নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আঞ্চলিক সংস্কৃতির সাথে ইসলামের কোন দ্বন্দ্ব আছে কী?

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৩৫

ইসলাম আরবে এলেও তা এসেছে সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য। ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম। এটা শুধু আরবদের ধর্ম নয়। এই দীনের একটি নাম দীনুল ফিতরাহ বা প্রাকৃতিক দীন। এটা যেমন উষর মরুতে বসবাসকারী ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিহিত মানুষের জন্য তেমনি এটা বরফ ঢাকা সুদূর সাইরেবিয়ার মোটা কাপড়ে আবৃত মানুষের জন্যও। একই সাথে সেটা আফ্রিকার মানুষের জন্য, এশিয়ার মানুষের জন্য, ইউরোপের মানুষের জন্য। অর্থাত সব ধরনের আবহাওয়া, সব ধরনের খাদ্যাভ্যাস, সবধরনের পোশাক পরিহিত মানুষের জন্য এই ইসলাম। কেউ যদি সেটাকে শুধু আরবের কিংবা শুধু আফ্রিকার বানিয়ে ফেলে তবে তারা এর সার্বজনীনতাকে অস্বীকার করলো, ইসলামকে খাটো করে ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আবদ্ধ করলো। এ ধরনের ধ্যান-ধারণায় যারা বিশ্বাসী তারা মুখে যতই ধর্মের জিকির তুলুক তারা সেই ধর্মের মহিমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা কূপমণ্ডূক, বর্জনীয়।

ইসলামের বিধানগুলো এমনই যে এটা সমস্ত মানবজাতিকে একজাতিতে পরিণত করার পক্ষে। অর্থাত একই আদম হাওয়ার ঔরস থেকে আগত সাদা, কালো, বাদামী, শ্যামলা সবাইকে ভাই ভাইয়ে পরিণত করা পক্ষপাতী। তার মানে এই নয় সবাইকে সাদা হতে, সবাইকে কালো হতে হবে অথবা সবাইকে বাদামী হতে হবে কিংবা সবাইকে শ্যামলা হতে হবে। তার মানে এই নয় যে সবাইকে কোন নির্ধারিত অঞ্চলের পোশাকই পরতে হবে, নির্ধারিত অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হতে হবে। নির্ধারিত অঞ্চলের আবহাওয়া, সে অনুযায়ী তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, গায়ের রং রেখেই তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এগুলোর উর্ধ্বে উঠেই যখন তারা বিভেদ-ব্যবধান ভুলতে সক্ষম হবে তখন তাদের মধ্যে বিরাজ করবে ঐক্য, সমৃদ্ধি ও শান্তি। তারা পরিণত হবে ভাই-ভাইয়ে। এরই নাম ইসলাম। অন্যদিকে যারাই সেই ব্যবধানকে অস্বীকার করে শুধুমাত্র কোন একটা অঞ্চলের পোশাককে( উদাহরণ, সাইবেরিয়ার মানুষকে আরবের পোশাক পরানো), খাদ্যাভ্যাসকে (ইউরোপ-আমেরিকানদেরকে ভাত খাওয়ানো) জোর করে চাপিয়ে দিতে চাইবে, মনে রাখতে হবে সেটা হবে অযৌক্তিক, অর্ধার্মিক, অনৈসলামিক। মনে রাখতে হবে তারা ইসলামের মূল উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অজ্ঞ। তারা যদি সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তবে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে, বর্জন করতে হবে। কেননা তাদের এ আচরণ প্রকৃতি বিরুদ্ধ, বাস্তবতা বিবর্জিত। সেটা ইসলামের অপর নাম দীনুল ফিতরাহ এর বিপরীত কোন কিছু। ইসলাম যুক্তির ধর্ম। রসুলাল্লাহ বলেছেন, আমার ধর্মের ভিত্তি দাড়িয়ে আছে যুক্তির উপর। অতএব যা অযৌক্তিক তাকে ধর্মের বিধান বলে চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়, অনৈসলামিক।

