নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিকুনগুনিয়ার জন্য দায়ী সনাক্ত !!!

১৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩১

সম্প্রতি ঢাকায় ছড়িয়ে পড়েছে চিকুনগুনিয়া রোগ। এ রোগের জন্য কে দায়ী এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। সরকার বলছে সিটি কর্পোরেশন দায়ী। আবার সিটি কর্পোরেশন বলছে তারা দায়ী নয়। সিটি কর্পোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনের জন্য কাজ করছে। চিকুনগুনিয়া চিকন না মোটা তারা জানে না! যেহেতু সরকার দায় চাপাচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের উপর আর সিটি কর্পোরেশন দায় অস্বীকার করছে, তাহলে দায়টা কার তা বের করা জরুরী। দুটি অর্গানই যখন দায় অস্বীকার করছে তখন তাদের দিয়েতো আর দায় সনাক্ত করা যায় না। তাই নন গভার্মেন্ট থেকে নন জুডিশিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে!! তারা চিকুনগুনিয়ার জন্য দায়ী সনাক্ত করার কাজ করেছে। তাতে বেরিয়ে এসেছে কে দায়ী!! তবে চিকুনগুনিয়ার দায়ী সনাক্তের আগে এ সম্পর্কে আমাদের তদন্ত কমিটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সংবাদগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে জনগন দিশেহারা হয়ে যে নন জুডিশিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো সেই তদন্ত কমিটি সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন!! সূদীর্ঘ প্রতিবেদন এখানে উল্লেখ করা সম্ভব নয় তাই প্রতিবেদনের খন্ডিত অংশগুলো তুলেধরা হলো!!

তদন্ত কমিটির সদস্যগণ বলেছেন, জনগন মহা মারি মহা মারি বলে চিৎকার না করে সকলে যদি মশা মারি মশা মারি বলে চিৎকার করতো তাতে লাভ হতো! অযথা চিৎকার চেচামেচি করে কি লাভ? চিকুনগুনিয়া ছড়ানোর দায় জনগনের! কারন, জনগন মশার ডিম পাড়ার জায়গা করে দেয়। জনগন ডাব খেতে পছন্দ করে, ডাব খাওয়া হলে কেটে ভিতরের লেওয়া খায় (ডাবের শাষ) আর লেওয়া খাওয়া শেষে ছুড়ে ফেলে দেয়। ডাবের ছুড়েফেলা অংশে পানি জমে আর পারিতে ডিম পারে এডিস মশা! ডাবের পানি খাবেন, লেওয়া খাবেন আর মশার কামড় খাবেন না তাকি হয়!!

আমাদের দেশের ধনীরা গাড়ি ব্যবহার করে। গাড়ি চাকা মেরামত করার পর ছোট মানসিকতার জনগন পুরাতন টায়ার যতœ করে রেখে দেয়, সেই টায়ারে পানি জমে, সেই পানিতে ডিম পারে মশা! আমাদের দেশের ধনীর দুলালরা কোমল পানীয় খায় ক্যানে, সেই ক্যান ফেলে দেওয়ার পর জনগন তা পরিস্কার করে না, ফলে ক্যানের ভিতর জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পারে আর তাতেই চিকুনগুনিয়া ছড়ায়!

আমাদের দেশের জনগণের রয়েছে শিক্ষার অভাব। বস্তিবাসীদের শিক্ষার সুচকতো প্রায় শুন্যের কোঠায়!! বস্তিবাসী কুদ্দুস মিয়ার মতে, এসিড মশার কারনে তাদের ঘরে চিকুনগুনিয়া ঢুকেছে। এসিড মশা কামড় দিয়ে ভিতরে এসিড ঢুকিয়ে দিচ্ছে, এসিডের ত্যাজে ঐ জায়গা পরে লাল হয়ে যায়যে!
তদন্ত কমিটি লখাই মিয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলো, চিকুনগুনিয়া কি ও কেন হয় জানেন? লখাই মিয়া বলেন, মনে হয় মশা গুয়ের উপর বসে, মুখ দিয়ে চিকন চিকন গুয়ের টুকরা এনে আমাদের শরীরে উপর বসে এবং কামড় দিয়ে ভিতরে গুয়ের বিজানু ঢুকাইয়া দেয়, তারপর যে রোগ হয় ওইডাই চিকুনগুনিয়া।

