নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asadali.ht

মোহাম্মদ আসাদ আলী

সাংবাদিক

মোহাম্মদ আসাদ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম ও মৌলবাদ

১৭ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

‘মৌলবাদী’ শব্দটি আজকাল মুসলিমদের বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও শব্দটির উৎপত্তি হয়েছিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের গোড়ামীর পরিভাষা হিসেবে। সেই গোড়ামী’র তকমা এখন মুসলিম জাতির গায়ে। অনেকে বলেন এটা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছে। মুসলিমদেরকে মৌলবাদী বলে পরিচিত করতে পারলে তাদের উপর নির্যাতন করার রাস্তা প্রশস্ত হয়, সে কারণেই এই অপপ্রচার। কিন্তু এ কথায় আমার আপত্তি আছে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যে হচ্ছে না তা নয়। কিন্তু মৌলবাদী তকমাটি মুসলিমদের ঘাড়ে চেপেছে শুধুই বাহ্যিক ষড়যন্ত্রের বলে নয়, অভ্যন্তরীণ দৈন্যতাও তার জন্য দায়ী। মৌলবাদী শব্দটির ব্যবহার যে অর্থে হয়, অর্থাৎ যৌক্তিক পরিবর্তনকে স্বীকার না করে, জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে প্রাচীন অন্ধ-বিশ্বাসকেই জোর করে সমাজের উপর প্রয়োগ করা, সেটা এই মুসলিম জাতির মধ্যেও উপস্থিত আছে এবং ভালোভাবেই আছে। এটা টিকিয়ে রাখছে কথিত আলেম, মাওলানা, ওয়ায়েজ, পীর সাহেবরা।
সাধারণ মানুষ মৌলবাদী এই অর্থে যে, তারা অধিকাংশ নিজেরা নিজেদের মতো ধর্মকে উপলব্ধি না করে সম্পূর্ণভাবে আলেম-মাওলানা বলে পরিচিত শ্রেণিটির উপর নির্ভর করে। তাদের এই নির্ভরতার সুযোগ নিয়ে ওই শ্রেণিটি নির্বিঘেœ মৌলবাদী চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটায়। প্রতিদিন আলু-পটলের মতো তারা ধর্মকে কেনাবেচা করে। জাতিকে ঘোর অন্ধকারে ফেলে রেখে নিজেদের স্বার্থের বাতি জ্বালিয়ে রাখে। মৌলবাদের প্রথম শর্ত মোতাবেক এই ধর্মব্যবসায়ীরা সমালোচনাকে সর্বাধিক ভয় করে। যেমন ধরুন, কেউ যদি বলে ইসলামের কাজ করে যে কোনো প্রকার পার্থিব সুবিধা লাভ অন্যায্য, হারাম- এরা সাথে সাথে সেই ব্যক্তির কণ্ঠরোধ করার প্রচেষ্টা চালায়। এদের ব্রহ্মাস্ত্র হলো ফতোয়া। যা দিয়ে যাকে তাকে নাস্তিক, কাফের, মুরতাদ আখ্যা দেয়া যায়। এদের এই অস্ত্র এতটাই তীক্ষ ও কার্যকর যে, হেযবুত তওহীদ আন্দোলন সম্পর্কেও তারা কিছু সময়ের জন্য দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করে রাখতে সক্ষম হয়। পাশ্চাত্য বস্তুবাদী সভ্যতার বিরুদ্ধে আদর্শিকভাবে লড়াইরত হেযবুত তওহীদের সদস্যদেরকে যখন তারা খ্রিস্টান বলে সমাজে অপপ্রচার চালাতে পারে তখন খুব সাধারণ জ্ঞানেই এদের ফতোয়াশক্তির গভীরতা পরিমাপ করা যায়। মৌলবাদীরা চায় যে কোনো প্রকারে নিজেদের বিশ্বাস অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে। বিষয়টা এমন যে, তুমি বিশ্বাস করো আর না করো, তোমাকে এটা পালন করতেই হবে। এরা নিজেরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সংস্পর্শকে হারাম জ্ঞান করে দূরে তো থাকবেই, সঙ্গে জাতিটিকেও অজ্ঞতার অন্ধকারে নিপতিত করে। ইসলাম কোনো প্রাচীন, অসার, স্থিতিশীল ও নি¯প্রাণ ধর্মবিশ্বাস নয়। গতিই হচ্ছে ইসলামের প্রাণ। অথচ আজ সেই গতিকেই কিনা রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ইসলামকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে আরবীয় বেশ-ভুষা, কৃষ্টি-কালচার, ভাষা ও ব্যক্তিগত আচার-অনুষ্ঠানের ভেতরে। ১৪০০ বছর আগের গণ্ডি থেকে বের হয়ে ইসলাম যে আজকের একবিংশ শতাব্দীতেও স্বমহীমায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারে সে জ্ঞান এদের নেই, তেমন ইচ্ছাও নেই।
দুর্ভাগ্য আমাদের আজকের একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এই ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের উৎপাত স্বচক্ষে দেখতে হচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.