নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক ?

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:২০





জসীম উদ্দিন অসীম:

আমি কেন চাকুরি করতে পারি না , এই প্রশ্নের উত্তর জীবনে আমি যে কত শতবার মানুষকে দিয়েছি , হিসেব নেই। সেদিনও আমার ঢাকার এক বন্ধু হঠাৎ করেই আবার সেই প্রশ্ন করে বসে। আমি বলি , সারা মাস খেটে ৮-১০ হাজার টাকা পাওয়ার চেয়ে ২-৩টি বইয়ের ক্রিপ্ট লিখে কারো কাছে বিক্রি করে ৮-১০ হাজার টাকা কামাই করা আমার কাছে অনেক সহজতর। তাছাড়া শুধু আমি কেন , ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও তো ঠিকভাবে চাকুরি করতে পারেননি , চাকুরি ছেড়েছিলেন। আর জীবনানন্দ দাশের তো চাকুরি ছাড়াটা রুটিনে পরিণত হয়েছিল। সেই হিসেবে আমি তো খুব নগন্য মানুষ। উল্লেখ্য আমি যে কয় বছর চাকুরি করেছি , সেসব চাকুরি ছিল সংবাদপত্রের চাকুরি। অন্য কোনো চাকুরির কোনো অভিজ্ঞতা আমার নেই।

একবার আমি সাংবাদিক পরিচয়ে কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ঢাকার ৩১৭-বি খিলগাঁও তালতলার বাসায় দেখা করতে গেলাম। তিনি দেখাও করলেন। কথা হলো। বললেন , কোন পত্রিকায় চাকুরি করেন? আমি বললাম , কোনো পত্রিকাতেই না। তিনি বললেন , তাহলে? আমি বললাম , এমন কোনো শিক্ষক কি নেই যিনি স্কুলে-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি করেন না , অথচ শিক্ষক , যেমন প্রাইভেট টিচার যেমন , প্রাইভেট ডিটেকটিভ । আমিও তেমনি প্রাইভেট রিপোর্টার। আমার এ কথা শুনে কায়কোবাদ আর কিছুই বলেননি।

আমি পত্রিকার চাকুরি ছেড়েছি বারবার , কিন্তু রিপোর্ট করা কিন্তু ছাড়িনি। কোন পত্রিকার , কোন তারিখের কোন রিপোর্টটি আমি করেছি , তা উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে লিখলেই বিশ্বাস হবে। কিন্তু অনেকেই এ পেশায় কিছুদিন সিরিয়াস হয়েও আবার অন্য পেশায় চলে গেছে। কেউবা আবার বিদেশে। কুমিল্লার সাংবাদিকতায় কিছুদিন খুব সিরিয়াস হয়েছিলেন সোহেল আলম মজুমদার শিপন। তারপর বিদেশ। পূর্বসূরীদের মধ্যে সমাজকণ্ঠ পত্রিকার দেলোয়ার জাহিদ , নজরুল ইসলাম বাবুলসহ আরও অনেকে এ পথ অবলম্বন করেন। এ পর্বের সর্বশেষ তালিকায় আছে খালেদ গোলাম কিবরিয়ার নাম। খালেদ যুক্ত ছিল বই ব্যবসার সঙ্গে। কিন্তু তার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিদেশ যাওয়া। কুমিল্লার সাপ্তাহিক ময়নামতি পত্রিকায় তার প্রথম যোগদান সহ-সার্কুলেশন ম্যানেজার হিসেবে। তারপর ফটো সাংবাদিক এবং সর্বশেষ সে ময়নামতি পত্রিকার বার্তা সম্পাদকও হয়। সাংবাদিক সমিতি কুমিল্লা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদকও ছিল খালেদ। পরে ২৭ এপ্রিল ২০১০ তারিখের দৈনিক কুমিল্লার কাগজে নিউজ দেখলাম : ‘নিরাপত্তাহীনতায় দেশ ছেড়েছেন সাংবাদিক কিবরিয়া।’ কিবরিয়া বিদেশ যাওয়ার আগে ১০ বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার জন্য বিভিন্ন চেষ্টায় নিয়োজিত ছিল।

