নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘মানুষ তার স্বপ্নের চাইতেও বড়’ https://www.amazon.com/author/hossaink

কাছের-মানুষ

মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! ! https://www.amazon.com/author/hossaink

কাছের-মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কল্প-গল্প : গামা লেভেল

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯


এক
'তোমার পানিয়?' ইসাই এর দিকে গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল মেয়েটি।

ইসাই নিজের দুর্বল শরীরটি বিছানা থেকে কোনমতে টেনে তুলে হাত বাড়িয়ে গ্লাসটি নিল। তারপর উবু হয়ে বসে আলতো করে হলদে পানীয়তে নিজের ঠোট স্পর্শ করে ঢক-ঢক করে সবটুকু তরল খেয়ে নিল। শরীরের দুর্বল ভাবটি মুহূর্তেই যেন হারিয়ে গেল।

' কেমন লাগছে এখন ইসাই? ' মিষ্টি হাসি দিয়ে তরুণীটি জিজ্ঞেস করল।

ইসাই এতক্ষণ মেয়েটিকে ভালভাবে লক্ষ্য করেনি। গ্রীক দেবীদের মত সু-উচ্চ নাক, সোনালী চুল, সুঠাম দেহ, পড়নে মিনি স্কার্ট, গাঢ় নীল চোখ। কিছুক্ষণ তরুণী মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিল।

' তুমি স্বপ্ন দেখছ না ইসাই!' বলেই তরুণীটি নিজের হাত দিয়ে ইসাইকে আলতো করে চিমটি দিল। ' এবার বিশ্বাস হল ? '

ইসাই চোখ জোরা বড় বড় করে মেয়েটির দিকে তাকাল, সে মনে মনে ভেবেছে হয়ত স্বপ্ন দেখছে অথচ মেয়েটি জানল কিভাবে!! স্বপ্ন নয় তাহলে কি সে, ওহ আর কিছুই ভাবতে পারছে না সে।

মেয়েটি এবারো মিষ্টি করে হেসে বলল ' না, তুমি মরেও যাওনি ইসাই। দিব্বি বেচে আছ এবং খুবই সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছে। ' মেয়েটির চোখে মুখে এক ধরনের রহস্যের ভাব ফুটিয়ে তুলল।

ইসাই এবার মনে মনে কিছুটা চমকে উঠল কিন্তু চোখেমুখে সেটা প্রকাশ করল না। জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল ' তুমি কে? আমি এখানে কেন? '

' ব্যস্ত হয়ো না। তুমি এখন আর পৃথিবীতে নেই, পৃথিবী থেকে অনেক দূরে আনা হয়ে তোমাকে, মিল্কিওয়ে ছায়াপথ থেকে অনেক দুরের কোন ছায়াপথে আছ তুমি। আমরা তোমাকে নিয়ে এসেছি। '

নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারল না ইসাই। স্মৃতি হাতরে স্পষ্ট মনে পরছে গতকাল রাতে তার কামড়ায় বসে ম্যাগাজিনের জন্য একটা লেখা লিখছিল। সে একজন সৃষ্টিশীল মানুষ, শব্দ কারিগর, বিজ্ঞান সাময়িক ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখে সে, যখন লেখে তখন দিনদুনিয়ার আর কোন খেয়াল থাকে না।

ইসাই ধরা গলায় জিজ্ঞেস করল 'কি বলছ তুমি ? আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। তুমি কে? এলিয়েন? আমাকে এখানে কেন এনেছ? '
'শান্ত হও ইসাই। একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেলেছ, আসতে আসতে বলছি। তোমার কোন ভয় নেই, আমরা তোমার কোন ক্ষতি করব না। আমরা মানুষ নই, আমরা গামা লেভেল। ' মেয়েটি আরও কিছু বলছিল

ইসাই থামিয়ে দিয়ে বলল 'গামা লেভেল কি? তাছাড়া তুমি দেখতেতো মানুষের মত। '

'মহাজগতের প্রতিটা প্রাণীই জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন পর্যায় দিয়ে যায়, জ্ঞান বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ সীমাকে বলে গামা লেভেল, তার উপর আর কিছু নাই। আমরা সব অজানাকে জেনে ফেলেছি, কোন রহস্যই আর আমাদের কাছে রহস্য নেই। এই গ্রহ নক্ষত্র, মহাবিশ্ব সব কিছুর রহস্যই আমরা বের করে ফেলেছি। তোমরা মানুষেরা জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রাথমিক দিকে আছ। '

