নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যুক্তির আকাশে উড়ুক মুক্তির বারতা

বেপরোয়া বক্তা

আইনজীবী , সাবেক ছাত্রনেতা

বেপরোয়া বক্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মরা মুরগীর পোস্টমর্টেম এবং আমাদের খাদ্যাভ্যাস

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

মরা মুরগী বিক্রির দায়ে সিলেটে এক মুরগী বিক্রেতাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা যদি স্বেচ্ছায় কেনেন সেক্ষেত্রে?

অবাক হচ্ছেন?

তাহলে নিজের ছোট্ট দুটি অভিজ্ঞতার কথা বলি। আমাদের ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের পাশেই একটি হোটেলে মাত্র ২৫ টাকার মধ্যেই দুপিস বড় সাইজের মুরগীর মাংস সহ ভাত পাওয়া যেতো। ডাল ফ্রী। সাথে ফ্রী কাচামরিচ , পেয়াজ আর লেবু। দুপুরে ভার্সিটির শাটল ট্রেন থেকে নেমেই দৌড় লাগাতে হতো টিউশনিতে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। এছাড়া উপায়ও ছিলোনা। তাই দুপুরের খাবারটা সারতাম সেখানেই। কিন্তু ভেবে পেতামনা , এতো সস্তায় দিয়ে তারা পোষাতেন কিভাবে।

কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে একদিন কাউন্টারে বসা ম্যানাজার চাচাকে জিজ্ঞেসই করে বসলাম কথাটা। চাচার বাড়ী নোয়াখালী। বয়স ষাটের উপরে। পান খেতে খেতে নিজের লম্বা সাদা দাড়ির কালার পর্যন্ত চেঞ্জ হয়ে গেছে। দাঁতের কথা নাইবা বললাম। নর্দমার পানির রঙের সাথে পার্থক্য খুব বেশী একটা ছিলোনা। পড়েও গেছে অনেকগুলো। যেগুলো আছে , সেগুলোও নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু পান খাওয়ার বিরাম নেই তাঁর্।

পান চিবুতে চিবুতেই ফোকলা দাঁতে মুচকি হাসি হেসে উত্তর দিয়েছিলেন ,

…… ব্যবসায় বেশী লাভ করন খোদ কিতাবে মানা আছে। আন্নেগো খাতির যত্ন করবার সূযোগ পাইছি , হের লাইগাই লাখ লাখ শুকরিয়া।

যাইহোক , কিছুদিন না যেতেই টের পেলাম উনার খাতিরের রহস্য। সেদিন ভোরবেলা ফার্স্ট ট্রেন ধরতে গিয়ে স্টেশন পৌঁছে শুনি রেল ধর্মঘট। ট্রেন যাবেনা। বাসে করে যেতে আর ইচ্ছে হলোনা। স্টেশনের পাশেই রেয়াজুদ্দিন বাজার্। পাইকারি মার্কেট। দুদিন আগে টিউশনির বেতন পেয়েছিলাম। ভাবলাম বাসার জন্য সামান্য বাজার করে ফিরি। বাজারে ঢুকে মুরগির আড়তের দিকে এগুতেই পরিষ্কার হয়ে গেলো সব রহস্য।

মুরগীর খাঁচা থেকে মুরগী নিচ্ছেন বাজারের বিক্রেতারা। ব্রয়লার মুরগীর জানটা খুব হাল্কা। গাদাগাদিতেই মারা পড়ে অনেকগুলো। সেই মরামুরগীগুলো এক পাশে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। আর রীতিমতো কাড়াকাড়ি করে ১৫/২০ টাকা করে সেই মুরগীগুলো কিনছেন হোটেল মালিকেরা। আমাদের সেই "খাতির করা" চাচাও আছেন সেই দলে!!! দেখেই মোচড় দিয়ে উঠলো পেটে!! এছাড়া বেশকয়েকজন পরিচিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী আংকেলকেও দেখেছিলাম। সম্ভবত জীবহত্যা তাঁদের ধর্মে নিষিদ্ধ বলেই তাঁরা কিনছিলেন। এ ব্যাপারে তাই কিছু বলার অবকাশ নেই।

আর যাইনি কখনো চাচার হোটেলে!!