মালেশ্বর বাবুকে চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাস করলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা কিছুটা সম্পাদিত করে একাশ করতে হলো, তিনি বলেন, চিকন গো... না মোডা গো... তা দিয়া আমরা কি করুম? আমরা হইলাম সাধারণ আম জনতা। আম জনতার খাতায় নাম লিখাইয়া চিকন মোডা বাছার সুযোগ আছে? একটা হইলেই হয়!! (তিনি কিছুটা ক্ষিপ্ত, কথা না বাড়িয়ে আমাদের তদন্ত কমিটি ভালয় ভালয় কেটে পড়েন)।

তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্তকারীগণ এই মর্মে একমত হয়েছেন যে, তারা আসলে কোন বিষয়ে একমত নন। তদন্তকারী কারো মতে চিকুন গুনিয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দায় হচ্ছে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার। তাদের দেশের অভূক্ত মশা উড়ে উড়ে আমাদের দেশে এসে সাধারণ মানুষের উপর হুমড়ি খেড়ে পড়ায় রোগটা ছড়াচ্ছে। আর যেমন খাচ্ছে তেমনি ডিম পেড়ে বংশ বাড়াচ্ছে।

অপর এক তদন্তকারীর মতে, দেশের জনগনই এর জন্য দায়ী, তারা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে উদাসীন, তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে মশার কামড় খায়, ঠিকমত মশারি টানায় না, তাদের বোঝা উচিত মেয়রতো আর ঘরের ভিতর গিয়ে মশারি টানাবে না!

