নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইতিহাসের পাঠশালায়

আসিফ আযহার

শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়।

আসিফ আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের পাঠশালায়: পর্ব-২৭ | পশ্চিম ইউরোপের বিভক্তি (৮৮৮-৯৬২ সাল)

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১২


৮৮৮ সালে চার্লস দ্য ফ্যাটের মৃত্যুর পর ক্যারোলিঞ্জিয়ান সাম্রাজ্য পাঁচটি আলাদা অংশে পরিণত হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও উচ্চ বারগান্ডিতে চারটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উত্তর-পশ্চিম ফ্রান্স ও আকিতাইন-ব্রিটানি অঞ্চলে দুটি স্বাধীন ডিউকের এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্যারোলিঞ্জিয়ান সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন ও অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে ক্যাথলিক চার্চ শঙ্কিত হয়ে উঠেছিল। কারণ এ পরিস্থিতিতে চার্চের আয় আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছিল।

কিন্তু বিভক্ত ও গৃহযুদ্ধ কবলিত পশ্চিম ইউরোপকে ধর্মীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ করার সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। এ পরিস্থিতিতে ক্যাথলিক চার্চ একের পর এক আঞ্চলিক শাসকদের ওপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত ছাড়াও আরেকটি কারণে ক্যারোলিঞ্জিয়ান সাম্রাজ্যের বিভক্ত অংশগুলো খুবই দুর্বল হয়ে পড়ছিল। সেটি হল বিদেশী আক্রমণ। নবম শতকের শুরুতে পশ্চিম ইউরোপে ব্যাপক ভাইকিং আক্রমণ শুরু হয়। এছাড়াও সারাসিন মুসলিম ও হাঙ্গেরিয়ানদের আক্রমণও তীব্র হয়ে ওঠে।


চিত্র: ভাইকিং আক্রমণের দৃশ্য

ভাইকিং আক্রমণকারিদের প্রাথমিক লক্ষ্য লুটপাট হলেও পরবর্তীতে তারা পছন্দমতো এলাকায় বসতি স্থাপন শুরু করে। ভাইকিংদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে ক্যারোলিঞ্জিয়ানরা ছিল খুবই অসহায়। পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় সামন্ত জমিদাররা নিজস্ব সেনাবাহিনী নিয়ে ভাইকিং আক্রমণ প্রতিরোধে সচেষ্ট হয়। ভাইকিং আক্রমণ প্রতিরোধে এরাই মূল ভূমিকা পালন করে। বিভক্ত ক্যারোলিঞ্জিয়ান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নিরাপত্তা এদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ফলে পশ্চিম ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের ভিত যথেষ্ট মজবুত হয়।


চিত্র: ভাইকিং রণতরী

৮৮৮ সাল থেকে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, বারগান্ডি প্রভৃতি ভূখণ্ড আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হলে ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ উপাধী কে পাবেন সে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দেয়। পোপের নিকটস্থ ইতালীয় শাসকই কি হবেন ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’? নাকি এ উপাধী পাবেন শার্লামেনের বংশধরদের কেউ? অথবা পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজাই কি এ উপাধীর অধিকারী হবেন? শেষমেশ এ প্রশ্নের উত্তর মিলল ৮৯১ সালে। ৮৯১ সালে ইতালীয় শাসকই পরলেন ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ মুকুট। এ শাসকের নাম গুই অভ স্পলেটো।

ইতালি তখন একক কোন শাসকের অধীনে নেই। ইতালির রাজা তখন দু’জন। এ দু’জন হলেন বেরেংগার অভ ফ্রিউলি এবং গুই অভ স্পলেটো। ৮৮৭ সালে বেরেংগার অভ ফ্রিউলি মোটামোটিভাবে ইতালির রাজা হতে পেরেছিলেন। তখন তিনি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গুই অভ স্পলেটোর সাথে এরকম একটি সমঝোতায় আসতে পেরেছিলেন যে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ চার্লস দ্য ফ্যাটের মৃত্যুর পর গুই অভ স্পলেটো পশ্চিম ফ্রান্সিয়ার ক্ষমতায় বসবেন এবং বেরেংগার অভ ফ্রিউলি ইতালির ক্ষমতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবেন।