প্রশ্ন হচ্ছে এমনও দেখা যায় যে কিছু কিছু বিষয়ে কোন কোন ব্যাখ্যাকারীরা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম বলে ফতোয়া দেয়। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা হাদিসের উল্লেখও করে। হাদিস ও ইতিহাস নিয়ে কথা হচ্ছে সেগুলোর সব নির্ভযোগ্য নয়। নির্ভরযোগ্য হচ্ছে শুধুমাত্র আল্লাহর কোরান। হাদিস বহু লোক বহুভাবে বিকৃত করেছে, নিজেদের সুবিধার্থে নিজেদের মত করে বানিয়ে নিয়েছে। এ সম্বন্ধে তথ্যাভিজ্ঞ ও সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জেনে থাকবেন। তাছাড়া বহু সঠিক হাদিস ইসনাদের অভাবে বাতিল হয়ে গেছে আবার ইসলামের মৌলিক আকীদার সাথে সাংঘর্ষিক হাদিসও সহী হাদীসের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। তাই সব ক্ষেত্রে হাদিসের উপর নির্ভর করতে গেলে সমস্যা বাড়তে থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আল্লাহর রসুল বলেছেন, আমার কোন কথা কোরআ'নের কথাকে রদ করবেনা কিন্তু কোর'আনের কথা আমার কথাকে রদ করবে।

একথা সন্দেহাতীত যে আল্লাহর অভিপ্রায় হচ্ছে সব ধরনের অন্যায়- অত্যাচার, অবিচার ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা, রক্তারক্তি (ফাসাদ ও সাফাকুদ্দিমা) নির্মূল করে মানবজাতিকে আবার একজাতিতে পরিণত করার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ইবলিসের চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হওয়া। সেটা করতে হলে মানবজাতিতে বিদ্যমান ভৌগোলিক পার্থক্য, গায়ের রং, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবধান গোছানো প্রয়োজনীয় নয়, বরং সেগুলোকে স্বীকার করে নিয়েই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা সেই পার্থক্যগুলোকে সামনে তু্লে ধরে মানুষে মানুষে দূরত্ব বৃদ্ধি করার পক্ষপাতি তারা আর যাই হোক আল্লাহর পক্ষে কাজ করছে না, করছে শয়তানের পক্ষ হয়ে। সেই হিসেবে ভৌগোলিক ভিন্নতার জন্য যেসব পার্থক্য রয়েছে, পালা-পার্বন রয়েছে, উতসব রয়েছে সেগুলো সার্বজনীন ধর্ম ইসলাম স্বীকার করে। স্বীকার করে না কেবল কূপমণ্ডূক ও গোড়াপন্থীরা। তবে কথা হচ্ছে এর মানে এই নয় যে সেসব উতসবের নামে করা অপচয়, অশ্লীলতা, বেলেল্লাপনাকেও ইসলাম স্বীকার করে নেয়। এখন যদি উতসবের নামে, পালা-পার্বনের নামে সেসব ক্রিয়া-কলাপ চলে তবে সেই ক্রিয়া-কলাপই নিষিদ্ধ হবে। মাথাব্যথার জন্য মাথা কাটা কোন চিকিতস্যা হতে পারে না। তেমনি দা-বটি দিয়ে মানুষ মাছ-তরকারী কাটার পাশাপাশি মানুষ খুনও করা যেতে পারে। মানুষ খুন করা যেতে পারে বলে দা-বটি হারাম হতে পারে না। মানুষ খুন করাটাই এক্ষেত্রে হারাম।
শুভ বাংলা নববর্ষ।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪২

rangpur বলেছেন: ঘুরে ফিরে তো সেই একই কথা বললেন যেটা মোল্লারা বলতেছে .........নতুন কিছুই তো পাইলাম না......

