নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলতে চাই কিছু লিখেত চাই

মনুআউয়াল

মনুআউয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সকল মাতৃভাষার রক্ষার আন্দোলন

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬


একজন মানুষের মনের ভাব , আাবেগ ও চিন্তা চেতনা প্রকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো মাতৃভাষা তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অপরিসীম ।আর ভাষার স্বাধীনতার অর্থ হচ্ছে চিন্তার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা।এই চিন্তাই মানুষকে মনুষ্যত্বের উপলব্ধি দেয়। চিন্তার মাধ্যমে তার আবেগ,অনুভুতি,ঘৃণা,প্রেম,ভালবাসা,দ্রোহ এসব মানবিক বোধ তৈরি হয় ।সে নিতে পারে স্বাধীন সিধান্ত।আবার আমেরিকান ভাষাবিদ, যুক্তিবিদ ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কির ভাষাতত্ত্ব অনুসারে মানুষ সহজাতভাবেই সৃজনশীল। আর সৃজনশীল মানুষই স্বাধীনভাবে চিন্তার সক্ষমতা রাখে। তাই যার নিজ সিদ্ধান্ত নিজে নেবার সামর্থ্য তার অন্যের দ্বারা শাসিত হবার কোন প্রশ্নই আসেনা। আর এই কারনেই সমস্ত প্রকার শাসন ও কর্তৃত্ব অবৈধ-অন্যায্য।আর তাই কারো ভাষার উপরে যখন আঘাত আসে তখন সেই আঘাত আসে তার অস্তিত্বের উপরেই
সারা বিশ্বের অধিবাসীরা অনুমানিক ৬০০০-৭০০০ ভাষায় কথা বলা হয়ে থাকে এর মধ্য ৫০% থেকে ৮০% রয়েছে ঝুকির মধ্যে যার মানে এই ৫০-৮০% ভাষা গুলো ১০০ বছর পরে আর হয়ত প্রচলিত থাকবেনা। ইতিমধ্যে সাংস্কৃতি ও ভাষার আগ্রাসনে পৃথিবী থেকে বহুভাষা ও বর্নমালা হারিয়ে গেছে যা আর কখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। যা বিশ্ব ঐতিহ্যে, সাংস্কৃতি, ও মানবতার প্রতি চরম হুমকি।
পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার অধিকারের জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়ার নজির কেবল বাংলাদেশীদের আছে। এই ইতিহাস কারও অজানা নয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।সেই হিসবে সারা বিশ্বের ১৮৫ দেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে তারই ধারাবাহিকতায় এসফিল্ড কাউন্সিল, বাংলাদেশ সরকার, একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়া, এবং স্থানীয় মাতৃভাষাপ্রেমী সকলের সার্বিক ও সামগ্রিক সহযোগিতায় ১৯ই ফেব্রুয়ারি ২০০৬ পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে বাংলার মহান “শহীদ মিনার” এর আদলে আন্তর্জাতিক সংস্করণে আনুষ্ঠানিকভাবে এসফিল্ড হেরিটেজ পার্কে প্রতিষ্ঠালাভ করে বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ নামে পরিচিত।
পৃথিবীর সকল ভাষার সুরক্ষার জন্য এক নতুন আন্দোলন গড়ে তোলার চেতনা সামনে রেখেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধটি নির্মান করা হয়। আমরা যদি সকলে আন্তরিক ভাবে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষার রক্ষার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তবে এই স্মৃতিসৌধটি হতে সকল ভাষার মানুষের কাছে অনুপ্রেরনার প্রতীক। আমরা একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাব সারা বিশ্বে রাষ্ট্রযন্ত্র বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার ভাষা – সংস্কৃতির উপর এই আগ্রাসনের চালাচ্ছে। আর এর বিরুদ্ধে আমাদের নির্লিপ্ততা আর প্রতিবাদহীনতা দেখে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধটি কি আজ ডুকরে কাঁদে না? লজ্জাবনত স্মৃতিসৌধটি আজ আমাদের প্রশ্ন করে না?
অপারাপর জাতিগোষ্ঠীর ধংসপ্রায় ভাষা রক্ষার জন্য কি করছি ? বছরের একটি নিদির্ষ্ট দিনে কিছু আচার অনুষ্ঠানই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধটি নির্মানের মূল উদ্দেশ্য।
দুনিয়ার সমস্ত নিপীড়িত মানুষের ভাষা মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধটি সামনে রেখে আমরা এক নতুন আন্দোলন শুরু করতে পারি। আমরা স্লোগান তুলতে পারি মুক্ত মনের মুক্ত ভাষায় নির্মিত হোক মুক্ত এক পৃথিবী। সকল জাতিসত্ত্বার ভাষা – সংস্কৃতির উপর এই সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী আগ্রাসন প্রতিরোধ ও তাদের স্বকীয়তা বিকাশে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি।

