নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বহ্নি শিখা

সাধারনই অসাধারন- এসো মানুষের কথা বলি

বহ্নি শিখা

I am ordinary man and banker in profession and love my man and land

বহ্নি শিখা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার পল্লী গাঁ

১২ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৫৮

আমার পল্লী গাঁ-
------------------------বাচ্চু মিয়া--১২.০৩.২০১৭
মায়া ভরা স্মৃতি ঘেরা মধুমাখা আমার পল্লী গাঁ মধুয়া
বন-বিথী শাল -সেগুন কাঁঠাল ছায়ায় ডাকছে বিরহী বধুয়া,
ছায়াঢাকা, লতা-পাতা পত্র পল্লবে সবুজ ঘেরা আমার গাঁ
মধুয়ার বুক চিরে দু'কূল ছুঁয়ে ধীরে বহে স্রোতসিনী কালী গঙ্গাঁ
গতিহারা কালী নদীএখন মরা, শাপলা শালুক কচুড়ীপানায় ভরা
নদীর বুকে শাম্পান তালোডুঙ্গা আর বহে না, জেলে মাছ না ধরা ।

আমার রুপসী পল্লি গাঁ যেন বাংলার এক দুঃখিনী মা
শত স্মৃতি স্নেহের বাঁধনে বেঁধেছে- তারে ভুলা যায় না
এখনো সকাল সাঁঝে হৃদয় মাঝে বাজে মায়ের ডাক আহবান
আয় খোকা আয়রে সোনা ! দুধ ভাত খেয়ে যা রে বাযান !
গ্রামের নামটি শালঘর মধুয়া,তোমাতে কি যে মাখা মায়া
নদীর দু'ধারে মানুষের মিলন মেলা-আম কাঁঠালের ছায়া
মধুয়া অনেক বড় পল্লী গাঁ যেথায় সাতটি পাড়া মহল্লা
কাচাড়ী, কুঠী, রাস্তাপাড়া, মিস্ত্রী, জোয়াদ্দার-খাঁ, মল্লিকা
গাঁখানি সবুজ দিগন্তে ঘেরা কমলা লক্ষ্মীপুর বংশীতলা শৈলগাড়ী দুর্বাচরা
বাঁশগ্রাম বানিয়াখড়ী নিতালপাড়া দমদমা বাগুলাট কালিকাতলা দুধকুমড়া
শস্য-শ্যামলা, সবুজ প্রান্তর সোনালী ফসল ভরা আমার গ্রামখানি
নদী নালা, বিলঝিল, খাল আপা মাদে, পুকুর-দিঘী, সেচের পানি ।
ভেদা,দারকো,খলসা,পুটি-টাকী,বাইম শোল,কই টেংরায় ছিল ভরপুর
রসায়ন সারে মানুষের ভারে সব শুকিয়ে মরে গেছে বহু দূর ।
শীত সকালে গ্রামের বসির মাদে,ডেনেস লক্ষ্মীপুরের আপা খালে
সবাই মিলে পানি সেচে বাউত নেমে মাছ ধরে চারো পলো জালে ।

নদীর দু'কূলে বনফুলে বাঁশতলায়, ঐ কবরে ঘুমিয়ে আছে সমাধী তলে
বাপ চাচা দাদা-দাদী আপন জন,কত জনে করে মোনাজাত চোখের জলে
আমার গাঁয়ের কৃষাণ-কৃষাণী,কামার-ছুতার,রাখাল ছেলে মাঝি ভাই
অতি সরল প্রাণ- সারা দিনমান কর্ম কাজে ব্যস্ত সবাই সুখের অন্ত নাই ।
নদীর ধারে কাঁঠাল বাগানে বটতলায় , হাটবার আর বৈশাখী মেলায়
খালবাজার শ্বশ্মানতলায়, চাষী কেন্দ্র চাষী মেলায়, গাজীর গান দর্গা তলায় ।
আবাল বৃদ্ধ বণিতা, হিন্দু মুসলিম একতায়, মিলন মেলায় আনন্দে হারায় ।

পথের ধারে মাঠের পরে কলমি বাতো ফুলনটে কচু মটরশুটি হেলেঞ্চা শাকের বাহার
শীত পার্বনে খেজুর পায়েস,সারা,কুলি,পাটিশাপটা পাখান-বড়া ধুপি পিঠার সমাহার
চরের মাঠে মোজাহারের লাউ কুমড়া পটল পুঁই ডাটা বেগুন বটে দমদমার হাটে
কালী নদী বুকে হরিপদর ভাঙ্গা তরী, বৈঠা ঠেলে এপার ওপার করি রামের ঘাটে ।
সেই কাক ডাকা ভোরে ,মাঠের কাজ শেষ করে, ক্লান্ত দুপুর অবসর বেলায়
গ্রামের ছোট বড় সবাই গাছের ছায়ায় মাদুর বিচায়,আম,কাঁঠাল আর বাঁশ তলায়
একসাথে বসে গল্প-গুজব ঘুমিয়ে কাটায়,মা-বোনেরা কাজের ফাঁকে বাড়ি বাড়ি যায়,
দুঃখ বেদনা সংসার যাতনা ,মনের কথা কয়, কেউবা ব্যস্ত নকঁসী কাঁথা সেলায় ।
পুকুর পাড়ে পথের ধারে, ছেলেরা মার্বেল গুলি,গাংগুলি, গাঁদন,হাডুডু খেলা করে
মেয়েরা বৌছি পলানটুক,লুডু গীত গান করে,দুরন্ত বালক-বালিকা নদী খাল পুকুরে
ডুবডুব জলকেলী করে ,গাঁয়ের বধু ঢেকিতে ধান বানে, কলসী কাঁকে জল আনে
চৈত্রের গোধুলী বেলায় খেজুর তলায় ছুলার হুড়া বনভোজনে মশগুল রাখাল ছেলেরা
যান্ত্রিক সভ্যতার ছোঁয়ায় গাঁয়ের প্রাণচঞ্চলতা আজ কোথায় হারায় সবই মিছা অধরা
কোথা আজি ইংরেজ, নীলকুঠিতে হয় না আর নীল চাষ, নীলকন্ঠী গায় না বার মাস
ডাহুক কানাকুয়া ঘুঘু দোয়েল কাক কোকিল শালিক চড়াই ,গাঙ্গে নাই তো রাজহাঁস
মা গো তোমার স্মৃতি আলো বাতাস স্নেহ ভালবাসা দিবা নিশি স্বপ্নে হৃদয়পটে ভাসি
বড় সাধ জাগে জনম জনম তোমার স্নেহের কোলে আবার যেন আমি ফিরে ফিরে আসি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.