নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই দিন হব শান্ত....

বিদ্রোহী ভৃগু

সকল অনাচার আর অনিয়ম জাগায় দ্রোহ.....

বিদ্রোহী ভৃগু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইনডিয়ার ট্রানজিট তিতাস একটি প্রতিরোধের নাম! মিথ্যাচার দিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের স্বার্থহানীকে লুকানো হচ্ছে! বিপন্ন বাংলাদেশের এক করুন চিত্র নেড়িড় চোখে....

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

সফিক রেহমানের নেড়ি সিরিজে ট্রানজিটের নামে জাতির সাথে কিভাবে প্রতারনা করা হচ্ছে.. মিথ্যাচার দিয়ে কিভাবে বাংলাদেশের স্বার্থহানীকে লুকানো হচ্ছে! বিপন্ন বাংলাদেশের এক করুন চিত্র নেড়িড় চোখে.........



দেশকে ভালবাসলে অবশ্য পাঠ্য। প্রতিবাদ করতে চাইলেতো কথাই নাই..

কি ঘটছে জানতে চাইলে কিছূটা সময়তো দিতেই হবে!



শফিক রেহমান

গত সপ্তাহে আমার ইন্টারভিউতে বলেছিলাম ইনডিয়ান প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১-র ঢাকা সফরের আগেই বাংলাদেশের কাছ থেকে ইনডিয়া করিডোর বা ট্রানজিট সুবিধা পেয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রত্যাশিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে কোনো চুক্তি না করে শুধু দুঃখ প্রকাশ করে দিল্লিতে ফিরে যাওয়ার ফলে মনমোহন সিংয়ের এই সফর ইনডিয়ান দৃষ্টিকোণ থেকে হয়েছে শতকরা একশ ভাগের চাইতেও বেশি সফল। ওই ইন্টারভিউতে আমি আরো বলেছিলাম, ১২ জানুয়ারি ২০১০-এ দিল্লিতে সফরের সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পঞ্চাশ দফা বিশিষ্ট চুক্তিতে সই করেছিলেন তাতেই তিনি ইনডিয়াকে করিডোর বা ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে এসেছিলেন। ইনডিয়ানরা এটাকে এখন বলছে কানেকটিভিটি সুবিধা।



৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১-তে ঢাকায় এসে ইনডিয়ানরা তার আগের বছরে সম্পাদিত চুক্তির কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে এসেছিল। বাংলাদেশে আওয়ামী সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও বিভিন্ন ইনডিয়ান সূত্রে জানা যায়, আশুগঞ্জ নৌ বন্দরের মধ্য দিয়ে করিডোর/ট্রানজিট/কানেকটিভিটি সুবিধা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়ে গিয়েছে। এরপর যথাক্রমে মংলা সমুদ্র বন্দর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে পরবর্তী ট্রানজিট সুবিধা প্রতিষ্ঠা করা হবে।







আলিঙ্গনের বাসরঘর, হানিমুন ও সংসার



আমি বলেছিলাম, লন্ডনের ম্যাগাজিন ইকনমিস্টের ভাষায়, বাংলাদেশ ও ইনডিয়ার মধ্যে যে আলিঙ্গনে একাকার (Embraceable you, ৩০ জুলাই ২০১১) হওয়ার সম্পর্কটি স্থাপিত হয়েছে তার বাসরঘর হয়েছে আশুগঞ্জে, হানিমুন হবে মংলাতে এবং সংসার হবে চট্টগ্রামে।



----

আমিও কৌতূহলী হয়েছিলাম আশুগঞ্জের বাসরঘরটিকে কিভাবে সাজানো হয়েছে সেটা জানতে।



সরেজমিনে দেখার জন্য সেদিন সকালে চলে গেলাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। ঢাকা-আশুগঞ্জ-নোয়াখালী ট্রেনে উঠলাম। মানুষের ভিড় কম ছিল। সকাল থেকে আকাশ মেঘলা ছিল। থেমে থেমে কখনো বা গুড়িগুড়ি আবার কখনো বা মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। গত কয়দিন ধরে এমনভাবেই চলছিল। আশ্বিন শুরু হলেও বৃষ্টি কমার লক্ষণ ছিল না। আমার ভেজা শরীর দেখে দয়ালু গার্ড সাহেব করুণা পরবশ হয়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিলেন না। আমি গুটিসুটি হয়ে এক কোণে বসে রইলাম।



কিন্তু সাতটায় ট্রেনটি ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েও ছাড়তে পারলো না। যাত্রীরা বলাবলি করছিল, একটা বগিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কাজ করছে না। দেখলাম সত্যিই তাই। কিছুক্ষণ পর আরেকটা ইঞ্জিন এসে ওই ত্রুটিপূর্ণ বগিটা বাদ দিয়ে অন্য আরেকটি বগি জোড়া লাগালো। নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা পরে আটটার সময়ে ট্রেন ছাড়লো।



