নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচ্ছিন্ন, এলোমেলো কিছু ভাবনা

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৪

যখন জীবনের ফর্দটা খুলে বসি তখন দেখি জীবনের সম্ভাব্য বড় একটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। কি দ্রুত সময়গুলো চলে যাচ্ছে! আর তার সাথে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাকেও। সময়ের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারছি না। মুঠো করে পানিকে ধরে রাখতে গেলে যেমন আঙুলের ফাঁক গলে গড়িয়ে পড়ে, তেমনি সময় চলে মুঠোতে অবশিষ্ট কিছু না রেখেই। কিছুতেই তাকে আটকাতে পারছি না। কোন সঞ্চয় নেই, অর্জন নেই। এই যে জীবনের ভার বয়ে চলেছি- তার কোন মানেও খুঁজে পাচ্ছি না। কখনো মনে হয় তাকে ধরতে পেরেছি, আবার কখনো মনে হয় তাকে ধরতে পারি নি। কে আমি, কি আমি, কেনইবা জীবনকে এভাবে বয়ে চলেছি তাও জানি না। কখনো কখনো বুঝলেও আবার পরক্ষণেই সন্দেহ জাগে, আমি কি ঠিক বুঝেছি? উত্তর আসে হয় তো হ্যা অথবা হয়তো না।
আমি জীবনের অর্থের একটা নিশ্চয়তা চাই। কেউ কি পেয়েছে জীবনের এই নিশ্চয়তা, শঙ্কার উর্ধ্বে উঠতে পেরেছে কেউ কখনো? জানি না। জীবনের অর্থ আমি কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। ছায়া ছায়া, আবীলতায় ভরা।
আচ্ছা, অনেকেই কাজকে জীবন বলে থাকেন। কিন্তু কাজই কি জীবন? যদি কাজই জীবন হয় তবে উদয়াস্ত আমাকে কাজ করে যেতে হবে। তবে ভোগ কোথায়? ভোগহীন জীবনের মানে কী? আবার যদি ভোগই করি তবে এই ভোগের যোগান দেবে কে?
তবে কাজের পরে যে আনন্দ সেটাই জীবন? কিন্তু সেটার স্থায়িত্বই বা কতটুকু? জীবনকে ভালভাবে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে শ্রম আর ঘুমের সময় ছাড়া আর কতটুকু ফুসরত পাওয়া যায়? এই ক্ষুদ্র সময়টুকুই কি জীবন? আবার সেটাও তো শেষ হয়ে যাবে। তবে একেই কী জীবন বলে, অথবা একেই কী জীবন বলে মেনে নিয়ে তুষ্ট থাকতে হবে?
আসলে বোধ হয় আমি জীবনের কাছে এই নিশ্চয়তা খুঁজি যে আমার হারানোর কিছু নেই, ক্ষয়ের কিছু নেই। সুতরাং ভয়েরও কিছু নেই। কিন্তু এই শরীরতো তার স্বাক্ষর রাখছে না। সে ক্রমশ পরিবর্তিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে সে নির্ধারিত পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। নির্ধারিত পরিণতি কী? মৃত্যু। অর্থাত হারিয়ে যাওয়া। কিন্তু আমি কি হারাতে চাই? হারিয়ে গেলে, শুন্য মিশে গেলেও কোন ভয় ছিল না। চলতে চলতে হঠাত অনুভূতি ও সকল বোধের উর্ধ্বে উঠে গেলাম! কিন্তু তাওতো হওয়ার কথা নয়। যে কাজ করেছি তার কর্মফল আমাকে ভোগ করতেই হবে। অর্থাৎ আবার সেই শঙ্কা। এর চেয়ে ভাল ছিল না যে আমি কেউ নই, কখনো কেউ ছিলাম না আর কখনো কেউ হবোও না- এমনটা? অর্থাৎ পুরোপুরি অনুভূতিহীন আমিটাই ভাল ছিল না? কিন্তু যা নয় তা নিয়ে চিন্তা করে লাভ কী? হতে পারত, হলে ভাল হতো-কিন্তু হয় নি- এটাই যে সত্য! তাহলে আমার মুক্তি কোথায়? কেন আমার শ্রম, কষ্ট, ক্ষুধা,পীড়া, হারানোর ব্যথা? যদি এসবের উর্ধ্বে উঠেও যাই তখনও কেন জানি ভাল লাগে না। শুন্যতা, সব খালি খালি লাগে। তাকেও জীবন বলে মনে হয় না।
আসলে কী চাই, কি চাওয়া উচিত তা আমি জানি না। যারা জীবনকে ভোগ করছে তারা কী সঠিকভাবে বলতে পারবে যে তারা সুখী, তারা সন্তুষ্ট? মনে হয় না। হয়তো তারা এই প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে জীবনকে বয়ে নিয়ে চলছে। অথচ বাইরে সুখী সুখী একটা ভাব নিয়ে থাকে। হৈ-হুল্লোড় করে। কিন্তু তারা কি চিন্তার দিক দিয়ে, মনের গহীণে লুকানো প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে সৎ? আর যদি এই প্রশ্নগুলোর উদয়ই না হয় তবে তারা সত্যিই কি মানুষ, না একটা সাধারণ জীবমাত্র?
আমার বোধ হয় মনের এই প্রশ্নগুলোর কাছে যারা সৎ হতে পেরেছে তারাই মানুষ। আর বাকিরা সাধারণ একেকটা প্রাণীমাত্র। এখানে কোন দুই নম্বরী চলে না। অন্যের মতকে বল প্রয়োগ করে দমিয়ে দিয়ে বিজয়ী হওয়াতেও লাভ নেই। দিন শেষে নিভৃতে যখন চিন্তা করে দেখি যে আমি কোথাও এতটুকুও ফাঁকি দেই নি, কাউকে ঠকাই নি, কারো উপর বলপ্রয়োগ করি নি, আমি সকল স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে চিন্তা করতে পেরেছি তখনই বোধ হয় আমি মানুষ। যদি এভাবে পুরোপুরি সৎ হওয়া যেত তবে বোধ হয় এই পৃথিবীটাই স্বর্গের রূপ ধারণ করতো। তাই স্বর্গ ও নরকের প্রাপ্তি পুরোটা আমাদেরই হাতে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৫

খাটাস বলেছেন: জীবন কি? মজার প্রশ্ন। যার যত উত্তর সব ই সঠিক তার জন্য।
ভালই বলেছেন।
দর্শন নিয়ে বেশ পড়ছেন মনে হচ্ছে।

১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১৪

উড়োজাহাজ বলেছেন: দর্শন নিয়ে পড়ছি না, তবে জীবন দর্শনে হাবুডুবু খাচ্ছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.