নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধ্বংসের মুখে উত্তর প্রজন্ম এবং আমাদের দায়

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৬

মানুষ পৃথিবীতে আসে আবার নির্ধারিত কাল অতিক্রম করে চলে যায়। কিন্তু সে সব সময়ই চিন্তা করে তার উত্তরসুরীর মাধ্যমে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে। উত্তরসূরী রেখে যাওয়ার মাধ্যমেই মানুষ তার আদি পিতা আদমের অমরত্বের আকাক্সক্ষাকে পূর্ণতা দেয়। যে মানুষ তার উত্তরসূরী রেখে যেতে পারে না সে তার জীবনকে বৃথা বলে মনে করে। আমরাও এর ব্যতিক্রমন নই। কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই দেখতে হবে পৃথিবীতে আমাদের কেমন উত্তরসুরি রেখে যাচ্ছি। আমরা কি তাদেরকে মানুষ বানাতে পারছি, নাকি রেখে যাচ্ছি মানুষ নামের দু’পেয়ে কিছু প্রাণি?এই লেখাটার পেছনে যিনি আমাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন তিনি অতিশয় দুঃখ নিয়ে আমাকে একটি ঘটনা শোনালেন। কোরবানির ঈদের দিন ঢাকা মহানগরীর কোন একটি গলিতে বাড়ির কর্তা গরু কোরবানি দেবেন। যাই হোক, গরুতো আর একা জবাই করা সম্ভব নয়, তাই তিনি কসাইসহ আরো দু-একজনের সহযোগিতা নিলেন এবং তার পরিবারের (উত্তর প্রজন্ম) তরুণটিকে শিক্ষা দেওয়াই হোক কিংবা প্রয়োজনের তাগিদেই ডাকলেন গরুটিকে শোয়ানোর কাজে সহযোগিতা করার জন্য। তরুণটি আসলো বটে, কিন্তু সে গরুটিকে বিব্রত ভাব নিয়ে এমনভাবে ধরলো যাকে ‘ধরলো’ না বলে ‘ছুয়েছে’ বলাটই শ্রেয় হবে। তার চালচলনে ভীষণ আনাড়ি ভাব। কিন্তু গরুকে শুধু ছুয়ে রাখলে তো আর জবাই করা সম্ভব নয়। কর্তা তরুণটির এই অবস্থা দেখে রেগে মেগে দিলেন এক ধমক, ‘যা এখান থেকে! ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে বিড়বিড় করতে করতে পিছু হটে গেল, যেন এটাই সে চাইছিল। আর বয়স্ক লোকটি তখন রাগে গজ-গজ করতে করতে আরো দু’একজন প্রৌঢ়-বৃদ্ধের সহযোগিতায় সর্বশক্তি প্রয়োগ করে গরুটিকে জবাই করলেন। তরুণটি তখন কী করছিল? সে পাঞ্জাবির পকেট থেকে স্মার্ট ফোনটি বের করে টেপাটিপি করছিল আর গরু জবাইয়ের ছবি তুলছিল।


হ্যাঁ, এই হচ্ছে আমাদের উত্তর প্রজন্ম। এরা হাতে ছুঁয়ে দিয়ে গরু জবাই করতে চায়, পারে তো ভার্চুয়ালী গরু কোরবানি করে ফেলে আর কী! এরা বড় হয়ে উঠছে টিভি স্ক্রিনে ফুটবল, ক্রিকেট, রেসলিং দেখে, নিজেরাও খেলছে বহুকিছু তবে ঐ কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে। ধূলি-বালি-কাদা এদেরকে স্পর্শ করতে পারে না। অল্প বয়সেই এরা ভারি চশমা ব্যবহার করে। এরা অদ্ভুত বাংরেজি ভাষায় কথা বলে। মাথার চুল থেকে পায়ের জুতা পর্যন্ত পশ্চিমা রকস্টারদের নকল করে এরা হয়েছে ‘ইয়ো ইয়ো’ জেনারেশন। পরনে থ্রি কোয়ার্টার, কয়েক জায়গায় স্টাইলের ছেড়া। হাতে এনার্জি ড্রিংসের বোতল। কৈশোরেই ধূমপানে অভ্যস্ত। মাদকাসক্তও কম নয়। বেলা একটার পরে এদের সকাল হয়। এক মাইল পথ হাঁটার সামর্থ এদের নেই, ইচ্ছাও নেই। এদের কেউ ডাব কেটে পানি বের করে খেতে পারে না। এরা গাড়ি, রিক্সা, মোটর বাইক ছাড়া চলে না, এদের প্রিয় খাদ্য ফাস্টফুড। এদের প্রত্যেকের হাতে থাকে বড় বড় স্ক্রিনের মোবাইল ফোন, ট্যাব। দিনমান ব্যস্ত ফেসবুক, স্কাইপে, ভিডিও চ্যাট, হোয়াটসএপ-ভাইবার প্রভৃতি নিয়ে। বাবা-মা এদের কাছে গুরুত্বহীন ওল্ড ফুল, ফর্মালিটির সম্পর্ক, হৃদয়ের বন্ধন বহু আগেই ছিন্ন হয়ে গেছে। ডিজিটাল সন্তানের অ্যানালগ বাবা-মায়ের সঙ্গে জেনারেশন গ্যাপতো হবেই। বন্ধুরাই জীবন-মরণ। দিনরাত বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ফুর্তি (ওদের ভাষায় মাস্তি), চ্যাটিং আর ফোনালাপ। এদের নাকি বন্ধু ছাড়া একটা দিনও চলে না! গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশেও তারা থাকে ফেসবুকে মগ্ন।একবার ভেবে দেখুনতো আপনার ঘরে আপনার যে উত্তরসুরীটি এভাবে বড় হচ্ছে তাদের ভবিষ্যত কী? বাস্তবতা বিবর্জিত, শারীরিক এবং মানসিকভাবে অক্ষম ও ভারসাম্যহীন এই প্রজন্মই আপনার আকাক্সিক্ষত ছিল? এরা কি আমাদের অমরত্বের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে? এভাবে যদি চলতে থাকে তবে আর দু’এক প্রজন্ম পরে এরা বলবীর্য্যহীন নপুংসকে পরিণত হবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২২