ভাবলাম, নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা আগে সব বগি পরীক্ষা করানোর কোনো সিসটেম যদি রেল কর্তৃপক্ষ চালু করতেন তাহলে ট্রেন লেইট হওয়ার এই দুর্ভোগ যাত্রীদের পোহাতে হতো না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সহজে প্রতিবাদ করে না। দুর্ভোগটাকেই মেনে নেয়। আর তাই ট্রেন লেইট হওয়াটাই সিসটেম হয়ে যায়।



----



দুই ঘণ্টা পরে দশটায় ট্রেন আশুগঞ্জে পৌছালো। আমার ভাগ্য ভালো ছিল। প্ল্যাটফর্ম থেকে সিড়ি দিয়ে নিচে নামার পরপরই স্থানীয় এক ভদ্রলোকের সাথে একটি সরাইল কুকুরকে দেখলাম। সেও আমাকে দেখে ছুটে এলো। তার মনিব তাকে নিরস্ত করতে পারলো না। আমরা দুজনা দৌড়ে পালিয়ে গেলাম।



এরপর আশুগঞ্জ-আখাউড়া-আশুগঞ্জ পর্যন্ত সে আমার সঙ্গে সারাক্ষণ ছিল। সে তার নাম বলেছিল অ্যালেকজান্দার। সংক্ষেপে তার পালক তাকে অ্যালেক বলে ডাকেন।



পরিচয় পর্ব শেষ হওয়ার পর আমি অ্যালেককে জানালাম আশুগঞ্জে কেন এসেছি। শুনে সে খুব খুশি হয়ে বললো, তোমার আরো আগেই এখানে আসা উচিত ছিল। আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ট্রানজিট সুবিধা কয়েক মাস আগেই ইনডিয়া নিয়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভি সত্যই বলেছেন, ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতেই ইনডিয়াকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার কথা বলা আছে। আমরা এখন সেই চুক্তিই বাস্তবায়ন করবো। নতুন কোনো চুক্তি বা প্রটোকলে সইয়ের প্রয়োজন নেই। ইনডিয়াকে ট্রানজিট দিতে ৪০ বছর অপেক্ষা করেছি। আর অপেক্ষা করতে আমি রাজি নই। চলো আমার সঙ্গে। নিজের চোখে দেখে বুঝে নাও আশুগঞ্জ-আখাউড়ায় কি হচ্ছে।



-----



ইনডিয়ান জাহাজ যেখানে ভিড়ছে



এই এলাকায় মেঘনা নদীর ওপরে দুটি বৃজ আছে। ভৈরববাজার থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত একটি রেলওয়ে বৃজ। লাল রঙের লোহার এই বৃজ বৃটিশ আমলে বানানো হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে পাকিস্তানিরা এই বৃজের একটি অংশ বা স্প্যান ভেঙে দিয়েছিল। স্বাধীনতার পর রাশিয়ান কারিগরি সাহায্যে এই বৃজ রিপেয়ার করা হয়। রেলওয়ে বৃজের পাশেই তৈরি হয়েছে মোটরযান চলাচলের জন্য কংকৃটের শাদা বৃজ। বৃটেনের সাহায্যে বানানো এই বৃজের নাম ছিল বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য মৈত্রী সেতু। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে এই বৃজের নাম হয়েছে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু।



বেচারা বৃটিশ সরকার। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাতা চায়নিজ সরকারের মতো তাদেরও হজম করতে হয়েছে এই নাম পরিবর্তন।



মেঘনার দক্ষিণ তীরে এই দুটি বৃজ আশুগঞ্জের যেখানে এসে শেষ হয়েছে তার নাম হচ্ছে চরচারতলা। এখানেই আছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইলো এবং তার চারপাশে সরকারি জমি।



অ্যালেক ওই জায়গাটা আমাকে ঘুরিয়ে দেখালো। বললো, ভবিষ্যতে ইনডিয়ানরা এখানেই তাদের জেটি বানানোর প্ল্যান করেছে। কয়েকটি অ্যাডভান্স ইনডিয়ান টিম এখানে এসে মাপজোক করে গেছে। তারা জানে, চাইলেই হাসিনা সরকার এখানে জমি দিয়ে দেবে।



তাহলে এখন কোনখানে ইনডিয়ান জাহাজগুলো ভিড়ছে? কোথায় তাদের মাল খালাস করছে? আমি জানতে চাইলাম।



সেটা এখান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। চলো আমার সঙ্গে। অ্যালেক বললো।



টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যে আশুগঞ্জ শহরের একটু ভেতরে ঢুকে আবার অ্যালেক আমাকে নিয়ে এলো মেঘনা নদীর তীরে যেখানে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন অবস্থিত।



অতিকায় কনটেইনার



এই পাওয়ার স্টেশনের জেটিতে আছে একটি শক্তিশালী ক্রেইন যেটা দিয়ে আনুমানিক ২৪৫ টন মাল বা কনটেইনার স্থানান্তরিত করা সম্ভব। ইনডিয়ানরা সেই জেটি ও ক্রেইন কাজে লাগিয়েছে ২৯ মার্চ ২০১১ থেকে। ত্রিপুরার পালাটানায় ৭০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আনুমানিক ৭০ থেকে ১৩০ টন ওজনের কনটেইনার ইনডিয়ার হরিয়ানা থেকে এনে এখানে নামানো হচ্ছে। অ্যালেক বললো।



