নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুমিল্লা নগরীর উন্নয়ন হলো কোথায়?

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৬:০৪



জসীম অসীম



সামান্য বৃষ্টিতেই যে শহর ডুবে যায় , সেই শহরের উন্নয়ন হলো কোথায়? এ কেমন মহানগরী আমাদের , দুর্ভোগের শেষ নেই ? প্রকৃত উন্নয়ণের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষা এবং সততার সম্পর্কও রয়েছে । অথচ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর জয়গান এখন সবারই মুখে মুখে। এতদিন সাক্কু ছিলেন সবার জন্য। আর এখন সবাই যেন সাক্কুর জন্য। এমনকি ২০১২ সালের কুমিল্লার মেয়র নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা আফজল খানের অনেক কর্মীও এখন ‘সাক্কু ভাই’ বলে শ্লোগান দিতে পেরে আনন্দিত।

২০০৮-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা সদর আসন থেকে হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মনোনয়ন দেওয়ার পর , কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আফজল খানকেও তিনি এই বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে , ফের যদি কোনো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আসে , তাহলে তিনি অধ্যক্ষ আফজল খানকেই সেই সুযোগ দেবেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং অধ্যক্ষ আফজল খানকে দেওয়া প্রতিশ্রতি রক্ষা করে কুমিল্লার মেয়র নির্বাচনে তার প্রতি দলের সমর্থনও ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু আফজল খান এই নির্বাচনে নির্বাচিত হতে পারেননি। তার ইমেজ সংকট যেমন এর জন্য দায়ি ছিল , তেমনি তিনি অনেক বিশ্বাসঘাতকতারও শিকার হয়েছিলেন। তার দলের অনেক কর্মীই এখন বলেন , ‘ মেয়র সাক্কু ভাই জিন্দাবাদ’।

২০১১ সালে ‘কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা’র পর আমি দুইটি লেখা লিখে পত্রিকায় ছেপেছিলাম , পত্রিকার নাম সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ। তার একটি কুমিল্লার সদরের এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহারকে উদ্দেশ্য করে এবং অন্যটি অধ্যক্ষ আফজল খানকে কেন্দ্র করে। কিন্তু সমালোচনামূলক দুটি লেখার জন্যই আমি হুমকি পেয়েছিলাম বিভিন্ন সূত্র থেকে , গালি খেয়েছিলাম , কোনো ধন্যবাদ পাইনি।

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ পত্রিকায় অধ্যক্ষ আফজল খানের উদ্দেশ্যে লিখেছিলাম , ‘হ্যালো মিস্টার...আপনার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পথ পরিষ্কার আছে কি ? ’ এই লেখায় আমি বলেছিলাম , ‘ কোন ফর্মূলায় আপনি মেয়র নির্বাচিত হতে চান ? ফর্মূলাটা কী? আপনার জন্য তো সামনে আরও খারাপ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে , যদিও নির্বাচনে আপনি ঠিক কেমন ফলাফল করবেন , তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এই শহরের নাগরিকদের মধ্যে আপনি একজন অন্যতম ক্ষমতাধর মানুষ। কিন্তু আপনার জনসমর্থন বর্তমানে কী পরিমাণ নেমে এসেছে , সেটা কি আপনি জানেন ? আপনি কি জানেন কী কারণে আপনার জনসমর্থন হ্রাস পেয়েছে ? আপনি কি জানেন আপনার কর্মী পরিচয়ে কে কাকে ধরে কোন ‘চিপা’ গলিতে কিংবা কোন মাজারের কাছে আটক করে কতো টাকা আদায় করে ? অথচ আমরা যাদের ‘পাবলিক’ বলি... গণতন্ত্রে তারা কিন্তু ভোটার...তাদের কাছে এসবের সকল খোঁজখবরই রয়েছে। তারা ভয়ে মুখ খুলে না।...বাস্তব এই অবস্থাগুলো না বুঝে নির্বাচনে নামলে ফলাফলটা কী হতে পাওে , অবশ্যই সেটা আপনি জানেন।...তাই বলছি , সত্যি সত্যি আপনার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পথ পরিষ্কার আছে কি? ’