মেয়েটি একটু থেমে ইসাইয়ের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য অপেক্ষা করল। ইসাই চরম বিস্ময়ে মেয়েটির কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছে যেন ঠিক নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।

মেয়েটি এবার আবারো যোগ করল 'এই যে আমাকে মানুষের মত দেখছ এটা আমার সত্যিকারের রূপ নয়, আমরা দেখতে অন্য রকম তবে আমরা নিজদের রূপ পরিবর্তন করতে পারি, এখন যেমন মানুষের অবয়বয়ে এসেছি যাতে তুমি অস্বস্তি না অনুভব কর। বুঝতে পেরেছ? '

ইসাই বুঝতে পারছে মেয়েটা কথা বলার সময় যথেষ্ট মোলায়েম এবং আন্তরিকতার সাথে কথা বলছে যাতে ইসাই অস্বস্তি অনুভব না করে।
'হুম বুঝলাম! তবে তোমরা রূপ কিভাবে পরিবর্তন কর? ' মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল ইসাই।

মেয়েটি এবার মৃধু হাসল, তারপর বলল 'প্রতিটা বস্তু ভাঙলেই অণু পরমাণু পাওয়া যায়। আবার এই অণু-পরমাণু ভাঙলে ইলেকট্রন,প্রোটন এবং নিউট্রন পাওয়া যায়। এগুলোকে ভাঙলে আবার ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেল কোয়ার্ক, এন্টি-কোয়ার্ক, নেপটন এবং এন্টি-নেপটন পাওয়া যায়। তার মাঝে কোয়ার্ক আবার ছয় প্রকার, যেমন আপ কোয়ার্ক ডাউন কোয়ার্ক ইত্যাদি। তুমি কি বুঝতে পারছি আমি কি বলছি ? '

মেয়েটি কথা বলার মাঝখানে ইসাই হুম, হা এবং মাথা ঝাঁকিয়ে যাচ্ছিল।

মেয়েটা একটু জিরিয়ে নিয়ে আবার বলল 'আমি জানি তুমি বিজ্ঞানের ছাত্র, ধর প্রোটন তৈরি হয় দুটি আপ কোয়ার্ক এবং একটি ডাউন কোয়ার্ক দিয়ে, ঠিক একইভাবে নিউট্রন এবং ইলেকট্রনও ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেলের বিভিন্ন মান দিয়ে তৈরি। তুমি যদি বৃহত্তরভাবে চিন্তা কর তাহলে দেখবে যে সব বস্তু সেটা আগুন, পানি এমনকি তোমাদের বায়োলজিক্যাল বডি সবকিছুই এই ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেল দিয়ে তৈরি শুধু তাদের ভিতরকার মানের ভিন্নতার জন্য এক একটা জিনিষ দেখতে এক এক রকম। আমরা যেহেতু গামা লেভেলে তাই আমরা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, আমরা যেকোনো বস্তুকেই মনের মত যে কোন বস্তুতে রূপান্তর করতে পারি। যেমন, পানি দরকার হলে হাইড্রোজেন এর দুটি এবং অক্সিজেনের একটু অণু মিশিয়ে পানি তৈরি করি, আবার গ্যাস তৈরি করতে হলে অণুগুলোর মধ্যকার বাধন গুলোকে মুক্ত করে দেই, কোন বস্তু তৈরি করতে হলে বাধন গুলোকে শক্ত করি, আর এভাবেই আমি নিজের ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেলের মান পরিবর্তন করে নিজেকে মানুষের আকৃতি দিয়েছি।'

ইসাইয়ের মনে অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সমীকরণগুলো ঠিক মিলতে চাইছে না। 'হুম বুঝলাম কিন্তু তুমি নিজের অণু-পরমাণু বা ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেল কিভাবে পরিবর্তন করে নিজেকে পরিবর্তন কর ঠিক বুঝলাম না। এটা কিভাবে সম্ভব ?'

মেয়েটি এবার খুক খুক করে কেশে গলা পরিষ্কার করে বলল 'ইসাই আমি তোমাকে বলেছি আমরা জ্ঞান বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ সীমা গামা লেভেল বাস করি তাই আমাদের চিন্তা শক্তিও প্রখর। তুমি নিশ্চয়ই জান মানুষের চিন্তা তার কর্মকে প্রভাবিত করতে পারে ?'
জিব দিয়ে ঠোট ভিজিয়ে বলল 'হুম, জানি। আমাদের চিন্তা আমাদের কর্মকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে, এর জন্য সবসময় বি-পজিটিভ থাকতে বলা হয়, তবে আমরা সরাসরি চিন্তা দিয়ে কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।'

'এখানেই তোমাদের সাথে আমাদের পার্থক্য। আমরা গামা লেভেলে তাই চিন্তা দিয়ে যে কোন কিছুই পরিবর্তন করতে পারি, যে কোন বস্তুর ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেল শুধু চিন্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি আমরা।'

'তোমার কথায় আমার সবকিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। তাহলে রিয়েলিটি কি?'