কিন্তু সম্রাটের মৃত্যুর পর গুই অভ স্পলেটো পশ্চিম ফ্রান্সিয়ার সিংহাসন অধিকার করতে ব্যর্থ হন এবং ইতালিতে ফিরে আসেন। গুই অভ স্পলেটো ইতালিতে ফিরে এসে স্পলেটান ও লম্বার্ডদের মধ্য থেকে সৈন্য সংগ্রহ করে বেরেংগার অভ ফ্রিউলির বিরুদ্ধে একটি সৈন্যবাহিনী গঠন করেন। এরপর ব্রেসিয়ার সন্নিকটে দুই বাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে কোনমতে জয় লাভ করেন বেরেংগার অভ ফ্রিউলি। কিন্তু যুদ্ধে তাঁর সেনাবাহিনীর বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।


চিত্র: সম্রাট গুই অভ স্পলেটো

ফলে তিনি বিজয়ী হয়েও ৮৮৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি শান্তিচুক্তিতে সম্মত হন। এ সময় তিনি ইতালীর প্রতিবেশী রাজা এবং পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক আর্নুলফ অভ করিন্থিয়ার সাথে দেখা করেন এবং আর্নুলফের ভাসাল হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তখন করিন্থিয়া, বাভারিয়া ও লোরাইনসহ (লোথারিঞ্জিয়া) বর্তমান জার্মানি অঞ্চলে আর্নুলফের দখল প্রতিষ্ঠিত ছিল।

৮৮৯ সালে বেরেংগারের সাথে শান্তিচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গুই অভ স্পলেটো ত্রিবিয়ার যুদ্ধে বেরেংগারকে পরাজিত করেন এবং নিজেকে ইতালির রাজা ঘোষণা করেন যদিও তখন ফ্রিউলিতে বেরেংগারের অবস্থান যথেষ্ট শক্তিশালীই রয়ে গিয়েছে। বেরেংগার ফ্রিউলি থেকে তাঁর শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকেন। রোমের পোপ তখন গুই অভ স্পলেটোর ক্ষমতার বলয়ের মধ্যে অবস্থান করছেন। এমতাবস্থায় ৮৯১ সালে গুই অভ স্পলেটো রোমের পোপের হাতে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হন।

গুই অভ স্পলেটোকে ইতালিয়ান ভাষায় ডাকা হতো ‘গুইডো’ নামে এবং জার্মান ভাষায় ডাকা হতো ‘উইডো’ নামে। ৮৮৩ সালে তিনি স্পলেটোর ডিউক হয়েছিলেন; ৮৮৯ সালে হন ইতালির রাজা এবং ৮৯১ সালে হলেন ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’। ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হওয়ার পর তিনি তাঁর পুত্র ল্যামবার্টের (২য় ল্যামবার্ট) জন্য ইতালির রাজসিংহাসন ছেড়ে দেন এবং পুত্রকে ইতালির রাজা বানান। এমনকি ৮৯২ সালে পুত্র ল্যামবার্টকে তিনি ‘সহসম্রাট’ ঘোষণাও করেন। এর দু’বছর পর তিনি মারা যান। ৮৯৪ সালে গুই অভ স্পলেটোর মৃত্যুর পর ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হন ২য় ল্যামবার্ট।

৮৯১ সালের মে মাসে ইতালির পাভিয়া শহরে ল্যামবার্টকে ইতালির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়। তাঁর মাথায় ইতালির রাজমুকুট পরিয়ে দেন রোমের পোপ ফরমোসাস। একইভাবে ৮৯২ সালের ৩০ এপ্রিল রাভেন্না শহরে তাকে ‘সহসম্রাট হিসেবে অভিষিক্ত করেন পোপ ফরমোসাস। কিন্তু পোপ ফরমোসাস এ পরিবারকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেননি যদিও ল্যামবার্ট এবং তাঁর পিতা পোপের শাসনাধীন এলাকাসহ (পেপাল স্টেটস্) সকল পোপীয় সম্পত্তি ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। পোপ ফরমোসাস একসময় ল্যামবার্টের সম্রাট উপাধী প্রত্যাহারও করেছিলেন।