আরেকবার আমাদের বন্ধু বিশ্বপ্রেমিক তানিম আমাদের দুজনকে নিয়ে গেলো আমাদের চায়নিজ খাওয়াতে লালবাগ কেল্লার পাশে রয়েল হোটেলে।

মাত্র ৬০ টাকার দামের চায়নিজ প্যাকেজ। যাতে ছিলো ফ্রাইড রাইস , কর্ণ স্যুপ , মিক্সড ভেজিটেবল , একটি প্রন ফ্রাই আর যথারীতি দুই পিস চিকেন ফ্রাই। তখন মানে ২০০৩/৪ সালে , জিনিসপত্রের দাম অনেক সস্তা ছিলো বটে। কিন্তু ৬০ টাকায় এতোগুলো আইটেম জোটা আসলেই অভাবনীয় ছিলো।

এতোদিন পরে আপনমনেই ভাবনা জাগে , আমরা আসলে সেদিন কেমন চায়নিজ খেয়েছিলাম??

রান্নার পরেতো জ্যন্ত আর মরা মুরগীর পার্থক্যই থাকেনা ফ্রান্স!!


আরিচাঘাটে নাকি খাসি বলে কুকুর কেটে খাওয়ানো হয় , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার তুলকালাম হয়েছিলো খাসি বলে শেয়াল কেটে খাওয়ানোর কারণে। আর হোটেলে খাওয়ানো হচ্ছে মরা মুরগী।

গরু বলে মহিষ , খাসি বলে ভেড়া খাওয়ানোতো নিতাই স্বাভাবিক ঘটনা!!! মৌসুমী পাখির মাংস বলে বাদুড় বিক্রির ঘটনাও পড়লাম কদিন আগে!!

মাছে আছে ফর্মালিন , ডিম নাকি প্লাস্টিকের!!!

পাবলিক আসলে খাবেটা কি??????

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১২

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: নিলফামারিতে ঘুরতে গিয়ে এক হোটেলে গরুর গোস্ত খাচ্ছিলাম। কেমন এক স্বাদ, কেন জানি মনে হচ্ছিল শেয়ালের গোস্ত খাচ্ছি না তো! কী যে খেয়েছিলাম আল্লায় জানে। এখন হোটেলের গোস্ত সাধারণত খাই না। ডিম না হয় মাছ খাই।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের আছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
কিন্তু তারা করে কি??

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বছর দুয়েক আগে ভাগারের মাংস সর্বরাহের জন্য একটু ধরপাকড় হয়েছিল। বেশ কয়েকজন কারবারিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সবচেয়ে আশ্চর্যের তাদের গ্রেপ্তার সঙ্গে সঙ্গে কেএফসির মতন নামী ব্রান্ডের খাবার প্রস্তুতকারী সংস্থার খাবার উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি সহজেই অনুমেয় তাহলে তারা কি ধরনের মাংস ব্যবহার করে।
ব্যক্তিগতভাবে অবশ্যই আমি বাইরে গিয়ে পনির ও সবজি খেতে পছন্দ করি। তবে ডিমের ওমলেট পাওয়া গেলে মাঝে মাঝে নিয়ে থাকি। যদিও সিদ্ধ ডিম বা ডিমের কারি একেবারেই নয়।

৪| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০১

সাইফ নাদির বলেছেন: হোটেলে মুরগী না খাওয়া উচিৎ না । গরুও বর্জন করা ভালো যদিও এত বড় একটা প্রাণি মরা বাজারে পাওয়া যায় না, তবুও। মাছ খাওয়াই ভালো। আমিও শুধু ৃাছ খাই হোটেলে খেলে্।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.