'রিয়েলিটির কোন সু-নিদিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তুমি যা অনুভব কর তাই রিয়েলিটি। কোন ভরহিন বস্তুকে যেটা কিছুই না, যার কোন অস্তিত্ব নেই, নিদিষ্ট কোন আকৃতি নেই, সেই পার্টিকেলের বিভিন্ন কম্বিনেশন থেকে ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেল এবং তার থেকে ভরযুক্ত পার্টিকেল এবং সেখান থেকে যে কোন বস্তু যেমন তরল, গ্যাসীয় পদার্থ আমরা বানাতে পারি। তুমি এখন এগুলো বুঝবে না ইসাই, আমরা গামা লেভেল বসবাস করছি তাই আমরা এর সব রহস্য জেনে ফেলেছি।'

'সবই বুঝলাম কিন্তু তোমরা আমাকে কেন নিয়ে আসলে ? '

'ইসাই সব কিছুরই ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক দুটি দিক আছে, যেহেতু আমরা সব রহস্যের সমাধান করে ফেলেছি, তাই আমরা আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি যেমন হাসি, কান্না আবেগীয় গুণাবলি হারিয়ে ফেলেছি, আমরা এখন আর গল্প লেখি না, বই পড়ে হাসি না, মুভি দেখে সময় কাটাই না কারণ আমরা জানি এগুলো সব অহেতুক, গল্প এবং সিনেমা সব কিছুই মিথ্যে করে বানানো , তাই এগুলো দেখে হাসি কান্নার কিছু নেই।'

মেয়েটি একটু থেমে আবার বলল 'ঠিক একই কারণে নর নারীর প্রতি আমাদের চিরন্তন আকর্ষণ আমরা হারিয়ে ফেলেছি তাই আমাদের বংশ বিস্তার থেমে আছে একটি জায়গায়।'

মেয়েটি ঢোক গিলে আবার বলল তোমাদের 'মানুষের ডিএনএ কোন কিছুই ফেলে দেয় না। উদাহারন দিয়ে বলা যায় তোমরা মানুষেরা সাপকে ভয় কর, প্রাচীন মানুষেরা যখন প্রথম সাপ দেখলে যেরকমভাবে শিহরিত হত, এখনকার আধুনিক মানুষেরাও সেরকম শিহরিত হয়। হয়ত মানুষ বনে জংগে থাকার ফলে সাপ নিয়ে তাদের ভয়ংকর কোন অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই ভয়কে তার ডিএনএ এখনও সংরক্ষণ করে রেখেছে। তাই এখনও মানুষ সাপ দেখলে ভয় পায়। তোমাদের ডিএনএ কোন তথ্যই ফেলে দেয় না সযত্নে রেখে দেয় অথচ আমাদের ডিএনএ আমাদের আবেগীয় গুণাবলি মুছে দিয়েছে। আমরা আমাদের হারানোগুনাবলি ফিরত পেতে চাই, তাই তোমাকে এখানে এনেছি সেই ব্যাপারটা গবেষণা করে দেখার জন্য।'

ইসাই চমকে উঠল । তাকে আবার কেটে কুটে পরীক্ষা করবে নাতো!! এই ভেবে তার গলা শুকিয়ে এলো।ইসাই ধরা গলায় বলল 'আমাকে নিয়ে তোমরা কি গবেষণা করবে? তাছাড়া তুমি বলছ তোমাদের হাসি কান্নার আবেগীয় গুণাবলী নেই অথচ আমি লক্ষ করলাম তুমি কথা বলার মাঝে প্রায় হাসছ, চেহারার বিভিন্ন এক্সপ্রেশন দিচ্ছ। আমি ঠিক বুঝলাম না ? '

