নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচার বিভাগ ও চিকিৎসা দু’ই আস্থার জায়গা ॥ বিতর্ক করলে আমাদেরই ক্ষতি

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:০৮

গত ৩০ জুন ২০১৮ তারিখে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম একটি সংবাদ প্রচার করে যার শিরনাম ‘চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ’। সংবাদটি প্রকাশের আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকটা ভাইরাল হয়ে যায়। একটি মাসুম শিশুর সাথে তার বাবার ছবি এবং পরবর্তীতে বাবার কোলে কাফনে মোড়া সেই মাসুম শিশু, কি হৃদয় বিদারক চিত্র সেটা ভাবা যায়? প্রবাদেই আছে, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভাড়ি বস্তু পিতার কাধে সন্তানের লাশ।’ তাই ছবি দেখে সকলেরই হৃদয় ভেঙ্গে চৌচির। এ মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদ, মানব বন্ধন, চিকিৎসক আটক করে কি হয়েছে? শুধু আস্থার জায়গায় ভাঙ্গন ধরেছে মাত্র। আস্থার জায়গা নিয়ে বিতর্ক করলে ক্ষতি হবে আমাদেরই।

বিচার বিভাগ ও চিকিৎসা সেবা দুটি স্পর্শকাতর বিষয়। দুটির উপরই আমাদের আস্থা রাখতে হয়। আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজে কর্মে যদি ক্ষুব্ধ হই, ক্ষতিগ্রস্থ হই তবে ছুটে যাই বিচার বিভাগের কাছে। আদালতে গিয়ে মামলা করি, বিচার চাই এবং বিচার পাই। বিচার কখনো কখনো কারো পছন্দ হয় আবার কারো পছন্দ হয় না। যার পক্ষে যায় বা পছন্দ হয় সে বলে ন্যায় বিচার পেয়েছি আর যার বিপক্ষে যায় বা পছন্দ হয় না সে বলে আমি ন্যায় বিচার পাইনি। ন্যায় বিচার পাইনি মনে হলে আবার সেই বিচারকের দাড়ে কড়া নাড়ি, উচ্চ আদালতে যাই, আপীল করি, রিভিশন করি, রিভিউ করি। আস্থার জায়গা বলেই না বার বার যাই, বার বার যেতে হয়।

অপর দিকে আমরা শারীরিক কোন সমস্যা হলেই চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাই। চিকিৎসকরা আমাদের চিকিৎসা করেন, কখনো ভালো হই, কখনো হই না। ভালো না হলে আমরা আরো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। চিকিৎসকরা তাদের মেধা, জ্ঞান উজার করে দিয়েই আমাদের জন্য লড়ে। কোন চিকিৎসকই চায় না তার রোগি ‘ভালো না হোক’। এটাও আমাদের একটা আস্থার জায়গা। আমাদের এই আস্থার জায়গাগুলোতে বার বার যেতে হয়। আস্থা হারালে আর কারো ক্ষতি না হলেও ক্ষতি হবে আমাদেরই। তাই আস্থার জায়গাগুলোকে ঢালাওভাবে কালিমা লেপন করে নষ্ট করা ঠিক না।

সংবাদটিতে লেখা ছিলো-‘চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় আড়াই বছর বয়েসী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ম্যাক্স হাসপাতালে শুক্রবার গভীর রাতে শিশুটি মারা যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সকে পুলিশ ধরে থানায় নিলেও পরে ছেড়ে দেয়। শিশুটির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মারা যাওয়া শিশু রাইফা দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের মেয়ে।
রুবেল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা করায় রাইফা খাওয়া বন্ধ করে দিলে বৃহস্পতিবার বিকালে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। ওই রাতে রাইফাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে সে অস্বস্তি বোধ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা শিশু বিশেষজ্ঞকে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান বড়ুয়াও একই ধরনের ওষুধ দেন জানিয়ে রুবেল বলেন, রাতে ওই ওষুধ দেওয়ার পর থেকে রাইফার খিঁচুনি শুরু হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসককে জানালে তিনি ডা. বিধান বড়ুয়ার সাথে কথা বলে ‘সেডিল’ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর রাইফা নিস্তেজ হয়ে যায়।
রুবেল খানের মেয়ের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে রাতেই ম্যক্স হাসপাতালে ছুটে যান সাংবাদিকরা। তাদের প্রতিবাদের মুখে পুলিশ গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতে কয়েকজন সহযোগী নিয়ে থানায় উপস্থিত হন চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ’র চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল। এরপর ভোরে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর আটক চিকিৎসক ও নার্সকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়েনের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাংবাদিক, বিএমএ ও পুলিশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে বিএমএ প্রতিনিধি, সিইউজে প্রতিনিধি, বিএমএ ও সিইউজে’র পক্ষ থেকে একজন করে শিশু বিশেষজ্ঞ থাকবেন। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে জানিয়ে হাসান ফেরদৌস বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিশুটির মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে তদন্তের মাধ্যমে ‘দোষী’ ব্যক্তিদের শাস্তি চেয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা। বিএমএ নেতা ফয়সাল ইকবালের আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