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩১

উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনার বুঝতে সমস্যা হয়েছে অথবা আমিই হয়তো বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৫৩

জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেছেন: উড়োজাহাজ ভাল লিখেছেন, ভাল কথা বার বার লিখতে হবে।

নতুন কথা মুক্তমনা নামধারীদের মিথ্যার মুখোশে যতোই রস দিয়ে নতুন করে লেখা হোক তা এক সময় ক্ষরকুটার ন্যায় আস্তকুড়ে নিক্ষেপ হয়।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩২

উড়োজাহাজ বলেছেন: জ্বী, ভাই। নতুন কথা বলে অন্যায়কে আমি জায়েজ বলতে পারব না। ধন্যবাদ।

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০২

rangpur বলেছেন: নতুন কথা দিয়েই সমাজ সভ্যতা আজ এখানে এসেছে ......।।আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হলে পৃথিবী আজ এখানে দাঁড়িয়ে থাকতো না.........বরং দেখা গেছে পুরাতন কথাই সময়ের সাথে সাথে আস্তা কুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে.........।

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৯

জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেছেন: rangpur আপনার বোঝার ভুল আছে কারণ আপনারা হলেন ইসলামবিদ্বষী অজ্ঞ তা আপনার কমেন্ট দেখলেই বুঝা যায়।
আমি যে সব জানি বা বিজ্ঞ তা না।
কিন্তু আমার আর আপনার মধ্যে পার্থক্য হলো আমি না জেনে অন্য বিষয়ে সমালোচনা করি না।
কোন কিছু নিয়ে যদি সমালোচনা করতে হলে নিজে আগে জানতে হয়। আপনার যেটা নতুন মনে করছেন সেটা পবিত্র কুরআন ১৪০০ বছর আগে বিজ্ঞানের বিশ্লেষন দিয়ে গেছে, মানব ভ্রুন, গ্রহের কক্ষপথে ঘুর্নায়ন, বিগ ব্যাঙ থউরী এরকম অসংখ্য।
আপনাকে বলে এগুলো লাভ নাই, কারণ আপনাদের চরিত্র সম্পর্কেও আমরা কুরআন থেকে জেনেছি
সূরা আল বাক্বারাহ:13 - আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না।
সূরা আল বাক্বারাহ:19 - আর তাদের উদাহরণ সেসব লোকের মত যারা দুর্যোগপূর্ণ ঝড়ো রাতে পথ চলে, যাতে থাকে আঁধার, গর্জন ও বিদ্যুৎচমক। মৃত্যুর ভয়ে গর্জনের সময় কানে আঙ্গুল দিয়ে রক্ষা পেতে চায়। অথচ সমস্ত কাফেরই আল্লাহ কর্তৃক পরিবেষ্ঠিত।

এখন আপনি ভালো যানেন আপনি কি??
আমার ভুল হলে পবিত্র অাল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি।










৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩০

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইসলামে সুরুর দিকে মক্কা বিজয়ের পর মোহাম্মদ (স) কুরাইসদের ও বিভিন্ন গোত্রদের আচার, প্রথা চালু রাখার আদেশ দিয়ে ছাড় দিয়েছিলেন। তাদের প্রচলিত পোষাকও পরিবর্তন করতে বলেন নি। কিতাব তাই বলে।
তাই বাংলায় সুদির্ঘ দিন থেকে প্রচলিত পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব কোন গ্রাউন্ডেই নাজায়েজ বলা যাবে না।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:২৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: সহমত এবং ধন্যবাদ।

৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৫৯

ইমরান আশফাক বলেছেন: আন্চলিক সংস্কৃতি ততক্ষন পর্যন্ত গ্রহনযোগ্য যতক্ষন সেইগুলি ইসলামের মূল আকিদার সংগে সাংঘর্ষিক না হয়।

৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:২৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: ইসলামের মূল আকীদা হচ্ছে মানুষের ক্ষতি না হ্ওয়া বা ক্ষতি হয় এমন কিছুকে বর্জন করা। যা করলে মানুষের ক্ষতি হয় তাই পাপ, তাই হারাম। আর যাতে মানুষের উপকার হয় তাই সওয়াব। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:২৫

rangpur বলেছেন: @জিয়া উদ্দিন ...।আমার আর আপনার মধ্যে পার্থক্য হলো আমি না জেনে অন্য বিষয়ে সমালোচনা করি না। আপনার কথার সুত্র ধরেই বলি আপনি আমাকে কতটুকু চিনেন যে আমার সমন্ধে এই মন্তব্য করলেন ...। ব্যক্তি আক্রমন করে কি নিজেকে সেফ করা যাবে? কার মধ্যে কি ঢুকাইলেন .........আপনি কি ইসলামী আকিদার বাইরে গেছেন নাকি ক্ষমা চাচ্ছেন কেন? ইসলাম সমন্ধে এতো জ্ঞান রাখেন আর এই সামান্য বিষয়ে ভুল শুদ্ধের জ্ঞান রাখেন না এটা কেমন কথা...।। তাহলে শেষ বিচারে কি জবাব দিবেন......