মেয়েটি এবারও একটি রহস্যময় হাসি দিল। 'এগুলো সব কৃত্রিম হাসি ইসাই। তোমাদের মানুষকে অনুকরণ করার চেষ্টা করছি যাতে তুমি অস্বস্তি অনুভব না কর। আর তোমার কোন ভয় নেই, তোমাকে কোন কাটাকুটি করব না, এই যে কথা বলছি এটাই এক ধরনের গবেষণা। আমি কথা বলছি আর আমাদের বিজ্ঞানীরা দূর থেকে তোমাকে অবজার্ভ করছে, তুমি হাসলে, কথা বললে তোমার ডিএনএ এর চেইনে কোন পরিবর্তন হয় কিনা এই ব্যাপারগুলো তারা খুটিয়ে-খুটিয়ে দেখছে।'

ইসাই এবার কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেল। উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করল 'তোমাদের বিজ্ঞানীরা এখানে আসছে না কেন ? '

'ইসাই আমি তোমাকে বলেছি আমরা গামা লেভেলে তাই আমরা অহেতুক কোন কাজ করি না। তারা মনে করছে তোমার সাথে সরাসরি দেখা করার কোন দরকার নেই তাই তারা আসছে না। কিন্তু আমার সাথে কথা বলছে প্রতিনিয়তই'

ইসাই চোখ দিয়ে অনুসন্ধিৎসা প্রকাশ করল 'কিভাবে কথা বলছে ? '

মেয়েটি এক গাল হেসে বলল 'আমরা যখন মুখ দিয়ে কথা বলি বা চিন্তা করি তখন মস্তিষ্কে এক ধরনের কম্পন তৈরি হয় । মুখ দিয়ে জোরে কথা বললে বাহিরে সেই কম্পনের মাত্রাটা জোরে বের হয়, চিন্তা করলে আসতে। কেউ একজন কথা বললে সেই কম্পন কান দিয়ে ঢুকে আমাদের মস্তিষ্কের লিসেনিং অংশে প্রবেশ করে তখনই আমরা শুনতে পাই। আমরা যেহেতু গামা লেভেল তাই আমাদের মুখ দিয়ে কথা বলে জোরে কম্পন তৈরি করতে হয় না, কেউ যখন কোন কিছু চিন্তা করি মনে মনে তখনই সেই কম্পন আরেকজন গামা লেভেল ধরতে পারে। আর এভাবেই তুমি যখন মনে মনে কিছু বল আমি ধরে ফেলতে পারি। বুঝেছ এবার ইসাই? '

ইসাই মাথা ঝাঁকিয়ে বুঝার মত ভান করল।

'তোমার জন্য একটা সু সংবাদ আছে ইসাই ? '

ইসাই চোখেমুখে অনুসন্ধিৎসা প্রকাশ করল।

'ইসাই তুমি বিশেষ কেউ, ইউ আর চুজেন। তোমার মনটা কোমলীয়, মানুষের জন্য তোমার অসীম মায়া মমতা, তুমি একজন মানবিক মানুষ। তোমাকে যখন তোমার পৃথিবীতে ফিরিয়ে দিব, তোমাকে আমাদের গামা লেভেলের এই জ্ঞান দিব। আমরা গামা লেভেলরা যা যা করতে পারি তুমিও সব করতে পারবে । পৃথিবীতে তুমি তোমার ক্ষমতার সঠিক ব্যাবহার করবে, ঘরহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দিবে, ক্ষুধার্তকে খাবার দিবে, রুগীদের সুস্থ করবে। মনে রেখ সুপার পাওয়ার কাম উইথ সুপার রেসপনসিবিলিটি!'

ইসাই এর চোখে মুখে হাসির বলি রেখা ফুটে উঠল।

মেয়েটি একটু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিড় বিড় করে বলল, 'দেয়ার ইজ নো ফ্রি লাঞ্চ! '

'কি বললে তুমি ? ' ইসাই বলল।

না, না কিছু না। 'তুমি পরে বুঝতে পারবে।' মেয়েটি তার কাছ থেকে কিছু একটা লুকালো।
ইসাই আর অনুসন্ধিৎসা প্রকাশ করল না।

'আচ্ছা আমাকে তোমরা কিভাবে আনলে, কোন স্পেসশীপে করে কি, আমি বুঝলাম না কেন ?'

'ইসাই, আমরা গামা লেভেলের তাই কোথাও যেতে হলে আমরা নিজেদের ভেঙ্গে আলোর ক্ষুদ্রতম পার্টিকেল থেকেও ক্ষুদ্র ভরহিন পার্টিকেলে রূপান্তরিত করি, যাতে মূহুর্তেই সব জায়গায় যেতে পারি। আমরা তোমার শরীরকে আনি নাই, টেলি-পোর্টের মাধম্যে তোমার সাব-কনসার্স মাইন্ডকে এনেছি।'

'হুম, আমাদের পৃথিবীর মানুষ টেলিপ্যাথির উপর গবেষণা করছে কিন্তু বিজ্ঞানীরার এর কোন ক্লু পাচ্ছে না!!'