তোমার এই ডিটেইলসগুলো কি নির্ভুল? ৭০ থেকে ১৩০ টন ওজনের কনটেইনার? আমি প্রশ্ন করলাম।



ইনডিয়ানরা যেসব কনটেইনার এখান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য কেউ আমাদের দিচ্ছে না। সুতরাং এসব তথ্য কিছুটা অনুমান নির্ভর। আমরা শুনেছি এই ধরনের অতিকায় কনটেইনার, চুক্তিপত্রে ইনডিয়ানরা যাকে বলেছে ওভারসাইজ ডাইমেনশনাল কার্গো বা সংক্ষেপে ওডিসি, সে রকম ৯৬টি কনটেইনার এই জেটি থেকে স্থল পথে আখাউড়া স্থল বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর সেখান থেকে ত্রিপুরায়। ইতিমধ্যে আর্টিকুলেটেড লরিতে (Articulated Lorry) প্রায় ৬০টি কনটেইনার নিয়ে যাওয়া হয়েছে ত্রিপুরাতে। বাকিগুলো কোথায় আছে সেটা একটু পরেই দেখবে। এখানে দেখো, একটা ইনডিয়ান জাহাজে একটি কনটেইনার জেটিতে নামানোর অপেক্ষায়। অ্যালেক বললো।



দেখলাম বড় বড় অক্ষরে এবিসি ইনডিয়া লিমিটেড লেখা একটি বিশাল কনটেইনার ওই জাহাজের পুরো ডেক জুড়ে আছে।



এবিসি ইনডিয়ার লোকাল এজেন্ট কে? আমি জানতে জানতে চাইলাম।



এবিসি ইনডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ভারী কনটেইনার ও যন্ত্র পরিবহন ও ডাইভারশন রোড তৈরির দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গালফ ওরিয়েন্ট। অ্যালেক জানালো।



এখান থেকে আর্টিকুলেটেড লরিগুলো যায় কখন?



রাত বারোটার পরে। তার আগে এদের চলাচল নিষিদ্ধ। রাত বারোটা থেকে ভোর ছয়টার মধ্যে এরা চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। যখন রাত বারোটার পর এরা চলা শুরু করে তখন এদের সামনে পেছনে থাকে বাংলাদেশের পুলিশ গার্ড। প্রথমে এই লরিগুলো আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন জেটি থেকে ওঠে ঢাকা-সিলেট হাইওয়েতে। ডুয়াল লেনের এই হাইওয়েতে ১০ কিলোমিটার চলার পরে সরাইল রাউন্ডএবাউট বা গোলচত্বরে এসে এরা হাইওয়ে ছেড়ে ওয়ান লেনের সরু রাস্তায় চলতে থাকে থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে ভাতশালা হয়ে ওরা পৌছায় বাংলাদেশ-ইনডিয়া বর্ডারে আখাউড়া স্থল বন্দরে। চলো এখন সেই পথে। অ্যালেক বললো।



ওর সঙ্গে চলা শুরু করলাম। ভাবছিলাম আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন বাংলাদেশের একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বা কিপয়েন্ট ইনস্টলেশন (Keypoint Installation)। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইনডিয়ান প্রতিষ্ঠানের ত্রিসীমানাতে কোনো বাংলাদেশিকে যেতে দেয়া হবে কি? অথচ আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের তীরে তাদেরই ক্রেইন ফ্যাসিলিটি কি নির্ঝঞ্ঝাটে ইনডিয়ানরা ব্যবহার করছে। এসব সুবিধার জন্য ইনডিয়ানরা কতো ভাড়া বা ফিস দিচ্ছে সেটা কে বলবে?



আমরা ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিছু পরেই দেখলাম সেই স্পটটি যেখানে মোটর দুর্ঘটনায় পাশেই জলাশয়ে ডুবে অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান নিহত হয়েছিলেন। তার স্মরণার্থে এখানে একটি স্মৃতি ফলক বসানো আছে। সেই ফলকে সাইফুর রহমানের নাম এখনো আছে। অদূর ভবিষ্যতে এই নামটিও আওয়ামী সরকার বদলে দেবে কি?



ইনডিয়ান আর্টিকুলেটেড লরিগুলো চলাচল সত্ত্বেও ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের প্রায় দশ কিলোমিটার অংশ এখনো অক্ষত আছে। এই হাইওয়ের দুই পাশে বহু অটো রাইস মিল আছে। সেই সব মিল সংলগ্ন স্থানে প্রায় পাচ ফিট উচু ত্রিকোণ আকৃতির অসংখ্য শাদা পলিথিন মোড়ানো বাশের টোপরে ঢেকে রাখা হয়েছে ধান। শুকানোর পরে সেই ধান মিলিং হবে।



দেখলাম সোনারামপুরে তিনটি স্থানে এবং সুলতানপুরে একটি স্থানে প্রায় ৩০টি কনটেইনার রাখা হয়েছে। আর রাখা হয়েছে আর্টিকুলেটেড লরির দ্বিতীয়াংশ বা ট্রেইলার (Trailer) যেটা বহন করে কনটেইনারকে। কিন্তু সেখানে আর্টিকুলেটেড লরির প্রথমাংশ ইঞ্জিন বা ক্যাব (Cab) অর্থাৎ ড্রাইভিং অংশটি নেই। এসব কনটেইনার ও ট্রেইলার বাংলাদেশে রেখে ক্যাব ও তার ড্রাইভার চলে গিয়েছে ত্রিপুরাতে।



কিন্তু কেন?



