নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাদক নিয়ে মাতামাতি ক্রস ফায়ারে হাতাহাতি

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৩১

চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে। স্লোগানটা দারুন। এমন স্লোগান সবসময় আসে না। সম্প্রতি স্লোগানটি সামনে এসেছে। সরকার বাহাদুর চরম ক্ষেপেছে। এবার মাদক নির্মূল করেই ছাড়বে। খুবই ভালো কথা। নির্মূল অভিযানের সহজ পথ নির্ধারণ করেছে ক্রস ফায়ারে মাদক ব্যবসায়ী হত্যা। এই নির্মূল কৌশল আর বিচার বহির্ভূত হত্যা নিয়ে চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। কেউ সমর্থন দিচ্ছে নির্লজ্জ ভাবে, কেউবা আড়ালে আবডালে। আবার কেউ সমালোচনা করছে খোলামেলা, কেউবা কৌশলে। কেউ দোষ দিচ্ছে বিচার বিভাগকে, কেউ দোষ দিচ্ছে আইনজীবীদের, কেউ দোষ দেয় সরকারের, কেউ প্রশাসনকে, কেউ কেউ সমাজ ব্যবস্থাকে। আসলে এর জন্য কে প্রকৃত দায়ী? কেনইবা এমন একটি ক্যান্সার নির্মূল পদ্ধতি প্রশ্নবিদ্ধ?
শুরুতেই একটু ঝালাই করে নেই মাদক দ্রব্য এবং মাদকাসক্তি কি? মাদক দ্রব্য হলো একটি রাসায়নিক দ্রব্য যা গ্রহণে মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়ে এবং যা আসক্তি সৃষ্টি করে। মাদক দ্রব্যে বেদনানাশক কর্মের সাথে যুক্ত থাকে তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক আচ্ছন্নতা, রক্তচাপ পরিবর্তন ইত্যাদি। মাদক দ্রব্য গ্রহণ করলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে এবং দ্রব্যের উপর নির্ভরশীলতা সৃষ্টির পাশাপাশি দ্রব্যটি গ্রহণের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকে ব্যক্তির এই অবস্থাকে বলে মাদকাসক্তি এবং যে গ্রহণ করে তাকে বলে মাদকাসক্ত।
বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্যঃ মাদক দ্রব্য আসলে কি কি সেটার নির্দিষ্ট সংখ্যা বা নাম বলা সম্ভব নয়। মানুষ নেশার জন্য যা ব্যবহার করে তাই মাদক দ্রব্য। সেটি হতে পারে ইনজেকশন, ধূমপান বা যে কোন মাধ্যম।
বিভিন্ন ধরণের মাদক দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে হিরোইন, কোকেন, ইয়াবা, আফিম, মারিজুয়ানা, গাজা, ফেনসিডিল, বিয়ার, কেটামিন, স্পিড, বিভিন্ন রকমের ঘুমের ওষুধ থেকে শুরু করে জুতায় ব্যবহৃত আঠা পর্যন্ত। অনেকে বিভিন্ন ধরণের এনার্জি ড্রিংকসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নেশা করে থাকে। বিভিন্ন ধরণের মাদক গ্রহণের ফলে মানুষের শরীর ও মনের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়।
মাদক দেহে ও মস্তিষ্কে কীভাবে কাজ করে? নিওরো কেমিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাদক সেবনের পরপরই ব্যক্তির মস্তিষ্কের কিছু কিছু জায়গায় অতি দ্রুত এবং বেশি পরিমাণে ডোপামিন নামক নিওরোট্রান্সমিটার বৃদ্ধি পায়, যা একজন ব্যক্তিকে মাদকের আনন্দ দেয় এবং পরবর্তী কালে ব্যবহারে উৎসাহিত করে। কিন্তু যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদকে আসক্ত তাদের বেলায় আবার উল্টোটা দেখা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘদিন মাদক নেয়ার ফলে যে ডোপামিন একজন মানুষকে নেশার আনন্দ দিত তা আস্তে আস্তে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। প্রকৃতপক্ষে দেখা যাচ্ছে, মাদকাসক্ত ব্যক্তি আসলে একটা সময়ে আর আনন্দের জন্য নেশা নিচ্ছে না। এটা তার অভ্যাসে পরিণত হয় এবং এটা থেকে একসময় বের হয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রথম পর্যায়ে মাদক মানুষকে এমন একটি আনন্দ দেয় যার কাছে মজাদার জিনিসগুলো যেমন খাদ্য, পানীয় এবং যৌন মিলনের আনন্দের মত আনন্দের জিনিসগুলো ম্লান হয়ে পড়ে। কারণ এই ছোট ছোট আনন্দগুলো মানুষ একই নিওরোট্রান্সমিটার অর্থাৎ ডোপামিন এর মাধ্যমে পেয়ে থাকে। মাদকের আনন্দের সাথে পাল্লা দিয়ে এই আনন্দগুলো কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে এবং মাদকই হয়ে পড়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তির একমাত্র চিন্তা চেতনা। দীর্ঘদিন মাদক ব্যবহারকারীদের ডোপামিন এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের যে সমস্ত জায়গা ডোপামিন এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করে থাকে সেই জায়গাগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
