নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিষ্পত্তি কি সব সময়ে জয়-পরাজয়ে? ময়দানি ধুলোয় তার বাইরেই যে পড়ে থাকে খেলার আসল-নকল গল্পগুলো৷ ময়দানের ঘাস-ধুলো যাঁর প্রিয়তম বন্ধু, তাঁর কলমে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজ৷

ফেলুদার তোপসে

দিনরাত সাদা-কালো জীবনের মধ্যে এক্কাদোক্কা খেলতে খেলতে হারিয়ে যাই অচেনা দুপুরের কোলে। বাকি থেকে যায় কিছু মরচে পড়া নিঃশ্বাস, কয়েকটা পোড়া স্বপ্ন আর কিছু ব্যক্তিগত উন্নাসিকতা। রাত আসে, শহর ঘুমিয়ে পড়ে... আর মন পড়ে থাকে কোনও একলা ছাদের অন্ধকারে। এভাবেই চলছে জীবন... এভাবেই মাঝে মাঝে ভিড় করে আসে রাত জাগানো শব্দেরা। ইচ্ছে, কবিতা, প্রেম, রাস্তা, অন্ধকার... আমি।

ফেলুদার তোপসে › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেক্স=নিষিদ্ধ নয়, বাস্তব

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩৮

তখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ি। খুব ইচ্ছে হয়েছিল স্টেশনের কাছে যে বইয়ের দোকানগুলি আছে সেখান থেকে এমন একটা বই কেনা যা ‘নিষিদ্ধ। মাঝেমাঝে যখন স্টেশনে আড্ডা মারতে যেতাম তখন একটা নেশা ছিল দুনিয়ার যত রাজ্যের পত্রিকা সংগ্রহ করা। ফলে সেই কিনতে গিয়েই আড়াল আবডাল দিয়ে এমন কিছু বিশেষ প্রচ্ছদ-যুক্ত পত্রিকা চোখে পড়ত যা হৃদয়ের গতিবেগকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। সেই বয়সের অমোঘ আকর্ষণে ঠিক করলাম একদিন কিনতেই হবে একটি বড়দের পত্রিকা। তবে ভদ্র বাড়ির ছেলে, হুট করে দোকানদারের কাছে গিয়ে কিনব সেটা আকাশ কুসুম ভাবনা। ভাগ্যিস শীতকাল ছিল। পরদিন একটার জায়গায় দুটো সোয়েটার চাপিয়ে নিজেকে একটু মোটা করে, মাফলার দিয়ে নিজের মুখের যতোটুকু ঢাকা যায় ঢেকে গেলাম, সেই নিষিদ্ধ পত্রিকার লোভে। প্রথমে গোটা তিনেক অন্য পত্রিকা কিনে দোকানদারকে চোখের ইশারায় বোঝালাম ঐ বিশেষ পত্রিকাটাও আমার চাই। দোকানদারও ঠোটের কোনায় আলতো হেসে বিশেষ মোড়কে দিয়ে দিল সেটি। ততক্ষণে সেই প্রবল শীতের মধ্যেও আমি দর দর করে ঘামছি। পত্রিকাটি কিনে স্টেশন ছেড়ে যখন বেরিয়ে এলাম তখন এই যুদ্ধজয়ের আনন্দে আমার একেবারে ফুরফুরে মেজাজ। তারপর রাস্তাতেই অপেক্ষাকৃত একটা নির্জন জায়গায় বইটা খুলে এক নিশ্বাসে পুরোটা পড়ার চেষ্টা করলাম। বিশ্বাস করুন এমন কিছু আনন্দই পাইনি সেই নিষিদ্ধ ছবি ও গল্প পরে। সেদিন একটা জিনিস বুঝেছিলাম আমার সমস্ত এক্সাইটমেন্ট জমে ছিল ঐ কিনতে যাওয়ার মধ্যেই। সেটার পর পত্রিকা নিয়ে আমার এক্সাইটমেন্ট এর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।