সে প্রশ্নের উত্তর পেলাম একটু পরে।



১৩০ চাকার ঘর্ষণে ক্ষতবিক্ষত পথ



ইতিমধ্যে অ্যালেক ইনডিয়ান ট্রেইলারের চাকার সংখ্যা গুনে বললো, এখানে আছে মোট ১২০টি চাকা। আর আমি জানি ড্রাইভিং ক্যাব বা ইঞ্জিনের অংশে আছে ১০টি চাকা। মোট ১৩০টি চাকার এই লম্বা ও চওড়া ট্রাকগুলো যখন রাস্তা দিয়ে যায় তখন অন্য কোনো ট্রাক বা গাড়ির পক্ষে সম্ভব হয় না এদের ওভারটেক করা। পাহারাদানকারী বাংলাদেশি পুলিশ এদের নির্বিঘেÅ“ চলাচল নিশ্চিত করে বটে, কিন্তু এদের পেছনে তখন হয় সুদীর্ঘ ট্রাফিক জ্যাম। এ বিষয়ে মানুষ প্রতিবাদ করে না। নালিশ করে না। অ্যালেক বাংলাদেশি মনুষ্যকুল সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করলো।



সরাইল গোলচত্বর বা বিশ্ব রোড সরাইল মোড় পেরিয়ে আমরা ডান দিকে টার্ন নিলাম। ভাতশালা হয়ে আখাউড়া স্থল বন্দরের দিকে চলা শুরু করলাম।



প্রায় ৪৫ কিলোমিটারের এই পথেই দেখলাম ইনডিয়ার ওডিসি যাত্রার ফলে কিভাবে বাংলাদেশের ম্যাপ বদলে গিয়েছে ১৩০ চাকার ঘর্ষণে সরু সিংগল লেনের কান্টৃ রোড হয়ে গিয়েছে ক্ষতবিক্ষত। ইট সুরকি পিচ উঠে গিয়ে সারা পথ জুড়ে হয়েছে বড় বড় পটহোল (Pothole) বা গর্ত। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে ওই সব গর্তে জমেছে কাদাপানি। সেখানে চলাচলকারী সিএনজির ড্রাইভার ও যাত্রীরা ছিটকে ওঠা কাদাপানিতে হয়ে যাচ্ছেন কর্দমাক্ত।



কি আশ্চর্য। ওরা এতো সেজেগুজে বেরিয়েছে। তারপর এখন ওদের কাপড়জামা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবু ওরা স্থানীয় আওয়ামী এমপি শাহ আলমের কাছে প্রতিবাদ করে না। ওই দেখ, একটা সিএনজিতে একজন প্রেগনান্ট নারী যাচ্ছেন। গভীর গর্তে সিএনজি ওঠানামার ঝাকুনিতে ওনার যদি মিসক্যারেজ হয়ে যায় তাহলেও ওনার স্বামী প্রতিবাদ করবেন না। অ্যালেক দুঃখ প্রকাশ করলো।





১৬টি ডাইভারশন রোডে জলাবদ্ধতা



সরাইল মোড় থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত এই পথের ১৬টি কালভার্টের নিচ দিয়ে ডাইভারশন রোড বানানো হয়েছে। এর ফলে কালভার্টের নিচ দিয়ে পানি চলাচল ও নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর আরেকটি ফল হয়েছে কালভার্টের এক দিকের জমিতে জলাবদ্ধ পানির উচ্চতা বেশি। অন্য দিকের জমিতে কম। আর বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা সামগ্রিকভাবে বেড়ে গিয়েছে। কালভার্টগুলো অতীতের সাক্ষী হয়ে গুরুত্বহীন ভাবে দাড়িয়ে আছে।



ডাইভারশন রোডগুলো খুবই শস্তায় করা হয়েছে। সেসবও ভেঙেচুরে গিয়েছে। গুরুত্বহীন পুরনো কালর্ভাট এবং নবনির্মিত কিন্তু ভাঙাচোরা ডাইভারশন রোডগুলো সারা হাওর এলাকাকে করেছে কুশ্রী। সোনার বাংলা এখানে হয়েছে ভাঙা পিচসুরকি ও কাদাপানির কালো বাংলা।



তিতাস একটি প্রতিরোধের নাম



কাউতলিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ডিসি অফিসের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাস নদীর তীরে এসে দেখলাম আওয়ামী দেশ বিপন্নকরণ ও ইনডিয়ান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রথম এবং সফল প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছে তিতাস ।



