নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

না শিখে নয় বরং শিখেই সাংবাদিক হন (৫)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬

জসীম অসীম

বর্তমানে বিশ্বব্যাপীই সাহসী সাংবাদিকতার অভাব দেখা দিয়েছে। যেটুকু সাহসী সাংবাদিকতা রয়েছে, তার মূল্যায়ন আবশ্যক। কারণ সৎ এবং সাহসী সাংবাদিকতা আজ খুবই প্রয়োজন। একটি জাতির গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশে সৎ আর সাহসী সাংবাদিকতার বিকল্প খুব অল্পই রয়েছে। তাই দেশের মাটির জন্য যুদ্ধরত কোনো সৈনিকের চেয়ে, একজন সৎ আর সাহসী সাংবাদিকের অবদান কম হতে পারে না।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সমাজে আজ সৎ আর সাহসী সাংবাদিকতার বড়ই অভাব। এ অভাব শুধু সাংবাদিকতার ক্ষেত্রকেই দরিদ্র করছে না, অসুস্থতা আর অপুষ্টিতে ডুবিয়ে দিচ্ছে পুরো দেশকে, জাতিকে।

সারা পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত সাংবাদিকদের পূর্ণ স্বাধীনতা নেই। এমন কোনো দেশ পৃথিবী নামক এই গ্রহে আছে কি না সন্দেহ যে, যে দেশের মানুষ বুকে হাত রেখে বলতে পারবে, তাদের দেশের সংবাদপত্র বা সাংবাদিকতার অত্যাধুনিক মাধ্যমগুলোর ওপর কোন কালো হাতের আক্রমণ নেই।

বিগত সময়ে বাংলাদেশে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যম-রেডিও-টিভিতে সাংবাদিকতা চলতো না। চলতো বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব প্রচারনা। পৃথিবীব্যাপী অত্যাধুনিক ও ইলেক্ট্রনিক সাংবাদিকতার এ চূড়ান্ত সময়েও বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ মাধ্যমগুলো স্বার্থপর সরকারগুলোর কালো একনায়কতান্ত্রিক হাতে বন্দী থেকেছে। এ অবস্থা শুধু দুঃখনজকই নয়, এ আমাদের পুরো জাতির জন্য চরম লজ্জার এবং এ অবস্থা থেকে সরকারি গণমাধ্যম এখনও পরিত্রাণ পায়নি।

আমাদের সংবাদপত্রকেন্দ্রিক যে সাংবাদিকতা , সে সবের চরিত্র সরকারি চরিত্র থেকে ব্যতিক্রম হলেও, খুব একটা ব্যতিক্রম নয়। এসব মাধ্যম কেন্দ্রিক সাংবাদিকদের অনেকাংশই সততার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছেন। আর অনেকাংশ আছে যাদের মধ্যে সততার অভাব না থাকলেও সৎ সাহসের খুব অভাব আছে। তাই আমাদের বাস্তব জীবন রোগ, শোক, উদ্বেগ, দুঃখজনক পরিস্থিতি, রহস্য, অন্যায়-অবিচার, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বিস্ময়কর ঘটনা, মূল্যবোধকে বিপর্যস্ত করার মতো অসংখ্য অপরাধে ভরপুর থাকলেও অনেক সংবাদপত্রের পাতায় তা প্রায়ই অনুপস্থিত। তাদের দৃষ্টিতে সংবাদের সংজ্ঞা শুধুই উন্নয়ণ এবং তৈলমর্দন। যেখানে উন্নয়ণের আলো পড়ে না, সেখানে তাদের চোখও পড়েনা। আমাদের বাস্তব জীবনযাত্রা থেকে এসব সংবাদপত্রের অবস্থান অনেক অনেক দূরে। এসব পত্রিকায় কখনো কখনো লোকলজ্জার হাত থেকে মুক্তি পাবার লক্ষ্যে দুর্নীতির খবরাখবর ছাপা হয়েও থাকে, কিন্তু তা প্রয়োজন ও পরিমাণের তুলনায় অতি নগন্য। যা ছাপা না হলে দেশ-জনতার সামনে একবারেই মুখ দেখানো চলবে না, শুধুমাত্র সেটুকুই ছাপা হয়। তার অধিক প্রায় কখনোই নয়। আর আছে নিজেকে এবং সাংবাদিকতাকে ও নিজস্ব গণমাধ্যমকে বিক্রি করে ফেলার নেশা। টাকার লোভে আদর্শিক কিছুই আর বেঁচে থাকছে না। তাই বলা যায় প্রকৃত সাংবাদিকতাও আজ ক্রমাগত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানীর কাছে, কালো টাকার মালিকদের কাছে নিজেদের বিক্রি না করে কেউই আর যেন টিকে থাকতে পারছেন।

