নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাড়াহুড়োর নামাজঃ ঈমাম সাহেবদেরকে বোঝাবে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৯

তাড়াহুড়োর নামাজ নামাজ নয়! এই হাদীসের আলোকে আমাদের জামাতে নামাজগুলো কতটুকু সঠিক হচ্ছে? প্রশ্নটা ক’দিন থেকে বেশ তাড়া করে ফিরছে আমাকে! হতে পারে আমার জ্ঞানের স্বল্পতা! তবু, পাঠকদের সাথে শেয়ার করতে দোষ কি?
অনেকদিন বিরতের পর, ২০১৭ সালের শেষ দিকে এক শুক্রবারে জুম্মার নামাজ আদায় করলাম আমাদের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। পরদিন আছর-মগরেবও ওখানেই পড়লাম। আমার মন আমাকেই প্রশ্ন করলোঃ ‘এটাই যদি তাড়াহুড়োর জামাতে-নামাজ না হয় তাহলে “তাড়াহুড়োর নামাজ” কোনটা? জামাতবদ্ধভাবে এরচেয়ে তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করা যায় কি?’ আমার মনে বদ্ধমূল ধারণা হলোঃ ‘এটাই তাড়াহুড়োর নামাজ।’ অথচ, আল্লাহর রসুল (সঃ) স্পষ্ট করেই বলেছেন, “তাড়াহুড়োর নামাজ নামাজ নয়।” কি দুঃখজনক ঘটনা!
ব্যাখ্যা করছি। বায়তুল মোকাররমে আমি এর আগে বহুবার নামাজ পড়েছি। কিন্তু সেদিন কেমন জানি ব্যতিক্রম মনে হলো। সত্যি বলতে কি, মনে বড্ড ব্যাথা পেলাম। জুম্মার নামাজে ঈমাম সাহেব প্রথম রাকায়াতে পড়লেন সুরা এখলাস আর ২য় রাকায়াতে পড়লেন সুরা কাওসার। রুকু থেকে পিঠ সোজা করার জন্যে দাঁড়ালেন মাত্র, অবস্থানকাল এক সেকেন্ডের বেশী নয়! একইভাবে, দুই সেজদার মাঝখানে বসলেন না এক সেকেন্ডের বেশী, যার ফলে আমাদের মতো ষাটোর্ধ বা খানিকটা ভারী শরীরের ব্যক্তিদের ঈমামকে বৈঠকে পাওয়া কঠিন! জুম্মার দুই রাকায়াত নামাজ শেষ করতে সময় নিলেন বড়জোর ৪ বা ৫ মিনিট। কিন্তু এরপর প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে মোনাজাত করলেন! মোনাজাতের আগে নানা জনের নাম ধরে দোয়ার ফিরিস্তি বর্ণনা করলেন ৫ মিনিটের বেশী সময় ধরে! এটা কি আল্লাহর রসুলের (সঃ) নামাজ?
জামাত বিশাল হলে ক্বেরায়াতকে সংক্ষিপ্ত করার কথা জানি কিন্তু নামাজকে তাড়াহুড়োর অনুমতি দিয়েছেন কি আল্লাহর রসুল (সঃ)? পরদিন, আছর এবং মগরেবেও দেখলাম একই ধরণের তাড়াহুড়ো! কোন সুস্থিরতা নেই, মনযোগ দেয়ার উপায় নেই, সেজদায় আল্লাহর কাছাকাছি গিয়েও মন স্থিত করার উপায় নেই! ‘কোন সময় ঈমামকে অনুসরণ করা থেকে ছিটকে পড়ি’- এমন টেনশন নিয়েই নামাজ শেষ করলাম!
শুধু আমাদের জাতীয় মসজিদে নয়, প্রায় সর্বত্রই এভাবে নামাজ পড়তে বাধ্য হচ্ছি আমরা! সুরা ফাতেহা পড়ার পর কোন বিরতি না দিয়ে একই নিঃশ্বাসেই শুরু করা হচ্ছে অন্য সুরা! যে সব রাকায়াতে অনুচ্চ স্বরে সুরা ফাতিহা পড়া হয় তাতে কোন কোন ঈমাম কত তড়াতাড়ি সুরা ফাতিহা পড়েন যে, কোন মুক্তাদী পড়তে চাইলে অর্ধেকটাও শেষ করতে পারেনা? তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে একপ্রকার কষ্ট করেই নামাজ পড়াচ্ছেন ঈমাম সাহেবানরা। আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ এ কেমন নামাজ? এটা কি আল্লার রসুল (সঃ) এর শেখানো নামাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? আল্লাহর রসুল (সঃ) রুকুর পর কতক্ষণ দাঁড়াতেন? তিনি কতক্ষণ বসতেন দুই সেজদার মাঝখানে?
‘দায়সারা কাজ’ বলে একটা কথা আছে এবং তা চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য! ঈমামরাও চাকরিই করছেন! তাই, করো করো মধ্যে এই প্রবণতা থাকতেই পারে! কিন্তু যাঁরা অভ্যাসবশতঃ অথবা সিরিয়াস না হওয়ার কারণেই এভাবে তাড়াহুড়োর নামাজ পড়াচ্ছেন তাঁদের কে বলবে নামাজগুলোকে সঠিক করতে?
আমার জন্যে তো তা ‘দায়সারা’ও নয়, রুটিনমাফিক হাজিরা দেয়াও নয় - আমার জন্যে তা ইবাদত! সুতরাং সার্বিক আন্তরিকতা নিয়ে সবার সহযোগিতা নিয়ে ‘আমার নামাজ’কে অবশ্যই সঠিক করতে হবে! আল্লাহ! একাজকে তুমি আমাদের জন্যে সহজ করে দাও!
(This was written in 2017)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমাদের যারা এসব বিষয়ে জানে, তারা ইমাম হতে চান না। আর যারা ইমাম হতে চায় তারা মিলাদ, খতম পড়িয়ে চাকুরি করার চিন্তায় থাকে। তাই এই ব্যপারে তেমন গুরুত্ব দেন না। তেনাদের বললেও তেনারা ভাল ভাবে নেন না। এক এক জন এক এক হুজুরের অনুসারী। কে বোঝাবে ওনাদের?