কাউতলী দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাস নদীর এই নিম্নাংশটির ওপরে একটি বৃজ আছে। হেভি ইনডিয়ান ট্রেইলারের ধারণ ক্ষমতা এই বৃজের নেই। তাই এই বৃজের নিচে তিতাস নদীতে আটকে গিয়েছিল ইনডিয়ানরা। অগভীর এই অংশটিতে অসংখ্য সিমেন্ট ও বালির ব্যাগ ফেলে ট্রেইলার চলার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অর্থাৎ নদীতে বাধ দেয়া হয়েছিল। প্রায় ৬০টি ট্রেইলার পাস করার পরে সিমেন্ট ও বালির ব্যাগের ডাইভারশন পথটির মাঝের অংশ তিতাসের স্রোতে ডুবে গেলে আটকা পড়ে যায় ড্রাইভিং ক্যাবসহ ট্রেইলার। বহু কষ্টে ক্যাব ও ট্রেইলারকে উদ্ধার করা সম্ভব হলে কনটেইনার ও ট্রেইলারকে সোনারামপুরে রেখে ক্যাব ড্রাইভার শুধু ক্যাব চালিয়ে ত্রিপুরায় চলে যায়। পেছনে পড়ে থাকে সিমেন্ট ও বালির আধো ডোবা অসংখ্য ব্যাগ।



তারপর থেকে সোনারামপুর ও সুলতানপুরে ট্রেইলার ও প্রায় ৩০টি কনটেইনার পড়ে আছে। ইনডিয়ান কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই আশা করছে আগামী শুকনো মরসুমে ক্যাব ড্রাইভারকে ফিরিয়ে এনে তিতাসের এই অংশে আবার বাধ দিয়ে ট্রেইলাগুলোকে ত্রিপুরায় নেয়া সম্ভব হবে।



কাউতলি থেকে কয়েক কিলোমিটার পরে আখাউড়া স্থল বন্দরের পাশ দিয়ে হয়ে গিয়েছে তিতাস নদীর ঊর্ধ্বাংশ। এই অংশটি আরো খরস্রোতা। এই অংশে তিতাসের প্রতিবাদ ছিল আরো গভীর, প্রতিরোধ ছিল আরো গহিন। এখানেও বৃজের পাশে নদীতে সিমেন্ট ও বালির ব্যাগ ফেলে ডাইভারশন রোড তৈরি করা হয়েছিল। অর্থাৎ এখানেও তিতাসের ওপর বাধ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ৬০টি ইনডিয়ান ট্রেইলার পাস করার পরে তিতাস বিদ্রোহ করে এবং পুরো ডাইভারশন রোড ডুবিয়ে দেয়। বাংলাদেশের মানুষ যে প্রতিরোধ করেনি সেই প্রতিরোধ বাংলাদেশের নদী করেছে।



তাই এখন ইনডিয়ানদের দুটি বিকল্প আছে। এক. বাংলাদেশে প্রবহমান বিদ্রোহী তিতাসের দুটি অংশে ট্রেইলার স্থায়ীভাবে চলার উপযোগী শক্ত দুটি বৃজ নির্মাণ করা। দুই. শুকনো মরসুমে আবার তিতাসের এই দুটি অংশে বাধ দিয়ে ট্রেইলার সাময়িক ভাবে পারাপারের ব্যবস্থা করা। যেহেতু বৃজ নির্মাণটি হবে খুবই ব্যয় সাপেক্ষ সেহেতু ধারণা করা যায় ইনডিয়ানরা আবার তিতাসে বাধ দিয়ে প্রথমত. তাদের ফেলে যাওয়া কনটেইনারগুলো নিয়ে যাবে এবং দ্বিতীয়ত. পরবর্তী চালানগুলো ইনডিয়াতে নেবে।







ভয়াবহ সমস্যার মুখে



কালভার্ট ও বৃজের নিচে ডাইভারশন রোড নির্মাণ বিষয়ে গালফ ওরিয়েন্টের কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ তে বলেছেন, বৃজের নিচে নির্মিত ডাইভারশন রাস্তা আমরা কেটে দেবো। তিনি বলেন, শুধু আশুগঞ্জের সোনারামপুরের লোকজন পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার দাবি জানানোর পর সেখানকার ডাইভারশন রাস্তা কেটে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকায়ও বৃজের নিচে নির্মিত রাস্তা আমরা কেটে দেবো।



একই বিষয়ে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা ওয়ারপো ও হাওর বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ইনামুল হক বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই অঞ্চলটি হাওর এলাকা। এখানকার রাস্তাগুলোর বৃজ ও কালভার্ট বন্ধ করে দিলে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে রাস্তাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। ডাইভারশন রোড তৈরি করে ট্রেইলার চালানোর অর্থ হচ্ছে এই রাস্তা অতিকায় যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া এ ধরনের যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়া সরকারের উচিত হয়নি। তিনি আরো বলেন, আমরা যতোটুকু জানি ইনডিয়াকে সড়ক পথে ট্রানজিট দেয়ার কোনো চুক্তি হয়নি। তারপরও কেন হাওর অঞ্চলের সাধারণ পরিবহনের জন্য তৈরি রাস্তা দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনের অনুমতি দেয়া হলো তা স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনস্বার্থ বিরোধী। এর ফলে অবকাঠামো ও পরিবেশতভাবে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে



বৃজ ও কালভার্ট বন্ধ করে ট্র্রেইলার চলাচল রাস্তাগুলোর ওপর কি ধরনের প্রভাব ফেলবে জানতে চাইলে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান শামীমুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, কালভার্ট ও বৃজ হচ্ছে হাইড্রোলিক বা পানি সংক্রান্ত অবকাঠামো। এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখার জন্য। যদি বৃজ ও কালভার্টের নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে রাস্তাগুলো ভেঙে যাবে। ফলে রাস্তার অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। ভারি বৃষ্টিপাত হলে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার ফলে পরিবেশগত বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।







দেখুন ও প্রতিবাদ করুন



আশা করি, বাংলাদেশের পরিবেশবাদীরা এসব মতামত জানার পরে অচিরেই আশুগঞ্জ-আখাউড়াতে সরেজমিন পরীক্ষা করে আন্তর্জাতিক ভাবে তাদের প্রতিবাদ জানাবেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও কালবিলম্ব না করে এই দৃশ্য নিজের চোখে দেখবেন এবং দেশবাসীকে জানাবেন। এখানে বলা যেতে পারে, খালেদা জিয়ার আমলে ইনডিয়ানরা আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত স্থল রুটটি ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু এসব বিপদের সম্ভাবনা আছে বুঝে খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকার এই ট্রানজিট সুবিধা ইনডিয়াকে দিতে রাজি হয়নি।



শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকার ১২ জানুয়ারি ২০১০-এ এই ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার পর পরই ইনডিয়ান সরকার ত্রিপুরার পালাটানাতে কার্গো পাঠানো বিষয়ে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা সম্ভবত হরিয়ানাতে যন্ত্রাংশগুলো নির্মাণ করে এবং বাংলাদেশে কোনো কাঠামোগত পরিবর্তন ও উন্নতি না করেই সেই হেভি কার্গো নৌ পথে আশুগঞ্জে পাঠিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে স্থল পথে আখাউড়াতে।



মাটি নরম জায়গা কঠিন



প্রয়াত ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন ইনডিয়ার উত্তর প্রদেশের অধিবাসী। সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বলতেন, বাংলাদেশের মাটি নরম কিন্তু জায়গা কঠিন।



বাংলাদেশের মাটি যে নরম সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝেছে ওডিসি বহনকারী অতিকায় ট্রেইলারগুলোর পলাতক ইনডিয়ান ক্যাব ড্রাইভার। ইনডিয়ান আমলা ও পলিটিশিয়ানরাও হয়তো সেটা এখন বুঝেছেন। কিন্তু জায়গা যে কতো কঠিন সেটা তারা এখনো বোঝেননি। তিতাস নদীর মতোই বাংলাদেশের মানুষ যখন ফুসে উঠবে তখন তারা সেটা মর্মে মর্মে বুঝবেন। যেমনটা বুঝেছিল একাত্তরে পাকিস্তানিরা।







তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব



তবে এই সত্যটা ইনডিয়ানদের বোঝাতে হলে বাংলাদেশের বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে জেগে উঠতে হবে। অতীতে বাংলাদেশের একটি প্রজন্ম ২৪ বছরে দুইবার দেশকে, ১৯৪৭ ও ১৯৭১-এ স্বাধীন করেছে। সেই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে ইনডিয়াকে এভাবে ট্রানজিট দেয়ার বিরুদ্ধে ১৯৭১-এর মতোই এই একটি ইসুতে আবার গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।



এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশে ফেলে রাখা কনটেইনারগুলোর কি পরিণতি হবে। আগামী শুকনো মরসুমে তিতাসের দুই জায়গায় এবার আরো শক্ত বাধ দিয়ে সেসব ইনডিয়াতে নিয়ে যাওয়া হবে? তারপর বাধের কি হবে? কালভার্ট ও বৃজের কি হবে? সরাইল মোড় থেকে আখাউড়া রোড লিংকের মেরামতের কি হবে? এসব ক্ষতির বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পাবে? পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের একটি অংশ?



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়েছেন। আশা করি, ফিরে এসে তিনি আশুগঞ্জ-আখাউড়া রোডে মোটরযোগে যাবেন এবং নিজ চোখে দেখবেন বিপন্ন বাংলাদেশের অবস্থা।







আশার আলো



ইংরেজিতে প্রবাদ আছে এভরি কাউড হ্যাজ এ সিলভার লাইনিং (Every cloud has a silver lining)। অর্থাৎ প্রতিটি কালো মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে আশার আলো।



আখাউড়া স্থল বন্দরে বর্ডার পেরোনোর জন্য সারি বাধা বাংলাদেশের ট্রাক দেখে প্রবাদটি আবার মনে পড়লো। মায়ের দোয়ায় চলিলাম, আল্লাহ ভরসা, খোদা হাফেজ, প্রভৃতি সুন্দর করে লেখা ট্রাকগুলোতে বোঝাই করা ছিল সিলেটের পাথর।



