নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে পাশাপাশি নিয়ে চলা নিতান্তই সাধারন একজন মানুষ।

ফাহাদ জুয়েল

ফাহাদ জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস "চোখের বালি"

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৭


"অতিশীঘ্র এই উপন্যাস পাঠ করুন! নরনারী, যুবক-যুবতী বিবাহিত অবিবাহিত, যাঁহারা নূতন বিবাহ করিয়াছেন, যাঁহাদের বিবাহ পুরাতন হইয়াছে, যাঁহাদের প্রেমে ভাটা পড়িতেছে, যাঁহারা স্ত্রীকে মনের মতো করিতে চাহেন, যাঁহারা সুখের দাম্পত্যপ্রেম চাহেন, তাঁহারা 'চোখের বালি' নিশ্চয়ই পাঠ করিবেন।"

১৯০৬ ইং সালে এভাবেই প্রকাশিত হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "চোখের বালি" উপন্যাসের বিজ্ঞাপন।বিজ্ঞাপনদাতা একেবারে খারাপ বলেননি,আমারও মনে হয়েছে এই সামাজিক উপন্যাসটি বিভিন্ন কারনেই সবার পড়া উচিত।

জেনে রাখা ভালো,এ উপন্যাস অবলম্বনে দুটি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে,যা যথাক্রমে ১৯৩৮ ইং এবং ২০০৩ ইং সালে মুক্তি পায়।এছাড়াও বইটি ইংরেজি,হিন্দি ও জার্মানি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

গল্পের শুরু হয়েছে,গল্পের নায়ক মহেন্দ্র ও তার মা রাজলক্ষীর কথোপকথনের মাধ্যমে।তার মায়ের ছোটবেলার বান্ধবী হরিমতির মেয়ে বিনোদিনীকে পুত্রবধূ হিসেবে ঘরে তুলতে চায় তার মা।কিন্তু মাতৃস্নেহ হারানোর দোহাই দিয়ে সে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে।মায়ের প্রতি ছেলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে এ বিষয়ে বেশিদূর এগুতে পারেনি রাজলক্ষী।অবশেষে অন্যত্র বিয়ে হল বিনোদিনীর এবং অনতিকাল পরেই বিধবা হতে হল।

তিন বছর পর,মা এবার তার ছেলের বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।এবারও মহেন্দ্র পুরনো অজুহাত দেখায়।ওদিকে,মহেন্দ্রের কাকী অন্নপূর্ণা, স্বামী-সন্তানহীনা এ মহিলাটি মহেন্দ্রকে নিজের সন্তানের ছেলের মত স্নেহ করতো।অন্নপূর্ণার পিতৃমাতৃহীনা এক বোনঝি আশালতা'র সাথে মহেন্দ্রের বিয়ের ইচ্ছা পোষন করলেও প্রত্যাখিত হওয়ার আশংকায় তা প্রকাশ করতো না,মহেন্দ্র এ ব্যাপারটি ঠিকই অনুধাবন করতো।

অবশেষে মহেন্দ্রের চেষ্টায় তারই বন্ধু বিহারীর সাথে বিয়ে ঠিক করে মেয়ে দেখার জন্য কাকীকে প্রস্তাব করে সে।বিহারী মহেন্দ্রের বন্ধু হলেও মা-কাকীর স্নেহের পাত্র ছিল সবসময়। অতঃপর আশালতাকে দেখতে গিয়ে মহেন্দ্র নিজেই বিয়ের জন্য মনস্থির করে এবং শেষ পর্যন্ত নানা বাধার পরও নিজেই আশালতাকে বিয়ে করে।

শুরু হয় মহেন্দ্র-আশার নতুন জীবন।সমাজ সংসার কে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকে দুজনের প্রনয় লীলা।দিন দিন ছেলের উপর কর্তৃত্ব হারাতে থাকে মা।এসব নিয়েই অন্নপূর্ণা ও রাজলক্ষীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।ফলাফল স্বরূপ, অন্নপূর্ণা বাড়ি ছেড়ে কাশিতে চলে যায় ধর্ম পালনের দোহাই দিয়ে।একপর্যারে মায়ের উপর ছেলের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে রাজলক্ষীও চলে যায় গ্রামের বাড়ি।ফিরে আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসে সেই বিনোদিনীকে।অল্পদিনের মধ্যেই বিনোদিনী সংসারের সকলকে আপন করে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।রাজলক্ষী তার কর্তব্যবুদ্ধি ও সেবায় মুগ্ধ হলেন।আশালতার সাথে আবদ্ধ হয় সখীত্ব স্থাপনের মাধ্যমে এবং মহেন্দ্রের সাথে পরিচিত হয়ে তাকেও আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় বিনোদিনী।

ঘটনার ক্রমগতিতে মহেন্দ্র গোপন কলঙ্কময় আকর্ষণে বিনোদিনীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে।এরই মাঝে বিহারী মাঝে মধ্যে উপস্থিত হয়ে কখনো কটাক্ষের বাণে বিদ্ধ করতে চেয়েছে,আবার কখনো মর্ত্যবাসিনী দেবী বলে শ্রদ্ধা ভক্তি দেখিয়েছেন।নারী প্রকৃতির শুভ চেতনায় বিনোদিনী মহেন্দ্রের গোপন আকর্ষণের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে অন্তরের মধ্যে বিহারীর প্রতি ধীরে ধীরে গভীর ভালোবাসা অনুভব করতে থাকে।কিন্তু মানুষের চাওয়া পাওয়ার সাথে প্রাপ্তির মেলবন্ধন সবসময় হয়ে উঠেনা।ভুল বোঝাবুঝিতে বিনোদিনীর ভালোবাসাকে প্রত্যাখান করে বিহারী।বিহারীর প্রত্যাখান বিনোদিনী কে প্রতিহিংসায় উন্মুক্ত করে তুলল।সম্ভাব্য দুর্যোগ থেকে আশালতাকে বাঁচাবার আপ্রাণ চেষ্টা এবং মহেন্দ্রের মুখে আশার প্রতি বিহারীর দূর্বলতার প্রসঙ্গ শুনে বিনোদিনী সরলা আশালতার সংসার জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্ধত হয়।উপায় না দেখে মহেন্দ্রের সাথে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয়কে তীব্র করে তুলল সে!

এভাবেই ত্রিভূজ প্রেমের এই সমীকরন ক্রমশই জটিল আকার ধারন করতে থাকলো।বারবার ঝড়ের কবলে পড়তে থাকে একসময়ের গোছানো,স্নেহ-ভালোবাসায় পূর্ণ পরিবারটি।

শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল?
অভিনয় করতে করতে কি ধর্ম সংস্কার পেছনে ফেলে মহেন্দ্রের প্রতিই অনুরক্ত হয়ে পড়ে বিনোদিনী? নাকি বিহারীর ভুল ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল সে? নাকি ঘটেছিল অন্যকিছু?

জানতে হলে পড়ে ফেলুন,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এ উপন্যাসটি।
হ্যাপি রিডিং!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩২

কলাবাগান১ বলেছেন: এত দেখছি কুটনামির চুড়ান্ত...
এসব পড়ার চেয়ে সেল ডিভিশনের উপর বইয়ের দু পাতা পড়লে কিছুটা জ্ঞান বাড়বে............।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৯

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: শেষ পর্যন্ত আর কূটনামি থাকেনি! শুধু সেল ডিভিশন নয় বরং এসব পরেও অনেক কিছু শেখার আছে, অন্তত কিছু ভুল থেকে তো বাচতে পারবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.