৮৯৩ সালে পোপ ফরমোসাসের একদল প্রতিনিধি আর্নুলফ অভ করিন্থিয়ার সাথে দেখা করার জন্য রিজেনসবার্গে পৌঁছায়। প্রতিনিধিদল আর্নুলফকে ইতালি মুক্ত করার অনুরোধ জানান এবং তাকে রোমে এসে পোপের কাছ থেকে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ এর মুকুট গ্রহণের আহ্বান জানান। আর্নুলফের পররাষ্ট্রনীতি তখন এ আহ্বানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। তিনি তখন লুইস অভ প্রোভেন্স, ফ্রান্সের তৃতীয় চার্লস, উচ্চ বারগানডির প্রথম রুডলফ এবং বেরেংগার অভ ফ্রিউলিকে নিয়ে একটি ক্যারোলিঞ্জিয়ান মৈত্রী জোট গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় লিপ্ত ছিলেন।

পোপের আহ্বানে সাঁড়া দিয়ে ৮৯৩ সালে আর্নুলফ তাঁর পুত্র জেন্টিবল্ডকে একদল বাভারিয়ান সৈন্যসহ বেরেংগার অভ ফ্রিউলির কাছে পাঠান। জেন্টিবল্ড ফ্রিউলিতে বেরেংগারের সাথে মিলিত হন এবং যৌথ সেনাবাহিনী গুই অভ স্পলেটোকে পাভিয়ায় কোনঠাসা করে ফেলে। ধারণা করা হয় যে, গুই অভ স্পলেটো তখন উৎকোচের বিনিময়ে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। জেন্টিবল্ড শরৎকালে দেশে ফিরে যান।


চিত্র: পোপ ফরমোসাসের সংরক্ষিত মৃতদেহ

৮৯৪ সালের শুরুর দিকে স্বয়ং আর্নুলফ তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে আল্পস অতিক্রম করে ইতালিতে প্রবেশ করেন। আর্নুলফ এবং বেরেংগার অভ ফ্রিউলির যৌথ সেনাবাহিনী গুই অভ স্পলেটোকে বারগামোর যুদ্ধে পরাজিত করে হঠিয়ে দেন এবং পাভিয়া ও মিলান অধিকার করে নেন। তবে সেবছর গুই অভ স্পলেটোর আকস্মিক মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাদের দখল পো নদীর উত্তরাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। ৮৯৪ সালের শরৎকালে গুই অভ স্পলেটোর আকস্মিক মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র ল্যামবার্ট তাঁর যাবতীয় উত্তরাধিকার লাভ করেন। ল্যামবার্টের কাঁধে স্পলেটো ডাচির সকল দায়িত্ব অর্পিত হয়।


চিত্র: সম্রাট আর্নুলফ অভ করিন্থিয়া

ল্যামবার্ট বয়সে তরুণ হলেও তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ছিল। ল্যামবার্ট তাঁর রাজত্বকালে আর্নুলফ এবং বেরেংগারের ইতালি দখলের প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে মনোনিবেশ করেছিলেন। বেরেংগার যখন পাভিয়া দখলে নিয়েছিলেন ল্যামবার্ট তখন এগিলট্রুডকে নিয়ে রোমের পোপের কাছে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল পোপের কাছ থেকে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ এর স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। কিন্তু পোপ ফরমোসাস রাজী ছিলেন না। তিনি ল্যামবার্টের সম্রাট উপাধী প্রত্যাহার করে আর্নুলফকে এ উপাধী দিতে চেয়েছিলেন। তাই ল্যামবার্ট পোপ ফরমোসাসকে সেইন্ট অ্যাঞ্জেলো দূর্গে বন্দী করে রেখেছিলেন।


চিত্র: সেইন্ট অ্যাঞ্জেলো দূর্গ

আর্নুলফ পাভিয়া ও মিলান দখলের পর ধীর গতিতে শক্তি সঞ্চয়ের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি তুসানির আভিজাতদের সমর্থন আদায় করেন। এমনকি এডালবার্ট অভ তুসানিও তাঁর সাথে যোগ দেন। কিন্তু এগিলট্রুডের দখলে থাকা রোম তখনও তাঁর বিরুদ্ধেই রয়ে গিয়েছিল। ৮৯৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি শক্তি প্রয়োগ করে রোম দখল করেন এবং পোপকে মুক্ত করেন। পোপ ফরমোসাস আর্নুলফের মাথায় ইতালির রাজমুকুট এবং ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ মুকুট দুটোই তোলে দেন। পোপ ল্যামবার্টকে সম্রাটের আসন থেকে পদচ্যুত ঘোষণা করেছিলেন।