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪০

আশরাফ আল দীন বলেছেন: আমাদের এই প্রিয় সমাজটাকে ‘ওরা’ আর ‘আমরা’ হিসেবে ভাগ না করে, প্রয়োজন হলো ‘আপন সমস্যা হিসেবে’ সমাধানের আন্তরিক উদ্যোগ নেয়া।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: এগুলি আসলে অনেক ক্ষেত্রে বলেও লাভ হয় না। :( একটি হাদিস আছে, যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনের উপর রাগ হয়েছিলেন নামাজ দীর্ঘ করবার জন্য। এই হাদিসের বরাত দিয়ে মানুষ খালি তাড়াহুড়া করে। কিন্তু কেউ ঘেটে দেখতে যায় না যে ঐ সাহাবী নামাজে তার সাথে লোক থাকা সত্বেও প্রায় এক পারা পড়ে ফেলেছিলেন।

আমাদের এলাকার ইমামকে এই বিষয় বুঝাতে বুঝাতে এখন তাকে দিয়ে সূরার আয়াত গুলি আলাদা আলাদা করে পড়াতে রাজি করতে পেরেছি; আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু তারপরও দ্রুততা সহজে কমে না। আগে উনি এক নিঃস্বাসেই সূরা ফাতিহা পড়ে ফেলতেন প্রায় সময়!