সরদার হারুন বলেছেন: "পদেপদে পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে সবই পরিবর্তণ হয় । সুতরাং
উত্তর প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা পরিবর্তন হতে বাধ্য ।

এটাই নিয়ম তবে কথা হলো পরিবর্তনের ধারা নিয়ে । ধবংসের না সৃজনশীলতার পথে।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: পরিবর্তন সৃজনশীলতার নয় বলেইতো এই লেখার অবতারণা।

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫১

খেলাঘর বলেছেন:

জনসংখ্যার চাপ, সরকার নামের মারাঠাদের লুট, সামজের অধপতন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে আগাছায় পরিণত করছে!

আপনি কি এখনো উড়ছেন?

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

উড়োজাহাজ বলেছেন: উড়ার ব্যাপারটা কি যেন?

৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একবার ভেবে দেখুনতো আপনার ঘরে আপনার যে উত্তরসুরীটি এভাবে বড় হচ্ছে তাদের ভবিষ্যত কী? বাস্তবতা বিবর্জিত, শারীরিক এবং মানসিকভাবে অক্ষম ও ভারসাম্যহীন এই প্রজন্মই আপনার আকাক্সিক্ষত ছিল? এরা কি আমাদের অমরত্বের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে? এভাবে যদি চলতে থাকে তবে আর দু’এক প্রজন্ম পরে এরা বলবীর্য্যহীন নপুংসকে পরিণত হবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

একমত।

কিন্তু বাঁচার পথ কই?

কর্পোরটে ইদুর দৌড়ে ব্যস্ত সবাই। যার আছে সেও দৌড়ায়.. যার নাই সেতো টিকে থাকার লড়াইয়ে দৌড়ায়...
ফস্কে যাচ্ছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম!!

এদের কেউই হয়তো ইয়ো ইয়ো ভাষায় জানতে চাইবে- ধান গাছ! ধান গাছ দিয়ে কি টক্তা হয়???

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২৩

উড়োজাহাজ বলেছেন: বাচার পথ হচ্ছে বস্তুবাদী এই সভ্যতার আহ্বানে খাই খাই বাদ দিয়ে নিজেদেরকে সংযমে বাধা। উদয়াস্ত পরিশ্রম কর আর ভোগ কর- এই হচ্ছে বস্তুবাদী সভ্যতার দর্শন। এর উল্টোটা করে, ক্যারিয়ার, মান-সম্মান, সামাজিক স্ট্যাটাস ইত্যাদির প্রতিযোগিতা না করে পরিবার-সন্তানদেরকে সময় দিন। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। এটা শুধুমাত্র আপনাকে উদ্দেশ্য করেই লেখা নয়। নিজেকেও বলা। আশা করা যায় সংযমে বাধতে পারলে এই ভয়াবহ ভবিষত থেকে আমরা রেহাই পাব। ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:




কিচ্ছুটি করার আছে বলে দেখছি না তাই এভাবেই চলতে হবে ...

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২৪

উড়োজাহাজ বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগুর জন্য দেওয়া উত্তরটা দয়া করে দেখে নিন।

৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:০৩

জামিল হাসান বলেছেন: সবই আসলে কর্পোরেট দাসত্তের প্রতিফল

২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: সবই বুঝি কিন্তু তবুও বুঝতে চাই না- সময়ের আহ্বানে সাড়া দেই। এটাই আমাদের বড় সমস্যা।

৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৩২

খেলাঘর বলেছেন:

আমি বোধ হয়, আপানাকে অনেক আগে েক কমেন্টে প্রশ্ন করেছিলাম যে, উড়োজাহাজ কি উড়ছে?

তাই বললাম, আপনি কি উড়ছেন?

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২৯

উড়োজাহাজ বলেছেন: :D :D :D :D

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৫৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: আমি আমার উড়োজাহাজ নামটা মাঝে মধ্যেই ভুলে যাই। অন্যরা যাতে সহজে আমাকে আমার আসল নামে চিনতে পারে সে জন্য নিজের আসল নামখানাও দিয়ে রেখেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.