আমার পরিবারে সাড়ে তিন বছরের একটি কন্যা শিশু আছে। ও আমার অত্যন্ত আদরের সন্তান। আমি জানি সন্তানের প্রতি প্রতিটি মানুষের মমত্ববোধ ও ভালোবাসা কতটা গভীর হয়। প্রধান মন্ত্রীর সন্তান হোক আর সাংবাদিক রুবেলের সন্তান, চিকিৎসকের সন্তান হোক আর দিন মজুরের সন্তান, আইনজীবীর সন্তান হোক আর বিচারকের সন্তান সকল পিতা-মাতার কাছেই যার যার সন্তানের গুরুত্ব সমান। যে কোন মানুষ মারা গেলেই মানুষের হৃদয় কাদে, তা যদি হয় ফুটফুটে শিশু তাহলে তো কথাই নেই। তাই সাংবাদিক রুবেলের কন্যা রাইফার মৃত্যু সকলকে কাদিয়েছে। সাংবাদিক রুবেলের কন্যার মৃত্যুতে আমাদের সমবেদনা আছে। কিন্তু সাংবাদিক রুবেলের কন্যা কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় মারা যায়নি। সে কোন সন্ত্রাসীর গুলিতে মারা যায়নি অথবা মারা যায়নি কোন দুর্ঘটনায়। সে মারা গেছে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। আর পৃথিবীর কোন চিকিৎসকই চায় না তার রোগি মারা যাক। চিকিৎসাবস্থায় রোগির মৃত্যু হতেই পারে। কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ আনাটা কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে আমার বোধগম্য নয়।

আমি দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলাম। দেশের প্রধান দুইটি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও কালের কন্ঠ পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সাংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় তা পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বার বার শিখিয়েছে। কোন কাজকে ভুল বলতে চাইলে ঐ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়েই একমাত্র বলা যাবে যে কাজটা ভুল হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক রুবেলের কন্যা একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, ঐ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা পদ্ধতি ভুল ছিলো এমন মতামত ঐ চিকিৎসকের চেয়ে বড় কোন বিশেষজ্ঞর মন্তব্য সংবাদে সন্নিবেশ করা হয়নি যা সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতার সাথে বেমানান।

‘রুবেল খান বলেছেন, ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা করায় রাইফা খাওয়া বন্ধ করে দিলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই রাতে রাইফাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে সে অস্বস্তি বোধ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা শিশু বিশেষজ্ঞকে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান বড়ুয়াও একই ধরনের ওষুধ দেন জানিয়ে রুবেল বলেন, রাতে ওই ওষুধ দেওয়ার পর থেকে রাইফার খিঁচুনি শুরু হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসককে জানালে তিনি ডা. বিধান বড়ুয়ার সাথে কথা বলে ‘সেডিল’ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর রাইফা নিস্তেজ হয়ে যায়।’

ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারনে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া এবং সেডিল ইনজেকশন দেওয়া ঠিক হয়েছে না ভুল হয়েছে সেটা সাংবাদিক বা উকিলের বা ব্যবসায়ীর পক্ষে কি নিরুপন করা সম্ভব। এটা ভুল না সঠিক হয়েছে তা বলার মত একমাত্র অথরিটি আরেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া আর কেউ হতে পারে কি?

