নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিনলিপি:১৪০২:কিছু ছবির নান্দনিকতা অস্বীকারের উপায়ই নেই

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:০৫

সকালে মামুন সিদ্দিকী ও মোতাহার হোসেন মাহবুব এসেছিলেন বাসায়। আলাপ হলো সৃজনশীল প্রকাশনার বিভিন্ন গ্রন্থ বিষয়ে। একুশের বইমেলা , যা মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে , এ নিয়েও প্রসঙ্গ উঠে আসে । মোতাহার হোসেন মাহাবুব বলেন , সাহিত্য পত্রিকা বিষয়ে কিছু কথা। বিশেষ করে ঋতুভিত্তিক প্রকাশনার দিকেও গুরুত্ব দেন তিনি। কিন্তুু পৃষ্ঠপোষক তো নেই।



সন্ধ্যায় বাসায় এসেছিল কুমিল্লার তরুণ কবি মাসুদ আশরাফ। তার সঙ্গে আলোচনা শুরু হলো চিত্রকলা বিষয় নিয়ে। হিটলারের সংগৃহিত যৌন উদ্দীপক চিত্রকর্ম এবং অশ্লীল ছবির বিভিন্ন প্রসঙ্গও আসে আলোচনায়। ছবি আকর্ষণীয় হলেও সামাজিক মূল্যবোধের প্রসঙ্গও মনে রাখা দরকার । ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলেও কিছু ছবির নান্দনিকতা অস্বীকারের কোনো উপায়ই নেই। মাসুদের কাছে গ্লোসি পেপারে ছাপা চিত্রকলার একটি ইংরেজি বই দেখে আমার এই অনুভব হয়। কারণ ‘মনে দাগ কাটা এসব ছবি’কে শুধু মূল্যবোধের দোহাই দিয়েই চাপা দেওয়া ঠিক নয়। সাহিত্যতত্ত্বের মতো নন্দনতত্ত্বও সম্ভবত আমার এ মতামতের পক্ষে অবস্থান নেবে।



রাতের বেলা কুমিল্লার সাপ্তাহিক ‘আমোদ’ অফিসে যাই। ওখানে গিয়ে মামুন সিদ্দিকীর ‘বাংলাদেশের ও বিশ্বের রাজনীতি বিষয়ক ভাবনা’ প্রসঙ্গও উঠে আসে। সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুলের প্রসঙ্গও। এই সাংবাদিকের বাসার কাছেই আমাদের ভাড়া বাসা। মামুনের বাসা হলো বাদুরতলায় , ডা. জোবায়দা হান্নানের বাসার কাছে। তবে আমি বলি ব্রাহ্ম্যমন্দিরের কাছে। কারণ ঢাকায় যখন ছিলাম , লাইব্রেরীতে রাজা রামমোহন রায় ও তার ব্রাহ্ম্যধর্ম বিষয়েও অনেক পড়েছিলাম। উনিশ শতকের প্রথমদিকে রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্ম্যধর্ম প্রবর্তন ও ব্রাহ্ম্যসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ত্রিপুরার মহারাজ শ্রী বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুর বর্তমান ফয়জুন নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এই ব্রাহ্ম্যমন্দির স্থাপনের জন্য ভূমি দান করেন । সেই ভূমিতে ত্রিপুরা ব্রাহ্ম্য মন্দির স্থাপিত হয়।



ব্রাহ্মনবাড়িয়ার কালীকচ্ছ গ্রামের আনন্দস্বামীও ব্রাহ্ম্যধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর তারই জামাতা ছিলেন কুমিল্লা শহরের বিখ্যাত সিংহ পরিবারের সন্তান গুরুদয়াল সিংহ । তিনিও ব্রাহ্ম্যধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং কুমিল্লার প্রথম পত্রিকা ‘ত্রিপুরা হিতৈষী’ও তিনিই বের করেছিলেন। তার সেই সিংহ প্রেস থেকেই নবীনগরের মনোমোহন দত্তের সংগীতগ্রন্থ ‘মলয়া’ বের হতো। ‘মলয়া’ আমি প্রথম পড়ি ১৯৮৯ সালে আমার বাবার কাছ থেকে বই নিয়ে। এসব নিয়ে ‘আমোদ’ অফিসে বাকীন ভাইয়ের সঙ্গেও কথা হয়। আমার কাছে তিনি এ বিষয়ে একটি লেখাও চান। যদিও লেখা দেবো বলেছি , কিন্তু লেখা দেওয়ার মতো এত তথ্য আসলে আমার কাছে নেই।

৩০ ফাল্গুন ১৪০২ , পশ্চিম চানপুর , কুমিল্লা।

!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

সাপ্তাহিক ‘আমোদ’ পত্রিকার বাকীন ভাইয়ের সঙ্গে ফটোগ্রাফি বিষয়ে অনেক কথা হয় আজ। ছবিতে যে গল্প কিংবা স্টোরি থাকে , সে প্রসঙ্গেও আলাপ হয় । ছবি সম্পাদনার বিষয়ে , ছবির অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ প্রথম পড়েছিলাম ঢাকায় লাইব্রেরীতে। ‘মনজুর আলম বেগ’-এর ফটোগ্রাফি বিষয়ক একটি বইয়ে।