মাদক গ্রহণের পরিমাণের ভিন্নতার কারণে দেহে ও মস্তিষ্কে এর প্রভাব ভিন্ন হয়। খুব অল্প পরিমাণে মাদক উদ্দীপক বস্তু হিসেবে কাজ করে। বেশি পরিমাণে মাদক গ্রহণ করা হলে তা যন্ত্রণাদায়ক হিসেবে কাজ করে। বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হলে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে যার পরিণতি হয় মৃত্যু।
কিছু কিছু মাদক দ্রব্য সরাসরি মনকে আক্রমণ করে। এতে করে মাদক গ্রহণকারী তার চারপাশে কি ঘটছে তার উপলব্ধি হারিয়ে ফেলে। মাদক একজন ব্যক্তির সকল ইন্দ্রীয় চেতনাকে সম্পর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়। যার ফলে ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করতে পারেনা। তার চিন্তাধারা নেতিবাচক হয়ে পড়ে।
মাদক সম্পর্কে সংক্ষেপে দেয়া তথ্যই বলে দেয় এর প্রভাব ও ক্ষতিকর দিক। তাহলে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা অনিবার্য বটে। কিন্তু পদ্ধতির কারনে এবং পদক্ষেপ গ্রহণের হঠাৎ আগ্রহের কারনেই আজকের এই প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া। মাদক নেয়া শুরু করলে কাজ করে আস্তে আস্তে। একপর্যায়ে আর কোন কাজই করে না শুধু একটা কাজই করে তা হলো মাদক নিতে হবে এই চেতনাটা জাগ্রত থাকে। দেশে মাদকের প্রভাবের মত একদিনে মাদক বিস্তার ঘটেনি। আস্তে আস্তে ঘটেছে এবং আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। হঠাৎ করে যেমন মাদক ত্যাগ করা যায় না। তেমনি হঠাৎ করে রাত শেষে মাদক নির্মূল হবে না। তাই নির্মূল পদ্ধতিটা এত দেরিতে শুরু করাটাই হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।
বাংলাদেশে র‌্যাব সৃষ্টির পিছনে রয়েছে সুবিশাল ইতিহাস যা আমাদের সবারই কম বেশি জানা। একসময় দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী এমন হারে বৃদ্ধি পেয়েছিলো যে মদদ দাতা, নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থাই বিরক্ত হয়ে পড়েছিলো। সন্ত্রাস যখন ঘারের উপর নিঃস্বাস ছাড়তে শুরু করে তখনই সৃষ্টির তাগিদ অনুভব করেছিলো আমাদের নীতিনির্ধারক কর্তাব্যক্তিরা। এর পর সবই ইতিহাস। র‌্যাব কালো পোষাক পড়ে মাথায় কালো কাপড় বেধে কালো চশমায় চোখ আবৃত করে নেমে পড়ে সন্ত্রাস দমনে। প্রথম প্রথম নামী দামী দাগী সন্ত্রাসী ধরা শুরু করে এবং কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যাযজ্ঞ চালায়। হত্যার পর একটা নির্দিষ্ট ফরমেটে প্রেস রিলিজ দিয়ে জানান দেয় যে, অমুক সন্ত্রাসীকে ধরার পর কখনো ক্যাম্পে আনার সময় আবার কখনো অস্ত্র উদ্ধারের সময় তার সহযোগীরা বা প্রতিপক্ষরা হামলা চালায় এবং সন্ত্রাসীকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। পরে সন্ত্রাসীদের গুলিতেই সন্ত্রাসী নিহত হয়। নিহত হওয়ার সময় তার পাশেই পাওয়া যায় কখনো কেজো কখনো অকেজো দেশীয় বা বিদেশী অস্ত্র ও কিছু গুলি।
র‌্যাব বাহীনি যখন সন্ত্রাসী মারতে শুরু করে তখনও অনেকেই বেশ উচ্ছাস প্রকাশ করেছিলো আবার অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে। ঘটনাটা যেহেতু বিচার বহির্ভূত হত্যা তাই বেশিরভাগ মানুষই সেই হত্যাযজ্ঞ মেনে নিতে পারেনি। তবে ফলাফল যা হয়েছে তা হলো, দেশে নামী দামী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ কমেছে, শান্তি ফিরেছে অনেকাংশে। আজ আর সেই কালা জাহাঙ্গীর, মুরগি মিলন, হাতকাটা মফিজ, গালকাটা কুদ্দুছ নাই। আর নতুন কোন পিচ্চি হান্নান, কষাই খালেক, বিচ্ছু বাহীনি সৃষ্টি হয়নি।
