নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে পাশাপাশি নিয়ে চলা নিতান্তই সাধারন একজন মানুষ।

ফাহাদ জুয়েল

ফাহাদ জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের "শাপমোচন" - যে বই আপনার হৃদয় স্পর্শ করবে

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৯


"শাপমোচন"- বইটা কিনেছিলাম অনেক আগেই,কিন্তু নানা ব্যস্ততা কিংবা ঠিক কি কারনে যেন পড়া হয়ে উঠেনি।অবশেষে গত মাসের প্রথম দিকেই পড়ার উদ্দেশ্যে বুকশেলফ থেকে বইটি বের করলেও শেষ করতে হল মাসের শেষে!

যাক সে কথা,কিছু লেখা আছে যা আপনার হৃদয়কে স্পর্শ করার ক্ষমতা রাখে।কিছু বইয়ের চরিত্রগুলো যখন হাসে তখন পাঠকও হেসে উঠে,আবার যখন কাঁদে তার সাথে পাঠকের চোখও ভিজে যায়।এই বইটা আমার কাছে তেমনই মনে হয়েছে।কখনও হেসেছি,আফসোসও হয়েছে কিছুটা। জীবনে কোন মাধুরীর ছোয়া না পাওয়ার আক্ষেপও বেড়েছে কিছুটা!আবার শেষ দিকে এসে না চাইলেও বুকটা হাহাকার করে উঠলো,চোখের কোনায় জল জমে গেল।কিছু সম্পর্ককে নতুন করে চিনতে শিখলাম,নতুন করে ভালোবাসার এক অনিন্দ্য সুন্দর সংজ্ঞা পেলাম।

গল্পটা আহামরি তেমন কিছু নয়।তবে লেখনীর ধরন আর বর্ণনার ভাষায় যথেষ্ট এই বইয়ের দুই মলাটে আপনাকে আটতে রাখতে।কাহিনী আবর্তিত হয়েছে মহেন্দ্র আর মাধুরীকে ঘিরে।

বড়লোক বাবার একমাত্র কন্যা আর তিন ভাইয়ের একমাত্র আদরের বোন মাধুরী।রূপে, গুনে, মেধায় আর বাকপটুতায় অদ্বিতীয়। তার সাথে কথায় পেরে উঠবে এমন লোক পাওয়া দায়। এই অষ্টাদশী তরুনীকে জয় করার জন্য কতজনের কতরকম চেষ্টা।কিন্তু মাধুরীকে যে জয় করে নিয়েছে এক "ষাট টাকার কেরানী"!

কে সেই ভাগ্যবান?যার কাছে নিজেকে সমর্পন করে দিয়েছে মাধুরী?মহেন্দ্র।মহেন্দ্র হল সেই ভাগ্যবান!ঠিক ভাগ্যবান বলাটা বোধহয় ঠিক না।কেন?প্রশ্নটা আপনাদের কাছেই রইল,বই পড়ার পর নিজেই উত্তরটা পেয়ে যাবেন।

মহেন্দ্র,এক সময়ের ভদ্র ঘরের সন্তান হলেও দারিদ্রের করাল গ্রাসে আজ তাদের সেই আভিজাত্য ধুলোয় মিশে গেছে।তারপরও রয়েছে যথেষ্ট আত্ম-সম্মানবোধ আর শিল্প সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা।

মহেন্দ্রের পিতার মৃত্যুর পর আর বড় ভাই অন্ধ হওয়ার পর সংসারের ভার এসে পড়ে তার উপর।বাড়িতে অন্ধ দাদা,বৌদি আর নয়নের মনি খোকনের কথা চিন্তা করে কলকাতায় পাড়ি জমায় সে।একটা কাজের সুযোগ মিলবে সে আশায় আশ্রয় নেয় পিতৃবন্ধু উমেশ ভট্টাচার্যের বাড়িতে।এ বাড়ির-ই মেয়ে মাধুরী।

মহেন্দ্রের বাবার পরম সহযোগীতায় একদিন উমেশ ভট্টাচার্য মৃত্যু দুয়ার থেকে ফেরত এসেছিল।অনেকদিন সেই বন্ধু কিংবা তার পরিবারের খোজ নেয়নি সে।একটা অপরাধ বোধ কাজ করে তার।ফলে মহেন্দ্র কে আদর যত্নের কোন ঘাটতি ছিল না তাদের।পিতৃঋন শোধ করতে মাধুরী নিজেই মহেন্দ্রকে দেখাশুনার দায়িত্ব নেয়।সভ্য সমাজের উপযোগী করে গড়ে তুলে তাকে।মাধুরীর স্পর্শে নিজেকে নতুন ভাবে আবিস্কার করে মহেন্দ্র।শৈল্পিক মন জেগে উঠে আবার।একদিকে যেমন চলতে থাকে সঙ্গীত আর সাহিত্যচর্চা তেমনি অন্যদিকে চলতে থাকে টাইপ রাইটিং আর চাকরী খোজা।ভদ্র সমাজে নিজ মেধা গুণেই সমাদৃত হতে থাকে সে।এভাবেই এক সময় মহেন্দ্রের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলে মাধুরী।

ওদিকে একটা চাকুরী পেয়ে মাধুরীদের বাসা ছেড়ে মেসে উঠে মহেন্দ্র।সেখানেও মাধুরীর ছোয়ায় আরো আলোকিত হয়ে উঠে সে।একটা সময় মাধুরী থেকে পালিয়ে যেতে থাকে সে।যেন মহাকালের মাঝে হারিয়ে যেতে চায় সে।এক বিজয়াতে মহেন্দ্র তাদের বাড়িতে এসেছিল।এখন প্রত্যেকটি বিজয়ার দিনেই মহেন্দ্র কে চিঠি লেখে মাধুরী,কিন্তু কোন উত্তর আর আসে না।জানতে ইচ্ছে করে না, কি সে কারন?

২০১৬ এর শেষটা এমন চমৎকার একটা বইয়ের মাধ্যমে শেষ হল।চাইলে আপনিও পড়তে পারেন জটিল প্রেম আর মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের এই উপন্যাসটি।কথা দিচ্ছি, পড়ার রেশটা লেগে থাকবে অনেকদিন।হ্যাপি রিডিং।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:১৮

নাফিজ মেহরাব বলেছেন: স্পয়লার হয়ে গেল নাহ?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: হতে পারে, এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না।

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫২

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩২

মহাসিন মহী বলেছেন: অনেক আগের পড়া, মনে বইটা শেষ করার পর মনে হয় কেঁদেছিলাম কতক্ষণ!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: :)

৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৬

জগতারন বলেছেন:
এই উপন্যাসটি পড়েছিলাম ১৯৭৪ সালে সবে ৮ক্লাস শেষ করে ৯ক্লশে উঠার সময়। তখন আমার বয়স ১৪ পার হয়ে ১৫ বছর। উপযুক্ত বয়স এমন একটি উপন্যাস পড়ার। এ উপন্যাস পড়ে একদিক দিয়ে পরিচয় হয় কঠিন বাস্তবতাময় জগত, অন্যদিকে প্রেম-ভালোবাসা ও সাহিত্য। সদ্য কিশোর কিশোরীদের জন্য বাংলা ভাষায় অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। এ উপন্যাস নিয়ে ব্যাবসা সফল সিনেমাও হয়েছে। ব্লগার ফাহাদ জুয়েল -এর প্রতি অভিন্দন এমন একটি সুন্দর উপন্যাস সামু পাঠক-পাঠীকাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০১

ফাহাদ জুয়েল বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন চমৎকার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.