নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষগুলো অন্যরকম, হাঁটতে পারে, বসতে পারে, এ-ঘর থেকে ও-ঘরে যায়, মানুষগুলো অন্যরকম, সাপে কাটলে দৌড়ে পালায়। আমি হয়তো মানুষ নই, সারাটা দিন দাঁড়িয়ে থাকি, গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকি।

বাগান বিলাস

যাপিত জীবনকে নিয়ে ভাবনার অনেক উপাদান আছে। তবে সবকিছু ভাবতে পারি না। ভাবার সুযোগ পেয়েও অনেক অনুষঙ্গ নিজ প্রয়োজনে এড়িয়ে গেছি। অনেক বিষয়ে পরে ভাবা যাবে বলে ঐ পরিচ্ছেদে আর কখনও যাওয়াই হয়নি। তবে বারংবার আমি প্রকৃতির কাছে ফিরে গেছি। তার কাছে শিখতে চেয়েছি। প্রকৃতিও শেখালো ঢের। তবুও হয়তো আমার প্রত্যাশা ও শিখনফলে আছে হতাশা । ইচ্ছা ও প্রাপ্তির খতিয়ান খুব একাকী মিলিয়ে দেখি-কত কিছুইতো হলো না দেখা, হলো না কত শেখার শুরু । তবুও প্রাপ্তি কি একেবারেই কম? মোটেই না। পেয়েছিও ঢের। মনে তাই প্রশ্ন জাগে, যেদিন আমি আবার নিঃশ্বেস হয়ে যাব সেদিন কি প্রকৃতিও আমার মতো একা হয়ে যাবে? এর জবাবও প্রকৃতির বিবৃতিতেই পেয়েছি-না, ক্ষুদ্র জীবনের আঁচর প্রকৃতিতে বেশিক্ষণ মূর্ত থাকে না। অন্যকথায় প্রকৃতির মধ্যে বিষণ্নতা বেশি দিন ভর করে থাকে না। তাই সে সহজ, তাই সে সমাদৃত! আমার বিবেচনায় একারণে প্রকৃতি সকল জীব ও জড়ের কাছে সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বাগান বিলাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছায়া পুরুষর আলবোলা

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯


(সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্বরণে। অামাদের স্বাধীনতার জন্য যাঁরা তাঁদের মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছিলেন)

সাধারণত এতো প্রত্যুষে জাগি না আমি
সাদামাখা কালো ভোর তখনো শোনেনি কাকের ডাক।
দল বেধে শেফালি তলে আসেনি নিসর্গের কিশোরীরা ।

আমার ঘুম ভেঙে যায়।
আমার ঘুম ভেঙে যায় এক দোয়েলের ডাকে
মাথার পাশে বারান্দায় পাড়ার নষ্ট যুবকের মতো সে শিশ দেয়,
আমাকে ডাকে।
আমি চমকে উঠি। আমাকে?
তাড়াহুড়া করে চশমা খুঁজতে গিয়ে হাত পড়ে
বালিশের নিচে লুকে রাখা বন্দুকের নলে।
আমি আরও সাবধান হই। হয়তো আরও কিছু দিন
এভাবেই কাটাতে হবে।

আমি ফাঁসির আসামির মতো ঘোর নিয়ে স্নান সারি,
মাথায় চিরুনি করে পরিপাটি হয়ে
চাদর মুরি দিয়ে তার মুখোমুখি হই।
শিহরিত জবার কেশরের মতো ভোরের বাতাসে আমি তার মুখোমুখি!
অস্বীকার করি না এটিই আমার জীবনে একমাত্র পরম প্রাপ্তি
আমার সহযোদ্ধারা জানে, আমি এর জন্য অপেক্ষা করেছি সুদীর্ঘ দুই যুগ।
কৈশোরে ঠিক এমনই স্বপ্নময় ভাবনা ভেবে রোমাঞ্চিত হয়েছি অনেক
এমনই একটি সকালের জন্য অনেক নিষ্পাপ রাতের গলায়
ছুরি চালিয়ে হত্যা করেছি।
খোদ যৌবনে কণ্ঠনালী ছিঁড়ে নিজেকে সঁপে দিয়েছি কফিনের মিছিলে ।

ততক্ষণে শিউলি তলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন
মসজিদের গলিতে বেড়েছে মুসল্লিদের আনাগোনা।

বারান্দায় আমি তার মুখোমুখি...
একি সত্য নাকি পলক ফেললেই মিলে যাবে সব? কে জানে!
এক সংজ্ঞাহীন স্বপ্ন, শংকা ও উৎকণ্ঠা আমাকে পেয়ে বসে।
ক্যামেরার লেন্সের মতো আমি তার দিকে অপলক চেয়ে থাকি,
চোখ বুঁজি না।
কত কথা বলার ছিল,
তাকে শুনানোর জন্য মুখস্থ করেছিলাম নির্মলেন্দু গুণের হুলিয়া কবিতা
মঞ্চে কতবার আবৃত্তি করেছি, আজ তার কিছুই মনে আসে না।
স্বপ্নের উপহ্রদে প্রসারিত নিটোল জলের হিল্লোলে আমি যেন বিবশিত।
এক অলৌকিক আড়ষ্টতা আমাকে আচ্ছন্ন করে।
অকস্মাৎ একটি অনাহূত শব্দ আমার বুক ভেদ করে, আমি পড়ে যাই।

সে কী ভেবেছে কে জানে, আমাকে জাগায়নি। বলাকা বিমানের মতো
নীরবে উড়ে গেছে।

-----------------------
(ছবি কৃতজ্ঞতাঃ গুগল।
কবিতাটি আমার ‘আকাশটাকে বেচে দেবো নামমাত্র দামে’ গ্রন্থভূক্ত।)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৩

শাহিন-৯৯ বলেছেন: ভালই লাগল।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৫

বাগান বিলাস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯

বনসাই বলেছেন: সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে। যারা স্বাধীনতা ও মৃত্যুর মধ্যে মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছিলেন।
- বাক্যের অর্থ ধরতে পারলাম না।
তাঁরা তো স্বাধীনতার জন্যেই মৃত্যুকে বরণ করেছেন; লেখাটি এমন হতে পারতো, যারা পরাধীনতা ও মৃত্যুর মধ্যে মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছিলেন।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:২১

বাগান বিলাস বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুদ্ধ করে দিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.