নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বকদিঘির উত্তর পাড়ের অশ্বত্থ বট

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৩০


অলংকরণ: জসীম অসীম:

আমাদের পরিচিত এক বাড়িতে ভূত থাকে বলেই জানতাম। একদিন সন্ধ্যায় গেলাম সেই বাড়িতে। এটা ছিলো অশোকের পিসির বাড়ি। এটা আমারই শৈশবের এক ঘটনা।
সেই বাড়িতে ঢুকতেই একটি গাছের নিচু ডালের নিজ বাসায় বসে ডিমে তা দিতে দেখলাম একটি ঘুঘুকে। ঢিল ছুঁড়ে দিলাম। পাখিটির কাছ দিয়ে গেলো। অবশেষে পাখিটিও উড়ে গেলো।
প্রভারাণী বসুদের ঘরের কাছেই ছিলো একটি অর্জুন বৃক্ষ। সন্ধ্যা হতেই ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রকার পাখি বসছিলো সে বৃক্ষে। সেই বৃক্ষের ঠিক পেছনেই বকদিঘি। আমাদের নজর ছিলো বকদিঘির উত্তরপাড়ের গহিন মাঠের অশ্বত্থ বটের গাছটির দিকে।
ওখানে নাকি মধ্যরাতে ভূতদের আসর বসে। আমি, অশোক, প্রশান্ত, একই সঙ্গে সঞ্চিতা, প্রিয়াংকা, পার্থ, পূর্ণা, ও প্রমিলাদের ঘর পার হয়ে যেতে লাগলাম সেই অশ্বত্থ বটের গাছটির দিকে। পথেই সমীর এবং সুমেন্দুর সঙ্গে দেখা। যেতে বারণ করলো ওদিকে। ভয়ও দেখালো। বটতলা তখন অন্ধকারে ডুবছে। তার আগেই বিশাল এক কদমগাছ। তারপর এক ছাতিম বৃক্ষ। সবশেষে অশ্বত্থ বট।
বটের কাছে যেতেই পটপট করে অনেক শব্দ হলো। আমরা কোনো ভয়ই পেলাম না। বকদিঘির উত্তরপাড়টা রীতিমত বনের মতোই। হঠাৎ আমাদের নজরে এলো একটি কালো রঙের ছোট হাঁস। ধরতে গেলেই শব্দ না করে উড়াল দিয়ে ছাতিম বৃক্ষে মিশে গেলো। ভয়ে তখন কাঁপছিলো প্রশান্ত। তখন ছিলো শীতকাল।
অশোকের পায়ের নিচে চাপা পড়লো একটি ব্যাঙ। সঙ্গে সঙ্গেই ধাপ করে লাফ দিলো অশোক। আমিও গেলাম একটু ভয় পেয়ে। কিছু বাদুর ও চামচিকার দেখা পেয়ে আমারও ভয় ভয় লাগছিলো। ভাবলাম পেঁচার দেখাও পাবো। আরেকটু এগিয়ে যেতেই মরা ছাগল কিংবা গরুর গন্ধ নাকে এলো ভাগাড় থেকে। প্রশান্তকে বললাম, শকুনের ডাক শুনলে আবার ভয় পাস না যেন। অশোক বললো, একটা দেয়াশলাই বক্স আনার দরকার ছিলো।
অবশেষে চলে এলাম সন্ধ্যার মধ্যেই অশ্বত্থতলা থেকে। ভূতের দেখা পেলাম না আর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, পরদিন সকালেই সবাই গিয়ে সেই অশ্বত্থ বটের নিচু ডালেই অশোকের পিসাতো বোন উর্মিলাদিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখলো। এটা কি ঠিক আত্মহত্যা নাকি হত্যা, এ নিয়ে চতুর্দিকে গবেষণাও শুরু হয়ে গেলো। তারপর থেকে আর কখনো দিনের বেলায়ও একা একা সেই বক দিঘির উত্তরপাড়ের অশ্বত্থ বটের কাছে যাইনি আমরা।
এখন অবশ্য ওখানটায় ছাতিম কিংবা অশ্বত্থ বটবৃক্ষ আর নেই। কেটে ফেলা হয়েছে। কিন্তু অতীত স্মৃতিকে তো আর কেটে ফেলা যায় না।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৭

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার স্মৃতি কথন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ছোট্ট লেখা। অনেক আগেরই। খাতা দেখলে তারিখ পাওয়া সম্ভব। আমি আবার লেখার সঙ্গে বরাবরই তারিখ লিখে রেখেছিলাম। অনেক সময় পত্রিকায় প্রকাশের তারিখও সংরক্ষণ করেছি। শুভ কামনা অব্যাহত রইলো।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: প্রভারানী নামটা খুব সুন্দর।
ভূত নাই ভূতের দেখা পাবেন কই?

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০১

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। গতকাল এক সাহিত্য আড্ডায় আপনার লেখালেখি নিয়ে অনেক প্রশংসা শুনে মুগ্ধ হলাম। প্রভারাণী নামে আমার এক বৌদিও রয়েছেন। তবে তিনি বসু নন, প্রভারাণী ভট্টাচার্য।
ভূত নেই জানার পরও আমার স্ত্রীর সবচেয়ে প্রিয় গ্রন্থগুলো ওই ভূতেদের নিয়েই লেখা। সত্যজিৎ রায়ের ভূতকেন্দ্রিক শিশুতোষ ছবি ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ বা ‘গুপি বাঘা ফিরে এলো’ জাতীয় ছবিগুলোও তাঁর প্রিয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.