নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পথের মাঝেই পথ হারানো এক ক্লান্ত পথিক আমি, জীবনপথের ঠিকানা হারিয়ে ছুটে বেড়াই দিক-বিদিক, ছুটতে ছুটতে আজ বড্ড ক্লান্ত !!!

বেঙ্গল রিপন

পথের মাঝেই পথ হারানো এক ক্লান্ত পথিক আমি জীবনপথের ঠিকানা হারিয়ে ছুটে বেড়াই দিক-বিদিক, ছুটতে ছুটতে আজ বড্ড ক্লান্ত !!!

বেঙ্গল রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৫ মার্চ ১৯৭১: একটি গণহত্যার রাত

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১



মহাকালের স্বাভাবিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় আবারো ফিরে এসেছে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার স্মৃতিবিজড়িত রাত ভয়াল ২৫ মার্চ। এই রাতের বীভৎসতা এতটাই নির্মম যে...

মহাকালের স্বাভাবিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় আবারো ফিরে এসেছে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার স্মৃতিবিজড়িত রাত ভয়াল ২৫ মার্চ। এই রাতের বীভৎসতা এতটাই নির্মম যে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধ্বংসযজ্ঞের অতীত সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বের ভয়ালতম গণহত্যার রাত।

‘অপারেশন সার্চলাইটের’ নামে পাকিস্থানি বাহিনীর অতর্কিত সেই হামলায় মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে সমগ্র ঢাকা শহর। পৃথিবীবাসী অবাক হয়ে দেখেছে ধর্মের নামে বর্বর হানাদার বাহিনী কিভাবে একরাতে প্রায় অর্ধলক্ষ ঘুমন্ত বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদক সাইমন ড্রিং-এর বর্ণনায় জানা যায়, ২৫ মার্চ ৭১-এ রাত দশটার দিকে শুরু হয় সেই পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। যদিও পরিকল্পনা অনুযায়ী জিরো আওয়ার বা আক্রমণের নির্ধারিত সময় ছিল রাত একটা।

মধ্যরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশলাইন, নীলক্ষেত এলাকায় আক্রমণ চালায় হানাদাররা। ঢাকার ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানার বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্র করে এবং ইপিআর দফতরের ওয়্যারলেস ব্যবস্থা দখল করে নেয় ২২তম বেলুচ রেজিমেন্ট।

অন্যদিকে ১৮ নং পাঞ্জাব, ৩২ নং পাঞ্জাব ও ২২ নং বেলুচ রেজিমেন্ট ট্যাংক ও মর্টার হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। হানাদার বাহিনীর মেশিনগানের গুলি, ট্যাংক-মর্টারের গোলা আর আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে ওঠে বিভীষিকাময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ঘটে নৃশংসতম হত্যার সব থেকে বড় ঘটনাটি। হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

ভয়াবহ এই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।অন্যদিকে ঐ রাতেই জহুরুল হক হলের প্রায় ২০০ ছাত্রকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যাকরে পাকবাহিনী। এই জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে প্রতিটি ছাত্রাবাসে, বাদ যায়নি রোকেয়া হল। আর্চার কে ব্লাড এর বই ‘The cruel birth of Bangladesh’ থেকে জানা যায়, ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং ছাত্রীরা আগুন থেকে বাঁচতে হলের বাইরে আসা শুরু করলে পাকবাহিনী তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে আর্মি ইউনিট ৮৮ এর কথোপকথন থেকে জানা যায়, আনুমানিক ৩০০ জন ছাত্রীকে সে রাতে হত্যা করা হয়।

রাজারবাগে গ্যাসোলিন ছিটিয়ে আগুনে ভস্মীভূত করা হয় পুলিশ সদর দফতর। বাংলা মায়ের ১১শ পুলিশ সন্তানের রক্ত ঝরিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি, সমগ্র ব্যারাক গুঁড়িয়ে দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল সবকিছু।

মধ্যরাতেই ঢাকা তখন লাশের শহর। দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলোতেও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় পাকিস্থানি সামরিক জান্তা। পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেই রয়েছে। পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয়- ‘১৯৭১ সালের ১লা মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।’

একাত্তরের এই ভয়াল রাতে চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার জন্য উন্মাতাল লাখো বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার সোঁদা মাটি। সমগ্র ঢাকা শহর যেন লাশের স্তূপ, ঘুমন্ত শিশু মায়ের কোলেই গুলিবিদ্ধ হয়েছে, নববধূ, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার রক্তে কালঙ্কিত হয়েছিল মানব সভ্যতার হাজার বছরের গৌরবময় ইতিহাস। এই রাতে একদিকে যেমন রচিত হয়েছে বিশ্বের জঘন্যতম গণহত্যার ইতিহাস অন্যদিকে এই রাত প্রত্যক্ষ করেছে ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি রাষ্ট্রের জন্মমুহূর্তটি।

চারিদিকে রক্ত আর রক্ত, শহীদদের সারি সারি লাশ। মধ্যরাতে পরিচালিত হয় পাকবাহিনীর স্পর্শকাতর অভিযান ‘অপারেশন বিগবার্ড’। গ্রেফতার করা হয় বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, বাঙালির শতবর্ষের দাসত্বমুক্তির অগ্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ইতিহাসের জঘন্যতম এই গণহত্যার রাতে, নিরস্ত্র বাঙালির রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে পাকবাহিনী যখন মৃত্যুর মিছিলকে শত থেকে হাজার আর হাজার থেকে লাখে রূপান্তর করছিল, ঠিক তখনি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বাঙালি জাতিকে দিয়েছিল জনযুদ্ধের নির্দেশনা। আর এই যুদ্ধের মাধ্যমেই ৯ মাস পর বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন একটি দেশ- ‘বাংলাদেশ’।

ধন্যবাদান্তে
প্রধান সম্পাদক: এস অাই খান ইউসুফজাই(বেঙ্গল রিপন)
বাংলাদেশ প্রেস টোয়েন্টিফোর
☏ +৮৮০ ১৭৯ ৮০০ ০০১০
কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫
ই-মেইল: [email protected]

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ১৯৭১ সালের ভয়াল ২৫ মার্চ কালো রাতের গণ হত্যা দিবস আজঃ চাই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

২| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:০৯

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: :(:(:(
আরেকটু জানা হল।

আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:২৪

রেজওয়ান করিম বলেছেন: লেখাটি থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম

৪| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: তখন আমাদের বাসা ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কাছে। মা , নানা আর নানীর মুখে শুনেছি সে ভয়াবহতার কথা।

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২৮

বেঙ্গল রিপন বলেছেন: তখন আমাদের বাসা ছিলো তেঁজগাও এলাকায়। অনেক পিচ্চি ছিলাম, কিছুকিছু এখনও মনে আছে।

৫| ২১ শে মে, ২০১৮ রাত ১:২৭

কাইকর বলেছেন: খুব ভয়ানক। পাকিস্তানী নর পুশুদের মায়া বলে কিছু ছিল না।

৬| ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১:৩৯

হবা পাগলা বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।
সুন্দর ঐতিহাসিক পোস্টের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্লগে আমি নতুন। আমার ব্লগটা একটু ঘুরে আসার নিমন্ত্রণ রইলো।

২৪ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:০০

বেঙ্গল রিপন বলেছেন: আপনাকে ব্লগারদের দলে স্বাগতম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.