নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গায়ে এখনও দেশী মাটির গন্ধ...কানাডাতে আসার সাথে এই ব্লগে লেখালিখি জড়িয়ে আছে। ২০০৭ এ আসি। সে সময় থেকেই লিখি। এখন ফেবুতে বেশি এক্টিভ। ফেবু: fb.com/bdidol9x/ পেজ: fb.com/bdidol5x

বিডি আইডল

ফেবু: facebook.com/bdidol3x ফেবু পেজ: facebook.com/bdidolx

বিডি আইডল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেরুদণ্ডস্বল্পতায় যা করবেন

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৯

মেরুদণ্ডস্বল্পতা—এই শব্দ কি অচেনা লাগছে? লাগাটাই স্বাভাবিক। সচরাচর এমন শব্দ তো আমরা শুনি না। আসলে মনের পরীক্ষাগারে এই শব্দ তৈরি হয়েছে। এর পেছনে শক্ত যুক্তিও আছে। শুরুতে নাহয় শব্দ তৈরির কার্যকারণে যাওয়া যাক।

মানবদেহে নানা ধরনের উপাদান আছে। রক্ত, পানি ইত্যাদি। এই শব্দগুলোর সঙ্গে কিন্তু ‘স্বল্পতা’ যুক্ত করা যায়। তা নিয়ে অনেক কথাও হয়, ডাক্তার-বদ্যি দেখাতে হয়। কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য (প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অর্থে) মানুষের সর্বাগ্রে যে বস্তুটির প্রয়োজন, তা হলো মেরুদণ্ড। অথচ এর অভাব দেখা দিলে প্রয়োজনীয় শব্দ দিয়ে তা চিহ্নিত করার উপায়টি পর্যন্ত নেই। বলুন তো, এটা কি বৈষম্য নয়?

মানবদেহের উপাদানগুলোর মধ্যকার এমন বৈষম্য দূর করার ধারাবাহিক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মেরুদণ্ডের প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শুরুতেই কেন মেরুদণ্ডকে বেছে নেওয়া হলো, সে ব্যাপারেও ব্যাখ্যা আছে। এর জন্য দুনিয়ার তাবৎ প্রাণিজগতের প্রতি একটু মনোযোগ দিতে হবে।

এই পৃথিবীর প্রাণিজগতের মধ্যে দুটি প্রধান ভাগ আছে। এগুলো হলো মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী। মজার বিষয় হলো পুরো প্রাণিজগতের সিংহভাগই অমেরুদণ্ডী প্রাণী। অন্তর্জালে খুঁজে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ওয়েবসাইটের কল্যাণে জানা গেল, প্রায় ৯৭ শতাংশ প্রাণীই অমেরুদণ্ডী। মেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা মোটে ৬০ হাজার। বিপরীতে মোট অমেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা হতে পারে ৫০ লাখ থেকে ৩ কোটি পর্যন্ত।

মোটের হিসাবে মেরুদণ্ডের উপস্থিতি কতটা দুর্লভ ঘটনা, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আমরা মানুষেরা বেশ সৌভাগ্যবান। কারণ জন্মসূত্রে একটি মেরুদণ্ড আমরা বিনা মূল্যে পেয়ে থাকি। কিন্তু সারা জীবন কি তা অপরিবর্তিত থাকে? নাকি বিবর্তিত হতে হতে, দৈর্ঘ্য কমতে কমতে ‘নাই’ হয়ে যায়?

শব্দের গঠনের দিক থেকে এ ধরনের প্রশ্ন তেমন জটিল নয়। তবে উত্তর দেওয়া জটিল। কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণী হাসিমুখে নিজের মেরুদণ্ডস্বল্পতার কথা স্বীকার করবে, এতটা প্রত্যাশা করা আকাশকুসুম কল্পনার মতো। মানুষের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি আরও কট্টর। শাব্দিকভাবে মনুষ্যজাতির অন্তর্ভুক্ত এই আমরা কোনো কিছু স্বীকার করে নেওয়ায় বড়ই বিমুখ। এ ক্ষেত্রে আমাদের চরিত্র পুরোপুরি ‘ভাঙব, কিন্তু মচকাব না’, তাই মেরুদণ্ড ভাবগত পদ্ধতিতে অদৃশ্য থাকলেও তা মুখ ফুটে ‘মানতে’ আমাদের বড়ই কষ্ট।

বলতে পারেন, আমাদের মেরুদণ্ড যে অদৃশ্য হচ্ছে বা ক্রমহ্রাসমান, তা বোঝা গেল কী করে? আচ্ছা, এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া কি খুব কঠিন? নিজের কর্মক্ষেত্র, ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে একটু খোঁজ করুন, আশা করি উদাহরণের অভাব হবে না। কর্মক্ষেত্রে ‘জি হুজুর’ ঘরানার মানুষ কি কখনো দেখেননি? তাদের মুখে কোনো ‘না’ থাকে না, শুধুই ‘জি’। ঊর্ধ্বতন নিজের মস্তিষ্ক বিসর্জন দিতে বললেও তারা বলে, ‘জি হুজুর’। আবার কালজয়ী ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমার মতো মস্তিষ্ক প্রক্ষালনেও এ ধরনের ব্যক্তিদের কোনো আপত্তি থাকে না। অমেরুদণ্ডী এমন মানুষকে এই একটি ক্ষেত্রে আমার খুব ভালো লাগে। এত ইতিবাচকতা খুঁজে পাওয়া যে দুষ্কর!