এরপর আর্নুলফ স্পলেটোর দিকে আগ্রসর হন। এগিলট্রুড স্পলেটোয় পালিয়ে গিয়ে ল্যামবার্টের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর্নুলফ স্পলেটোয় অভিযান শেষ করতে পারেননি। স্পলেটোয় পৌঁছার পূর্বেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় অভিযান প্রত্যাহার করেন। একই বছর পোপ ফরমোসাসও মারা যান। এসবের ফলে ল্যামবার্ট আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পান। ৮৯৮ সালে আততায়ীর হাতে অথবা ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে ল্যামবার্ট মারা যান। এর পরের বছর ৮৯৯ সালের ৮ ডিসেম্বর আর্নুলফও মারা যান।

আর্নুলফের পর ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ মুকুট পরেন বোসো অভ প্রোভেন্সের পুত্র লুইস দ্য ব্লাইন্ড। বোসো অভ প্রোভেন্স ছিলেন পশ্চিম ফ্রান্সিয়ার একজন শক্তিশালী ডিউক এবং ৮৭৯ সালে তিনি লুইস দ্য স্ট্যামারারের পুত্রদের আনুগত্য প্রত্যাখ্যান করে প্রোভেন্সের নিম্ন বারগান্ডিতে একটি একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। লুইস দ্য ব্লাইন্ড প্রোভেন্সের রাজা হয়েছিলেন ৮৮৭ সালে।


চিত্র: সম্রাট বেরেংগার অভ ফ্রিউলি

৯০০ সালের ১২ অক্টোবর তিনি ইতালির সিংহাসনে বসেন। এর পরবর্তীতে তিনি ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ মুকুট পরেন। ৯০১ সাল থেকে ৯০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ তালিকায় তিনি ‘তৃতীয় লুইস’ নামে পরিচিত। ৯০৫ সালে সংঘটিত একটি ব্যর্থ অভিযানে লুইস দ্য ব্লাইন্ড তাঁর চোখ হারিয়ে অন্ধত্ব বরণ করেছিলেন।

৯০৫ সালে লুইস দ্য ব্লাইন্ডকে ক্ষমতাচ্যুত করেন বেরেংগার অভ ফ্রিউলি। ৯১৫ সালে বেরেংগার অভ ফ্রিউলিকে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত করেন তখনকার পোপ। বেরেংগার অভ ফ্রিউলি বিভিন্ন পর্যায়ে মোট ৩৬ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। যুদ্ধ ও সংঘাতের জন্য তাঁর সময়কাল ইতিহাসে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। তাঁর সময়কালজুড়ে লাগাতার গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এবং পশ্চিম ইউরোপ ভয়ানকভাবে ভিনদেশী ম্যাগিয়ারদের (হাঙ্গেরিয়ান) আক্রমণের শিকার হয়েছিল। ৯২৪ সালে বেরেংগার অভ ফ্রিউলি মারা যান। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

বেরেংগার অভ ফ্রিউলির মৃত্যুর পর দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে আর কেউ ‘পবিত্র রোমান সম্রাটের’ আসনে বসতে পারেননি। ৯২৪ সাল থেকে ৯৬২ সাল পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপে কোন ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ ছিলেন না। ৩৮ বছরের বিরতির পর ৯৬২ সালে ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ হিসেবে অভিষিক্ত হন অটোনিয়ান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা অটো দ্য গ্রেট।


চিত্র: মধ্যযুগীয় শহর

অটো দ্য গ্রেট এর পূর্বে শেষ ‘পবিত্র রোমান সম্রাট’ ছিলেন বেরেংগার অভ ফ্রিউলি। তাঁর মৃত্যুর পর এই উপাধীটির কার্যকারিতা হারিয়ে যায়। রোমান শাসকবর্গ নিজেদের হাতে কর্তৃত্ব রাখার জন্য উপাধীটির মর্যাদা এমনভাবে পদদলিত করেন যে ৮০০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য’ পুরোপুরিভাবে বিলুপ্তি লাভ করে। এ সময় পশ্চিম ইউরোপের সামন্ততন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়।

লেখক: আসিফ আযহার
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, শাবিপ্রবি
ই-মেইল: [email protected]
ওয়েবসাইট: http://www.asifajhar.wordpress.com
ফেসবুক: Asif Ajhar, যোগাযোগ: 01785 066 880

বি.দ্র: রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটে লেখকের সবগুলো বই পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে লেখকের নামে সার্চ দিলেই যথেষ্ট।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: সেই সব যুগ থেকে এখন আমরা অনেক ভালো আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.