নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I work in the dark to serve light

কোথাও কেউ নেই

কোথাও কেউ নেই › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা ভাইরাস ও মানবতা, ইতিহাস থেকে শিক্ষা

১৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:১১

করোনা ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, মাহফিলে ধর্মীয় নেতারা , আমরা সাধারন মানুষরা অনেকে অনেক কথা বলছি।
সন্দেহ নেই, ভাইরাস জনিত অসুখের জন্য ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে, অনেকে মারা যাচ্ছে। ভাইরাসের কারনে জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছে, অনেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে মজুদ করে রাখছেন।যার ফলে জিনিসের কৃত্রিম সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। অনেক ফার্মেসিতে মাস্ক, স্যানিটাইযার পাওয়া যাচ্ছেনা।
কেউ বলছেন এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে ছরান হয়েছে, কেউ বলছেন চায়নাদের খাদ্য অভ্যাসের জন্য এটা হয়েছে। কেউ বলছেন এটা আল্লাহর গজব চিনারা উইঘুরদের উপর অত্যাচার করার কারনে এটা হয়েছে, যদিও ইরান আক্রান্ত হয়েছে এবং ৬১১ জন মারা গিয়েছে (১৪-৩-২০২০ পর্যন্ত) এবং অনেক মুসলিম দেশেও ভাইরাসের প্রভাব পরেছে।
কেউবা স্বপ্নে করোনা ভাইরাসের ঔষধ পেয়েছেন বলে দাবি করছেন।
স্টেডিয়ামে খেলা দেখা বন্ধ, গির্যায় প্রার্থনা বন্ধ, উমরাহ পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ, কাবা ঘরে তওয়াফ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল (সম্ভবত নির্মান কজের জন্য)। এটা দেখে অনেকে বলেছেন, ঈশ্বর নিজের ঘরকে ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে পারছেননা।
যারা অনেক ধনী তারা কিছুদিনের জন্য দূরে অবকাস কেন্দ্রে চলে যাচ্ছেন। যারা বিত্তশালী নন তাদের বাধ্য হয়ে কাজে যেতে হচ্ছে।
এবার ফিরে যাই ১৪০০ বছর আগে,
আরব মারাত্মক খরাতে পড়েছিল এবং প্রচুর পরিমাণে মানুষ ক্ষুধা ও মহামারীজনিত রোগ থেকে শুরু করে মারা যেতে শুরু করেছিল, ফলে খরার সৃষ্টি হয়েছে এবং এর জটিলতাও রয়েছে। অতএব, খাদ্যদ্রব্যের জন্য আরবের অসংখ্য মানুষ (কয়েক লক্ষ লোক) মদীনায় জড়ো হয়েছিল। শীঘ্রই, মদিনার খাদ্য মজুদ উদ্বেগজনক পর্যায়ে হ্রাস পেয়েছে; এই সময়ের মধ্যে, খলিফা উমর ইতিমধ্যে তাঁর প্রদেশের গভর্নরদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন যে, তারা যেন খাদ্য সহায়তা পাঠান। আবু উবাইদাহর কাছে এইরকম একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন:
“আমি আপনাকে সেই কাফেলা পাঠাচ্ছি যার এক প্রান্তটি এখানে সিরিয়ায় থাকবে এবং অন্যটি মদিনায় থাকবে।“
আবু উবাইদাহর কাফেলা খাবার সরবরাহকারীরাই প্রথম মদীনায় পৌঁছেছিল, সেখানে ৪,০০০ উট বোঝাই খাবার ছিল। আবু উবাইদাহর উদার সহায়তার জন্য , উমর তাকে ৪০০০ দিনার ভাতা দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি নিতে অস্বীকার করেন এই কারনে যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তিনি এটা করেছিলেন ।
এই ঘটনার নয় মাস পরে নতুন সমস্যা দেখা দিল,
সিরিয়া ও পশ্চিম ইরাকে প্লেগের মহামারীট দেখা দেয়; এটি সিরিয়ায় সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। তখন প্লেগ হওয়ার খবরটি পেয়ে উমর সিরিয়া সফরে যাচ্ছিলেন তবে তিনি তার সঙ্গীদের পরামর্শ অনুসারে সিরিয়ার সীমান্ত থেকে ফিরে এসেছিলেন। কেন ফিরে এস ছিলেন, সেটি আমি পুর্বের লেখায় বলেছি। এখন আবারও বলছি।