'আমরাও এই সময় পার করেছি কয়েক বিলিয়ন বছর আছে যখন টেলিপ্যাথির কোন ভিত্তি পাচ্ছিল না আমাদের বিজ্ঞানীরা। তোমাদের বিজ্ঞানীরাও এগুলো ধরতে পারবে, চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, তবে অনেক সময় লাগবে, তোমরা এখনও অনেক নিচু স্তরে রয়েছ ইসাই।'

'হুম।'

'ইসাই আমাদের কাজ শেষ হয়েছে।তোমাকে বিদায়।তোমার সাথে কথা বলে অনেক ভাল লাগল।'

ইসাই হাসল।

'হাসলে কেন ?'

'তোমার ভাল লাগার অনুভূতি নেই, অথচ তুমি কি সুন্দর করে মিথ্যে বললে, ভাল লাগল, কি সুন্দর আন্তরিক হাসি হাসলে।আমার সাথে কৃত্রিমতার কোন দরকার নেই, তোমাকে হাসির অভিনয় করতে হবে না।'

'ঠিক আছে ।' এবার গম্ভীরভাবে বলল মেয়েটি, কথা বলার সময় মুখের অণু-পরমাণুর কোন পরিবর্তন হল না।

ইসাই কিছুটা ধাক্কা খেল।

দুই
চকচকে রোদের আলো ইসাই এর চোখের উপর পরল।

হাত দিয়ে চোখমলে ঘুম থেকে উঠল। হাই তুলে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল, হঠাৎই তার মেয়েটার সাথে কথা বলার কথা মনে পরল। এতক্ষণ কি তাহলে স্বপ্ন দেখেছে ? বাথ রুমে গিয়ে দেখল ব্রাশ পুরনো হয়ে গিয়েছে, ইসাই পুরনো ব্রাশের দিকে তাকাতেই চমকে উঠল। ব্রাশের ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেলগুলো দেখতে পেল চোখের সামনে বড় বড় আকারে, কি আশ্চর্য সেগুলোকে সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে নিজের চিন্তা দিয়ে। চোখের নিমিষেই সবগুলো ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেলের মান পরিবর্তন করে নতুন ব্রাশে রূপান্তরীত করল।
তাহলে রাতের ঘটনাটা স্বপ্ন ছিল না।!

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন লেখালেখি করে ইসাই, আজ বিজ্ঞান ম্যাগাজিনে একটা লেখা পাঠানোর কথা! আশ্চর্য তার লেখতে মন চাইছে না অথচ লেখালেখি তার একটা পছন্দের কাজ, সেখানে নিজের একটা জগত তৈরি করা যায়, শব্দের সাথে শব্দের মিলন ঘটিয়ে যেই আনন্দ সেটা অপরিসীম অথচ এগুলোকে অহেতুক কাজ মনে হতে লাগল তার কাছে, তার মনে হল মিথ্যে মিথ্যে বানিয়ে বানিয়ে গল্প লিখে কি লাভ।

তার চোখটি আয়নায় যেতেই চমকে উঠল সে, লক্ষ্য করল সেখানে কোন অনুভূতি নেই, হাসি, কান্না মানবিক অনুভূতি সে হারিয়ে ফেলেছে! (শেষ)

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: ইসাই নামটি সুন্দর হয়েছে।
গামা লেভেলের জ্ঞান আমার দরকার।

সব মিলিয়ে ভালো লাগল এই ফিকশন।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: গামা লেভেলের জ্ঞান পেলেতো সমস্যা ভাই। লেখালেখি, হাসা, কান্না মানবিয় গুণাবলি কিন্তু হারিয়ে ফেলতে পারেন গল্পের নায়কের মত !!!

পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অনেক।

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: ভালো লাগল।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৫

কাছের-মানুষ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

মিঠু পারভেজ বলেছেন: আচ্ছা গামা লেভেল বিষয় টা কি সত্যিই সম্ভব?
আর ডি এন এ কি স্মৃতি ধরে রাখতে সক্ষম?