একটা ব্যক্তিগত বিষয় একটু শেয়ার করি। আমার বন্ধু শিশু বিশেষজ্ঞ। আমার মেয়ে জন্ম নেয়ার পূর্ব হইতে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার কথার বাইরে একফোটা পানিও না খাওয়াতে চেষ্টা করি। কাল মেয়ের কানের ব্যাথার কারনে তাকে ফোন দিলে আমাকে একটা অ্যান্টিবায়োটিক আর নাকের ড্রপ নেয়ার পরামর্শ দেন আর যদি ব্যাথা বেশি মাত্রায় হয় তবে ব্যাথার সাপোজিটরি নিয়ে রাখতে বললো।

আমরা সাধারণভাবে জানি, সর্দির কারনে নাক যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং স্মাস প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় তবে নাকে ড্রপ দিতে হয়। আর ঠান্ডা জনিত জর হলে যদি নাপা খাওয়ানোর পরেও সুস্থ না হলে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। আমার মেয়ের হয়েছে কানের ব্যাথা। তাকে যে ঔষধ দেয়া হয়েছে আমি বিনা বাক্য ব্যায়ে বাজার থেকে কিনে নিয়ে ব্যবহার করা শুরু করছি এবং যথাযথ ফল পেয়েছি। নাকের ড্রপ দেওয়ার পর পরই মেয়েতো উপর্যুপরি বমি এবং কান্না করা শুরু করে দিয়েছে। এখন আমি কি আমার ডাক্তারকে বলবো যে সে ভুল চিকিৎসা দিয়েছে, কানে ব্যাথা হয়েছে, কানের তো কোন ঔষধ দিলো না! সর্দি হয় নাই, নাক বন্ধ হয় নাই অথচ নাকের ড্রপ দিলো কেন? আমাদের পক্ষে কি জানা সম্ভব যে চিকিৎসাটা ভুল না সঠিক? এটা হলো আস্থার জায়গা। ডাক্তারের উপর আস্থা রাখতে হবে, রেখেছি, রাখি এবং রাখবো।

চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএর চট্রোগ্রামের এক নেতা নাকি হুমকি দিয়েছে যে ‘সাংবাদিকদের এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের চিকিৎসা করবেন না’। পরবর্তীতে ঐ চিকিৎসকের ফেসবুক থেকে জেনেছি যে তিনি ঐ কথা বলেনি। তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম সে বলেছে। যদি বলে থাকে তবে কি দাড়ালো? আস্থার জায়গায় চির ধরানো হলো। এখন সাংবাদিকরা কোথায় যাবে? তারা কি উকিলদের কাছে চিকিৎসার জন্য যাবে না সাংবাদিকদের কাছে, তারা কি ব্যাংকারদের কাছে যাবে না ব্যবসায়ীদের কাছে? আমাদের চিকিৎসকদের কাছেই যেতে হবে। তদন্ত কমিটি হয়েছে, সেখানেও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শিশু বিশেষজ্ঞ দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তাহলে বিষয়টা কি হলো? সেই চিকিৎসকেরই স্মরনাপন্ন হতে হলো। তাই আস্থার জায়গা নষ্ট করতে নেই।

রুবেলের প্রতি গভীর সমবেদনা ও রাইফার জন্য ভালোবাসা জানিয়েই একটা কথা বলছি। প্রতিদিন কতইনা শিশু মারা যাচ্ছে। কয়টা শিশু মৃত্যু নিয়ে সাংবাদিকগণ মানব বন্ধন করেন? কয়টা শিশু মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল ঘেরাও করে চিকিৎসক আটক করান? কয়টা শিশু মৃত্যুর জন্য প্রতিবাদ সমাবেশ, মানব বন্ধন, মামলা হামলা, তদন্ত কমিটি গঠনে চাপ প্রয়োগ করেন? নিজ পেশার স্বজন মারা যাওয়ায় এসব করে আস্থার জায়গা নষ্ট করা কি ঠিক হবে? আমাদের কিন্তু ঐ জায়গাগুলোতেই যেতে হবে বার বার, তাই আস্থার জায়গাগুলো নষ্ট করা ঠিক হবে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:০৬

রাকু হাসান বলেছেন: সহমত.....আস্থার জায়গায় আস্থা হারানো যাবে না , তেমনি আস্থা না হারানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু করা উচিত, একটু ভেতরের খবর বললেন ,

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:২৫

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই লেখাটা পড়ার জন্য। আস্থার জায়গাগুলো যাতে ঠিক থাকে সেদিকে নজর দেয়া উচিত।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সাথে পুরোপুরি সহমত হতে পারলাম না।

ডাক্তারদের অনেক দোষ আছে। বিশ্বাস করুন তাদের দায়িত্ব অবহেলার উদাহরন আছে।
তারা মানূষের সেবা করার জন্য এ পেশা বেছে নিয়ে কেন রোগীদের অবহেলা করে।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৫০

গরল বলেছেন: যে দেশে প্রধানমণ্ত্রীর উপর কেউ আস্থা রাখতে পারে না সে দেশের কারো উপরই আর আস্থা থাকার কথা না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.