অপর এক তদন্তকারীর মতে, ডাব বিক্রেতা, গারির গ্যারেজ মালিক দায়ী, কারন তারা ডাবের খোসা, টায়ার টিউব যথাযথ স্থানে ফেলে না এবং পরিস্কার রাখে না। এবার লেওয়া খাওয়ার মজা বুঝুক!!
নন জুডিশিয়াল তদন্ত কমিটি যেহেতু কোন বিষয়ে একমত হতে পারেনি তাই প্রতিবেদন পাঠে জনগন এই মর্মে একমত হয়েছে যে, চিকুনগুনিয়ার জন্য আসলে জনগনই দায়ী!!! তবে সরকারকে তারা কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। তাদের মতে আর দেরি না করে সিটি করপোরেশনকে এখনি মশা মারতে কামান সরবরাহ করা উচিত!
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
*
আমাদের তদন্ত কমিটি সবচেয়ে যে নিউজটির দিকে নজর দিয়েছে তা নিচে তুলে ধরা হলো। সম্মানিত পাঠক চাইলে পড়তেও পারেন না চাইলে এড়িয়েও যেতে পারেনঃ-
বহুল প্রচারিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক ওবায়দুর মাসুম চিকুনগুনিয়া বিষয়ে বিস্তারিত একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তার প্রতিবেদন থেকে কিছু বিষয় আগে জেনে নেই। তারপর আমরা জানবো দায়ী কে। প্রতিবেদনে বলেছে, মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ার কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক নেই। এ রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ।
গত পাঁচ বছরে ঢাকা সিটি করপোরেশন মশা মারতে ১১৬ কোটি টাকা খরচ করলেও ক্ষুদ্র ওই পতঙ্গের উপদ্রব না কমায় ভূক্তভোগীরা নগর কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের অঙ্গুল তুলেছেন। এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও ঢাকায় চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার জন্য দুই সিটি করপোরেশনকেই দায়ী করেছেন। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ মানতে রাজি নন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তাদের ভাষ্য, কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব যখন হয়, সম্মিলিতভাবেই তা প্রতিরোধ করতে হয়।
এ রোগ নিয়ে অভিজ্ঞতা কম থাকায় প্রস্তুতির অভাবের বিষয়টি স্বীকার করেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র খোকন আগামী ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আশার কথা শুনিয়েছেন। অন্যদিকে উত্তরের মেয়র আনিসুল হক দাবি করেছেন, ড্রেনের মশা নয়, ঘরে জন্ম নেওয়া এডিস মশার কারণেই এ রোগ ছড়াচ্ছে, যেখানে পৌঁছানো সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব নয়।
আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় ১৯৫২ সালে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে এ রোগ দেখা দেয় ২০০৮ সালে, যার প্রকোপ চলতি বছর বর্ষা মওসুমের শুরু থেকে বেশি দেখা যাচ্ছে।
ঢাকার ২৩টি এলাকাকে এ রোগের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকারের রোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইইডিসিআর।
চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের কেন সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে না তা জানতে চেয়ে হাই কোর্ট একটি রুল জারি করেছে। রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুজাউদ্দোলা আকন্দ। ওই আবেদনের শুনানিতে গত ৯ জুলাই সুজাউদ্দোলা আদালতে বলেন, “খবর অনুযায়ী মশা নিধন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার বাজেট রয়েছে। কিন্তু এত টাকা যায় কোথায়? সেটাও দেখার দরকার।” বিচারক তখন বলেন, “টাকাতো খরচ হচ্ছে। কিন্তু এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের বিষয়টাও দেখতে হবে। তাদের কি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না? সম্প্রতি বিদ্যুতের ছেঁড়া লাইনে দুই হাত হারানো শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার এক ছেলের জন্য ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ হয়েছে। এখন ভবিষ্যতে এ বিষয়গুলোর প্রতি সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবে।”
চিকুনগুনিয়া বৃত্তান্তঃ
# তানজানিয়ার মাকোনডে ভাষায় চিকুনগুনিয়া অর্থ হল, যা বাঁকিয়ে ফেলে। শুরুটা জ্বর দিয়ে হলেও ‘হাড় বাঁকানো ব্যথাই’ বলে দেয় এ রোগ কতটা ভোগাতে পারে।
# চিকুনগুনিয়া হলে শরীরের গিটে গিটে ব্যথার পাশাপাশি মাথা কিংবা মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীরে ঠান্ডা অনুভূতি, চামড়ায় লালচে দানা ও বমি বমি ভাব হতে পারে।
# চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে জ্বর হলে প্যারাসিটামল সেবন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। এমনিতে বসবাসের এলাকার পরিবেশের কারণে তাদের মশার উৎপাত বেশি সহ্য করতে হয়। আর চিকুনগুনিয়ায় যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, কাজ কামাই হওয়ায় তাদের রুটি-রুজি নিয়েও ভূগতে হচ্ছে। জ্বর ছাড়লেও বেশ কিছুদিন শরীরে ব্যথা থাকে বলে রিকশাচালক বা নির্মাণ শ্রমিকের মত যাদের শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়, তাদের সমস্যা হচ্ছে আরও বেশি। বর্ষার শুরুতে মশার যন্ত্রণা বেড়ে গেলেও সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে তৎপর ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীদের অনেকেই। ভূক্তোভোগীদের মতে, রাস্তার পাশের নালাগুলো তো ময়লা আবর্জনায় পূর্ণ থাকে। ওখানে মশা উৎপাদনের কারখানা। কিন্তু নালাগুলো ঠিকমত পরিষ্কার করা হয় না, নিয়মিত মশার ওষুধও ছিটায় না। সিটি করপোরেশনের তৎপরতার অভাবেই চিকুনগুনিয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে।
গত ১১ জুলাই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আলোচনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কণ্ঠেও ছিল একই অভিযোগের সুর। সেদিন তিনি বলেন, “রাজধানী পরিষ্কার রাখতে এবং মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের আন্তরিকতার অভাবে নগরীতে চিকুনগুনিয়া রোগের বিস্তার ঘটছে। পরে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, “চিকুনগুনিয়া হচ্ছে একটি ভাইরাস। এডিস মশা থেকে এর উৎপত্তি হয়। এই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এর দায়িত্ব কোনোভাবেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়। তারপরও দায়িত্ববোধ থেকে আমরা চিকুনগুনিয়া নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা ও সচেতনতা নিয়ে কাজ করছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