সব মিলিয়ে চমৎকার হইছে!!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি মনে করি জ্ঞান একটা সেচুয়েশন লেভেলে চলে আসবে, আমি গল্পে গামা লেভেলে যেই পাওয়ারের কথা বলেছে সেই লেভেল আসার সম্ভবনা নেই সম্ভবত, এগুলো ফ্যান্টাসি হিসেবে পড়তে ভাল লাগে।
তবে মানুষের ডি এন এ কিছু তথ্যতো ধরে রাখে অবশ্যই, তার মধ্যে সাপের যেই ব্যাখ্যা দিয়েছি সেটা অনেকেই ব্যাবহার করে।

অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫

ক্স বলেছেন: গামা লেভেল হচ্ছে জ্ঞানের মধ্যম পর্যায় । আর অমেগা লেভেল হচ্ছে জ্ঞানের শেষ পর্যায়। ওমেগা পয়েন্ট হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে আর অজানা কিছুই থাকেনা।

এই তথ্য আমি পেয়েছি হুমায়ূন আহমেদের 'তোমাদের জন্য ভালোবাসা' বইতে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৮

কাছের-মানুষ বলেছেন: এই গ্রিক মান গুলো দিয়ে যে কোন কিছুই প্রকাশ করা যায়। ওমেগা পয়েন্ট ঔপনাস্য হুমায়ুন আহমেদ দেখায় ভবিষ্যতের মানুষ গল্পের নায়কের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন কাজ করায়। তোমাদের জন্য ভালবাসার কাহিনী মনে নাই।

আমি সত্যজিত রায়, হুমায়ুন, আহমেদ, জাফর ইকবাল, মোস্তাক আহমেদ থেকে শুরু করে দেশী বিদেশী সব লেখকের বই ই পড়ার চেষ্টা করি। কল্প কাহিনী গুলো ঘুরেফিরে, আপেক্ষিক তত্ব, হাইপার জাম্প, ভবিষ্যতের মানুষ, রোবট, ব্ল্যাক হোল ইত্যাদি বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ব বা ফ্যান্টাসি ব্যাবহার করে লেখা হয়।

আপনি যেই তথ্য পেয়েছেন, বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন লেখক তাদের লেখায় এই তথ্যগুলো বিভিন্ন নামে ব্যাবহার করে কাহিনীর প্রয়োজনে ।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: গামা লেভেলের জ্ঞান পেলেতো সমস্যা ভাই। লেখালেখি, হাসা, কান্না মানবিয় গুণাবলি কিন্তু হারিয়ে ফেলতে পারেন গল্পের নায়কের মত !!!
পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অনেক।

সেই জ্ঞান আমি সারা জীবনের জন্য চাই নি। বড় জোর এক সপ্তাহ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

কাছের-মানুষ বলেছেন:
সুপার পাওয়ার এক সপ্তাহ পেলেই যথেষ্ট আমিও মনে করি।

আবারো ধন্যবাদ রইল।

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫২

নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানুষ যখন পরমানু ,ইলেক্ট্রন,নিউট্রন, প্রোটন নিয়ন্ত্রন করতে পারবে আমার বিশ্বাস মানুষ অতীত, ভবিষ্যৎ দেখতে পাবে। মানুষের জন্য এটাই হয়তো জ্ঞানের শেষ সীমা হবে।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪০

কাছের-মানুষ বলেছেন:
হুম, সমস্যা হল আমাদের উন্নয়নের সাথে প্রযুক্তি বিমুখতা। বর্তমানে সবাই সোসাইল নেটোয়ার্ক নিয়ে এত ব্যাস্ত যে জ্ঞান বিজ্ঞান খুবই কম মানুষ চর্চা করছে , তাছাড়া বর্তমান ব্যাবস্থা মৌলিক কাজের জন্য উপযোগী নয় , যেমন আইনস্টাইন নতুন পাবকেশন ছাড়া প্রায় সম্ভবত ১০/১২ ছিলেন এক পর্যায়ে, ভাল কিছুর জন্য সময় লাগেই, কিন্তু বর্তমানে কোন গবেষক এত দ্বীর্ঘ বিরতি নিলে চাকুরিচূর্ত হতেন, তাই বলা যায় বর্তমান ব্যাবস্থা মৌলিক কাজের জন্য মনে হয় ততটা উওপযোগী নয় ! তাই জ্ঞান বিজ্ঞান কত দূর যাবে সেটা বলা মুশকিল।

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

৭| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: :) কাছের-মানুষকে ধন্যবাদ।।