এই একটি বর্ডার গেটে বাংলাদেশ থেকে মাল যায় ইনডিয়াতে। ইনডিয়া থেকে কিছু আসে না। অ্যালেক গর্বিত সুরে জানালো। এখানে বাংলাদেশ এক্সপোর্টার। ইনডিয়া ইমপোর্টার।



তাকিয়ে দেখলাম, সত্যিই তাই।



তবে এসব তো বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ। বাংলাদেশের মানুষের উচিত তাদের ম্যানুফ্যাকচার্ড গুডস বা তৈরি পণ্য এখান দিয়ে উত্তর-পূর্ব ইনডিয়াতে পাঠানো। যেমন, রহিম-আফরুজের ব্যাটারি, জনি পৃন্টার্স বা প্রাইডের শাড়ি ও লুংগি, মন্নু, শাইনপুকুর, পিপলসের সিরামিকস, স্কয়ার, বেক্সিমকোর ওষুধ, আরএকে-র টাইলস, প্রাণ-এর জুস ও ফুড, বিসিকের স্যানিটারি সামগ্রী, ক্যাটস আইয়ের শার্ট, এপেক্সের জুতা, কেয়ার সাবান, ইত্যাদি। আওয়ামী সরকার এবং পরবর্তী সরকারকে এসবই নিগোশিয়েট করতে হবে এবং অবশ্যই নিগোশিয়েট করতে হবে ট্রানজিট ফিস কতো হবে। অ্যালেক বললো।



তার আগে অবশ্য স্থির করতে হবে ইতিমধ্যেই ইনডিয়ানরা কাঠামোগত উন্নতি না করে যে ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষতি করেছে তার জন্য ইনডিয়াকে কি পেনালটি দিতে হবে। আমি বললাম।







নেতৃত্ব কে দেবে?



কিন্তু এসব দাবি কে তুলবে? এই অন্যায় ট্রানজিটের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব কে দেবে? জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর মতো এখন বাংলাদেশে কোনো নেতা আছেন কি? অ্যালেক বললো।



হঠাৎ জেনারেল ওসমানীর নাম তুমি বললে কেন? আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম।



তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে এক দলীয় শাসন ও প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতি চালু করেছিলেন তখন মাত্র তিন-চারজন প্রতিবাদকারীর অন্যতম ছিলেন জেনারেল ওসমানী। এখন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন কোন নেতা?



সংক্ষেপিত। সূত্র http://shafikrehman.com/home/details/578

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৪

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:


বালছাল শেফিককে টানতে হয়েছে কেন? নিজের মগজে এ সোজা বালছাল ঢোকে না? নিজের এনালাইসিস দিয়ে লেখেন।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভদ্র হতে পয়সা লাগে না।

আপনার বালছাল কমেন্টে পাঠক প্রতিক্রিয়ায় আপনার লজ্জাববোধ না হলেও অন্য পাঠকরা বিব্রত হয়!!!!!!!!!!

গায়ে লাগল কেন? ফোস্কা পড়ছে??????

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৪

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:


বালছাল শেফিককে টানতে হয়েছে কেন? নিজের মগজে এ সোজা বালছাল ঢোকে না? নিজের এনালাইসিস দিয়ে লেখেন।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ..কালাচান হোক আর আইজদ্দিন হোক- তাতে কি সত্য হেরফের হয়???

আপনার বালছাল মগজে তো খুব ঢুকে-- তো এক লাইনও লিখছেন দেশের জন্য!!! দেশের স্বার্থে!!! এটলীষ্ট অন্য কোন বালছালের লেখাও শেয়ার করছেন দেশের তাগিদে!!!

মূল টপিকে কথা বলেন। আপনি কি ট্রানজিটের নামে ভারতকে ফ্রি এত্ত এত্ত সুবিধা দিয়ে দেশের যে স্বার্থহানী করতেছে চেতনার লেবাসধারী হাম্বারা তাতে কি একমত???

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মন্তব্যগুলো না মুছে রেখে দিলাম চেতনার সাইকোর প্রমাণ হিসাবে!

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১০

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:


লিখব কি করে, ইডিয়ট সামু ৫ বার ব্যান করেছে, এখন 'জেনারেল' থেকে ৫ দিনের মাথায় 'ওয়াচে' নিয়ে গেছে।

ট্রানজিট ইতয়াদি বুঝতে অর্থনীতি ও কোয়ালিশন গেইম থিওরী বুঝতে হয়; ওগুলোতো আপনি না, আপনার শিক্ষকও জানে না; ফলে, কি সব ভেড়ার মত ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছেন শুধু।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এইরকম ইডিয়াটদের ৫ বার কেন ৫০ বার ব্যান করলেও কম হয়!!!!

নূন্যতম ভব্যতা বোধ যার নেই....তার থেকে ব্লগিং কি আশা করতে পারে!!

আর আপনাদের অর্থনীতি, কোয়ালিশনের নমুনাতো জাতি দেখছেই!!