hooked-porn-xsmall.jpg

সেদিন পত্রিকায় একটি খবর পড়লাম যে শিশুদের মধ্যে নাকি পর্ণ দেখার প্রবণতা বাড়ছে এবং তা থেকে তাঁদের আটকালে নাকি অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা। অনেকে এর জন্য দায়ী করছেন আধুনিক জীবনযাপন এবং প্রযুক্তিকে। কিন্তু একটু তলিয়ে ভাবুন তো? আসল সমস্যা কিন্তু অন্য জায়গায়। আসলে আমাদের ছোটবেলা থেকে কিছু জিনিসের উপর বাধানিষেধ আরোপ করা হয় যেটা আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে বাবা মা ভাবেন তাঁদের ছেলেমেয়েরা খারাপ কিছু শিখছেন, কিন্তু বাস্তবে তারা জীবনের সব সত্যি গুলি শেখেই, তবে বিকৃত উপায়ে। ভাবুন তো সেক্স এর থেকে জীবনে সত্যি ও সুন্দর জিনিস কি কিছু আছে? আজকের স্মার্ট-ফোনের জীবনে একটি ছেলে ক্লাস সেভেন থেকেই সবকিছুই জেনে যায় যা তথাকথিত নিষিদ্ধ। কিন্তু জানাটার সাথে যুক্ত থাকে একটা নিষিদ্ধ অনুভূতি। ফলে এই নিষিদ্ধতার হাত ধরে আসে কিছু বিকৃত চিন্তা ভাবনাও। আরেকটি প্রবণতাও আমি দেখি, ছোটবেলা থেকেই ছেলে এবং মেয়েকে দুটো ভিন্ন গ্রহের মানুষের মতো করে মানুষ করার প্রবণতা। ফলে বড়ো হয়ে একে অপরের প্রতি যে শারীরিক ও মানসিক টান অনুভূত হয় তার মধ্যে কেমন একটা অপরাধবোধ মিশে থাকে। আমি তো মনে করি আজ সমাজে যে নারীকেন্দ্রিক অপরাধগুলি বৃদ্ধি পেয়েছে তার পেছনে এই কারণটাই দায়ী। এই নিষিদ্ধ টান, যার ফলে নাগালে পেলেই নারী শরীরকে লুটে নেওয়ার একটি প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। আর মেয়েদের সেক্স ইচ্ছে যেন রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমান। একবার ভাবুন তো আপনার মায়ের সে ইচ্ছেটি না হলে আপনি কোত্থেকে জন্মাতেন? আসলে অপরাধ তা আমাদের সকলের মনেই আছে। আমরা সকলেই ভয় পাই সারা জীবন না পাওয়ার, ফলে এমন কিছু জিনিস যা আমরা পাইনি এতদিন তা যদি একবার পেয়ে যাই তবে তাঁকে যত্নের বদলে লুটে নি।আর সেক্স শব্দটি নিষিদ্ধ নয়।বাস্তব।আমরা নিশ্চয়ই কেউ আকাশ থেকে পরিনি।

তাই ছোটো থেকেই বাচ্চাকে যদি জীবনের সত্যিগুলির সাথে পরিচয় ঘটান তাহলে আপনাকে ফাঁকি দিয়ে তারা আর নিষিদ্ধতার পথ বেছে নেবেনা। স্বাভাবিকতাকে বিসর্জন দিয়ে ন্যাকা সেজে বাচ্চাদের বিপথে ঠেলে দিয়ে কি লাভ বলুন তো?

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৪

পথে-ঘাটে বলেছেন: আপনি বলেছেন, "আমি তো মনে করি আজ সমাজে যে নারীকেন্দ্রিক অপরাধগুলি বৃদ্ধি পেয়েছে তার পেছনে এই কারণটাই দায়ী"। অর্থাৎ সেক্স।

এর মানে যেখানে সেক্স লাগামহীন সেখানে নারীকেন্দ্রিক অপরাধগুলি কি ঘটছে না?

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: ব্যতিক্রম তো থাকবেই।।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২২

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: প্রিয় ভাই আমাদের সমাজে রক্ষণশীলতা আছে বলে এখনো অবাধ যৈনচার হচ্ছেনা। আপনার চিন্তাধারা যদি বাংলাদেশে এপ্লাই হয়, তাহলে বাংলাদেশে ধর্ষনের দিক থেকে চেম্পিয়ান হওয়া সময়ের ব্যাপার। নিশ্চয় আপনার ও মা,বোন, স্ত্রী কন্যা আছে।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৮

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: মানসিকতা'টা পাল্টালেই চলবে।

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮

অগ্নি কল্লোল বলেছেন: ভালো লিখেছেন।।
একটা প্রশ্নের উত্তর দিবেন
প্রেমের নামে যে sex চলছে(আমি বলি নিরব ধর্ষণ) তা কোন পর্যায়ে পড়ে??

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

গেম চেঞ্জার বলেছেন: যৌনতা মানুষের স্বাভাবিক ব্যাপার। এটাকে নিষিদ্ধ দেখানোর কারণে বেশিরভাগ অপরাধ সংঘঠিত হয়। আমারও মত এটাই যে, টিনএজারদের থেকে এই বিষয়টা স্বচ্ছভাবে, বন্ধুত্ব দিয়ে যদি তুলে ধরা হয় তবে সেই কৌতুহলের দিকে তারা আর পা বাড়াবে না। আর ব্যতিক্রম তো সব জায়গায়ই আছে, থাকবে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩০

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: আমিও তাই মনে করি।

৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: তা-ও ভালো অাপ্নে বইটা কিনতে পেরেছিলেন; অামার অমন সাহস হয়নি ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩২

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: আজ ভাবি, না কিনলেই ভাল হতো বুঝি।

৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩

তার আর পর নেই… বলেছেন: আপনি যখন সেই নিষিদ্ধ বই কিনে নিয়ে আসলেন তখন আপনি দেখলেন …এবং আপনার আগ্রহ চলে গেল। তখন আপনি ইলেভেনে পড়েন। যথেষ্ট ম্যাচিউর, আপনার আগ্রহ চলে গেল।
এখনকার সেভেনে পড়া ছেলে (আপনার লেখা থেকে বলছি) এটাতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে, আপনি বলছেন নিষিদ্ধ বোঝানোর কারণে, তাইতো?
আপনার সময়টাতে তো সেটা আরো নিষিদ্ধ ছিল, আপনি কেন অভ্যস্ত হলেন না?
নারী পুরুষের ব্যবধান আগে আরো বেশি ছিল। আমি যখন পড়েছি সবাই গার্লস স্কুলে ভর্তি হতো। সে ব্যাচে আমরা মাত্র আঠারো জন মেয়ে ছেলেদের সাথে পড়ার দুঃসাহস করেছি। আর এখন শত শত মেয়ে পড়ছে।
তাহলে কি ব্যাপারটা নিষিদ্ধ বলেই হচ্ছে?
না, এখন এসব সহজলভ্য বলেই হচ্ছে। যৌনতা শুধু কৌতুহলের জিনিস নয়, আরো অনেক বড় ব্যাপার ……

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: আমি পত্রিকাটা কিনেছিলাম নিষিদ্ধ বলেই, সহজলভ্য বলে না।।

৭| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

দুখু বাঙাল বলেছেন: ভালোই বললেন। অবাধ সেক্স নারী বিষয়ক অপরাধ হৃআস করে বুঝলাম। কিন্তু এই নীতিতে সামান্য দিনের তপাতে আপনার গায়ে এইডস আসবে সিওর।
অপরিচিত, অছেনা, কিংবা পরিচিত লোকদের বাচ্চা পেটে নিয়ে মেয়েরা ঘুরবে। আর এমনটি হলেই কি নারীর অধিকার নিশ্চিত হবে?

আপনার উল্ল্যেখিত সমস্যার সঠিক সমাধান আছে, কিন্তু তা প্রয়োগ হচ্ছে না।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: আমি আপনাকে বোঝাতে পারলাম না বা আপনি আমার কথা গুলো বুঝতে পারলেন না।।

৮| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

নেক্সাস বলেছেন: কঠিন বিষয়। সেক্স লুকিয়ে রাখা না সেক্স স্বাভাবিক বিষয় করে দেওয়া কোনটা যে ঠিক বুঝে উঠা দায়।

৯| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভালই লিখেছেন।

১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩০

পথে-ঘাটে বলেছেন: উইকিপিডিয়া ও উইকিঅ্যানসারের তথ্য অনুযায়ী যেখানে সেক্স লাগামহীন সেখানকার পরিসংখানটা দেখুন :

#কেবল মাত্র ২০০৫ সালে আমেরিকায় ধর্ষন হয়েছে ১৯১৬৭০টি

#প্রতিদিন অস্ট্রেলিয়ায় গড়ে ২৫০জন মহিলা ধর্ষনের শিকার হন

#কেবল মাত্র ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডে ধর্ষন হয়েছে ২১২১৯০টি

এছাড়াও listen.nycagainstrape.org এর তথ্য অনুযায়ী,

#আমেরিকায় ৬১% ধর্ষনের ঘটনার শিকার হন অনুর্দ্ধ ১৮ বছরের নারীরা আর ২৯%ধর্ষনের ঘটনার শিকার হন অনুর্দ্ধ ১১ বছরের নারীরা।

# ৬১% আমেরিকান মহিলা সৈন্য পুরুষ আর্মির দ্বারা ধর্ষনের শিকার হন।

#প্রতি চার জনে ১ জন মহিলা সেখানে জীবনে ১বার হলেও যৌন হয়রানির শিকার হন।

suicide.orgএর তথ্য অনুযায়ী

#৩৩% মহিলা ধর্ষিত হওয়ার পর আত্নহত্যার চিন্তা করে এবং১৩% মহিলা আত্নহত্যার চেষ্টা করেন।আর ধর্ষনের পর মেরে ফেলার ঘটনা তো খুবই কমন একটা বিষয়।

আশা করি সুমতি হবে। ভাল থাকুন।

১১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪১

ভুলুয়া বলেছেন: শিশুদের পর্ণ আশক্তি বাড়ছে সেই কারণেতো সরকারের উচিত পর্ণ সাইট গুলো বন্ধ করে দেওয়া।অনেক দেশই এখন এসব সাইট গুলো বন্ধ করে দিচ্ছে

১২| ১০ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: কোনো জিনিস নিষিদ্ধ করলেই সেটার প্রতি সবাই আকর্ষণবোধ করে।আর সেক্সতো আমাতের জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এটাকে ছোটবেলা থেকেই শিশুরা বেশ রহস্যময়-নিষিদ্ধ জিনিস হিসেবে দেখে আসে যার ফলে স্বাভাবিক ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হয়ে জীবনের একটা পর্যায়ে ধরা দেয়।দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং শুরুতেই সঠিক শিক্ষা ও মানসিকতা গড়ে তুলতে সচেতনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.