আপনার আগের পোস্টগুলোর নওজোয়ান শব্দটা দারুন। আরো বেশী ভ্রমন কাহিনী চাই।

০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ৩:০৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: হা হা, তাই নাকি!
ধন্যবাদ আগের পোস্টও পড়ার জন্য।
হুম, একটু ব্যাস্ত আছি, ব্যাস্ততা কমলে দিব আবার ভ্রমন পোস্ট।

৮| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: গল্পটা বেশ ভাল লেগেছে। অনেকগুলো আইডিয়া, থিউরি একসাথে নিয়ে এসেছেন। ব্যাখ্যাগুলোও বেশ বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে।

উপরের ব্লগার ক্স এর ৪ নং মন্তব্যের জের ধরে বলছি, ওমেগা জ্ঞানের শেষ পর্যায় আর গামা মধ্যম পর্যায় এটা ঠিক না। লেখক হুমায়ূন আহমেদ এর ভাষ্যমতে, জ্ঞানের শেষ পর্যায়ের নাম হচ্ছে ওমেগা পয়েন্ট; কিন্তু ওমেগা পয়েন্ট জ্ঞানের শেষ পর্যায় নয়। এটা শুধুই একটা নাম। খুব সম্ভবত নামকরনের এই ধারণাটি এসেছে গ্রিক বর্নমালা থেকে। গ্রিক বর্নমালা প্রথম অক্ষর আলফা, আর শেষ অক্ষর ওমেগা। তাই জ্ঞানের সর্বোচ্চ পর্যায়কে ওমেগা নামকরন করেছিলেন। এটা শুধুই একটা নাম। আর এই গল্পে, লেখক গামা লেভেলকে জ্ঞানের শেষ পর্যায় ধরেছেন, এটাও শুধুই একটা নাম বৈ কিছু নয়। এমন অন্যকোনো লেখক, 'পাই লেভেল', 'জেড লেভেল' অথবা 'ঝ লেভেল' ইত্যাদিকেও জ্ঞানের শেষ পর্যায় ধরে গল্প সাজাতে পারেন।

একটা প্রশ্ন ছিলো, তারা যদি বিলিয়ন বছরের জ্ঞানের সাধানা করে গামা লেভেলে পৌঁছেই যাই যেখানে তারা বিভিন্ন কোয়ার্ককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করার জন্যে ইসাইকে কেন পৃথিবী থেকে (হোক, শুধু তার কনসাশনেস) নিয়ে যেতে হবে? ডিএনএ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় জ্ঞানতো তাদের জানা থাকারই কথা?

যাই হোক, আগের পড়া দুইটা গল্পের চেয়ে এটা বেশি ভাল হয়েছে। শুভকামনা রইল। আপনি তো ধীরে ধীরে আমার প্রিয় লেখক হয়ে যাচ্ছেন! আপনার ফেসবুক আইডিটি কি দেয়া যাবে?

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন। 'ওমেগা', 'গামা' ইত্যাদি এই বর্ন মালাগুলো যে কোন কিছু দিয়ে গল্প সাজানো যায়। অনেক দিন আগে একটি গল্প পড়েছিলাম লেখব সমবত আইজ্যাক এসিমোভ ছিল, তিনি বিভিন্ন গ্রহের নাম করনে, 'থিটা', 'পাই' ইত্যাদি ব্যাবহার করে গল্প সাজিয়েছিলেন।

আপনি ঠিক বলেছিলেন ইসাইকে না আনলেও পারত, ডি,এন,এ সম্পর্কিত তথ্য তাদের কাছে ছিল লজিক্যালি ধরে নেয়া যায়। তারপরও মানুষের কথাই যদি চিন্তা করি মানুষ যখন কোন বিপদে পড়ে তখন খরকুটো আটকে ধরেও অনেক সময় বাচতে চায় (সফল হবে না জেনেও)! এখানেও ব্যাপারটি এমন ভেবে নেওয়া যায়, 'গামা লেবেলরা' নিজেদের চূড়ান্ত সঙ্কট থেকে নিরসনের জন্য ইসাইকে নিয়ে এসেছিল, তারা দেখতে চেয়েছিল ইসাই যখন ভয় পায়, কথা বলে,হাসে তখন ডি,এন,এর চেইনে কোন পরিবর্তন হয় কিনা। ব্যাপারটি অনেকটা মানুষের খরকুটো ধরে আটকে বাচার মত অনেকটা বা নিজেদের সান্ত্বনার জন্যও বলা যায়।

৯| ০১ লা মে, ২০২০ রাত ১০:৫৪

শের শায়রী বলেছেন: একটু দেরীতে হলেও দারুন একটা গল্প পড়লাম। অনেক কিছুই পড়তে পড়তে মাথায় ঝিলিক দিয়ে গেল। তার মাঝে অন্যতম প্যারালাল ইউনিভার্সের চার লেভেল। যদিও আপনার এখানে মুলতঃ মেয়েটির রূপ পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, আমি একটু অন্য ভাবে যাই....