এরাই আবার কে কী খেল, কে কী পরল, কে কী বলল, কে কী লিখল, কে কাকে বিয়ে করল, তা নিয়ে হাজারটা কথা বলে থাকে। উচিত-অনুচিত নিয়ে নসিহত দেয়। আর যখন কথা বলা উচিত, তখন থাকে স্পিকটি নট। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের ‘আদর্শ’ প্রতিষ্ঠা করার লড়াইয়ে নেমে অন্যের জীবনে অযাচিত হস্তক্ষেপও করে তারা। এক লেজ কাটা শিয়ালের স্বজাতির অন্যদের লেজ কাটার ফন্দিফিকির করার গল্প নিশ্চয়ই মনে আছে। এই অঞ্চলে এমন মানুষ ঢের। মেরুদণ্ড না থাকলে যে প্রাণী আর সোজা হয়ে থাকতে পারে না, নেতিয়ে পড়ে। আর পড়বি তো পড় অন্যের ঘাড়ে!

এ ধরনের ব্যক্তি না দেখে থাকলে আমি মনে করি আপনি অন্য কোনো জগতে আছেন। তবে উদাহরণ চিহ্নিত করার জন্য আগে নিজের পিঠ বরাবর শক্ত কিছু উপস্থিত থাকা প্রয়োজন। ওটি না থাকলে যে পার্থক্য বোঝা অসম্ভব হয়ে যাবে।

অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য কিন্তু মেরুদণ্ডস্বল্পতায় ভোগা মানুষের সঙ্গে মেলে। প্রথমটি হলো এ ধরনের প্রাণীর সংখ্যা দুনিয়ায় বেশি। কারণ, এদের দ্রুত ও অধিক হারে পুনরুৎপাদনের ক্ষমতা থাকে। সুযোগ পেলেই এরা খেয়ে পেট ভরে ফেলার কাজ করে থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি, সেটি হলো অমেরুদণ্ডী প্রাণী প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। মেরদণ্ডস্বল্পতায় ভোগা মানুষও এটি পারে বটে। সবকিছুতে নির্দ্বিধায় একমত হতে পারলে আর টিকে থাকায় সমস্যা কী?

প্রসঙ্গত, ইংরেজিতে ‘স্পাইনলেস’ বলে একটি শব্দ আছে। কলিনস ডিকশনারি অনুযায়ী এর অর্থ হলো যারা কোনো পদক্ষেপ নিতে বা যখন প্রতিবাদ করার কথা, তখন তা করতে ভয় পায়। আগের কথাগুলোর সঙ্গে সুরে সুর মিলছে আশা করি।

এখন কথা হলো মেরুদণ্ডস্বল্পতায় কী করা যেতে পারে? একটা সমাধানে আসার চেষ্টা করতে তো হবে। প্রাথমিকভাবে আগে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে যে আপনি মেরুদণ্ডস্বল্পতায় ভুগছেন কি না? যদি চেতন বা অবচেতন মনে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন, তবে নিজেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করুন। আসলেই কি মেরুদণ্ড আপনার প্রয়োজন? সবার থাকতে হবে বা প্রয়োজন হবে—এমন তো কোনো কথা নেই। এটি ছাড়াই যদি জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য থাকে, তবে আর গায়ে পড়ে ঝামেলা নেওয়া কেন?

আর যদি সত্যিই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে মেরুদণ্ডস্বল্পতায় ভুগবেন না, তবে আপনার জন্য দুটি পথ খোলা আছে। এক হচ্ছে সাধনা। অন্য কিছুর নয়, আপনার মনের, মানসিকতার। আর দ্বিতীয় পন্থাটি সান্ত্বনা পুরস্কারের মতো। এ ক্ষেত্রে নিজের পিঠের মাঝ বরাবর কার্যত শূন্যস্থানে একটি উপযুক্ত মাপের বাঁশের টুকরা বেঁধে নিতে পারেন। এতে শারীরিকভাবে মেরুদণ্ডের অনুপস্থিতি আপনাকে পোড়াবে না। আবার বাঁশও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে রয়ে যাবে জীবনে। চায়ের দামে এভাবে শরবত পাওয়ার অন্য কোনো উপায় আপনার জানা আছে কি? থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন। শুভকামনা রইল।

রম্য লেখক অর্ণব সান্যালের লেখা থেকে। মেরুদন্ডহীন এক শ্রেণীর আমলা, মন্ত্রী, নির্বাচন কমিশন বর্তমানে বাংলাদেশ চালাচ্ছে, লেখাটি তাদের প্রতি উৎসর্গীকৃত।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


জার্মান পটেটো স্যুপ খান।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৫

বিডি আইডল বলেছেন: ছাগলের বিচি দিয়ে এক ধরণের জার্মান পটেটো স্যুপ হয়, এটা আমাদের সিইসির জন্য ডাক্তার প্রেসক্রাইব করেছে বলে শুনেছি

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



প্রেসকিপশান যখন জেনে গেছেন, আপনিই লাভবান।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৩

বিডি আইডল বলেছেন: তুমিও খেতে পারবে, নীচে যোগাযোগের ঠিকানা আছে

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



স্পাইনলেস - হচ্ছে শক্ত মজবুত একটি বকা/গালি। মেরুদণ্ডস্বল্পতা শব্দটি ভালো লেগেছে। নোট রাখছি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ধন্যবাদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো।


৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৯

আমি সাজিদ বলেছেন: প্রথম দুইটা কমেন্ট ও রিপ্লাই পড়ে আমি এখনো হাসতেই আছি।

৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: Happy New Year 2021

৬| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৫৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বড় মেরুদণ্ডহীন খাইরু। তার জন্যও ছাগলের বিচি স্যুপ এক পেয়ালা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.