নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলতে চাই কিছু লিখেত চাই

মনুআউয়াল

মনুআউয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বজুড়ে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থানে আতংঙ্কিত বাংলাদেশি অভিবাসীরা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৪৪


মাত্র কিছু দিন পূর্বে অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল নির্বাচনে আশাতীত ভাবে ভালো ফল করে কট্রর অভিবাসনবিরোধী ওয়ান নেশন পার্টি। শুধু তাই নয় নির্বাচনে জয়লাভের পর দলটির প্রধান পলিন হ্যানসন তার উদ্বোধনী সিনেট ভাষনে বলেন "অস্ট্রেলিয়া মুসলিমে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে।" তিনি আরো বলেছিলেন “আমরা আজ মুসলিম সম্প্রদায় ও সামাজিক গোষ্টীর ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বিপদগ্রস্হ”.
অস্ট্রেলিয়ানদের কে মুসলমানদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে কোন রকম প্রমান ছাড়াই দাবি করেন যে অস্ট্রেলিয়া সংগঠিত অপরাধের হার মুসলিম জনসংখ্যার মধ্যে বেশি।তিনি অভিবাসন নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ান মুসলিমদের দিকে ইঙ্গিত করে বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন ‘আপনারা যেখান থেকে এসেছিলেন সেখানে ফিরে যান’।

এই বিতর্কের পর একটি জরিপকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াতে "মুসলিম অভিবাসন নিষিদ্ধের ব্যাপারে" সাধারন অস্ট্রেলিয়ানদের মতামত নেওয়া হয়। তাতে অবিশ্বাস্যভাবে দেখা যায় যে প্রায় অর্ধেক অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম অভিবাসন নিষিদ্ধের পক্ষে। জরিপের এক তৃতীয় অংশ অস্ট্রেলিয়ান মনে করেন মুসলিম অভিবাসীরা তাদের মূল সমাজের সাথে একীভূত নয়।

মুসলিম বা অভিবাসীদের ব্যাপারে ভীতি যে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই তৈরি হয়েছে তা নয়, এই ধারার বিস্তার লাভ করেছে ইউরোপ, আমেরিকা সহ উন্নত বিশ্বের প্রায় সব স্থানে। পরিস্হিতি এতটাই ভয়াবহ যে মূলধারার রাজনীতির প্রধান দলগুলো বাধ্য হচ্ছে কথিত ডানপ্থায় ঝুঁকে ভোট ব্যাংক বাড়াতে। আর তার সর্বশেষ উদাহরন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যিনি প্রকাশ্যে বিদ্বেষমূলক, অভিবাসী বিরোধী, বর্ণবাদী ‘জনপ্রিয়’ প্রচারণার জোরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন । আর অভিবাসন নীতি নিয়ে ইউরোপের সাথে বিরোধের জোরে ব্রিটিশ নাগরিকরা ব্রেক্সিট পক্ষে ভোট দিলেন। উত্থান ঘটল বর্ণবাদী নেতা নাইজেল ফারাজের।

ধারনা করা হচ্ছে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব,বেকারত্বের মতো আর্থিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে মাথাচাড়া দিচ্ছে এই উগ্র মতবাদ। যেমন গ্রিসের গোল্ডেন ডন , সংসদে যাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। ডেনমার্কের ড্যানিশ পিউপিলস পার্টিও গত বছরের নির্বাচনে ২১ শতাংশ আসন লাভ করে। আর অস্ট্রিয়ায় এ বছরের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে তো অল্পের জন্য জয়ী হতে পারেনি ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি অব অস্ট্রিয়া (এফপিও)।এছাড়াও ইউরোপের দেশগুলোতে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে এই মতাদর্শের দলগুলো, যেমন ইতালির লিগা নর্ড, সুইস পিউপিল’স পার্টি, নিউ-নাজি পিউপলস পার্টি আওয়ার স্লোভাকিয়া, ইংলিশ ডিফেন্স লিগ, অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি।
তবে একথাও ঠিক সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিস্তারের কারণেও একধরণের আতঙ্ক কাজ করছে। যেমন ফ্রান্সের প্যারিস হামলার পর ২০১৫ সালের আঞ্চলিক নির্বাচনে ডানপন্থী ন্যাশনাল ফ্রন্ট ২৭ শতাংশ জনপ্রিয় ভোট লাভ করে। ১৯৭২ সালে দলটি গঠিত হওয়ার পর এটায় তাদের সবচেয়ে ভালো ফল।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে যে, দেশটিতে মুসলমানদের ওপর ঘৃণাজনিত হামলার মত অপরাধের পরিমাণ গত এক বছরে ৬৭ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ নাইন ইলেভেনে টুইন টাওয়ার হামলার পর থেকে গত বছর পর্যন্ত মুসলমানদের ওপর ঘৃণাজনিত অপরাধের রেকর্ড পর্যালোচনা করে এফবিআই এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ২০১৪ সালে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের ওপর এধরনের হামলার ঘটনা ঘটে ৫ হাজার ৪৭৯টি, এক বছরেই এ হার ৬ দশমিক ৭ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে গত বছর হামলার ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৮৫০টি। অথচ বিগত ২০০০ সালে এধরনের হামলার ঘটনা ছিল অতি নগন্য। বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এধরনের হামলার ঘটনা আরও বেড়ে যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অস্ট্রেলিয়ার চিত্র খুব বেশি আশাব্যাঞ্জক নয়। গত বছর ওয়েষ্টার্ন সিডনি ও চার্লস স্টুয়ার্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামিক সাইন্স এন্ড রিসার্চ একাডেমীর যৌথ জরিপে জানা সাধারণ একজন অস্ট্রেলিয়ানের তুলনায় একজন মুসলিম অস্ট্রেলিয়ান তিনগুন বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। জরিপে অংশগ্রহনকারী ৫৭ শতাংশ বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছে। শতকারা ৬২ মুসলিম অস্ট্রেলিয়ান চাকুরী খোজার সময় বর্ণ বৈষম্যের শিকার হয়েছে। মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্য বেকারত্বের হার ৮.৫ যা জাতীয় বেকারত্বের হার থেকে দুই গুনের ও বেশি।