একটা কথা প্রচলিত আছে যে আমাদের এদেশে সংবাদপত্রের পাঠক খুবই কম। কিন্তু কম কেন? কারণ কি শুধুই অশিক্ষা, রুচিহীনতা কিংবা অর্থহীনতা? না। পাঠকদের চোখে সংবাদপত্রের দায়িত্বহীনতা ও আদর্শিক আকর্ষণহীনতাও তার একটি অন্যতম কারণ। উল্লেখ্য যে, এখানে শুধু রঙ বা ছাপা বা কলেবরের আকর্ষণের কথাই বলা হয়নি, বলা হয়েছে সততার প্রকাশসহ সংবাদ মাধ্যমের গুণগত আকর্ষণগুলোর কথা।

এ কথা ঠিক যে, আইন করে সংবাদপত্রের মুখ অনেকটাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও বলে দেওয়ার, দেখিয়ে দেওয়ার অনেক পথই সাংবাদিকদের জন্য খোলা রয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার মতো নয়। সাংবাদিকদের সৎ সাহস থাকলে, প্রতিটি দিনই সংবাদপত্রের পাতায় ছাপা হয়ে আসতো দেশের সমস্ত অনাচারের কথা। ক্ষমতার বিভিন্ন কেন্দ্রবিন্দুতে বসে নারী এবং শিশু পাচারের ব্যবসার অদৃশ্য তথ্যগুলো সংবাদপত্রের পাতায় জন্ম নেবার সুযোগ পেলে, সংবাদপত্র হতো প্রত্যেকটা মানুষের জন্য এক একটি সূর্য। চন্দ্র বিজয়ের কাহিনী ছাপার দিন বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের ওপর যেমন জনতার আকর্ষণ ছিল, তেমন আকর্ষণ থাকতো প্রায় প্রতিটি দিনই। কিন্তু হায়! তাদের অধিকাংশেরই যে সৎ সাহসের খুব অভাব। অথচ এটাও সত্য যে, তাদের দ্বারা এসব কাজগুলো সম্পাদন করা কখনোই অসম্ভব নয়। একই সঙ্গে এটাও উল্লেখ্য যে, পাঠকদের ধোঁকা দিয়ে পত্রিকা বিক্রি করে পয়সা কামানোর নেশায় অতিরঞ্জিত কিংবা গুজবধর্মী সংবাদ পরিবেশনের দৃশ্যও এখন আর বিরল নয়, অতীতেও বিরল ছিল না। সেটা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পর্যায়ভুক্ত নয়।

মানুষ নিজের সম্পর্কে জানতে-বুঝতে কিংবা দেখতে সব সময়ই খুব আগ্রহী। অথচ আমাদের প্রায় সমগ্র সংবাদপত্রের অনেকাংশই সাহসহীনতার রোগে আক্রান্ত বলে নিজের কথা বলতে তারা ভয় পায় এবং পালিয়ে বেড়ায় নিজস্ব সংস্কৃতি জীবন ও জীবনবোধ থেকে। চর্চা করে কখনো কখনো কালো অর্থের দাসত্বের। জীবনের জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু যে জীবনের ভিত্তি কালো টাকা, যে জীবন টিকে থাকে কারো অবৈধ করুণায়, সে জীবনকে কোনো ছকে বাঁধা পদ্ধতিতে প্রবাহিত না করে, কালো নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে মরে যাওয়াও অনেক উত্তম। যে জীবনের স্থায়িত্বের কোনো নিশ্চয়তা নেই, সে জীবনকে অসততার অপ চর্চার ধন দিয়ে বাঁচিয়ে কি লাভ? এ লাভের পক্ষে যারা, তারা মানুষ নয়-অমানুষ। যারা চেতনাহীন, বোধহীন কিংবা যাদের দেশের প্রতি, নিজস্ব ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি কোন দরদ নেই, তাদেরকে ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এমন অমানুষ হওয়া সম্ভব নয়।

এদেশে সাংবাদিকতার নামে কোনো কোনো দল এমন কিছু করে যাচ্ছে, যাকে মিথ্যের চর্চা বলা যায়। বাংলাদেশ বলতে বুঝায় হাজার হাজার গ্রামের সমষ্টি। অথচ এসব সংবাদপত্রের পাতাগুলোতে গ্রামের খবর ছাপতে যেন লজ্জা লাগে। যেটুকু ছাপা হয় বা যেটুকু স্থান গ্রামীণ সংবাদের জন্য বরাদ্ধ করা হয়, তা সত্যিই হাস্যকর, লজ্জাকর। এ অভিযোগ থেকে দেশের নামীদামি পত্রিকাগুলোও মুক্ত নেই। সৎ আর সাহসী সাংবাদিকতার অভাবই এ দুর্বলতার মৌলিক ও অন্যতম কারণ। এ দুর্বলতাকে অতিক্রম করা তাই এখন সময়ের দাবী।