কুমার সে মাটির জিনিস তৈরি করছে, কামার লাঙল বানাচ্ছে, আমি বুক ফুলিয়ে বললাম, এই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। এটা বলা কি এক অর্থে সব পুরনোকে টিকিয়ে রাখা ।। প্রাচীনত্বকে ধরে রাখা ।। আমি কি পারলে এই কামারকে ইঞ্জিন দেব না? সে নিজে ইঞ্জিন দিয়ে যদি তৈরি করতে পারে তো করুক। আমি কি বলতে পারি, আমি ট্রেনে চড়ব না, বাসে চড়ব না, আমাকে গরুর গাড়ি দিতে হবে। আমি কি বলতে পারি, আমার এই স্যানিটারি বাথরুমটা চাই না, আমি মাঠে গিয়ে প্রাতঃকৃত্য সারতে চাই। সেটা কি করতে পারব? সংস্কৃতি এমন একটি ইলাস্টিক জিনিস, এত পরিবর্তনশীল। এটাকে কোন কিছুতে আবদ্ধ করে রাখার কোন সুযোগ নাই...

৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:৩৪

rangpur বলেছেন: বাংলা এবং বাঙ্গালী সংস্কৃতিতে বড়বেশী হিন্দুয়ানী গন্ধ, তাই এর খতনা করে মুসলমানী লেবাস পরানো অতি জরুরী নতুবা খোদ ইসলামই যে হয়ে পড়বে বিপন্ন। ইসলাম কি এতোই ঠুনকো যে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের ধাক্কায় তার ইজ্জত খোয়াবে?
বাঙ্গালী মুসলমান যদি তার বাঙ্গালিত্ব বজায় রেখে ইসলামের এই মূল আদর্শের অনুবর্তী হতে পারে তাহলে ইসলামের সাথে বিরোধের অবকাশ কোথায়? মৌলবাদীরা বাংলা সংস্কৃতি ও ভাষার মাঝে হিন্দুয়ানী গন্ধ পেয়ে থাকে। ব্যতিক্রমকে নিয়মের ব্যত্যয় হিসেবে মেনে নিয়ে একথা অবশ্যই স্বীকার্য যে, বাঙ্গালী মুসলমানদের পূর্ব পুরুষ এক সময় সনাতন হিন্দুধর্মের অনুসারী ছিল এবং সে কারণে আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিতে হিন্দুধর্মের অনিবার্য প্রভাব রয়েছে। এ ছাড়া বাঙ্গালী সংস্কৃতিতে বৌদ্ধ ধর্ম এবং দেশজ লোকাচারের প্রভাবকেও অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু এ সত্ত্বেও যদি আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি ইসলামের মূল আদর্শকে বিপন্ন না করে তাহলে তা বর্জন করার যৌক্তিকতা কোথায়? বাংলা-বাঙ্গালী সংস্কৃতির বর্তমান ধারা আমাদের নিজস্ব অহংকার,একে যারা অস্বীকার করতে চায় বা জোরপূর্বক ‘ইসলামী করণ’ করার প্রচেষ্টা চালায় তারা হয় হীনমন্যতাগ্রস্ত কিংবা তাদের রয়েছে কোন এক দূরভীসন্ধী। উল্লেখ্য, খোদ আরবে বর্তমানে যে ভাষা-সংস্কৃতি অব্যাহত আছে বিশ্লেষনে দেখা যায় তা ইসলাম ধর্মের আর্বিভাবের বহুপূর্ব থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। আরবের মুসলমানেরা তাদের পূর্বপুরুষদের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে জাহেলী যুগের বলে অস্বীকার করেনি বরং প্রাচীন সেই বেদুইন সংস্কৃতির ভিত্তিতেই তাদের সংস্কৃতি, ভাষা-সাহিত্য বিবর্তিত হয়ে চলছে।