শুধুমাত্রই যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর যে, ব্ণ বৈষম্যে বা আক্রমনের স্বীকার হচ্ছে তা নয়। ভারতীয় ও এশিয়ান বংশোদ্ভূত অনেক অভিবাসীর দাবী তারা ও ব্ণ বৈষম্যে বা আক্রমনের স্বীকার হচ্ছেন।

বিজ্ঞ মহলের মনে করে ট্রাম্প, পলিন হ্যানসন, নাইজেল ফারাজ, ম্যারি লো পেন এর মূলমন্ত্র হচ্ছে বর্ণবাদী ভয়। ভোটের রাজনীতির ফলাফল নিজের পক্ষে আনার জন্য এই সময়ের সবচেয়ে সহজ ও কার্যকারী অস্ত্র হচ্ছে এটি। ভয়ের পরিসংখ্যান ছড়িয়ে দিয়ে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করলে বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থায় ছড়িয়ে দিচ্ছে ঘৃনার বিষ বাস্প। ওলোট পালোট করে দিচ্ছে যুগ যুগ ধরে চলা বহুজাতিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। আর এই বর্ণবাদী রাজনীতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্হ সারা বিশ্বের কয়েক কোটি অভিবাসী । অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বজুড়ে উগ্র জাতীয়তাবাদের এই ক্রমবর্ধমান উত্থান যে,অধিকাংশ অভিবাসীদের দুঃচিন্তার ও আতংকের কারন হবে এই কথা এখন নিশ্চিত করে বলা যায়।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:


মুসলমানেরা যেখানে যায়, সেই জাতির সংস্কৃতিকে পাপ বলে ঘোষণা দেয়, যা স্হানীয়দের জন্য অগ্রহনযোগ্য। মুসলমানদের নিজ দেশের জন্য কাজ করার সময় হয়েছে, আর কতকাল রিজিউজি?

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:০৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: :-B "গাঁয়ে মানে না নিজে মোড়ল"
নিজ দেশ থেকে প্রত্যাগত হয়ে যখন অন্য দেশে রিফিউজি হয়ে যায় তখন মুসলমানদের ভিতরে ঈমাণী জযবা জেগে উঠে। ফলে স্হানীয় সমাজ থেকে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। মুসলমান বুঝতে পারে না তার ঈমানী জযবা গ্রহন করার মত পারিপার্শ্বিক অবস্হা সেখানে নেই।
এর কারণও আছে, আশ্রয়কৃত দেশে ব্যাপক স্বাধীনতা পেয়ে তাকে বিভিন্ন অপরাধমূল কাজে জড়াতে প্রলুব্ধ করে।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৭

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের রিফিউজি বানাচ্ছে কে? শুধু কি রিফিউজি , আইসিস নামক এক খুনী চক্র তৈরী করে কারা বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাস? আজকের টেকনোলজির যুগে কারো জানতে আর বাকি যেই যে এই সব অশান্তির নাটের গুরু হচ্ছে যুক্তরাস্ট্র। যুক্ত্রাস্ট্র এতকাল ধরে ভালমানুষির মুখোশ পড়ে ভেতরে ভেতরে করে যাচ্ছিল সকল শয়তানিমুলক কাজ। এখনতো ভাল হয়েছে মুখোশটা উন্মোচিত হয়েছে।এখন যা করতে হবে তা হবে সরাসরি। তাই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়াটা এই বিশ্বের জন্য একটা আশির্বাদ।

