নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলতে চাই কিছু লিখেত চাই

মনুআউয়াল

মনুআউয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিজাবিদের সেক্স অ্যাপিল কি কেবলই চুলে?

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬


আমাদের ছেলেবেলায় আমাদের মা-খালা-চাচীরা মাথায় কাপড় দিতেন শাড়ির আঁচল টেনে। আর অল্প বয়েসিরা যদি মাথায় কাপড় দিত তাহলে ওড়নাই ছিল একমাত্র। আর মাথায় কাপড় দেবার সুবিধা হিসেবে এরা বখাটেদের নজরে পড়ত কম, সাধারণ মানুষ খানিকটা সমীহ করে চলতো এই।
এখন রাস্তা ঘাটে উৎসবে অনুষ্ঠানে অনেক বেশী চোখে পরে হিজাব পরা মেয়েদের। কারণ একেবারেই ধর্মীয়। ইসালাম যে পর্দা প্রথার কথা বলে সেটি হচ্ছে এমন বস্ত্র খণ্ড দিয়ে নিজেকে আবৃত করো যেন তোমার শরীর অন্যকে লোভাতুর না করে। তারই অংশ হিসেবে মাথার চুল ঢাকার কথাও বলা আছে।
যুগ বদলেছে। সেই বদল নিজের চোখে দেখে এলাম বর্ষ বরণের অনুষ্ঠানে। আমার মত যারা নিতান্তই সাদাসিধে বেশবাসে গেছে তারা এমনিতেই চোখে পড়ে না বিশেষ। কিন্তু বড় পিঠ খোলা ব্লাউজ পরে যারা ঘোরাফেরা করছেন তাদেরও খুব বেশি একটা কেউ দেখছেনা।
তবে দেখছে কাদের? দেখছে রংবাহারী হিজাবিদের। চোখ ছোট করে, বড় করে, ট্যারা করে, বাঁকা চোখে ,সরু চোখে, ঘাড় বাঁকিয়ে যাদের নারী পুরুষ নির্বিশেষে দেখছে তারা হিজাবি!!!
গলার যে ছোট গয়নাটা হিজাবের কারণে আর পরতে পারছেন না, সেটা এখন মাথার হিজাবের শোভা বাড়াচ্ছে। হিজাবের কারণে গয়নাগাটি যেটুকু কম পরতে হচ্ছে সেটুকুর শখ মেটাচ্ছেন চটকদার সেজে। ঠোঁটের রং, চোখের রঙ, গালের রঙ এরা এতো চড়া করে লাগায় যে মনে হয় বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপনের ছোট কাপড় পরা মেয়েটিকেও হার মানিয়ে দেবে বিজ্ঞাপনে।
এ সমস্ত উগ্র সাজসজ্জার মেসেজ হচ্ছে, ‘লুক এট মি’। শাড়ি পরবার কায়দা দেখে মনে হচ্ছে শরীরের সমস্ত বাঁক ফুটিয়ে তোলার যাদুকরী উপায় ওরা বের করে নিয়েছে।
এতো গেল শাড়ির কথা আসি সালোয়ার কুর্তায়। জামার ওড়নাকে চোদ্দ প্যাচ দিয়ে হিজাবের কায়দায় পরবার চেষ্টা দেখে মনে হয় মাথার চুল ঢাকলেও ফিগারটাতো ভাল দেখানো চাই। আবার যারা জিন্স-টপস পরছেন তাদের আটো-সাঁটো জিন্স অনেক বেশি ফ্যাশনেবল। সাধারণ জিন্সের চাইতে আলাদা। বেশির ভাগেরই জিন্সের গায়ে নানা রকমের নকশা কাটা, বিডস বসানো,চকমকি পাথর খচিত। তার উপরে চাপানো টপস মনে হবে চামড়ার সাথে সেলাই করা অথচ মাথায় হিজাব এমন করে আঁটা যেন গলা পর্যন্ত পেঁচিয়ে রাখা যায়। কেউ কেউ তো বাথিং ক্যাপের মত কিছু একটা দিয়ে পর্দা করছেন। অথচ গলার চেইনে যে লকেট সেটা ক্লিভেজের কাছে ঝুলছে!!!
এহেন পোশাকে সেজে মাথায় হিজাব দিয়ে যারা ঘুরেন ধর্মের ধ্বজাধারি হয়ে, সেক্স অ্যাপিল সম্বলিত পোশাকে মাথায় হিজাব এঁটে ঘুরবার সময় কী এরা ভাবে যে একবার তাকালেই এদের বুক পেট কোমরের মাপ একটা শিশুও বলে দিতে পারবে! নাকি ইসলাম আসলে কেবল চুল ঢাকাকেই পর্দা মনে করে? এদের চলাফেরা দেখলে মনে হয় কেবল চুল ঢেকে সমস্ত খুলে দিয়ে চললেও অসুবিধা নেই। ঘিলুটা দয়া করে খাটান। মাথার চুলে না, সেক্স অ্যাপিল থাকে শরীরে।