সন্ত্রাসী নির্মূল করতে করতে একসময় র‌্যাব খেই হারিয়ে ফেলে। সন্ত্রাসীর নামে নেমে পড়ে দমন নিপীড়নের দিকে। টাকার বিনিময়ে শুরু করে সাধারণ মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাসী বলে চালিয়ে দেয়া এবং সেই প্রেসরিলিজ দেয়া। এর পর লাগাম টেনে ধরার জন্য সমাজের বিবেক আওয়াজ তুলে। তার পর সরকারও র‌্যাবের লাগাম টানতে বাধ্য হয়। কোন কিছুই বেশি বাড়াবাড়ি ভালো নয়। সন্ত্রাসের বাড়াবাড়ি যেমন ভালো নয় তেমনি সন্ত্রাস নিধনের নামে সাধারণ নিরপরাধ মানুষ মারাও ভালো নয়।
দেশে মাদক ব্যবসা ও ব্যবহার বেড়েছে ভয়াবহ হারে। দীর্ঘ ডালপালা বৃদ্ধির পর মানুষ যখন অতিষ্ট তখনই রাষ্ট্রযন্ত্র নড়েচড়ে বসেছে। ঘোষণা করেছে যুদ্ধ। সপ্তাহের মধ্যে যখন অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয় তখন সবাই নড়েচড়ে বসছেন। সভা সেমিনার করে প্রতিবাদ করছে এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে। আজকের এই মাদক বিরোধী অভিযান কয়েকদিনের মধ্যেই হয়ে যাবে অনেক অসহায় পরিবারের কান্নার কারন। যেভাবে সন্ত্রাস দমন অভিযান হয়েছিলো। তাই মানবাধিকার কর্মী, বিরোধী মতের মানুষ সকলের কাছে এতটা উদ্ব্যেগের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। শুরু হয়েছে মাদক নিয়ে মাতামাতি আর ধরপাকড়ের সময়, ক্রসফায়ারের সময় হাতাহাতি!
মাদক ব্যবসায়ী হত্যার কারনে আরো একটা প্রশ্ন উঠে এসেছে তা হলো, এভাবে ব্যবসায়ী নিধণ করলে মূল হোতাদের ধরা যাবে না। এসব ব্যবসায়ীদের যদি বাঁচিয়ে রেখে তাদের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে মূলে পৌছানো যেতো তবেই মূল উৎপাটন সম্ভব হতো। প্রমান না থাকলেও আমরা যাদের প্রভাবশালী মাদক স¤্রাট বলে জানি তাদের তো ধরা সম্ভব হচ্ছে না বা হবেও না। তারা তো পৌছে গেছে সমাজ হতে সংসদে! তারা কেউ সিআইপি, কেউ ভিআইপি, কেউ নেতা, কেউ অভিনেতা, কেউ পরিচালক, কেউ প্রযোজক। মাদক ব্যবসায়ী ধরার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচু সারির কর্তা ব্যক্তিদের ফোনে ছেড়ে দেয়ার কথাও আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি কিন্তু এর তো কোন প্রমান নেই। অনেক পুলিশের সদস্য মাদক পাচারের কাজ করে, প্রশাসনের অনেক লোক মাদক সেবন ও কেনা বেচার সাথে জড়িত, পুলিশ মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে বখড়া তোলে এসবের কোন প্রমান নেই। প্রমানের অভাবে কর্তাদের যেমন ধরা যায় না তেমনি প্রমানের অভাবে কিছু লোক ধরার পরও তাদের আটক রাখা যায় না। তখন দোষ দেয়া হয় বিচার বিভাগকে, আর বিচার বিভাগসহ অন্যরা দোষ দেয় আইনজীবীদের। অথচ এমন ঘটনাও আছে যে, ইয়াবা তো দুরের কথা যে বৃদ্ধ মায়াবড়ি চিনে না তাকেও পুলিশ ইয়াবা দিয়ে চালান দেয়। এমন দোকনদার আছে যে কিনা মাদকের সাথে জড়িত নয় কিন্তু মামাতো ভাইয়ের সাথে জমি নিয়ে বিরোধের কারনে ডিবিকে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে দোকানে ইয়াবা রেখে ধরার চেষ্টা করে এবং ধরিয়ে দেয়। এমন নিরপরাধ ব্যক্তির জন্য যদি আইনজীবীরা না দাড়ায় তবে কারা দাড়াবে? আর আইনজীবীরা তো আইনের চর্চা করে। কোন অপরাধির পক্ষে দাড়ানো যাবে না এমন তো কোন বিধান নেই। অপরাধি যাতে তার অপরাধের বেশি শাস্তি না পায় সেই চেষ্টাই আইনজীবী করেন। সেখানে প্রণিত আইনের মধ্যে থেকেই আইনজীবী কাজটা করে থাকেন। প্রসিকিউশন কেন বার বার প্রমানে ব্যর্থ হন সেই কথা কেউ বলে না।
সব শেষে একটা কথা বলেই শেষ করবো তা হলো, মাদক নির্মূল যুদ্ধ ঘোষণা করে শেষ করা যাবে না। জনসচেতনতা, পারিবারিক বন্ধন, প্রসিকিউশনের যথাযথ পদক্ষেপ, পুলিশের সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ ও আন্তরিক নজরদারীই পারে মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৩