সেই এডিস মশা
>>চিকুনগুনিয়া রোগের সংক্রমণ ঘটে এডিস প্রজাতির এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস এলবোপিকটাস মশার মাধ্যমে। চিকুনগুনিয়া ভাইরাসটি টোগা ভাইরাস গোত্রের। মশাবাহিত হওয়ার কারণে একে আরবো ভাইরাসও বলে।
>>ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসও এই মশার মাধ্যমে ছড়ায় এবং রোগের লক্ষণ প্রায় একই রকম। এ ধরনের মশা সাধারণত ভোর বেলা অথবা সন্ধ্যায় কামড়ায়। একটি পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে মশার মাধ্যমে অন্যদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
>>ঘরের ভেতরে অর্ধস্বচ্ছ পানি, ফুলের টব, ফেলে রাখা কৌটা বা বোতল, পানির ট্যাংক, ছাদে জমে থাকা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, আবর্জনার স্তুপ বা ডাবের খোসার ভেতরেও জন্ম নিতে পারে এডিস মশা। তাই বাড়ির ভিতরে, বাড়ির ছাদে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মশক নিধনে ব্যয় করেছে ৩৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর আওতায় প্রতিদিন সকালে লার্ভিসাইডিং আর বিকেলে এডাল্টিসাইডিং করা হয় বলে করপোরেশনের কর্মকর্তাদের দাবি। তবে সিটি করপোরেশনের ফগারম্যানরা নিয়মিত ওই কাজটি করেন না এবং যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তাতে ভেজাল থাকায় মশার তেমন কিছু হয় না বলে নগরবাসীর অভিযোগ রয়েছে। মেয়র খোকন বলছেন, “এ রোগ নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতাটাই নতুন। আমরা এটার বিষয়ে কিছুই জানতাম না। আমাদের প্রস্তুতি ছিল ডেঙ্গু নিয়ে। এখন এটা উদ্ভব হয়েছে, আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে।”
চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আনিসুল হক বলেছেন ‘ঘরে গিয়ে তো মশা মারতে পারি না’। মেয়রের সাথে ছিলেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক তিন বিশেষজ্ঞ। তারা বলেন, চিকুনগুনিয়া রোগের জন্য ঘরের বাইরের মশা নয়, বরং ঘরের ভেতরে জন্ম নেওয়া এডিস মশা দায়ী। আর এর সূত্র ধরে মেয়র আনিসুল বলেন, “আপনার ঘরের ভেতরে গিয়ে আমি মশারি টানাতে পারব না। আপনার চৌবাচ্চায় আমি ওষুধ লাগাতে পারব না। আপনার ঘরের ভেতর সামান্য স্বচ্ছ পানিতে যে মশা জন্মাচ্ছে, সেটা আমি মারতে পারব না।” নগরবাসী চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করলেও তাদের এ দুর্ভোগের জন্য সিটি করপোরেশন দায়ী নয় বলে মেয়র আনিসুলের ভাষ্য।
মহামারী?
মোটামুটি কত লোক এবার বর্ষা মৌসুমে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে সে বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান সরকারের কোনো দপ্তরের হাতে নেই। তারপরও এর ব্যাপকতার কারণে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ একে মহামারী বলছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১২ জুলাই পর্যন্ত তাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে ৬৪৯ জনকে চিকুনগুনিয়া রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আইইডিসিআর ও বঙ্গন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোথাও চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় আক্রান্ত অধিকাংশের তথ্যই সরকারের খাতায় আসছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম গত ১১ জুলাই জানান, জ্বরে আক্রান্ত প্রতি ১১ জনের মধ্যে একজন এখন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ঢাকার বাইরে যে দু-একজন রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে তারা ঢাকা থেকেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতি ১১ জনে একজন এই রোগে ভূগছে বলে যে খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা সঠিক নয়।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন শুক্রবার তার মশক নিধন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাবি করেন, তার এলাকায় চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব কম, একে মোটেই মহামারী বলা যাবে না। অন্যদিকে উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইইডিসিআরের সাবেক এপিডেমিওলজিস্ট অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, “এখন পর্যন্ত এ রোগের যেভাবে বিস্তার ঘটেছে, যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, তাতে অবশ্যই এটা মহামারী।”
তার বক্তব্য সমর্থন করলেও এটি তাদের ব্যক্তিগত মত জানিয়ে কীটতত্ত্ববিদ তৌহিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, মহামারী কিনা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০২

মেমননীয় বলেছেন: আমি ভেবেছিলাম বিরোধীদল দায়ী।

এখন দেখি আমাকেই দায়ী করা হচ্ছে!

১৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০৮

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ভাই, বিরোধী দলইতো জনগন। বিরোধী দলীয় নেতারা বলেনা, জনগনের দাবী, জনগনের স্বার্থে, জনগন এ সরকার চায় না ইত্যাদী ইত্যাদী। এছাড়াও জনগন আছে, তারা হলো আম জনতা। আর সরকারী দল ও দলের সমর্থকরাইতো সরকার। তাই সব দোষ জনঘোষ!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.