ট্রাম্পের কারনে অভিবাসীদের কোন অসুবিধা হবার কথা নয়। নির্বাচনী বুলি আর বাস্তবতা এক জিনিষ নয়। সভ্য দেশ নিজেদের স্বার্থে ''ব্রেইন ড্রেইন'' মাইগ্রেশন প্রসেস কোনদিনই বন্ধ করবে না।

আমার কাছে অবাক লাগে যখন দেখি মানুষ ট্রাম্পকে ঘৃনা করছে অথচ হিলারির সাথে সরাসরি আইসিস সম্পৃক্ততার সকল তথ্য প্রমান সামনে হাজির হবার পরও তাকে সমর্থন করছে!! এর চেয়ে ভন্ডামি আর কি হতে পারে? আমেরিকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগন যে যে ভন্ড নয় অন্তত সেটার প্রমান তারা দিয়েছে।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০৭

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: ট্রাম্পের কারনে অভিবাসীদের কোন অসুবিধা হবার কথা নয়।- Sweeping comment revealing the commentator's foolishness.

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: অষ্ট্রেলিয়া থেকে বলছি: পলিন হ্যানসন হচ্ছেন সস্তাদরের পাতি রাজনীতিবিদ। ১৯৮৬ সালে পলিন নির্বাচনে জিতেছিলেন এই বলে যে, সারা অষ্ট্রেলিয়া এশিয়ান (মূলত: চাইনিজ) মানুষে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। সস্তাদরের রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদৃষ্টি থাকে না বলে তারা সাধারণ মানুষের সমর্থন খুব দ্রুত হারায়। পলিনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এরপর দীর্ঘদিন তিনি ভোটে জিততে পারেন নি। এবার পলিন আবার নির্বাচনে জিতেছেন এন্টি-মুসলিম ইস্যু নিয়ে। অষ্ট্রেলিয়ানরা কিছুটা রেসিস্ট হলেও শান্তিপ্রিয় মানুষ। কিন্তু গত কয়েক বছরে পরপর কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে আইসিস বা মুসলিম সন্ত্রাসীদের দ্বারা। মুখে প্রকাশ না করলেও ভেতরে ভেতরে অষ্ট্রেলিয়ানরা বেশ ক্ষুব্ধ। এহেন সন্ত্রাসী ঘটনা কে সহ্য করবে? একারণেই পলিন হ্যানসনের মত সস্তা রাজনীতিবিদ আবারও নির্বাচনে জিতল।

আমার মনে হয়, মুসলিম সন্ত্রাসী ঘটনায় আমাদেরও দায়িত্ব নেয়ার সময় হয়েছে। কেবল আমেরিকাকে দোষারোপ করে কোন লাভ হবে না, এতটুকু বুদ্ধি আমাদের থাকতে হবে। বাংলাদেশে হলি আর্টিজানের হত্যাকান্ড বা শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে বোমা হামলা আমরা ক'জন সমর্থন করি? আমরা কতজন চাই, হলি আর্টিজান বা শোলাকিয়ার মত হত্যাকান্ড আরো ঘটুক? সারা পৃথিবীতে আইসিস যত নন-মুসলিম হত্যা করেছে, তার চেয়ে বেশী মুসলিম হত্যা করেছে মুসলিম দেশগুলোতে। এটা নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়াও যেমন কথা বলে না, আমরাও চোখ বুজে থেকে হুজুরের পায়ের কাছে পড়ে থাকি। উদর দোষ বুদের ঘাড়ে দিয়ে আমাদের হুজুররা তেতুলতত্ব দেন, আর আমরাও চোখ বুজে থেকে তেতুলতত্বকে বাহবা দিয়ে হুজুরের কথা গিলি। তাহলে হুজুরের সাথে পলিন হ্যানসন বা আমেরিকার পার্থক্য কোথায়? দেশের বেশীর ভাগ শিক্ষিত মানুষ হলেও বাংলা কোরান বা হাদিস পড়ার অভ্যাস করে নি। বাংলা কোরান পড়ুন, বাংলা মুসলিম, বোখারী শরীফ পড়ুন, ইসলামকে সঠিকভাবে জানুন। ইসলাম কখনই নিরীহ মানুষ হত্যা সমর্থন করে না। আমরা যখন সঠিকভাবে ইসলামকে জানব, তখন আইসিস আমাদের সন্তানদের ইসলামের নামে বিপথ নিতে পারবে না। পলিন হ্যানসনের মত মানুষরাও তখন ধোয়ার মত বাতাসে হারিয়ে যাবে।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২০

মুন্সি পালোয়ান বলেছেন: আমেরিকার নামে এতদিন মুসলিমরা গালাগালি করসে। তো এখন আমেরিকা থেকে মুসলিমদের বের করে দিলে সমস্যা কি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.