কাইকর বলেছেন: সুন্দর পোস্ট +।প্রথম কমেন্ট টা করে নিলাম।এখন পড়বো

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৫৯

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য এক মন্তব্য করার জন্য।

২| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


যেসব ডিলার এমপি বদি থেকে নিযুক্তি পায়নি, তাদের ব্যবসা শেষ!

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০০

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: তাই মনে হচ্ছে ভাই

৩| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:

সোনায় সোহাগা = ইয়াবা বাবা + ফাটা কেস্টো = ২০৪১ সালের স্বপ্ন।

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০১

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: মন্দ চিন্তা নিপাত যাক

৪| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৪২

স্ব বর্ন বলেছেন: পালের গোদা তো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে চুনোপুঁটিদের মেরে লাভ হবে না।পালের গোদাদের উপ্রে ফেলতে পারলে তবেই কিনা মুক্তি মিলবে এমন ভয়াবহ অবস্থা থেকে।

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০১

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ। সরকারের সুভবুদ্ধির উদয় হোক

৫| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ২:২৪

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: মাদক ব্যবসায়ীদের ক্রস ফায়ারে দেওয়াটা একদিক থেকে ঠিকই আছে। সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর শেষ পদক্ষেপ হলো ক্রসফায়ার। তবে চুঁনোপুটি দিয়ে শুরু না করে রাঘব বোয়াল আর গড ফাদারদের দিয়ে শুরু করলে ভালো হতো। কিন্তু তা হয়নি। তার মানে বুঝা গেলো যে রাঘব বোয়ালদের ধরার ক্ষমতা সরকারেরও নেই।

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৩

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: যেহেতু রাঘব বোয়ালরা ধরাছোয়ার বাইরে তাই চুনোপুটিদের ক্রসফায়ারে দেয়া মনেই অনৈতিক। ক্রস ফায়ার সমাধান হতে পারে না। এতে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। দশ বিশ লাখ ধরিয়ে দিলে আপনিও হতে পারেন ক্রসফায়ারের শিকার।

৬| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ২:৩৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ২/১ টা বড় ব্যবসায়ীকে মারলে এই সমালোচনা উঠত না...

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৪

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: মেরে সমাধান হবে না। বিচারের আওতায় আনতে হবে, সেটা আন্তরিক ভাবে, চক্রান্তমূলক নয়

৭| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:
যেসব ডিলার এমপি বদি থেকে নিযুক্তি পায়নি, তাদের ব্যবসা শেষ!

সহমত।

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৪

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: তাই মনে হচ্ছে ভাই

৮| ২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪

মো: মাসুদ রানা (এম আর) বলেছেন: যেসব ডিলার এমপি বদি থেকে নিযুক্তি পায়নি, তাদের ব্যবসা শেষ!

সহমত চাঁদগাজী ভাইয়ের সাথে।

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৫

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: তাই মনে হচ্ছে ভাই

৯| ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ২:৪৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: তাহলে বদির বেয়াই মরল কেন?

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৫

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ডালপালা ভেঙ্গেছে, গাছ তো ঠিক আছে। গাছ থাকলে ডালপালা গজাবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.