নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেজবুকে আমি https://www.facebook.com/pk.galib.1

লেজ কাটা বাঘ

লেজ কাটা বাঘ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুইসাইড নোট - ১ম পর্ব

১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪০

আমার বয়স যখন উনিশ ছিল তখন প্রিয়তমার সাথে সম্পর্কের জের ধরে একবার সুইসাইড এর সিদ্ধান্ত নিলাম। এর আগেও কয়েক বার এমন করেছি কিন্তু সেগুলা শুধু মুখেই সীমাবদ্ধ ছিল।

ভাই থেকে কৌশলে পটাশিয়াম সাইনাইড নিয়ে বাসায় ফিরছি! আজই আমার লাইফে শেষ দিন হতে যাচ্ছে। রোমাঞ্চিত নাকি ভীত বুঝতে পারছি না! বাসায় ফিরে রুমের দরজা বন্ধ করলাম। ফোন বন্ধ করে নোট লেখা শুরু করেছি। "চলে যাচ্ছি আমি, আজ আমার গন্তব্য এমন এক যায়গা যেখান থেকে কেউ - - - - -", হালকা ভয় লাগা শুরু হয়েছে। কেন যেন ভাবছি, হয়ত কোন ভাবে কোন ঘটনা ঘটবে আর আমার সুইসাইড করা হবে না।

নোট লেখা শেষ। অনুভুতি মাটিচাপা দিয়েছি। আর অল্প কিছুক্ষন। তার পর সব শেষ। রিভিউ করছি।মনে পড়ল একজন কে ফোন করা বাকী আছে। আরও অনেক কিছু বাকী আছে কিন্তু এটাই কিরার প্রয়োজন মনে হল। হয়ত এভাবে বেচে যাব তাই। ফোন করলাম। ভদ্র-লোক ফোন ধরে বললেন, আমি কিছু বলতে চাই, আমি জানি আপনি অনেক ব্যাস্ত কিন্তু একজন মৃত্যুপথ যাত্রীর শেষ আবদার আপনার রাখা উচিত। ফোন কেটে দিলাম। আবেগী হওয়া যাবে না। সায়ানাইড আমার হাতে, সুইসাইড নোট রিভিউ করছি। একটি সহজ শব্দ পাচবার ভুল হয়েছে। ভুল হয়েছে সেটা চিন্তার বিষয় নয় কেননা সব কিছু আমার কাছে এখন তুচ্ছ । পার্থিব সব কিছু নগন্য । ঝিম মেরে বসে আছি কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না ।

মাথায় হঠাত ই নানান চিন্তা ঘুরছে । বেচে থাকার জন্য নয় , কারও জন্যও নয় । কিসের জন্য বুঝতেছি না । মনে হচ্ছে আমার লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছি । আচ্ছা, যাকে ফোন দিয়েছিলাম সেও তো মারা যাবে । এক সাথে মারা গেলে কেমন হয় । রিক্সা ধরে তার বাসায় গেলাম । বাসা বন্ধ । তালার সাথে ছোট্ট একটা কাগজ । ডেড বডি রেল্লাইনে খুজে দেখবেন । আমি রুদ্ধস্বাসে রেল ক্রসিং এর দিকে । প্রথম বারের মত নিজের মৃত্যুর চিন্তার বাইরে কিছু চিন্তা করছি ।

রেল আসে নি । হয়ত এটাও ভাগ্য । ভদ্র-লোকের বয়স ৩০-৩২ হবে হয়ত । লাইনের পাশে একটা মরা গাছের উপর বসে কথা বলছি । ২৪ বছর বয়সে তিনি লেখা পড়া শেষ করে চাকরীর চেষ্টা করা শুরু করেছেন । গত ৮ বছরে ২০০ এর উপর ইন্টারভিউ দিয়েছেন । সব যায়গা অযগ্য ছিল এমন নয় কিন্তু যগ্য যায়গা গুলাতে মামা ছিল না । কোথাও বা ভাগ্য ছিল না ।

আমার লজ্জা লাগছে । সায়ানায়িড পকেটে লুকিয়ে রেখেছি । উনার দিকে তাকিয়ে কথা শুনছি । উনি বলেই যাচ্ছেন । লম্বা গল্প । সব শুধু হারানোর গল্প । কি হারায় নি জীবনে । এর পর উনি বাচতে চেয়েছেন । আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি সুইসাইড নোট লিখেছেন ।

উনি হঠাত ই আকাশ বাতাস কাপিয়ে অট্ট হাসিতে ভেজ্ঞে পড়ল । চার দিকে লোকজন না থাকায় কেউ ভিড় করল না । উনি আবার বলতে শুরু করলেন । সুইসাইড নোট এর কথা ...

চলবে । একটি বাস্তব গল্প অবলম্বনে লেখা :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.