নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রমজান উপেক্ষা করে চতুর্দিকে হারবাল কোম্পানির অশ্লীল পোস্টার

০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:২২









জসীম উদ্দিন অসীম:

যৌন রোগের ‘ঔষধ’ বিক্রির নামে রমজানের তাৎপর্য উপেক্ষা করে

কুমিল্লা শহরের চতুর্দিক হারবাল কোম্পানীর অশ্লীল পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কবিরাজ কিংবা হারবাল কোম্পানী শুধু পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েই নয় , লক্ষ লক্ষ লিফলেট বিতরণ করে এবং হাজার হাজার অশ্লীল পোস্টার সেঁটে প্রতিদিনই রুচিসম্মত সুশীল মানুষদের পথেঘাটে বিব্রত করছে। রুচিশীল মানুষের প্রশ্ন , এদেরকে প্রতিরোধের কি কোন ব্যবস্থাই নেই ?

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠ্য বইয়ে যৌন শিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। তাই যৌন বিষয়ে মানুষের সঠিক পন্থায় জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এ বিষয়ে খোলাখুলিভাবে বাবা মায়ের কাছেও সন্তানেরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। ফলে ভুল শিক্ষা- কুশিক্ষা- অশিক্ষা- অচিকিৎসার খপ্পরে পড়ে মানুষ। অথচ ধর্ম শিক্ষা থেকে বিজ্ঞান শিক্ষা সবই আমাদের পাঠ্য। যৌন শিক্ষার অসম্ভব প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এ বিষয়টি পাঠ্য হিসেবে তেমন অন্তর্ভুক্ত নয়। আর এ কারণেই যৌন বিষয়ে মানুষের মধ্যে গড়ে উঠে যৌন অজ্ঞানতা। এসবের সুযোগ নিচ্ছে যৌন চিকিৎসার নামে ব্যবসা করা এসব লোকজন।

যৌন রোগ চিকিৎসার নামে এই হারবাল ব্যবসায়ীরা যেসব লিফলেট বিতরণ কওে , সেসব লিফলেট স্কুলের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রছাত্রীদের হাতেও দেয়া হয় , যারা যৌনরোগ বিষয়ে কোন ধারণাই করতে পারে না। অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রছাত্রী [শিশু] ওসব হারবাল কোম্পানীর লিফলেট বহন করে বাসা পর্যন্ত নিয়ে আসে। এসব লিফলেট বিতরণের ক্ষেত্রে কোম্পানীগুলো বিভিন্ন বেকার ছেলেমেয়েদের খুব অল্প পয়সার বিনিময়ে বেছে নেয়। পেটের দায়ে অনেক ছেলেমেয়ে এসব লিফলেট বিতরণ করে। লিফলেট বিতরণকারী একাধিক যুবক দুঃখ করে বলেন , পেটের দায়ে এসব লিফলেট বিতরণ করছি ভাই। কাজটি অত্যন্ত লজ্জার। কারণ অধিকাংশ লোকই যৌনরোগ চিকিৎসার এসব লিফলেট দিলে ১০ হাত দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কোম্পানীর আদেশ থাকে সেই ছুঁড়ে ফেলে দেয়া লিফলেটটিও আবার কুড়িয়ে নেয়ার। এটা কোন ভদ্র পেশা হতে পারে না। এ কাজটি টোকাই-এর কাজ থেকেও খারাপ কাজ। কিন্তু কী করবো , পেটের দায়ে করতেই হয়। যৌনরোগ চিকিৎসার নামে ছাপা এসব লিফলেট বিতরণের কাজে কোথাও আবার যুবতী মেয়েদেরও পথেঘাটে দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই এ বিষয়টি আরও বেশি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয় অনেককে। অনেকে অভিযোগ করেছেন , লিফলেট বিতরণকারী এসব যুবতী মেয়েদের অধিকাংশই ভ্রাম্যমান যৌনকর্মী। কিন্তু লিফলেট বিতরণকারী একজন যুবতী জানান , ভাই পেটের দায়ে আমি খুব অল্প পয়সার বিনিময়ে লিফলেট বিতরণ করি। আমি কোন যৌনকর্মী নই। কারণ শরীর বিক্রি করে বাঁচলে আর পথেঘাটে দাঁড়িয়ে লিফলেট বিতরণ করতে হতো না। কোন শিক্ষাদীক্ষা নাই , কোন টেকনিক্যাল কাজও জানিনা। বাসাবাড়িতে কাজ করতে গিয়েও গৃহকত্রীদের বেদম মারের শিকার হয়েছি। এমনকি কোন কোন গৃহকর্তা ইজ্জ্বতের দিকেও নজর দেয়। তাই ওই কাজ করার চেয়ে লিফলেট বিতরণ করার কাজটিকে আপাতত: বেছে নিয়েছি।

