নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

জুতো পালিশ করে সেবার তহবিল গঠন করতো কুমিল্লা ছাত্র ইউনিয়ন

২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০১

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে , রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সংসদ কোনো এক সময় কুমিল্লায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। কুমিল্লার ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে সংযোজন করেছিলো নতুন এক মাত্রা। সমাজসেবায়, ছাত্রদের অধিকার আদায়ে, ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সংসদ ব্যাপক সাড়া জাগায়। এ সময়ে কুমিল্লা ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ রাস্তায় রাস্তায় জুতো পালিশ করে , আইসক্রীম বিক্রি করে এবং এমনি আরও বিভিন্ন শ্রমের কাজ করে তহবিল গঠন করে, সেই তহবিলে সমাজ সেবার কাজ করে যেতো। আজকে কোনো রাজনৈতিক-সামাজিক ছাত্র সংগঠনের এমন কর্মসূচীর কথা কল্পনাও করা যায় না। কুমিল্লার এসব গণমুখী কর্মসূচী ষাটের দশকে সারাদেশব্যাপীই ব্যাপক সাড়া ফেলে।

১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের ফলশ্র“তিতেই ছাত্র ইউনিয়নের জন্ম। এ বছরই ডিসেম্বর মাসে ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রগতিশীল ছাত্র কর্মীদের সংগঠন ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফ্রন্ট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। ঐ সংগঠনের সাধারণ স¤পাদক নির্বাচিত হন এ.বি.এম শাহজাহান। তার উদ্যোগেই কুমিল্লায় সর্বপ্রথম ছাত্র ইউনিয়ন গঠিত হয়।

১৯৫৩ সালে মনসুর-উর রহমানকে আহবায়ক করে আনুষ্ঠানিকভাবে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কুমিল্লায় ছাত্র ইউনিয়নের শুরুতেই ১৯৫৩ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সর্বপ্রথম ছাত্রদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন জেলা ছাত্র ইউনিয়ন আহবায়ক মনসুর উর রহমান। ১৯৫৩ সালে প্রশংসনীয় তৎপরতার কারণে ছাত্র ইউনিয়ন শুধু ভিক্টোরিয়া কলেজে নয়, শহরের অন্যসব কলেজগুলোতেও স্থান করে নেয়।

১৯৫৩ সালের ২২,২৩ ও ২৪ আগষ্ট পূর্ব পাকিস্তান সাংস্কৃতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনে। এ সম্মেলনের প্রধান আয়োজক ছিলেন কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। এর মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক আবুল খায়ের, অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক মফিজুল ইসলাম, এডভোকেট মোঃ ফয়েজ উল্লাহ, জালাল উদ্দিন শানু, সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ প্রমুখ।

১৯৫৪-৫৫ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র-সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন আব্দুস সোবহান ও জি.এস নির্বাচিত হন আলী আহমদ মজুমদার। ১৯৫৫-৫৬ সালে জি.এস দানেস আলী মোল্লা ও ১৯৫৬-৫৭ সালে ভিপি এ.কে.এম হুমায়ূন আজাদ ও জি.এস নূর উদ্দিন আহমেদ ছাত্র ইউনিয়নে নেতা ছিলেন। ১৯৫৬ সালে জেলা ছাত্র ইউনিয়ন সারা জেলায় সংগঠন গড়ার শক্তিশালী উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ সেবাসপ্তাহ পালন উপলক্ষে রাস্তায় রাস্তায় জুতো পালিশ করতো। এমনকি আইসক্রীম বিক্রিসহ শ্রমসাধ্য আরও কাজের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করে ছাত্র ইউনিয়নের সমাজসেবা তহবিলে জমা দিত। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে, শিক্ষা আন্দোলনে, ছয়দফা আন্দোলনে ও মুক্তিযুদ্ধে সারা দেশের মতো কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়নও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। স^াধীন বাংলাদেশের সামরিক শাসক উৎখাতের লক্ষ্যে কুমিল্লার কর্মীরাও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে জেলা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা মিছিল-মিটিং-দেয়াল লিখন পোষ্টারিংসহ বিভিন্নভাবে আন্দোলন করে গেলেও কুমিল্লা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচি আর আগের মতো নেই। তারপরও এ ছাত্র সংগঠনটির সমাজকল্যাণমূলক কিছু কর্মসূচী এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সংসদ কর্তৃক ব্রাইটস্টার বৃত্তি প্রদানই তার একটি উদাহরণ হতে পারে। তবে ষাটের দশকের গণমুখী কর্মসূচীর মতো কর্মসূচী সংগঠনটির কুমিল্লা জেলা সংসদের এখন আর নেই। কিন্তু আমরা আবার সেই সোনালী সংগঠনের সোনালী দিনগুলোকে এ দেশের জন্য ফিরিয়ে আনতে চাই। কারণ এ সংগঠনের একজন অতি সাধারণ কর্মী ছিলাম বলে আজও খুব গর্ববোধ করি। কারণ অন্য অনেক বুর্জোয়া ছাত্র সংগঠনের মতো আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা কখনো কোনো পেশীশক্তির পূজা করিনি । অবৈধ অর্থের লোভে আমরা নৈতিকতাকে এখনো যে একবিন্দু বিসর্জন দিতে পারিনি, সেই নৈতিকতার শিক্ষা ঘরে যেমন বাবা-মা দিয়েছেন, বাইরেও তার চর্চা অব্যাহত রাখতে পেরেছি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সংসদসহ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন সময়ের ইস্পাতকঠিন নেতৃবৃন্দের সঙ্গ-শিক্ষা লাভের কারণেই। তাদের কাছে আজীবনের ঋণ আমার। এ ঋণ কোনোদিনও শোধ হওয়ার নয়। কারণ আমরা দেশের রক্ত পান করার বর্বরতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বরং নিজের শরীর থেকে একবিন্দু রক্ত দেশের জন্য বিসর্জন দেওয়ার দীক্ষাই নিয়েছিলাম। তাই আজ বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সংসদসহ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন সময়ের ইস্পাতকঠিন নেতৃবৃন্দের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা আমার।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:২০

আদরসারািদন বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা তাঁদের জন্য

২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৫১

জসীম অসীম বলেছেন: সালাম নেবেন। ভালো লাগলো আপনার মতামত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.