূক্তোভূগি নাগরিক হিসাবে অনেক কথাই লিখলাম। নগর পিতা সমস্যার দিকে নজর দিনেব, আমার কথায় রাগ করবেন না আশা করি। আমি একজন ভূক্তোভোগী নাগরিক। আমার মনে অনেক ক্ষোভ আছে, থাকাটাই স্বাভাবিক। এর সমাধান একটাই, পিতা আসুন আমাদের এলাকায়, দেখুন আমাদের দূর্দশা, সমাধানের পথ খুজুন। আপনার প্রতি আমাদের অনেক প্রত্যাশা। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির একটা সমন্বয় করুন, চেষ্টার পর ব্যর্থ হলে আমরা আপনাকে দোষ দিবো না, ভুলেও যাব না। পিতার চেষ্টার মূল্যায়ন করবো। পিতার ব্যর্থ চেষ্টায় ক্ষুব্ধ হবো না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১৯

রানা আমান বলেছেন: ছবি দেখে তো মনে হচ্ছে রাস্তার অবস্থা ততটা খারাপ নয় , আমাকে এরচে অনেক বেশি খারাপ রাস্তাও ব্যাবহার করতে হয় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.