যেহেতু Mother Language Conservation Movement International গঠনের উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীর সব ভাষাকে রক্ষা করা, তাই এই ব্যাপারে তারা আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে যেমন :
• বিভিন্ন ভাষার উপর গবেষণা পরিচালনা করা এবং পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে পুনোরদ্ধার সহায়তা করা।
• বিলুপ্ত হওয়ার পথে ও বিলুপ্ত ভাষাগুলোর উপর বিভিন্ন ধরনের বিষয় অডিও-ভিজুয়্যাল পদ্ধতিতে ডকুমেন্টারী তৈরী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচারের ব্যাবস্হা করা ।
• পৃথিবীর সব ভাষা ও ব্যাকরণের উপর এ পর্যন্ত যেসব বই প্রকাশিত হয়েছে সেসব বইয়ের সমাহারে সমৃদ্ধ একটি বিশ্বমানের গ্রন্থাগার গড়ে তোলা।
• বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাষার উপর গবেষণার জন্য ফেলোশিপ প্রদানে আগ্রহী করে তোলা।
• বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর ভাষাসমূহকে রক্ষা করার জন্য সেন্ট্রাল ভাষা আর্কাইভ প্রতিষ্ঠা করা।

নিঃসন্দহে Mother Language Conservation Movement International এটি একটি কার্যকরী ও সাহসী পদক্ষেপ; এবং এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন একার পক্ষে এটি সফল করা সম্ভব নয়।এর জন্য প্রয়োজন সরকারী ও বেসরকারী পর্যায় থেকে সহায়তা এবং বিশ্বের সকল দেশের নাগরিকের সহযোগিতা ।
অব্যশই ইতিমধ্যেই অনেক ব্যাক্তিই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সর্বপ্রথম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মিউচুযাল হোমস। পৃথিবীর সকল ভাষার সুরক্ষার জন্য এই আন্দোলন তাদের এই সহযোগিতা করপোরেট জগতে একটি নতুন দিগন্তের সুচনা করবে। এই জন্য প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্হাপনা পরিচালক জাবেদ হককে ব্যাক্তিগতভাবে অনেক ধন্যাবাদ জানায়। ।তাই আশা করি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল থেকে তাদের এই সহযোগিতাকে সবাই সাধুবাদ জানিয়ে, উদাহরন হিসেবে ব্যাবহার করে অন্যন্য প্রতিষ্ঠানকে Mother Language Conservation Movement International উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানাবে।
সবশেষে ধন্যবাদ MLC Movement International Inc. সদ্যসদের। বিশেষকরে নির্মল পালকে, লেখক অজয় কর যাকে শহীদ মিনারের বিশ্বায়নে দেশ-ব্রতী বলে অবিহিত করছেন। MLC Movement International Inc. এর নির্বাহী পরিচালক এনাম হককে।
বিশ্বের সকল মানুষের মাতৃভাষাকে অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার MLC Movement International Inc এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি ব্যাতিক্রমী সামাজিক আন্দোলন। আসুন আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে এই মহৎ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই এবং শ্লোগান তুলি ‘Conserve Your Mother Language।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৪

পাগলাগরু বলেছেন: Monument ta ki ashfield e? chena chena lage

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২২

মনুআউয়াল বলেছেন: জ্বী ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.