নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘাস ফুল

মানুষের বিচার্য হোক মনুষ্যত্ব ও মানবতা; কোন ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ কিংবা লিঙ্গ নয়

বিদ্রোহী বাঙালি

লেখালেখির ক্ষেত্রে আমার অলসতা প্রবাদতুল্য।

বিদ্রোহী বাঙালি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ ঘাম

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১

ইদানীং বাশাইর বাজার কমিটির কয়েক জনকে অযথাই ঘামতে দেখা যায় অথচ সাধারণ মানুষগুলো মাঘের শীতে মোটামুটি কাবু হয়ে গেছে। কুদ্দুস মিয়াঁও আজকাল ঘামে। কিন্তু তাকেই আবার বারোমাস কাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমাতে দেখা গেছে। বাজারটা বিশাল বড়। পুরো এক চক্কর মেরে গরমকালেও সে কখনো ঘামে নাই। অথচ মাঘের এই প্রচণ্ড শীতে পুরো এক চক্কর না মেরেও ঘামছে আর পাগলী সখিনার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে। বাজারের পাহারাদার হয়েছে বলে কী সব দোষ তার!



বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়লেও কাজে ফাঁকি দেয়ার কোন অভ্যাস না থাকায় বাড়ি ফিরে জোহর পর্যন্ত টানা এক ঘুম দেয় কুদ্দুস মিয়াঁ। বিশ বছরের নিঃসন্তান সংসারে বউয়ের সরব উপস্থিতি নীরব হয়ে যাওয়ায় ঘরের অসহ্য নিরিবিলি পরিবেশটা এখন ধ্রুব সত্য। বাজারের খেয়া ঘাটের মাচাটা রাত বারোটার পর তার অলিখিত সম্পত্তি হলেও সেটা এখন সখিনা পাগলীর সম্পদ। সম্পত্তি নিয়া জোড় দখল হয় কিন্তু সম্পদ নিয়া সেটার সুযোগ নাই বিধায় এ নিয়ে আর মাথা ঘামায় না। ডিগ্রীধারী মানুষেরা ডিক্রি জারি করে অন্যের সম্পত্তি দখল করে নেয়। চোখের জলে শ্রাবণ বর্ষণ হলেও তারা যেখানে চৈত্রের মাঠ ঘাটের মতো শুষ্ক থাকে, সেখানে একজন পাগলীকে বুঝিয়ে সিক্ত করার প্রয়াস অরণ্যে রোদন হবে জেনে নদীর ধারেই পা বিছিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঘাম শুকায়। কিন্তু কিছু দিন যাবত ঘাম আর শুকায় না। বরং গভীর রাতে নদীর হু হু করে বয়ে আসা উত্তরী শীতল হাওয়ায় তার সমস্ত শরীর ঘেমে ভিজে গোসল হয়ে যায়।



শম্ভুক গতিতে হেঁটে বাজারের প্রতিটা অলি গলি বেশ যত্ন সহকারে ঘুরে ঘুরে দেখা কুদ্দুস মিয়াঁর স্বভাব। মাঝে মাঝে পাগলীর চিৎকারে রাতের আঁধারে নির্জন বাজারে তার একাকীত্ব দূর হয়। পাগলীর অজানা চিৎকার তার সরল মনে কোন গরল চিন্তার অনুরণন সৃষ্টি করে না। কিন্তু গেলো সপ্তাহ’র বাজার কমিটির মিটিং এর পর থেকে সে ভাবা শুরু করে দিয়েছে। মিটিংয়ে উপস্থিত সবার আঙুল তার দিকে তাক করা ছিল। অথচ সে কয়েক জনের কপালেই এই শীতের মধ্যেও ঘাম জমতে দেখেছে। পশুরাও যে ঘামে, সে এই প্রথম দেখলো। বিধির বিধান সবাই বুঝতে পারে না। কুদ্দুস মিয়াঁর মতো মূর্খ মানুষের কাছে সেটা আরও বেশী দুর্ভেদ্য। তাইতো সে বুঝে না, বিশ বছর সংসার করেও তার বউ যেখানে মাতৃত্বের স্বাদ নিতে পারে নাই, সেখানে স্বামী নাই, সংসার নাই তারপরও পাগলী কীভাবে নারীত্বের পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে!

~০~

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

চুক্কা বাঙ্গী বলেছেন: দারুন লিখেছেন রে ভাই!!