তবে মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে; ইন শা আল্লাহ আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৩

আশরাফ আল দীন বলেছেন: জানতে হবে, বলতে হবে, আন্তরিক হতে হবে। ইনশাআল্লাহ সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০২

আলোর সওয়ারী বলেছেন: ঠিক বলেছেন, ভাই। আমাদের মহল্লাতেও একই অবস্থা।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৭

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ধন্যবাদ।
সচেতনতা বৃদ্ধি করুন, সোচ্চার হোন; জ্ঞান-সমৃদ্ধ প্রতিবাদ (বিভেদ সৃষ্টির জন্য নয়, সঠিকতা অর্জনের জন্য) পরিবর্তন আনবেই, ইনশাআল্লাহ।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৯

হাবিব ইমরান বলেছেন: ইমামত এখন ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাই এ অবস্থা। আন্তরিকতা উঠে গেছে আল্লাহর হুকুম থেকে। আফসোস, এই ইমামদেরই সবচেয়ে মারাত্মক হিসেব হবে, জবাবদিহি করতে হবে।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০২

আশরাফ আল দীন বলেছেন: সমস্যাটি আমাদেরই নিতান্ত নিজস্ব। তাই কেউ কাউকে দেষারোপ না করে সমস্যা চিহ্নিত করে পরিত্রাণের চেষ্টা করলেই উদ্ধার পাওয়া যাবে।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:৫৭

বনসাই বলেছেন: শুকরিয়া, রমজান মাসে খতম তারাবীহ নামাজের ক্বেরাত ব্যতীত দ্রুত লয়ে নামাজ কোনো মসজিদে এখন পর্যন্ত আদায় করতে হয় নি। অফিসে নিজেরা যখন জামাতে নামাজ পড়ি তখন কোনো কলিগ ইমামতি করলে একটু তাড়াহুড়া হয়েই যায়; যা মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। নামাজে তৃপ্তি কম হয়।

বায়তুল মোকাররম মসজিদে এখন কী অবস্থা?

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৭

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ঈমাম সাহেবদের নামাজে তাড়াহুড়ো করার অন্যতম কারণ হচ্ছে, মুসল্লীদের তরফ থেকে জোড়ালো আবদার বা দাবী ‘নামাজ তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্যে।
আমরা সচেতন হলেই সমস্যার সমাধান হবে।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১২

হাবিব বলেছেন: এমন টা উচিত নয়, আল্লাহ সূরা ফিলে বলেছেন...............

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৯

আশরাফ আল দীন বলেছেন: কথাটা শেষ করেননি। তবু
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২২

রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১১

আশরাফ আল দীন বলেছেন: সমস্যাটি চিহ্নিত করে পরিত্রাণের চেষ্টা করলেই উদ্ধার পাওয়া যাবে।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০২

আহলান বলেছেন: প্রথম কথা হলো যদি সুরা ক্রমান্বয়ে পাঠ না করা হয় , তবে তো নামাজই শুদ্ধ হওয়ার কথা নয়। যেমন আপনি বল্লেন প্রথম রাকাতে সুরা ইখলাস ও পরের রাকাতে সুরা কাওসার পঠিত হয়েছে, ফরজ সালাতে তো এমন ভাবে সুরা পড়ার নিয়মই নাই, কারণ কোরআন শরীফে সুরা সমুহের ক্রমানুসারে সুরা কাওসার হলো আগে আর সুরা ইখলাস হলো পরে বর্ণিত। সুতরাং আগের সুরা পরে, আর পরের সুরা আগে পড়া তো শুদ্ধ হতে পারে না, তার উপর আবার ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে ! অর্থাৎ উক্ত ইমাম সাহেব তো শুরুতেই সুরা পাঠের তারতীবে গন্ডগোল পাকিয়ে নামাজকে মাক্বরুহ করে দিয়েছেন। দ্বিতীয়তঃ তাড়াহুড়ার যে বিষয়টি বল্লেন, সেটি তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যে ইমাম সুরার তারতীবই ঠিক রাখে না, তার থেকে আর কি শুদ্ধ নামাজ আশা করবেন?

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১২

আশরাফ আল দীন বলেছেন:
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.