ভেবেছিলাম ব্যাক্তি স্বাধীনতার যুগে যার যেমন ইচ্ছে চলতে পারে, আমার বলার কী! কিন্তু ঝামেলা হলো এরা যে ঝাণ্ডাটা ধরে আছে, যে মুখোশ এঁটে আছে সেটা ধর্মের। ধর্ম না বলে যদি নিজের ফ্যাশান বলতো, আপত্তি থাকার কথা ছিল না। কিন্তু এরাতো বলছে ধর্মের কথা, তাই বলতেই হলো।
কথায় কথায় সুবাহানাল্লাহ, মাশাআল্লা বলা এই নব্য মুসলমানের দল আমার ধর্মবোধকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে প্রতিনিয়ত। এই বক ধার্মিকদের বিরুদ্ধে না বলা মানে ধর্মের নামে অধর্মকারীকে প্রশ্রয় দেয়া। অনেক নাজুক মুসলিম আছেন যাদের বলতে শুনি, আহা মেয়েটা কেমন মাথায় কাপড় দিয়ে ঘুরছে, আবার কেউ কেউ বলেন, আমি তো দিচ্ছি না, ও যে দিচ্ছে সেই তো অনেক। এই গোত্রের মানুষরাও একই অপরাধে অপরাধী।
নাস্তিকেরা গালি দিলে এতো লাফ দেন, আর নিজেরা যে অধর্ম করেন তখন আপনাদের লাগে না? নাকি ইসলাম আপনাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে পালনের পথ খোলা রেখেছে?
ওর থেকে দেখে শিখেছি, তার থেকে শুনে করেছি’র অজুহাত দেবার দিন আর নেই। গুগুল ডার্লিং নেট দুনিয়ায় দুহাত বাড়িয়ে আছে। বোতাম টিপে সার্চ দিলেই বেহেস্তি জেওর থেকে সহী ইসলাম সবই পেয়ে যাবেন। সবটা আমরা কেউই পালন করতে পারি না, কিন্তু যেটুকু করি সেটুকু কেন ভণ্ডামি মিশিয়ে করবো? আগে আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন যে ইসলামের পর্দা প্রথা আপনি মানতে প্রস্তুত কিনা! আঁটোসাটো পোশাক পরে কোন রকমে চুল ঢেকে আর দুচারটা আরবী শব্দের তুমুল ব্যবহার করে যদি ধর্ম হয়, তবে সহি ধার্মিকের লজ্জা পাওয়া উচিত।
একটা গল্প বলি – এক হুজুর ওয়াজ শেষে গেছেন টয়লেটে, সেরে উঠে আসবার সময় তার টুপিটা গেল পড়ে। হুজুর তখন ‘আমার সুন্নত চলে গেছে, সুন্নত চলে গেছে’ বলে তুমুল চিৎকার করতে করতে তার লুঙ্গি খুলে মাথায় দিয়ে দৌড়ুচ্ছে আর লোকজন হুজুরকে সাহায্য করতে ব্যস্ত। সেই ভিড়ের ভেতর এক বুড়ি তার হাত দুইটা দিয়ে চোখ ঢেকে রেখে বলছে হুজুর ফরজ বাঁচান।
এই যে আমার মতো বেপর্দা মেয়ে এত লেকচার দিচ্ছে সেটা পড়ে যাদের আমার উপর রাগ হচ্ছে, গাল দিতে ইচ্ছে করছে, নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে, আমাকে আনফ্রেন্ড করতে চাইছেন, অনুগ্রহ করে করে ফেলুন, খালি আমায় ক্ষমা করবেন না, কারণ আমি মোটেও ক্ষমা প্রার্থী নই।
ফেসবুক হতে সংগৃহীত (লেখক: লুসিফার লায়লা)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৫ সকাল ৮:২৮

এ আর ১৫ বলেছেন: হিজাব পরার নির্দেশ কোরানের কোথায় আছে ?? কেউ কি ব্যাখা করবেন ।

২| ০৩ রা মে, ২০১৫ সকাল ৯:২৯

মিতক্ষরা বলেছেন: পোস্ট পড়ে মজা পেলাম।

চুল ঢাকা ফ্যাশনধারী হিজাবীরা ইসলাম নির্দেশিত পর্দার মানদন্ডে উত্তীর্ন নাও হতে পারেন। তবে তারা শালীনতার মানদন্ডে মোটামুটি উত্তীর্ন। অথচ একই কথা বিপরীত দিকে থেকে সত্য নাও হতে পারে। বেহিজাবী অনেক সময়েই শালীন হয় না।

৩| ০৩ রা মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: বেহেস্তের লোভে যে ধর্ম পালন, তাতে কি কেউ হয় আল্লাহর আপন?

৪| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২০

লিংকন১১৫ বলেছেন: নিচের লিঙ্ক টি দেখতে পারেন
View this link

হিজাব বিষয়ে আরও দেখতে পারেন

হিজাব (মুসলিম রমনীদের পোশাক) সামু

আরও

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.