৯ অক্টোবর-২০১১ তারিখে কুমিল্লার সাপ্তাহিক নিরীক্ষণে লিখলাম ‘কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা কি কারো একক অবদানের ফসল ? ’ এই লেখায় আমি লিখেছিলাম , কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন চিন্তাটি কারোর একক চিন্তার ফসল নয়। এ চিন্তাটি একটি সামাজিক-সামষ্টিক চিন্তা। নেতৃত্ব যারই থাক , কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন হয়েছে সময়ের প্রয়োজনেই।

কুমিল্লায় বর্তমানে যে পরিমাণ হাইরাইজ বিল্ডিং হয়েছে, অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে , যেভাবে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে , যানবাহন-ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে , এর জন্য কুমিল্লাকে সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা না দিলে বরং প্রশাসনের উপরই যাবতীয় চাপ বাড়তো। কুমিল্লা বিভাগের দাবিটিও দীর্ঘদিনের পুরনো। আজ যদি কুমিল্লা বিভাগ হয় , আর যদি এর জন্য কেউ একক কৃতিত্ব দাবি করে পোস্টারে-ফেস্টুনে-ব্যানারে শহর ছেয়ে ফেলে , অভিনন্দনের জোয়ার পড়ে যায় , তাহলে তার ইতিহাসের কাছে কোনো ক্ষমা নেই।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবের সঙ্গে কুমিল্লার সাবেক জেলা প্রশাসক আবদুল মালেকের নামটিও বিশেষভাবে জড়িত। কিন্তু তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এ শহরে একটি অভিনন্দন ব্যানারও সাঁটা হয়নি। অথচ এ জন্য ‘জাতি’ নেতাকে ‘হাতি’ নেতা , তাকে আবার পাঁতিনেতা , পাঁতিনেতাকে নাতিনেতাও অভিনন্দন জানিয়েছে। আসলে কোনো জেলা প্রশাসক নতুন এলে যেমন কিছু চিহ্নিত চাটুকার ‘তৈলমর্দন’ শুরু কওে , তেমনি সেই লোক চলে গেলেও তার আর তেমন সচরাচর কোনো খোঁজও রাখা হয় না। এটা কিন্তু অবশ্যই দু:খজনক। তা না হলে কুমিল্লার সাবেক জেলা প্রশাসক আবদুল মালেককে অভিনন্দন জানিয়েও কমপক্ষে এক-দুটি ব্যানার-ফেস্টুন উড়তো। কেননা স্থানীয় সাংসদ হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহারের সঙ্গে কুমিল্লার সাবেক জেলা প্রশাসক আবদুল মালেক একাত্মতা প্রকাশ করেই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবটি আনেন। জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে যেমন হাজী বাহার কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাব তুলেন , তেমনি জেলা প্রশাসক আবদুল মালেকও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবটি লিখিত আকারে পাঠান। তাছাড়া কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন হওয়ার ক্ষেত্রে কুমিল্লা দক্ষিণ পৌরসভাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ দক্ষিণ পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পেছনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরীরও অবদান অনেক। দক্ষিণ পৌরসভা আর কুমিল্লা পৌরসভার অবস্থান এক সঙ্গে না হলে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা এতো সহজতর হতো না। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণার পেছনে কুমিল্লার সাবেক জেলা প্রশাসক জামাল হোসাইনেরও অবদান রয়েছে। সর্বশেষ যার অবদান ছিল , তিনি ছিলেন কুমিল্লার তখনকার জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল আহসান।

কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১০ জুলাই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা দিলেন , ঠিক তখন থেকেই কুমিল্লা শহরে শতাধিক ডিজিটাল ব্যানার উড়তে লাগলো , অমুকে তমুককে সিটি কর্পোরেশনের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছে। প্রায় সবগুলো ব্যানারেই একজন নেতাকেই সিটি কপোরেশনের রূপকার বলা হলো। তিনি কুমিল্লা সদরের এম.পি. হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার। বাকিদের অবদানের ইতিহাস কি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে? ...এ রকম লেখাটি ছাপা হওয়ার পরও কপালে আমার ধন্যবাদ জুটেনি। এমনকি যখন আমি নিজের নামেই লিখলাম একটি লেখা , ‘হুইপ মুজিবকে নিয়ে , কুমিল্লার দুটি পত্রিকা সেই লেখা ফেরৎ দেয় , ছাপাতে রাজি হয়নি। এমনকি ০৬ জুলাই-২০১১ তারিখে যখন লিখলাম ‘হুইপ মুজিব নিজের হাতে লাঠি না তুলেও লাঠালাঠি লাগিয়ে দেয়’ শীর্ষক একটি লেখা , তখনও অনেকে আমাকে বলেছেন , আর এমন লেখালেখি কইরেন না। একজন আমাকে এমনও বলেন , জাতীয় সংসদের কোনো হুইপের নাম উল্লেখ করে লেখা ছাপানোটা অমার্জনীয় অপরাধ। তদন্ত সাপেক্ষে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমি বলেছি , আমি তো কারোর টাকা খেয়ে লেখা লিখি না।

কুমিল্লা সিটির মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর বিপক্ষে যে কখনো কলম ধরিনি , তা নয়। কিন্তু লেখা ছাপাবে কে ? চতুর্দিকে দালালের দল। কিংবা দলের দালাল। আর দালালীতে এখন লাভও অনেক। দালালীতে অনেকেরই ভাগ্য বদল হয়েছে। সুতরাং তারা দালালী ছাড়বে কেন ?

সবচেয়ে আগে বিশ্বাসঘাতকতা করে বসে গণ্যমাধ্যমেরই কিছু লোক। ওসব চাটুকাররা স্বচ্ছল এবং সংঘবদ্ধ। ওদের জন্য লড়া যায় না। ২৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখের সাপ্তাহিক নিরীক্ষণে ‘যারা আর্মি নামলেই পালায়...’ শীর্ষক লেখাটিতে আমি লিখেছিলাম ‘গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে লে.কর্ণেল অবসরপ্রাপ্ত আকবর হোসেন যখন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন , তখন সারাদেশে সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের ধরার জন্য সরকার ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ও ঘোষণা করে। সরকারী দলের প্রভাবশালী নেতা ও নৌ-মন্ত্রীর আপন মামাতো ভাই হওয়া সত্ত্বেও তখন কুমিল্লার বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু কুমিল্লা ছেড়ে পালিয়ে যান। আবার ১/১১-এর পরও গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুরো দুই বছর তিনি কুমিল্লা ছেড়ে লুকিয়ে ছিলেন। তখন সরকার সন্দেহজনক শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসেবেও তার নাম ঘোষণা করে। ‘যারা আর্মি নামলেই পালায়...’ শীর্ষক লেখাটিতে আমি সাক্কুর খুব সমালোচনাও করেছিলাম

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা করা সন্দেহজনক শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের অন্যতম সদস্য ছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সুতরাং বেশি কিছু লেখা যাবে না। যেমন বেশি কিছু লিখতে পারিনি কখনো এমপি বাহারের বিরুদ্ধেও। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ‘বাহার মলম বিক্রি শুরু হয়েছে’ লেখার পরই কলম প্রায় থেমে যায়। আর সম্ভব হয়নি। হয়তো হবেও না।

মো: মনিরুল হক সাক্কুর পিতা-মৃত: সাজেদুল হকের ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভূমিকা নিয়ে এখনও মানুষ নানা কথা বলে। অধ্যক্ষ আফজল খানের পিতা-মৃত মো: ছাদেক আলী খানের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ক কোনো তথ্য আমার কাছে না থাকলেও এটা জানি আফজল খান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। এই দিক থেকে দুইটি পরিবারের ঐতিহ্য ও মতার্দশ কিছুটা পৃথক হওয়াই স্বাভাবিক।

আফজল খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ.এল.এল.বি। অন্যদিকে মনিরুল হক সাক্কুর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। অবশ্যই সেই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও নির্বাচনের পূর্বে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। সাক্কুর এসএসসি’র সার্টিফিকেট থেকে জানা যায় , মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে মনিরুল হক সাক্কু [ সাক্কু নাম তার সার্টিফিকেটে নেই] কুমিল্লা জিলা স্কুলের ছাত্র হিসেবে ১৯৭৮ সনের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগ থেকে নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার জন্ম তারিখ ১২ নভেম্বর ১৯৬০। সার্টিফিকেটে সাক্কু নিয়মিত পরীক্ষার্থী হলেও সাক্কুর অনেক সহপাঠি বলেছেন , সাক্কু ছিলেন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী।