দেশ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আত্মমর্যাদ সব বিকিয়ে অনির্বাচিত হয়েও ক্ষমতার থাকার লোভে ১৮ কোটির সাথে বেঈমানি, মুনাফেকি.. দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে গোপন সব চুক্তি!!
নূন্যতম দেশপ্রেমহীনদের কাছেতো আমজনতাকে ভেড়াই মনে হবে! তাদের চোখযে কলুর বলদের মতো স্বার্থের ঠুলিতে বাঁধা!!

কিন্তু যখন এই আমজনতা পায়ের নীচে কচলে দেবে- তখন যেন বাঁাচর আকুতিতে ছাগলের মতো ম্যা্ ম্যা করবেন না!!!!

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৮

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
তথ্যবহুল পোস্ট।

লেখককে ধন্যবাদ

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ। এ জন্যই শেযার করা।

অবশ্যই লেখক ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। আর সুবিধাবাদীতা আর স্বার্থের এই সংকটাকালে এখনতো এমন আকাল পড়েছে সত্য বলার লোকটাও খুঁজতে হয়!!!!!!

আপনাকেও ধন্যবাদ।

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

যাযাবর বেদুঈন বলেছেন: শেয়ার করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সত্য লুকানু.......সত্য শেয়ার না করাও যে পাপ!!!



৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪১

কাওসার রহমান পলাশ বলেছেন: সত্য চির মুক্ত । চালিয়ে যান ।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।

সত্য চির মুক্ত। যতই মিথ্যা দিয়ে ক্ষমতার জোরে কিংবা লোভে তাকে বদলাতে চেয়েছে- তা ক্ষনিকের জন্য মাত্র- কালের কষ্টিতে সত্যই ঠিকই ফুটে উঠেছে.. মিথ্যু দূরিভূত হয়েছে।

৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: এমন চমৎকার তথ্যবহুল একটা পোস্ট কিভাবে চোখ এড়িয়ে গেল বুঝলাম না...!

খুবই গুরুত্ববহ একটা বিষয়ের যথাযথ আলোকপাত, এবং তথ্য সন্নিবেশ অবশ্যই সাধুবাদ যোগ্য ...

পোস্ট সংগ্রহে রাখলাম আপাতত ...

সময় করে ঘাঁটতে হবে ...

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এভাবেই দেশেরও কত কত কত গুরুত্বপূর্ন ইস্যুতো দেশবিরোধী চুক্তি , ঘটনা ঘটে যাচ্ছে- আমার বে-খবর!!!!!

আমাদের জীবনকে কলুর বলদের মতো চোখ বেঁধে কর্পোরেট ঘানি ঘাড়ে তুলে দিয়ে- তারা দেশ স্বাধীনতা সার্বভোমত্ব নিয়ে খেলছে !!!!

ধন্যবাদ । নিশ্চয়ই ঘাটুন এবং দেশের জণ্য আমজনতার অবশ বোধকে আবার জাগ্রত করতে যা সম্ভব করুন।

এযে দেশ মাতার দাবী।

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫

সোহানী বলেছেন: many thanks for informative post.....

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নো মেনসন।

তথ্যগুলো ব্যাপক ভাবে জানা এবং জানানো দরকার! আমাদের দিনান্তে খেয়ে-পড়ার লড়াইয়ের আড়ালে আমাদের দেশকে নিয়ে কারা ষড়যন্ত্র করছে? কারা দেশের স্বার্থকে কিভাে বিকিয়ে দিচ্ছে!

অথচ তারাই মেকি দেশপ্রেমের কুম্ভীরাশ্রু বর্ষন করছে চেতনার নামে!!!!

সত্য প্রকাশীত হোক। দেশ নিরাপদ থাকুক।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুধু ধন্যবাদ ণয় বোন.. তথ্যকে ছড়িয়ে দিতে হবে ভ্যাপক ভাবে।

জানা আর না জানা এটাই বিশঅল পার্থক্য তৈরী করে।

যে জণ্য সাম্রাজ্যবাদীরা বিভিন্ন মোহাবিষ্টতা কিংবা কু-তর্কে নাগরিকদের ব্যাস্ত রেখে নিজেদে ফায়দা হাসিল করে।

৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: জানা ছিলনা, জানলাম..............।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।

দেশকে ভালবাসলে - অন্যকেও জানান।

সকলের জানাজানিতেই সত্য দৃঢ়তা পায়।

১০| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৪

পাখির বাপ বলেছেন: তথ্যবহুল পোষ্ট। প্রিয়তে...

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।..

আমরা কতই না উদাসীন!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

১১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: ভালো পোস্ট।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধন্যবাদ।

সকল কৃতিত্ব নেড়ির স্রষ্টার ;)

১২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১২

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: এইটা আমাদের নিয়তি বলা যায়। সব সরকারের আমলেই আমরা মারা খাই, আর কয়েকজ মন্ত্রী আমলা মাস্তানের পেট মোটা হয়।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পরিবর্তনের স্বপ্নই যেন আমরা ভূলে গেছি! আশাও যেন আমাদের আর ভরসা দিতে পারছে না।..
তাই বুঝি কেবলই হতাশায় অবগাহন!!

নিয়তিকে বদলাতে হবে। কিভাবে ভাবা যেতে পারে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.