একবার আমি এবং কুমিল্লার সাংবাদিক সাদিক মামুন ও ফটো সাংবাদিক ইকবাল বাহার ছবি তুলতে গেলাম কুমিল্লার সুয়াগাজীর সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের দড়িবট গ্রামে। ছবি তোলার কাজে। সেখানে এক গ্রাম্য শালিসের আয়োজন করা হয়েছিল। আমি তখন কুমিল্লার দৈনিক ‘শিরোনামে’ চাকুরি করলেও সেটা ‘শিরোনামে’র কোনো এ্যাসাইনমেন্ট ছিল না। তাই আমি ওখানে সেই পত্রিকারও কোনো পরিচয় দেইনি। এমন সময় ৪-৫ জন ‘গুন্ডা’ এসে আমাকে বললো , হেই মিয়া-আপনি নাকি সাংবাদিক? আমি বললাম , হ্যাঁ। ‘কোন পত্রিকার সাংবাদিক ?’ যেহেতু আমি ‘শিরোনাম’ পত্রিকার এ্যাসাইনমেন্টে যাইনি , তাই বললাম ,আমি কোনো পত্রিকার সাংবাদিক নই , স্বাধীন [ফ্রি-ল্যান্স] সাংবাদিক। এ কথা শুনে ‘গুন্ডা’ সব বললো , স্বাধীন সাংবাদিক কী আবার , ভুয়া সাংবাদিক। আমাকে বললো , আপনার কোনো কার্ড আছে? আমার কাছে ‘শিরোনাম’ পত্রিকার আই.ডি কার্ড থাকার পরও আমি বললাম , না। এবার তাদের একজন বললো , ওরা হয় ভুয়া সাংবাদিক , না হয় বাইরে থেকে আসা মাস্তান। আমাকে বললো , আপনার লিডার কে? আমি ফটো সাংবাদিক ইকবাল বাহারকে দেখিয়ে দিলাম। ইকবাল বাহার ছিলেন শরীরে-স্বাস্থ্যে খুবই সুঠাম একজন লোক। তাকে দেখে একজন বললো , আরে ও-তো ঢাকা শহরের মাস্তান , ব্যাগে করে মনে হয় মাল(ককটেল) নিয়ে এসেছে। সাদিক মামুন ও ইকবাল বাহার তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে তাঁদের ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পরস্পর কথা বলছিলেন। ‘গুন্ডা’ সব তাদের গিয়ে আটক করলো। বললো , মাস্তানি করতে শহর থাইক্কা গেরামে আইছো, চান্দুরা আইজকা বুঝবা , গেরামের মাস্তান কী জিনিস। আইজকা তোমরারে মুরকার দুধ দিয়া চা বানাইয়া খাওয়ামু। সঙ্গে সঙ্গেই শত শত লোক আমাদের ঘেরাও করে ফেললো। ইকবাল বাহার মারাত্মক ভয় পেলেন। সাদিক মামুন বললেন , আমরা কোনো গুন্ডা মাস্তান না। সাংবাদিক। আমরা বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করি। আমাদের সঙ্গে প্রত্যেকের আই.ডি কার্ড আছে। ব্যাগে আছে প্রত্যেকের নিজস্ব ক্যামেরা...ইত্যাদি। এবার ‘গুন্ডা’ সব মাপ চাইলো ইকবাল বাহার ও সাদিক মামুনের কাছে। মুরুব্বীরা গুন্ডাদের অনেক গালিগালাজ করলো , গ্রামের ইজ্জত নষ্ট করলো বলে। তারপর শুরু হলো সেই শালিস। আমি শুধু দেখলাম : কোনো পত্রিকায় চাকুরি করি , আর করি না , বলার মধ্যে কতো পার্থক্য রয়েছে : এই সমাজের কাছে।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.