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: নাম চুক্কা হইলেও মন্তব্য বড়ই মিঠা। :P
ধন্যবাদ চুক্কা বাঙ্গী।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার শব্দের ওপর দখল ঈর্ষনীয়।
অত্যন্ত ছোট পরিসরে সুন্দর একটা গল্পের জন্ম দিয়েছেন।
শুভেচ্ছা জানবেন।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৫

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনি মনে হয় কিছুটা বাড়িয়ে বললেন সাজিদ। লজ্জা পেলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আমার ঘামার খবর নক্ষত্রে দিয়ে আসলাম ;)

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: হুম! দেখা এলাম সেখানে আপনি কুদ্দুস মিয়াঁর ঘেমে গোসল করে ফেলেছেন। ঘটনা কী ভাইজান? শীতের পরে ঘামলে কোন অসুবিধা নাই। সবাই বুঝবো গরমে ঘামতাছেন। দুই জায়গায় আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো মইনুল ভাই। অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২

সুমন কর বলেছেন: ভাল লাগল।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন। ভালো থাকুন সতত।

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:০৮

মামুন রশিদ বলেছেন: শেষের ট্যুইস্ট পাঠকের জন্য বড়সড় ধাক্কা । আদর্শ অনুগল্প ।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:১৩

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার মন্তব্যে আমি নিজেও একটা বড়সড় ধাক্কা খেলাম। কারণ এটাই আমার প্রথম কোন অণুগল্প। আপনার মন্তব্যে অনেক উৎসাহ পেলাম মামুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২৫

শান্তির দেবদূত বলেছেন: দুর্দান্ত! ভাষার উপর আপনার দখন ঈর্ষনীয়! শেষে এসে চমকটা দারুন ছিল। সব মিলিয়ে অনেক ভালো একটা অনুগল্প পড়লাম। শুভেচ্ছ।

১৪ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৬

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার প্রেরণামূলক মন্তব্যে অনেক উৎসাহ পেলাম শান্তির দেবদূত। আপনার মন্তব্যে আপনার নামের সার্থকতা খুঁজে পেলাম। অনেক ধন্যবাদ।

৭| ১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


দারুণ লিখেছেন।

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: ধন্যবাদ কাণ্ডারি। অনুপ্রেরণা পেলাম আপনার মন্তব্যে। :)

৮| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৫৬

অদৃশ্য বলেছেন:





লিখাটি ভালো লাগলো খুব... ফিনিশিংটাও চমৎকার...


শুভকামনা...

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম অদৃশ্য। অনেক ধন্যবাদ।

৯| ১৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন: ভাল লাগল।

১৯ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৩৪

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ অস্পিসাস প্রেইস।:)

১০| ১৯ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

উজবুক ইশতি বলেছেন: ভাল লাগল।সুন্দর লিখেছেন

১৯ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৩৫

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম উজবুক ইশতি। ধন্যবাদ। :)

১১| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৩

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: কঠিন একটা বাস্তব কথা বলেছেন- সেখানে স্বামী নাই, সংসার নাই তারপরও পাগলী কীভাবে নারীত্বের পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে!
অসুস্থ সমাজেরই একটি পরিচিত দৃশ্য। ধন্যবাদ।

২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৩:২৮

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, এটা আসলেই অসুস্থ সমাজেরই একটি পরিচিত দৃশ্য। অনেক ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী। ভালো থাকবেন সতত।

১২| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ ভোর ৪:১০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুবই চমৎকার! অনেক ভালো লাগল।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৩:১৪

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: দুঃখিত কাল্পনিক ভালোবাসা দেরিতে উত্তর দিলাম বলে। অনেক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকলো আপনার মন্তব্যটা ধন্যবাদ।

১৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৪

অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: ভালো লাগলো ।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৩:১৫

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: দেরিতে উত্তর দেয়ার জন্য দুঃখিত অদ্বিতীয়া আমি। ভালো লাগায় অনেক ধন্যবাদ।

১৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: পারফেক্ট একটা গল্প । গোছানো । শুভেচ্ছা ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৮

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: দেরিতে মলন্তব্য দেয়ার জন্য আন্তরিক দুঃখিত মাহমুদ। আসলে ঐ সময়টায় সামুতে ব্লগিং করি নাই। কিছু দিন বন্ধ রেখেছিলাম ব্যক্তিগত কারণে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

আমি অথবা অন্য কেউ বলেছেন: দারুন কিছু। অনেক জোস অনুগল্প

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: উৎসাহমূলক মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ আমি অথবা অন্য কেউ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.