ঘর থেকে বের হলে পথেঘাটে-অলিতে-গলিতে-বাস টার্মিনালে-রেলস্টেশনে-স্কুল কলেজে-সিনেমাহলে যৌনরোগ চিকিৎসার নামে কুরুচিপূর্ণ ভাষার বিভিন্ন পোস্টার সাঁটা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এত অশ্লীল পন্থায় প্রচারণা কেন? চিকিৎসার অন্য শাখার চিকিৎসকগণ তো এ পন্থা অবলম্বন করেন না। চর্ম ও যৌনরোগ বিষয়ে অনেক উঁচুমানের ডিগ্রী নেয়ার পরও অনেক ডাক্তার বড়জোর একাধিক সাইনবোর্ড ও ভিজিটিং কার্ড ব্যবহার করেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন , সঠিক ওষুধ-সঠিক গাছগাছরার বদলে মানুষের ক্ষতি হবেনা এমন কিছু গাছের লতাপাতা বেটে আঁটা-ময়দা মিশিয়ে-চিনি-গুঁড়-মধু মিশ্রিত করেও নাকি বিভিন্ন হালুয়া অথবা কস্তুরী দাওয়াই তৈরি হয় , যা খেলেও উপকার হয়না এবং ক্ষতিও হয়না। কিন্তু কিছু সরল মানুষ বিশ্বাসের কারণে সেসব ফটকা ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন চড়াদামে। অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীগণ কিংবা হারবাল ডাক্তারগণ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন , হারবাল পদ্ধতিতে রোগের স্থায়ী সমাধান রয়েছে। আজকালকার এলোপ্যাথিক চিকিৎসার রাতারাতি সুফল দেখে হারবাল পদ্ধতিকে অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু হারবাল চিকিৎসায় উপকার না হলেও ক্ষতি তেমন কিছুই হয়না। একজন হারবাল ওষুধ ব্যবহারকারী উত্তর বাংলার রিকশাচালক আকবর আলী সাগর বলেন , ‘গত ১ বছর যাবত আমি হারবাল ওষুধ খেয়েও যখন দেখলাম আমার গ্যাষ্ট্রিক কোনভাবেই ভালো হয় না , তখন বুঝলাম হয় ওষুধ দুই নম্বর অথবা ডাক্তার। তা না হলে আমার অসুখ ভালো হতোই। বরং এই ১ বছরে আমি যত টাকা হারবাল কোম্পানীকে দিয়েছি , তাতে ছোট্ট একটি সংসারের এক বছরের অর্ধেক খরচ চলার কথা। তাই কেউ যখন এখন আমাকে হারবাল চিকিৎসার কথা বলেন , আমি তখন রাগে দু:খে বলি , হারবাল চিকিৎসা না ভাই , ‘বাল’ চিকিৎসা বলেন ...। ’ কিন্তু উত্তর বাংলার রিকশাচালক আকবর আলী সাগরের এই অভিযোগ অস্বীকার করে একজন ডিগ্রীধারী হারবাল চিকিৎসক বলেন , সম্ভবত সেই রোগীটি কোন ভুয়া ডাক্তারের হাতে পড়েছিল। তাকে আমার কাছে নিয়ে আসুন , দেখুন , ২৪ ঘন্টায় আমি তাকে সুস্থ করে তুলবো। এ বিষয়ে কুমিল্লার একজন প্রখ্যাত চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: বলেন , মনে হচ্ছে সেই ডাক্তারের মধ্যেও গলদ রয়েছে। কারণ ২৪ ঘন্টায় কঠিন কোনো রোগের স্থায়ী চিকিৎসা হওয়া সম্ভব নয়। যেই লোক ২৪ ঘন্টার গ্যারান্টিতে চিকিৎসা করে থাকে , বরং তারই চিকিৎসা করানো উচিত। এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে প্রায় অর্ধডজন হারবাল চিকিৎসক [?] বলেন , আরে ভাই রমরমা ব্যবসা কোথায় দেখলেন , কোন রকমে ডালভাত খেয়ে যাই। ব্যবসার অবস্থা ভালো না। এত ব্যবসা থাকলে কি এত লিফলেট বিতরণ করতে হয় ? ব্যবসা যদি থাকতো , তাহলে লিফলেট বিতরণ করতে হতো না। এত অশ্লীল ভাষায় পোস্টার করতে হতো না । বরং কিছু চাঁদাবাজদের অত্যাচারে আমরা ঠিকভাবে ব্যবসাই করতে পারিনা। কারণ তারা দু’দিন পরপর চাঁদার জন্য এসে বসে থাকে। বলে , চাঁদা না দিলে সিভিল সার্জনকে বলবো , আপনার ডাক্তারি সার্টিফিকেটটা দেখান ...ইত্যাদি। বরং আমরাই এদেশের দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতিকে বাঁচিয়ে রেখেছি। সেটা স্মরণে রাখা দরকার। কিন্তু যৌন রোগের ‘ঔষধ’ বিক্রির নামে রমজানের তাৎপর্য উপেক্ষা করে

শহরের চতুর্দিকে হারবাল কোম্পানীর এসব অশ্লীল পোস্টার লাগিয়ে কেন ধর্মসম্মত সুশীল মানুষদের পথেঘাটে বিব্রত করা হচ্ছে , তাদের কাছে এ প্রশ্নের সঠিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.