নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

জসীম উদ্দিন অসীম খুব বেশি হতাশাবাদী মানুষ

২০ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:২৩

PHOTO:jashimashim-১৯৯৬

তাপসী দাশগুপ্তা- প্রথম প্রকাশ : ৮ অক্টোবর , ২০০৪ , সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ , কুমিল্লা।



আড্ডা: একটা মানুষকে জানার সর্ব্বোচ্চ মাধ্যম। এ রকম আড্ডা থেকেই জসীম উদ্দিন অসীমের কাজকর্ম সম্পর্কে অনেককিছুই জানি। তার নিজের সম্পর্কে তার নিজেরই তেমন কোনো আস্থা নেই। খুব বেশি হতাশাবাদী মানুষ তিনি , আমার মনে হয়। তবু তিনি শিল্পের চর্চায় কিছু সময় ব্যয় করেন। কথা বলেন , প্রায়ই সিনেমা আর ফটোগ্রাফি অথবা সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে। এগুলো খুব কাছাকাছি মাধ্যম। বিকল্প চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিষয়ক সংগঠন ‘দি সিনেমা’ স¤প্রতি কুমিল্লা টাউন হলে আয়োজন করেছিলো জসীম উদ্দিন অসীমের তৃতীয় একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী : ‘বন্যা=নদীমাতৃক রাক্ষস’। প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড) এর পরিচালক এম খায়রুল কবীর। প্রদর্শনীটি আমি দেখেছি। অনেক ছবিই মুগ্ধ করেছে আমাকে।

জসীম উদ্দীন অসীম , গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে চলচ্চিত্রের প্রতি আকর্ষণ থেকে চলচ্চিত্রের জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাধায় শেষ পর্যন্ত আর তা পারেননি। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে ঢাকায় কয়েকবছর নাট্যচর্চা করেন। সে সময়ে আবার জীবনের মোড় ফেরান চলচ্চিত্রের দিকে। এবার বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র। তার কমিউনিস্ট বন্ধু আবিদ হোসেনের চলচ্চিত্র বিষয়ক অধ্যয়ন চক্র ‘স্বকল্প ধারা’র সঙ্গে নিজেকে জড়িত করেন। পড়েন রাশি রাশি চলচ্চিত্রের বই। কিন্তু অর্থাভাবে ফিল্ম বানানোর পরীক্ষানিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি তার। তখনই গিয়ে তার ঝোঁক পড়ে স্টিল ফটোগ্রাফির দিকে। তারপর ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কে দিনের খর রোদে হেঁটে হেঁটে ছবি তোলেন। সেসব ছবির অধিকাংশ নেগেটিভ হয় হারিয়ে গেছে অথবা নষ্ট হয়েছে। যেগুলো বেঁচে আছে , তাতে তার চলচ্চিত্রের প্রতি যে ঝোঁক ছিল , তা বেশ প্রতিফলিত হয়েছে। ছবির দৃষ্টিকোণই বলে দেয় তার ছবি দিয়ে তিনি কী বুঝাতে চেয়েছেন। তার প্রথম দিকের ছবির দর্শন কোনো অস্বচ্ছ দর্শন নয়। দারুণ দিকনির্দেশনামূলক। বিষয়বস্তুও আকর্ষণীয়। ঢাকার ভাস্কর্য , যাদুঘর , বাংলা একাডেমীর বটগাছ , চারুকলার দেয়ালচিত্র , শিশু একাডেমী ও বাংলা একাডেমীর সামনে বসে বিক্রি করা মৃৎশিল্পের ধরণ...এসব খুব সাধারণ বিষয় হলেও দৃষ্টিকোনগত দিক থেকে উল্লেখযোগ্য। আর আছে ‘রূপালি’ নামের একটি মেয়ের একক মুখের অনেক রকম ছবি। কে সেই রূপালি ?

কথায় কথায় জানা গেছে অসীমের স্বপ্নের শহর এ কুমিল্লা-ই। ১৯৯১-তে ঢাকায় গিয়েছিলেন পড়তে। ঢাকা থেকে কুমিল্লায় এসে স্থায়ীভাবে থাকা ও সাংবাদিকতা শুরু করেন মূলত ১৯৯৬ সাল থেকেই। বাকি সময়ে বারবার ঢাকা তাকে ডেকেছে। কখনো কখনো গিয়েছেন। কিন্তু আবার ফিরেও এসেছেন। গত অনেক বছর ধরে তিনি কুমিল্লার ঘ্রাণ এমনভাবে পাঠ করেছেন যে , এ শহর , ছেড়ে দেয়া তার জন্য এখন খুব কঠিন হয়েই দাঁড়িয়েছে। কী আছে তার কুমিল্লায় ? অথচ জীবিকার প্রশ্নে কতো আগেই না তার এ শহর ছাড়ার প্রয়োজন ছিলো। কখনো কখনো তিনি পত্রিকার চাকুরি ছেড়ে দিনের পর দিন বেকার থেকে মানুষের ঘৃণা সহ্য করেও দেখেছেন এ শহর ছাড়তে পারেননি। আলাপে সেদিন জানালেন , তিনি মনে করেন ফটোগ্রাফি চর্চায় তার কোনো মেধাই নেই। তাই এখন আর ছবিই তুলেন না। অথচ কিছুদিন আগেও তিনি কুমিল্লার দৈনিক শিরোনাম পত্রিকার রিপোর্টার ও ফটো সাংবাদিক ছিলেন। গত ১২ বছর ধরে তোলা ছবি দিয়ে যদিও এ বছর থেকে প্রদর্শনী করতে ব্যস্ত হয়েছেন , তার আশা ছিলো এ প্রদর্শনীর কাজে তিনি কোনো পৃষ্ঠপোষক পাবেন। কিন্তু তিনি সম্ভবত অনেকটা আপোষহীন মানুষ বলেই তারও সুযোগ পাননি। একসময় মার্কসবাদে তার দারুণ আসক্তি ছিলো। ছাত্র ইউনিয়ন , যুব ইউনিয়ন ও উদীচী-র সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। বর্তমানে টলস্টয়বাদ-গান্ধীবাদ নিয়ে পড়াশোনায় আচ্ছন্ন , যদিও লিও টলস্টয়ের শেষ জীবনের শিল্পচিন্তাকে তিনি পরিহার করে চলেন বলেও জানালেন। এ বছর তিনি মোট তিনটি একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করেন। আগামী ডিসেম্বরের দিকে তার নিজের আঁকা ছবিরও প্রদর্শনী করার ইচ্ছের কথা জানালেন। তারপর মন দেবেন আবার হয়তো সাংবাদিকতায়। সাহিত্যচর্চাকে তো আর বাদ দিতে পারছেনই না। আর মন চাইলে তো সংগীতের কাছে ফিরে যাবেনই। হারমোনিয়ামের রিডে তার হাত দেখেছি আমি। একমাত্র রবীন্দ্রসংগীতই যেন তার প্রিয়। শেষ পর্যন্ত অসীম আসলে কী করবেন , তা যেমন আমরাও জানি না , ঠিক তেমনি জানেন না তিনি নিজেও।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.