নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেই কিশোর বয়সেই একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে লিখলাম ‘বয়স নয়,আপনি আমার যোগ্যতা যাচাই করুন’

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৪

বিষয়টি নিয়ে ভাবলে এখনও আমার হাসি পায়। কারণ বিভিন্ন পাঠাগারের অনেক অনেক বইপত্র পড়ে সেই শৈশবেই আমার মনের ভিতর এক ধরনের অহংকারবোধ তৈরি হয়েছিল,ঐ যে বলে ‘অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী’।



আমার বাবা তখন চট্টগ্রামে চাকুরি করতেন। বাবাকে বললাম, আমি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেবো। আমি বাবাকে এই বলেও নিশ্চিত করতে চাইলাম যে, ভর্তি পরীক্ষা দিলেই আমি টিকে যাবো। বাবা হাসলেন এবং বললেন, আমরা অল্প আয়ের মানুষ। এত বড় স্বপ্ন আমাদের পূরণ হবে না। বাবার কথায় আমি খুব রাগ করলাম। গেলাম আমারই এক গণিত শিক্ষকের কাছে। তাকে বললাম, আপনি আমাকে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ করে দিন। কিন্তু সেই শিক্ষকও বললেন, দুনিয়া সম্পর্কে তোমার কোনো ধারনাই নেই। ওই চিন্তা বাদ দাও। স্কুলের পড়াই পড়ো। তার এ কথা শুনে মনে আরও কষ্ট পেলাম। সেটা ১৯৮৫ সালের কথা। আমি তখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র।



এই ঘটনার ৩ বছর পর চট্টগ্রামেই ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের নবম শে্িরণর এক ছাত্রের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তার সঙ্গে আলাপ করে ক্যাডেট কলেজের বিভিন্ন পাঠ্যক্রম বিষয়ে জানি। তখন আমার কাছে এসব পাঠ্যক্রম অধ্যয়ন অসম্ভব ছিল না। ক্যাডেট কলেজ কিংবা শিক্ষাবোর্ড প্রবর্তিত সিলেবাসের আলোকে আমি দিব্যি লেখাপড়া চালাতে পারতাম। তাই আমি তখন বাবাকে বললাম, ওই ছেলে যদি ক্যাডেট কলেজে পড়তে পাওে, আমি কেন পারবো না। বাবা আমার কথায় মনে খুব কষ্ট পেলেন। বললেন, বড় হলে সব বুঝবে, এখন তুমি বুঝবে না। ক্যাডেট কলেজে পড়তে হলে শুধু মেধা নয়, অর্থবিত্তও থাকতে হয় এবং লেখাপড়ার বিষয়ে থাকতে হয় সদূরপ্রসারী পরিকল্পনা । ‎‎হুট করে কেউ ওখানে পড়তে পারে না...ইত্যাদি।



বাবার কথায় আমি খুব রাগ করে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুননবীকে একটি চিঠি লিখলাম। চিঠিতে আমি লিখলাম: ‘যদিও এখন আর আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নই, যদিও সার্টিফিকেট মোতাবেক এখন আমার বয়স-১৫, তবু অনুরোধ করছি, আপনি আমার ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দেখুন ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিষয়ে আমার যোগ্যতা রয়েছে কী না...।’



হায়! আমার এমন চিঠি পড়ে তিনি হয়তো অনেকই হেসেছিলেন। আজ আমার এমনটিই মনে হয়। কিন্তু তিনি ঠিক আমার মতো এক শিশু-কিশোরের চিঠির উত্তরও দেবেন, সেটা আমি ভাবতেও পারিনি তখন। ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি আমাকে লিখলেন:



‘প্রিয় জসীম অসীম, তোমার ২৪/১২/৮৮ ইংরেজী তারিখের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, ক্যাডেট কলেজে শুধুমাত্র এগারো থেকে সাড়ে বারো বছরের ছেলেদেরই সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি তোমাকে কোন প্রকারের সাহায্য করতে পারছিনা বলে দুঃখিত।

তোমার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।



নূরুন্নবী

(লেঃ কর্নেল) ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ।



পুুরনো কাগজপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে আজও যখন সেই চিঠিটি কখনো কখনো আমার হাতে পড়ে, তখন বিষয়টি নিয়ে আমার খুবই হাসি পায়। কারণ শৈশবে আমি নিজেরে কতো পন্ডিতই না ভাবতাম।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: পুরোনো স্মৃতি ভাল লাগল।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬

জসীম অসীম বলেছেন: জি ভাই, ভালো থাকবেন।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৯

জেনারেশন সুপারস্টার বলেছেন: হ্যাঁ।ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে শুধুমাত্র ক্লাস সেভেনে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই টিকতে হয়।এরপর ক্লাস এইট কমপ্লিট করে কিংবা এসএসসি উর্ত্তীর্ণ কেউ চাইলেও এইচএসসিতে ভর্তি করা হয়না।ভাইজান কোন স্কুলে ছিলেন?

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৮

জসীম অসীম বলেছেন: ভাই , আমি একটি সাধারণ স্কুলে ছিলাম। গংগামন্ডল রাজ ইনষ্টিটিউশন,কুমিল্লা। সম্ভবত জমিদার মালতীলতা মিত্র এটি ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০০

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: ইডিয়ট শিবির, চুপ

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

জসীম অসীম বলেছেন: দারুণ বলেছেন। আরও কিছু বলবেন ? প্রাণ খুলে যা ইচ্ছে তা বলার অবাধ স্বাধীনতা আপনার। তবু আপনার আত্মা তৃপ্তি পাক।

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০০

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: ইডিয়ট শিবির, চুপ

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩

জসীম অসীম বলেছেন: দারুণ বলেছেন। আরও কিছু বলবেন ? প্রাণ খুলে যা ইচ্ছে তা বলার অবাধ স্বাধীনতা আপনার। তবু আপনার আত্মা তৃপ্তি পাক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.