বর্তমানে দেশে বিদেশে জামাত সহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী রাজনৈতিক দল আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত সেই দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে তাদের রাজনৈতিক অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এই সব দলগুলো পাকিস্তানী কায়দায় বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি ভাষার বিরুদ্ধে তৎপড়তা চালাচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে তালেবানী স্টাইলে তাদের ভ্রান্ত ইসলামী মতবাদকে জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া। আর এজন্য ইসলামী মুখোশে খোদ বাংঙ্গালী সংস্কৃতির উপর এদের এই আগ্রাসনের অপতৎপড়তা...

মুসলিম বিশ্বের অপরাপর দেশে নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি ঐতিহ্যের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হয়। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া এক সময় হিন্দু সভ্যতায় প্রভাবিত ছিল। এই সত্যকে সেখানকার মুসলমানরা অস্বীকার করেনি। তাই আজো জাতীয় গ্রন্থ হিসাবে রামায়নকে সেখানকার অধিবাসীরা মেনে নিয়েছে। মিশরীয় মুসলমানেরা ফেরাউনদের সভ্যতা, ঐতিহ্য নিয়ে আজো গর্ব করে। সেখানকার মুসলমানরা হযরত মুসার সাথে যে ফেরাউনরা চরম বিরোধে লিপ্ত ছিল সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলে না। বাংলাদেশে যারা ইসলামকে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে তারা মূলতঃ ইসলামের শক্র জঙ্গীবাদকেই মদদ যোগায়। শান্তির ধর্ম ইসলামে স্পষ্টতঃই ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা নিষিদ্ধ রয়েছে। ইসলাম মানবতাকেই সবচেয়ে বেশী মূল্য দেয়। আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের মূল সুর - সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই। তাহলে বাঙ্গালী সংস্কৃতি কেন ইসলামের প্রতিপক্ষ হবে?

১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:৩৮

rangpur বলেছেন: এককালে ফ্রিজ ছিল না বলে মানুষ পান্তাভাতে অভ্যস্ত ছিল, তাই বলে নগরসংস্কৃতির পান্তাভোজনে অনেকের নৃতত্ত্ব নিয়ে টান দিতে হয়, তাদের যেন সংস্কৃতির শল্যচিকিৎসা করার দায়িত্ব পড়েছে; নগরসভ্যতা ও তার সংস্কৃতির প্রায় পনের আনাই বিনোদনের জন্য, তার ভিতর প্রাণধর্ম ও লোককৃষ্টির পরিচয় খুঁজতে যাওয়া বেকার, কিন্তু এটাও তার একটা পরিচয় বটে, আত্মপরিচয়ের সংকটকালে এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিচয়কে অগ্রাহ্য করা বড় বোকামী; শহুরে বিনোদননিষ্ঠ আচারসংস্কৃতির ধর্মকে না বুঝতে পারলে উল্টো তার ওপর খড়গহস্ত হয়ে লোক জীবনের ভগ্নপ্রায় সাংস্কৃতিক সুষমাকে আরোপ করতে চাইলে না নগর না গ্রাম কারো উপকার হয় না; জনমানসের সাংস্কৃতিক শক্তি ও চেতনার বিকাশ কখন কোথা দিয়ে ঘটবে সে তুমি ঠিক করে দিতে পারো না, সংস্কৃতি তার নিজের পথ নিজেই খুঁজে নেয়; তাকে কখনও দেখে মনে হবে মুসলমান, কখনও হিন্দু, কখনও সংকটের আবর্তে সীমাবদ্ধ কখনও মহাকালের দিকে প্রসারিত; যা ঘটতেছে তার ঘনিষ্ট হও, ঘনিষ্ট হওয়া মানেই বিলীন হয়ে যাওয়া নয়, প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকলে সংস্কৃতি তার নতুন দিশা খুঁজে পায়, মনে রাখতে হবে উপেক্ষা নহে আগ্রহই ধর্ম বা সংস্কৃতিকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে চলে, প্রতিটি ভোর তখন নতুন আলোর দিশা দেখাতে পারে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.