উমর সিরিয়া থেকে ফিরে এসেছিলেন কারণ মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন
“যখন তোমরা কোন স্থানে এর বিস্তারের কথা শোন, তখন সে এলাকায় প্রবেশ করো না; আর যখন এর বিস্তার ঘটে, আর তোমরা সেখানে অবস্থান কর, তাহলে তাত্থেকে পালিয়ে যাওয়ার নিয়তে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।
”সুতরাং আবু উবাইদাহ তার সেনাবাহিনীতে এমেসায় ফিরে গেলেন। খলিফা উমর চাননি যে তিনি মহামারী অঞ্চলে সেখানে থাকুন।
হযরত উমর একটি চিঠি দিয়ে আবু উবাইদাহের নিকটে একটি বার্তাবাহক প্রেরণ করলেন:
আমি আপনার জরুরি প্রয়োজন রাতে যদি আমার চিঠিটি আপনার কাছে পৌঁছে যায় তবে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যেন ভোর হওয়ার আগেই চলে যান। দিনের বেলা যদি এই চিঠিটি আপনার কাছে পৌঁছায়, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে সন্ধ্যা হওয়ার আগে চলে যান এবং আমার কাছে ফিরে আসুন।
আবু উবাইদাহ যখন উমরের চিঠি পেয়েছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, "আমি জানি যে ওমর কেন ফিরে যেতে বলছেন। তিনি এমন কাউকে বাঁচিয়ে রাখতে চান যিনি চিরকালীন নন।" সুতরাং তিনি উমরকে লিখেছিলেন:
আমি জানি আমাকে আপনার প্রয়োজন। তবে আমি মুসলমানদের একটি বাহিনীতে রয়েছি এবং তাদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচানোর আমার কোন ইচ্ছা নেই। আল্লাহর ইচ্ছা না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের থেকে পৃথক হতে চাই না। সুতরাং, যখন এই চিঠিটি আপনার কাছে পৌঁছেছে, আমাকে আপনার আদেশ থেকে ছেড়ে দিন এবং আমাকে থাকার অনুমতি দিন ।
খলিফা উমর যখন এই চিঠিটি পড়লেন তখন তাঁর চোখের জল ভরে গেল এবং তাঁর সাথে যারা ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, "আবু উবাইদাহ কি মারা গেছেন?" তিনি জবাব দিলেন "না, তবে মৃত্যু তার নিকটেই আছে।" খলিফা উমর তাঁর কাছে আরেকজনকে প্রেরণ করে বলেছিলেন যে আপনি যদি কম আর্দ্র পরিবেশে কমপক্ষে কোন উঁচুভূমিতে চলে না যান এবং আবু উবাইদাহ জাবিয়ায় (দামেস্কের অন্তর্বতী জায়গা) চলে গেলেন।“
তিনি ৬৩৯ সালে মারা যান এবং তাকে জবিয়াতে সমাধিস্থ করা হয়।
অনেক লম্বা কথা বললাম, এখন কথা হচ্ছে যারা বলছেন এটা সৃস্তিকর্তার শাস্তি উপরের ঘটনা নিশ্চয় জানেন। খলিফা উমর (রাঃ) সময় কি অভিশপ্ত ছিল ? সুতরাং, ঘৃনা উদ্রেক কথা এখন বলা উচিৎ হচ্ছেনা।
যারা বলছেন, , ঈশ্বর নিজের ঘরকে ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে পারছেননা তাদের জন্য নিম্নোক্ত ছবিগুলি এবং একটি ভিডিও



বন্যার সময় কাবা-১৯৪১



করোনার পরবর্তী সময়,

Live of Kaba

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা আমাদের যে শিক্ষা দিলো- তা আমাদের সব সময় মনে রাখা দরকার।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১:২২

নতুন বলেছেন: সাধারন মানুষ যৌক্তিক ভাবে কিছু ভাবে না তারা বিশ্বাস করতে পছন্দ করে।

পৃথিবিতে অলৌকিক কিছু হয় না।

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৫৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: একমাত্র আল্লাহই রক্ষাকর্তা ।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:১৪

করুণাধারা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো পড়ে, অনেক ধন্যবাদ এই চমৎকার পোস্টটির জন্য। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.