নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুমিল্লার ইফতারির বাজার এখনো চড়া: মচমচে জিলাপিতে পোড়া মবিল ?

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:২২





রমজান প্রায় শেষ হয়ে আসলেও কুমিল্লার নগরীর ইফতারির বাজার এখনো চড়া। যেহেতু রোজাদারগণ ইফতার সামগ্রী কিনতে প্রায় বাধ্য , সেহেতু বিক্রেতারা রোজাদারদের একপ্রকার জিম্মি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ইফতারির

উপকরণেও নানা ভেজাল রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।এমনকি মুড়ি এবং জিলাপিতেই সবচেয়ে মারাত্মক রাসায়নিক রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে , যা ছাড়া ইফতারের কথা ভাবতেও পারেন না ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। যে মুড়ি ছাড়া ইফতার প্রায় কল্পনাও করা যায় না , সেই মুড়ি আকারে বড় করতে ব্যবহার হচ্ছে ইউরিয়া সার, মুড়িকে উজ্জ্বল সাদা বর্ণ দিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক সোডিয়াম হাইড্রো সালফাইড , যে রাসায়নিক পদার্থটি কাপড়ের কারখানায় সাদা রং করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর জিলাপি দীর্ঘক্ষণ মচমচে রাখতে তেলের সঙ্গে গাড়িতে ব্যবহৃত পোড়া মবিল অল্প পরিমাণে হলেও মেশানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কুমিল্লার নগরীর ইফতার সামগ্রীর দোকানগুলোতে গতবছরের চেয়ে ইফতারির দাম এবার অনেকটাই চড়া। কান্দিরপাড় হোটেল ডায়না,বাংলা রেস্তোরা, মিনার্ভা, আমানিয়া, জেনিস সুইটস, পোড়াবাড়ি, হোটেল কস্তোরি, শাসনগাছার হোটেল ভাই ভাই,খাজা,শাহাজালাল,মিঠাই,ডাক বাংলাসহ সর্বত্রই ইফতারির বাজার জমজমাট ,কিন্তু দাম এখনো চড়া । প্রতিদিনই ইফতারসামগ্রী কিনতে মানুষের ঢল নামে নগরীর কান্দিরপাড়ে। বেলা ৩টার আগেই দোকানিরা ইফতারসামগ্রী নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেন। ক্রেতারাও আসতে শুরু করেন দুপুর থেকে। বিকাল ৩টার দিকে রীতিমত জমে ওঠে নগরীর সবচেয়ে বড় এ ইফতারির বাজার । এসব বাজারে কিছুটা ভিন্ন স্বাদের ইফতারসামগ্রী কিনতে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা কান্দিরপাড়ে ছুটে আসেন। আর এ ইফতারিতে নানাভাবেই ভেজাল মেশানো হয়।হোটেল-রেস্তোরাঁয় জিলাপি তৈরিতে অবাধে বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে তৈরি 'বাসন্তি রং'ও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ রং ব্যবহার করা জিলাপি সাধারণ জিলাপির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি উজ্জ্বল দেখায়। ইফতারির আরেক আকর্ষণ হচ্ছে হালিম। মাটির তৈরি খোড়ার মধ্যে হালিম সাজিয়ে রেখে ক্রেতাদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করা হয়। হালিমে মাংসের দেখা মিলে খুব কম, মিশানো হয় আগের দিনে অবিক্রিত ডাল ও মাংসের উচ্ছিষ্ট। ইফতারে ফল কিংবা ফলের জুস রোজাদারদের খুব পছন্দ। কিন্তু বাজারের প্রায় সব ধরনের ফলে মিশানো হয় রাসায়নিক দ্রব্য।



মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ভেজাল চিনি। এর রাসায়নিক নাম সোডিয়াম সাইক্লামেট। মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যকে অধিকতর মিষ্টি করতে ব্যবহৃত হচ্ছে স্যাকারিন, সুকরালেস ইত্যাদি। রঙিন ইফতারি তৈরিতে খাবারের রংয়ের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে টেক্সটাইলে ব্যবহৃত কেমিক্যাল রং। এ ছাড়াও একবার ব্যবহৃত তেল বারবার ব্যবহার করছে ফুটপাতের দোকানগুলো। আইসক্রিম, মিষ্টিসহ অনেক পণ্যেই চিনির পরিবর্তে অহরহ ব্যবহার হচ্ছে সোডিয়াম সাইক্লাইমেট। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাংসজাতীয় ইফতারির মধ্যে ঝালি কাবাবের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দোকানিরা জানান, পেঁয়াজু প্রতি পিচ ৫-১০ টাকা,বেগুনি পিচ ৫-১০ টাকা,ডিমের চপ ১৫-২০টাকা,বুট কেজি ১৪০-১৬০টাকা,চিড়া ভাজা ১২০,নিমকি কেজি ১২০ টাকা,ছমুছা পিচ ৫ টাকা,সবজি বড়া ১০ টাকা,জিলাপি কেজি মান অনুযায়ী ১১০,১৫০ এবং ৩০০ টাকা,মুরগির কাবাব ৭০ টাকা,খাসি কাবাব ১৫ টাকা, হালিম ৬০-১২০ টাকা বিক্রি করছেন। এদিকে নগরীর ডায়না হোটেল গিয়ে দেখা যায়,জিলাপী ১৫০ টাকা,ডিম চপ ১৫টাকা,আলু চপ ১০ টাকা,জালি কাবাব ১০ টাকা,টিকা কাবাব ১০টাকা,মরিচা ৫টাকা,পিস কাকলেট ৩০টাকা,মাছের জালি কাবাব ১০টাকা,সমুছা ১০টাকা,টিক্কা ২০টাকা,বুট কেজি ১৬০টাকা,সবজি বড়া ১০টাকা এবং হালিম ১৬০ টাকা,তেয়ারি হাফ ৮০ এবং ফুল ১৬০ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। অপরদিকে আমানিয়া হোটেলে জিলাপি ১১০ টাকা,আলুচপ ৬টাকা,সবজিচপ ৬টাকা,বেগুনচপ ৬টাকা,ডিম চপ ১৫টাকা,টিক্কা কাবাব ২০টাকা,আলু বড়া ১০টাকা,জালিকাবাব ২০টাকা,চিরা ভাজা ১২০টাকা কেজি,নিমকভাজা ১২০টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। এদিকে বাঙলা রেস্তোরায় গিয়ে দেখা যায়, পেয়াজু ৫টাকা, বেগুনি ৫টাকা, আলুর চপ ৫টাকা, শাক ফুলরি ৫টাকা, সবজি পাকুরা ৫টাকা, দোলা কেজি ২০০ টাকা, ডাবলি কেজি ১৫০ টাকা, মুড়ি প্যাকেট ৫/১০টাকা, চিড়া ভাজা কেজি ১২০ টাকা, নিমকি ১ প্যাকেট ১০ টাকা, ডিম চপ ১৫ টাকা, জালি কাবাব ২৫ টাকা, চিকেন সমুচা ১৫ টাকা, পনির সমুচা ১৫টাকা, স্প্রিং রোল ১৫ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০টাকা, কাঠি কাবাব চিকেন/গরু ২০ টাকা, ইরানি জিলাপী কেজি ৩০০ টাকা, বুরিন্দা কেজি ১৫০ টাকা, তান্দুরি চিকেন ১০০ টাকা, তেহেরি খাসী হাফ/ফুল ৮০/১৬০টাকা, তেহেরি গরু হাফ/ফুল ৮০/১৫০ টাকা। এছাড়া শাহী হালিম গরু/খাসী ৮০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন দোকানগুলোতে দেখা গেছে ইফতারির মধ্যে সাসলিক, পনির পেটিস ও রোল, নারকেলি, পাকোড়া, চিকেন টোস্ট, ভেজিটেবল রোল, নিমকি, ছোলা বুট, কাঁচা বুট, কিমা পরোটা, শিঙাড়া ও সমুচা, বেগুনি, আলু ও ডিমের চপ, পেঁয়াজু, টিকিয়া, ঘুংনি ইত্যাদি দেদার বিক্রি হচ্ছে। ইফতারসামগ্রীর পাশাপাশি কুমিল্লার ফলের দোকানগুলোতেও থাকে প্রচন্ড ভিড়। দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আম, মালটা, আপেল, আনার, আনারস, পেঁপে, কলা ও জাম্বুরা বিক্রি হচ্ছে বেশি।

এসব খাবারে উপস্থিত ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ স্বল্পমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উচ্চমাত্রার এসব রাসায়নিক পদার্থের কারণে দ্রুত কিডনি নষ্ট, ক্যান্সার, লিভারব্যাধি হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। শিশুদের হার্টের রোগ ও দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে। কিন্তু ইফতারসামগ্রী বিক্রেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা বলেন,তারা কখনোই ইফতারসামগ্রীতে বিষাক্ত ক্যামিকেল মেশান না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.