সাক্কুর বিরুদ্ধে অতীতে অনেক ফৌজদারী মামলা হয়েছে। পরেও কিছু ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হন তিনি। তবে মহামান্য হাইকোর্ট-এর নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিতও হয়ে যায়। বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিয়ে জেলা নাগরিক কমিটির ব্যানারে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করেন সাক্কু। মনিরুল হক সাক্কু কুমিল্লার মেয়র থাকাকালে উন্নয়নের নামে বেশিরভাগই ফুলের বাগান করেছেন বলে যারা অভিযোগ করেন , তাদেরই একজন বলেছেন , আপনি দেখবেন-সামান্য বৃষ্টি হলেই এ শহর ডুবে যায় । সামান্য বৃষ্টি হলেই যে শহর ডুবে যায় , সেই শহরের উন্নয়ন হলো কোথায়? চতুর্দিকেই তো ভাঙ্গা রাস্তা-ড্রেন কালভার্ট সংস্কারের অভাবে বিলীন হওয়ার পথে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আগামী দিনগুলো যে খুব সুখের হবে , এখনও নিশ্চিত করে তা বলা যায় না। বিশেষ করে আগের যে দক্ষিণ পৌরসভা , তার প্রায় সবটাই এখনও গ্রাম। এসব গ্রামকে এক ঘোষণায় দক্ষিণ পৌরসভা করা হয়েছে এবং তার কিছুদিন পরই আবার সিটি কর্পোরেশন ঘোষণ করা হয়েছে। নামে সিটি কপোরেশন বাস্তবে গ্রাম , এমন একটি বিষয়কে মাথায় চেপে যাত্রা করা খুব সহজ সাধ্য নয়। কুমিল্লা শহর এখন যেভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে , তার যথাযথ পরিচর্যা না হলে এ শহর এক সময় হতে পারে পুরান ঢাকার মতোই অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত একটি শহর।

কুমিল্লা পৌরসভার শেষ মেয়র ছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। তিনি আবার কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়রও নির্বাচিত হয়েছেন। দলীয়ভাবে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় তিনি নির্বাচনের মাঠ ছাড়েননি।

পৌর মেয়র হিসেবে এলাকায় বেশি কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করলেও সাক্কুর বিরুদ্ধে হত্যা, কলেজে আগুন দেওয়া, আয়কর ফাঁকিসহ নানা অভিযোগ ছিল। ’৭৯ সালে সাক্কুর বিরুদ্ধে প্রবীর হত্যার অভিযোগে মামলা হয়। নিহত প্রবীর সাক্কুর সঙ্গেই চলাফেরা করতেন। শহরের টিক্কারচর শ্মশান এলাকায় ওই হত্যাকান্ড ঘটে। ওই সময় জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। এরপর সাক্কু সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। এরশাদের সামরিক শাসনামলে সাক্কু কুমিল্লা শহরে ফিরে আসেন। এলাকাবাসী জানান , কুমিল্লা সদরের ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রয়াত মন্ত্রী কর্ণেল (অব.) আকবর হোসেন সে সময় সাক্কুকে মামলা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করেন। মেয়র প্রার্থী সাক্কু প্রয়াত মন্ত্রী আকবর হোসেনের আপন মামাতো ভাই। কুমিল্লা শহরের ফরিদা বিদ্যায়তন এলাকার চাঞ্চল্যকর পংকজ হত্যাকান্ডে সাক্কু জড়িত , এমন জনশ্র“তি প্রবল। পঙ্কজ ছিলেন সাক্কুর ম্যানেজার। ১৯৯৬ সালে কুমিল্লা অজিত গুহ কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন পেছানোর জন্য রাতের আধারে কলেজে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই হত্যাকান্ডে সাক্কুর ক্যাডার কাপ্তানবাজারের ছুট্টু আগুন লাগাতে গিয়ে পুড়ে পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওই মামলায়ও সাক্কু আসামি ছিলেন। এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ বিজ্ঞানাগারে আগুন লাগে। ওই মামলায়ও সাক্কু আসামি হন। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির ক্ষমতার সময় তার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি ও বালু মহাল দখল করে কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তিনি ছিলেন পলাতক। ওই সময় তার নাম শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় প্রকাশিত হয়। এমনকি তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকিসহ একাধিক মামলাও দায়ের হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির সম্মেলনে রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারে সাক্কুর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর কুমিল্লা টাউন হলে অনুষ্ঠিত যুবদলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শহরের কান্দিরপাড় এলাকায় তার ক্যাডাররা ব্যাপক অস্ত্রবাজির ঘটনা ঘটায়। কুমিল্লার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালের ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি আগুনের মামলার আসামি হয়ে পলাতক ছিলেন। এতে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। মামলা ও আইনী জটিলতা শেষ করে ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে আবার পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। সাক্কু ১৯৯৩ সালে জেলা যুবদলের সভাপতি হন। ওই পদে ২০১০ পর্যন্ত বহাল ছিলেন। ২০০৩ সালে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন। পরে হোন কুমিল্লা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য।

তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি কোনো হত্যাকান্ড ঘটাইনি। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়। আদালত আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তিনি বলেন , আমি যেন পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে না পারি, সে কারণে কলেজে আগুন দেওয়ার মামলায় আমাকে আসামি করা হয়। তিনি বলেন, আমি তিন যুগ ধরে বিএনপি করছি । আজ আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমি যুবদলের সম্মেলনে অস্ত্রবাজি করেছি বলে অপ্রচার করছে। । যতই ষড়যন্ত্র হোক , আমি কুমিল্লার মানুষের পাশে থাকবোই।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্বে ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন’ কিছু মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করে। এসব উদ্যোগ ছিল প্রশংসনীয়। সুজন সৎ , যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী নির্বাচিত করে দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার চালায়। সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য কালো টাকার মালিক সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-মিথ্যাচারী-যুদ্ধাপরাধী-ভূমি দখলদার-ধর্ম ব্যবসায়ী-ঋণ-বিল খেলাপী-চোরাকারকারী ও মাদকব্যবসায়ীদের ভোট না দেওয়ার আহবান জানায়। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নাগরিক সমাজের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জেনারেল [অব] এম.এ.জি. ওসমানী। জেনারেল ওসামানীকে সেদিন যে নাগরিক গোষ্ঠী প্রার্থী করেছিলেন , তার নেতা ছিলেন ড. আহমদ শরীফ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও অন্য বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু আজ নাগরিক গোষ্ঠীর প্রার্থী কোথায় ? কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্বে ২০১১ সালে কুমিল্লার সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ-এ আমি আরও একটি লেখা লিখেছিলাম। লেখাটির শিরোনাম ছিল-‘ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের পরে ঝাড়ু মিছিল করে লাভ নেই।’ মূল লেখাটি ছিল নিম্নরূপ:

‘কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা হয়েছে এ বছরই। শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও অসৎপ্রার্থী নির্বাচিত না করার দায়িত্ব শুধু ভোটারদেরই। আওয়ামীলীগ-বিএনপি নয় , ভোট দেওয়ার আগে প্রার্থীর নিজের চরিত্রটাও যাচাই করে নেবেন প্রিয় ভোটার। যার নিজের চরিত্রটাই বেলাইনে , সে কিভাবে আপনাকে একটি ভালো সিটি কর্পোরেশন উপহার দেবে? খুঁজে দেখুন আদৌ সে রকম কোনো প্রার্থী পাওয়া যায় কী না। যদি না পাওয়া যায় , তাহলে তুলনামূলক ভালো প্রার্থীকেই নির্বাচিত করুন।