বাকীন রাব্বী বলেন , ছবিতে শুধু সংবাদমূল্যই নয় , মানবিক আবেদনও থাকতে হবে। কিন্তু আমি ছবির প্রথাবিরোধী এঙ্গেল কিংবা দৃষ্টিকোন উপস্থাপনে বিশ্বাসী। বাকীন রাব্বী ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া সাইক্লোনের বিভিন্ন ছবির গল্প আমাকে শোনান । ‘আমোদ’ সম্পাদক শামসুননাহার রাব্বীর কাছে জানতে পারি এখনকার দৈনিক বাংলা পত্রিকাই দৈনিক ‘পাকিস্তান’ নামে বের হতো।



এ ফটোগ্রাফি নিয়ে আজ আরও কথা হয় কুমিল্লা শহরের মনোহরপুর ‘রূপায়ণ’ ষ্টুডিও-র রামু গোম্বামীর সঙ্গেও। জানতে পারি তার বাবাও খুব নামকরা ফটোগ্রাফার। তার দাদা নির্মল গোস্বামীর কথা শুনে আরও ভালো লাগলো । নির্মল গোম্বামীর প্রতি রামু গোস্বামীর ভক্তি শ্রদ্ধা দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে।



তবে আজ আমি ওখানে গিয়েছিলাম অন্য একটি কাজে , ফটোগ্রাফির কাজে নয়। আমি গিয়েছিলাম মনোহরপুর ‘উষা মার্কেট’-এর পারিজাত রেষ্ট হাউসের মালিক অজিত দেবের কাছে। অজিত দেব এক মুক্তিযোদ্ধার গল্প আমাকে শোনান । তার নাম রেজু মিয়া। কুমিল্লার মুরাদনগরের এ মুক্তিযোদ্ধা রেজু মিয়ার বিষয়ে নোট নেই অজিদ দেবের স্মৃতি থেকে। এ নিয়ে একটি লেখা দিতে হবে সাপ্তাহিক ‘আমোদ’-এ । দীর্ঘদিন থেকেই নাকি তিনি বাকীন ভাইকে এ বিষয়ে লেখার পরামর্শ ও অনুরোধ করে আসছিলেন। রেজু মিয়া নাকি বড়ই অবহেলায় মারা গেছেন।



এছাড়া আরও নানা প্রসঙ্গে আলাপ করেন অজিত দেব। কুমিল্লা শহরে অবস্থিত ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ঈশ্বর পাঠশালার বিষয়েও কিছু কথা বলেন। এ পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্য তার পিতা ঈশ্বরচন্দ্র ভট্টাচার্যের নামে এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলেও আজ অনেকে এর সঠিক ইতিহাস না জেনে ইতিহাস বিকৃত করেন বলেও তিনি দাবি করেন।



১৯৫৫ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘আমোদ’-এর প্রথম কপির প্রথম পৃষ্ঠার একটি ছবি বাঁধাই করে ‘আমোদ’ অফিসে লাগানোর প্রস্তাব দেই সম্পাদক শামসুননাহার রাব্বী খালাম্মাকে। খালাম্মা এ বিষয়ে ভেবে দেখবেন বলেছেন।

৪ চৈত্র ১৪০২, পশ্চিম চানপুর, কুমিল্লা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:১৭

রাজিব বলেছেন: কুমিল্লায় ব্রাহ্ম্যধর্ম নিয়ে তেমন কিছু জানি না বা কোথাও তেমন কিছু দেখিনি। যদি পারেন তাহলে এ নিয়ে ব্লগে পোস্ট দিন। ব্রাহ্ম্য ধর্মের কি কোন মন্দির কুমিল্লায় এখনো টিকে আছে। ঢাকায় গিয়েছিলাম বাংলা বাজারের কাছে।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৩২

জসীম অসীম বলেছেন: ভাই, ধন্যবাদ। বিস্তারিত জেনে জানাবো। তবে এখনো সর্বধর্ম মিশনের মন্দির রয়েছে অনেক। তবে এগুলো ঠিক রাজা রামমোহন প্রবর্তিত মন্দিও নয়। ভালো থাকবেন।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬

খাটাস বলেছেন: আপনার দিনলিপি ভাল লাগল। পড়ে বেশ কিছু নতুন তথ্য ও বিষয় জানলাম। রাজীব ভাই এর সাথে সহমত। ব্রাহ্ম মন্দির নিয়ে পাড়লে অনুগ্রহ করে একটা পোস্ট দেবেন সময় পেলে।
ধন্যবাদ জানবেন পোস্টের জন্য।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

জসীম অসীম বলেছেন: ভাই ,অনেক ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। আসলে কুমিল্লায় একসময় যে মন্দিরগুলো ব্রহ্মমন্দির ছিল , তার অনেকগুলো এখন সর্বধর্ম মিশনের উপাসনালয়। ওখানে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম প্রায় সকল ধর্মের লোক উপাসনা করে। তবে তাদের সর্বধর্ম প্রথম প্রচার করেছিলেন শ্রী আনন্দস্বামী মহারাজ। আনন্দস্বামী রাজা রামমোহন প্রবর্তিত ব্রাহ্মধর্মের অনুসারি ছিলেন কি না , তা আমার জানা নেই। শ্রী আনন্দস্বামী মহারাজের ধর্ম-দর্শনকে অবলম্বন করে সংগীত চর্চা করতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফকির আপ্তাবুদ্দিন , মনোমোহন দত্ত ও বাবু লব চন্দ্র পাল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফকির আপ্তাবুদ্দিনের ছোটভাই ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ। এ নিয়ে আমি যেটুকুই জানি , তা নিয়ে কখনো একটি লেখা তৈরী করে পোস্ট দেবো সময় করে। মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.