শোষণ-শাসন আর আধিপত্যের দাঁত দেখিয়ে পৃথিবীর কোথাও কেউ বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসেও সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া এ কথা সত্য। ১৯৫৮সালের জানুয়ারী মাস থেকে ১৯৫৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সারা বিশ্বের সামরিক বাহিনী মোট ৮৮ বার অভুত্থান ঘটিয়ে বিশ্বের ৫২ টি দেশের ক্ষমতা দখল করে। আর তার দেখাদেখি তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানীরাও প্রভাবিত হয়। ফলে তারা তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে নির্যাতন করার বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়। একনায়কত্ব কায়েম করে আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়ারা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরংকুশভাবে বিজয়ী আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে না দিয়ে তৎকালীন সামরিক গোষ্ঠী স্বায়ত্বশাসন ও স্বাধিকারের আন্দোলনকে এক পর্যায়ে রূপান্তরিত করে স্বাধীনতা সংগ্রামে। পাকিস্তানী একনায়কত্ত্ব যদি স্বায়ত্তশাসন-স্বাধিকার বিষয়ে সমস্ত দাবী মেনে নিত, তবে হয়তো স্বাধীনতার সংগ্রামও এমন তীব্র হতো না। তাই সত্যিই বলা যায় যে, একনায়কত্ব নিজেই নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পরও এদেশে বারবার নানারূপে গণবিরোধী একনায়কত্বের জন্ম হয়েছে এবং বাংলার জনতা বা গণমানুষ বারাবারই বুকের রক্তে সেসব গণবিরোধী বর্বর একনায়কত্ব উৎখাত করেছে এবং গণমানুষকে মুক্তির এ প্রেরণা দিয়েছে সাহসী কিছু সাংবাদিক ও সংবাদপত্রই। অথচ আজ দেশে সেই আদর্শিক সাংবাদিক ও সৎ সাহসী সংবাদপত্রের খুবই অভাব।

এখানকার রেডিও ও টেলিভিশন জনগণের সংবাদ চাহিদা পূরণের আস্থা অর্জনে বারবারই ব্যর্থ হয়েছে, বিশেষ করে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের গণমানুষের প্রতিটি আন্দোলনে সাহসী এসব সংবাদপত্র বিশেষ-বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করলেও এসব সংবাদপত্রের লালন বা সংরক্ষণের পরিবেশ এখানে বরাবরই অনিশ্চিত থেকে গেছে। অনেক আগের একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে যখন ৩৪টি বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত ৮৫টি বিদেশী ভাষাভাষী পত্রিকাসহ দৈনিক সংবাদপত্রগুলো দিনে ৬ কোটি ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়, তখন জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের দেশের পত্র-পত্রিকার গ্রাহক-পাঠকের সংখ্যা আমাদেরকে রীতিমত হতাশ করে ফেলেছে। বাংলাদেশের সৎ সংবাদপত্রকে অনিশ্চয়তায় রেখে বাংলাদেশের জনগণও লাভবান হতে পারবে না। তাই সাহসী এসব সংবাদপত্রের রক্ষণাবেক্ষণের দায়দায়িত্ব জনগণকে নিতে হবে। কেননা, সারাবিশ্বে ঋণ ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণের ওপর যে পরিমাণ সুদ আসে, অবৈধ মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ীরা তারও অধিক অর্থ আয় করে এবং অস্ত্র ব্যবসা তো আরও লাভজনক। এত সব অবৈধ লাভজনক ব্যবসা থাকতে যারা সৎ এবং সাহসী সংবাদপত্রের ব্যবসায় আসে, তারা জনগণের কতো বড় বন্ধু, তা জনগণ ছাড়া আর কারা ভালো বুঝবেন? তাই সুস্থ এবং সাহসী যে-কোন সংবাদপত্রকে বাঁচিয়ে রাখার মহান দায়িত্ব অনেকাংশেই জনগণের ওপরও নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ঋণের ব্যবসা, অস্ত্রের ব্যবসা, মাদকের ব্যবসা থেকে খবরের ব্যবসাকে অনেকেই আলাদা করে দেখছেন না। এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক।



সাংবাদিক ছাড়া আজ আর পৃথিবী কল্পনাও করা যায় না। কেননা সাংবাদিকরা পৃথিবীর চোখ।

সাহসী সাংবাদিকের চোখ সমুদ্রের মতো গভীর। তাঁর দৃষ্টিশক্তি বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। তার এ দর্শনের নিজস্ব এবং বৈজ্ঞানিক কিছু ধাপ কিংবা ব্যাকরণ রয়েছে। সাংবাদিকদের এসব কর্মপ্রক্রিয়া অলৌকিক না হলেও তা খুব সহজও নয়। সহজ হলে সবাই হতে পারতেন সাহসী সাংবাদিক।