অবশ্য কাকে ভোট দেবেন আপনি , সেটা নির্বাচন করা সহজ কাজ নয়। কারণ কোনো প্রার্থী কি এমন আছে , যিনি মিত্থ্যুক নন। ভালো প্রার্থীরা নির্বাচিত না হলে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক অবস্থা কুমিল্লা পৌরসভার চেয়েও খারাপ হতে পারে। কারণ খারাপ লোক একবার নির্বাচিত হয়ে গেলে তাকে আর সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। দুর্নীতিগ্রস্থ প্রার্থীদের পতন অবশ্যম্ভাবী করে তুলুন। এ ক্ষমতা আপনারই হাতে। বাংলাদেশের মানুষকে ‘ক্রিমিনাল’ চিনিয়ে দিতে হয় না , যদিও তারা দেয়ালে পিঠ না ঠেকা পর্যন্ত প্রতিবাদে সচরাচর সোচ্চার হয় না। তারপরও এই ভোটদানই হোক আপনার প্রতিবাদের ফসল। এখানে আপনি প্রতিবাদী হলে আপনার তেমন প্রাণের ঝুঁকিও থাকছে না। সুতরাং ভোট দিন বিবেকের বিচেনায় হিসেবনিকেশ করে। প্রিয় ভোটার ভাই ও বোনেরা , কোনো দখলবাজকেই ক্ষমতার লাইসেন্স দেবেন না। প্রিয় ভোটার , আপনাদের হাতে কোনো গোপন ক্যামেরা নেই। কিন্তু আপনাদের চোখ তারপরও সব দেখতে পায়। কোনো ব্যর্থ কিংবা নষ্ট লোকের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে নিজেরা বলির পাঁঠা হবেন না। যে দেশের অধিকাংশ লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস কওে , সে দেশের নেতারা কিভাবে এত ভোগী হয় , এত লোভী হয় , এত ধনসম্পদের মালিক হয়? জনগণের অধিকার হরণ করেই তারা গড়ে তোলে সম্পদের পাহাড়। সুতরাং ওইসব লুটেরাদের ভোটদান থেকে বিরত থাকুন। আপনারা অবশ্যই জানেন , জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নাগরিক অনেক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের অনেক পৌরবাসী ঝাড়ু মিছিল করে-জুতা মিছিল করে। কিন্তু কোনো উপকারই আর হয় না। চোরদেরকে যদি আপনারা নির্বাচিত করেন , তাহলে দেখা যাবে চোর ড্রেন নির্মানের-রাস্তা নির্মানের-রাস্তা মেরামতের... ইত্যাদি আরও অসংখ্য কাজের অধিকাংশ অর্থ নিজেরাই গিলে খাবে। পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়েও অনেক ব্যবসা ও রাজনীতি হয়। প্রকৃত ভালো মানুষ যদি খুঁজে না পান , তাহলে তুলনামূলক ভালো প্রার্থী নির্বাচিত করুন। তা না হলে একদিন দেখবেন , শহরের বড় বড় ডাস্টবিনগুলোর জায়গায়ও বড় বড় দোকান গড়ে উঠছে। ময়লা তখন কি মাথায় রাখা যাবে? আর তখন তো মুখও খুলতে পারবেন না। সুতরাং ভোটের পর আপনাদের হাতে আর তেমন কিছুই থাকবে না। অথচ এমন একটা সময় ছিল , যখন কুমিল্লা শহর ছিল একটি সুন্দর বাগানের মতো!এমন একটা সময় মাত্র কয়েকবছর আগেও ছিল , যখন মোবাইল ফোনের এত ব্যাপক প্রসারও ছিলো না। তখন প্রায়ই কুমিল্লার বিভিন্ন রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের সময় টেলিফোন লাইন কাটা পড়তো। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগ পোহাতো মানুষ। মাঝারি শহর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন দুর্ভোগের কথা এ শহরের অনেকে আজও ভুলতে পারেনি। আর সেসব উন্নয়ন যখন শামুকের গতিতে চলে , তখন তো আর কথাই নেই। প্রায়ই শুষ্ক মৌসুমে এলজিইডি-পৌরসভা ও টিএনটি একযোগে শহরের রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। ফলে শহর আচ্ছন্ন পড়ে ধুলায় , জনজীবন হয় বিপর্যস্ত।

এ শহরে ড্রেন পরিষ্কারের নামে আবর্জনা প্রায়ই স্তুপাকারে রাখা হয়। এ ময়লা কোথাও কোথাও সরাতে লাগে দিনের পর দিন।

শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে গমন উপযোগী শিশুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রবেশমুখী সড়কে বা স্কুল সংলগ্ন সড়কে দুঃসহ যানজটের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। বৃষ্টি হওয়ার আগেই বুঝতে পারা যায় ষ্টেডিয়াম মার্কেটের অবস্থান কেমন হবে। ঐ মার্কেট টুইটুম্বুর হয়ে কাগজের নৌকার মতো ভাসবে , তা অনেকে আগে থেকেই অনুমান করতে পারেন। পৌর কর্তৃপক্ষের লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্রেন মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে যায়। যারা ড্রেন নির্মাণ করেছেন , তাদের হয়তো জানা নেই এ শহরে কতোটা বৃষ্টি হতে পারে। অথবা এমনও হতে পারে যে, ড্রেন নির্মাণের সময় তারা বাংলাদেশের বর্ষাকালের কথা দিব্যি ভুলে গিয়েছেন। তা না হলে প্রতি বর্ষায় কেন এ শহরের এতো লোকের ঘর জলে ভেসে যায়?

শহরের ডাস্টবিনের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এটা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। কিন্তু কিছু লোক ডাষ্টবিনে ময়লা ফেলতে লজ্জা পায়। ময়লা ফেলে ড্রেনে। মনে হয় , ড্রেনই ময়লা ফেলার অতি উত্তম স্থান। নাগরিক দায়িত্বের কথা তাদের কে শোনাবে? কে বলবে-এ শহর একদা ছিলো একটি সুন্দর বাগানের মতো।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে অনেক সমস্যা-বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই অধিকাংশ রাস্তা ডুবে যায়। ড্রেনের সংস্কার চলেনা ঠিকমতো। শহরের পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যার সমাধানে কোনো অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি নেই , যা সুস্থ নগর জীবনের জন্য অপরিহার্য। পৌর এলাকার অনেক ড্রেন আকাবাঁকা ও অপরিকল্পিত। এসব ড্রেনে পলিব্যাগের প্রতিবন্ধকতা বর্তমানে কিছুটা কমলেও ময়লা ফেলা বন্ধ হয়নি।

কাগজে কলমে দেশে এখন পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবে তা কার্যকরী হয়েছে কী না , তার প্রমাণ পাওয়া যায় শহরের ড্রেনগুলো দেখলে। কৃত্রিম বস্তুর সাহায্যে তৈরী এসব পলিব্যাগ ব্যবহারের পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়-যা শেষ পর্যন্ত নর্দমায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এসব পলিব্যাগের ক্ষয় নেই বলে পলিব্যাগসৃষ্ট কোনো সমস্যারও সমাধান খুব সহজ নয়। শহরের অনেক ড্রেন এখনও অবৈধ দখলে। ড্রেন ভরাট করে এক সময় অনেক দোকান এ শহরে গড়ে উঠে। বর্তমানে সে প্রবণতা কমলেও ড্রেন দখলের চিত্রও রয়েছে। আর ড্রেনের ভিতর ময়লা-আবর্জনা ফেলা শহরের এক শ্রেণীর মানুষের নিয়মিত কাজ। ফলে ড্রেনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। একটু বৃষ্টি হলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। সামান্য বৃষ্টি হলেই যে নগর ডুবে যায়,

সেই নগরীর উন্নয়ন হলো কোথায় , কতটুকু। শহরের অনেক রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই করুণ। এম্বুলেন্সে করেও যদি কোনো রোগী হাসপাতালে যায় ,তারপরও তার খবর হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে এসব রাস্তায় যানবাহন চলাচলও ব্যাহত হয়। তা হলে কুমিল্লা নগরীর প্রয়োজনীয় উন্নয়ন হলো কোথায় এবং কতটুকু (চলবে)।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১২

সোহানী বলেছেন: খুবই প্রয়োজনীয় ও সময় উপযোগী লিখা কিন্তু লিখাটি কয়েকটি ভাগে লিখলে পাঠক এ গুরুতর অভিযোগগুলোতে মনোনিবেশ করতে পারতো। তবে রাস্তার এ বেহাল অবস্থার আশু সমাধান হওয়া উচিত।

অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.