সাংবাদিকরা গভীরভাবে দেখেন। তাই তাঁরা কম জানা মানুষকে দেখাতে পারেন। এ দেখা বিভিন্ন প্রকারের দেখা হতে পারে। তার রয়েছে দেখার বিভিন্ন পথ ও পন্থা। যে পথ কিছুমাত্র বৈজ্ঞানিক ধাপ বা পদ্ধতির ওপরই নির্ভরশীল নয়, তাঁর সাথে মেধা এবং চর্চারও যোগ আছে। তাই বোকারা সমাজে স্থান পেলেও প্রকৃত সাংবাদিকতায় স্থান পায় না।

এ পৃথিবীতে অসংখ্য লোক মিথ্যের চর্চা করে। অনেক রাষ্ট্রনায়ক বা রাজনীতিবিদও এ চর্চা থেকে মুক্ত নন। সুতরাং সত্যের সৈনিক সাহসী সাংবাদিকদের পৃথিবীর সব সমাজেই নিরাপত্তার অভাব দেখা যায়। যদিও তাদের নিরাপত্তাহীনতা রোগে পায় না কখনোই।

সত্যকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই পৃথিবীতে সাহসী সাংবাদিকদের জন্ম। কিন্তু সাংবাদিকতার আশ্রয়ে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য বা দুর্নীতি শুরু করেন, তারা সাংবাদিক নন, ফসলের যেমন আগাছা থাকে, ছাত্রের পিছনে যেমন সন্ত্রাসী দেখা যায়, ঠিক তেমনি। অবশ্য সাহসী সাংবাদিকদেরও পেট আছে এবং তারা পেটের চিন্তাও করেন, কিন্তু তারা সত্যের উর্ধ্বে নন। জীবনটাকে তাঁরা বাণিজ্যের চেয়েও অধিক কিছু মূল্যবান ভাবেন।

আমাদের সমাজের সংখ্যাগনিষ্ঠ মানুষ জ্ঞানের চোখে দেখেন না। তাঁদের দেখানোর এবং শুনানোর দায়িত্বটা অনেকাংশে পূরণ করেন সাহসী সাংবাদিক।

সাহসী সাংবাদিক শুধু দর্শক নন, এক অর্থে দার্শনিকও। তিনি একজনের হাঁটা দেখে বলে দিতে পারেন লোকটির কোন অঞ্চলে জন্ম বা পরিচয়- যদি তিনি যথার্থ অর্থে সেই রকম দক্ষ সাংবাদিক হন। তাকে পৃথিবীর মিথ্যাচারীরা ভয় পায়। কারণ তিনি শুধু দেখেই চুপ থাকেন না, অন্যকে-এমনকি পুরো পৃথিবীকেই দেখিয়ে দেন সব। তার রয়েছে মেধার সূর্য প্রখরতা। তার ভয়ে সামাজিক দুর্নীতি বা অপরাধও কম ঘটে। সাহসী সাংবাদিকতা ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, সন্ত্রাস ইত্যাদির খবর যদি একমাস পত্রিকায় ছাপা বন্ধ রাখেন, তাতেই মনে হয় মধ্যযুগের বর্বরতার অনেকাংশ আবার ফিরে আসবে।

কিন্তু তাতেই বা সমস্যার সমাধান কোথায়? এর উত্তরে বলা চলে এসব সমস্যার সমাধানের দায়িত্বতো আর সাহসী সাংবাদিকদের নয়- সুতরাং মানতেই হবে যে, এ সমস্যা সৃষ্টি এবং সমাধানহীনতার জন্য ব্যর্থ হচ্ছে রাজনৈতিক স¤প্রদায়। তাছাড়া সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে আইন প্রয়োগের চেয়ে অনেকাংশে দেখানোর কাজটাই বেশি কঠিন এবং তাতে জীবনের ঝুঁকিও বেশিই থাকে। সুতরাং সাহসী সাংবাদিকদের যথার্থ মূল্যায়ণ আবশ্যক। সাহসী সাংবাদিকদের পক্ষে যদি জনগণ এগিয়ে না আসে, তাহলে জনগণের দুর্দিনে কোন সৈনিক তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে?



প্রকাশ কাল ঃ

২৫ মার্চ ২০০০ সাপ্তাহিক “নিরীক্ষণ”, ১৮ জানুয়ারি ২০০২ সাপ্তাহিক “অভিবাদন” কুমিল্লা।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.