এরকম একটি ধারণা শুনতে খুব আজব এবং অকল্পনীয় মনে হলেও কল্পকাহিনীর সৌজন্যে ‘প্যারালাল ইউনিভার্স’ শব্দযুগল আমাদের খুব পরিচিত হয়ে উঠেছে। কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান এই ধারণাটিকে সমর্থন করে। তবে প্যারালাল ইউনিভার্স কোনো মৌলিক তত্ত্ব নয়, অনেকগুলো তত্ত্বের অনুসিদ্ধান্ত হিসেবে এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সবচেয়ে সহজ জ্যোতির্বিদ্যার মডেলটি ধারণা করে, ১০^(১০^২৮) মিটার দূরের একটি গ্যালাক্সিতে আপনার একজন যমজ (টুইন) রয়েছে। এই দূরত্বটি এতোই বিশাল যে এটি অনুমান করাও কঠিন। দূরত্বটি পরিমাপ করা হয়েছে সম্ভাব্যতার প্রাথমিক ধারণা থেকে যেখানে ধরেই নেওয়া হয়েছে স্পেস বা স্থান আকারে অসীম। অসীম স্পেসে সবচেয়ে অকল্পনীয় ব্যাপারগুলোও ঘটার সম্ভাবনা থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অসীম স্পেসে অসীম সংখ্যক বাসযোগ্য গ্রহ থাকতে পারে। সে গ্রহগুলোতে অসীম সংখ্যক মানুষ থাকতে পারে যাদের মধ্যে অনেকেই দেখতে একই রকম। আপনার মতোই তারা একই রকম ঘটনা ও স্মৃতির মধ্যে বড় হতে পারে যারা জীবনে একইরকম প্রতিটি সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছে।

আপনার সাথে এরকম কোনো যমজের দেখা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ সর্বোচ্চ যতদূর পর্যন্ত আমরা দেখতে পাই তা হচ্ছে বিগ ব্যাংয়ের পরের প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর ধরে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করতে পেরেছে। সবচেয়ে দূরের যে বস্তুটি আমরা দেখতে পাই তা প্রায় ৪*(১০^২৬) মিটার দূরে অবস্থিত। এই দূরত্বটি আমাদের দিগন্তের সীমানা দেখিয়ে দেয়। এই দূরত্বের ভেতরের পুরো স্থানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হাবল ভলিউম’। একইরকমভাবে, আপনার প্রতিটি যমজের মহাবিশ্ব এরকম একটি সীমানায় নির্ধারিত। এটাই প্যারালাল ইউনিভার্সের সবচেয়ে সোজাসাপটা উদাহরণ। প্রতিটি মহাবিশ্বই একটি মাল্টিভার্সের ছোট উপাদানমাত্র।

এই সংজ্ঞা দেওয়ার পরে অনেকে হয়তো মাল্টিভার্স ব্যাপারটিকে চিরতরে ‘মেটাফিজিক্সে’র কাতারে ফেলে দেবেন। কিন্তু ‘ফিজিক্স’ আর ‘মেটাফিজিক্সে’র মাঝের দেয়ালটা সংজ্ঞায়িত হয় একটা তত্ত্ব পরীক্ষামূলকভাবে প্রমাণ করা যায় কিনা তার উপর; এটা কতটুকু অদ্ভুত তার উপর নয়। সময়ের সাথে পদার্থবিজ্ঞানের সীমানা প্রসারিত হতে হতে তা অনেকগুলো বিমূর্ত ধারণাকে গ্রহণ করেছে যেমন: অদৃশ্য তড়িৎ চুম্বক বল, সময়ের আপেক্ষিকতা, কোয়ান্টাম সুপারপজিশন, স্থানের বক্রতা, ব্ল্যাক হোল ইত্যাদি। বিগত কয়েক বছর ধরে মাল্টিভার্সের ধারণাটিও এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। রিলেটিভিটি আর কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মতো মৌলিক তত্ত্বগুলোতে এটি বেশ প্রতিষ্ঠিত। একইসাথে ধারণাটি গবেষণামূলক বিজ্ঞানের দুইটি প্রধান শর্তই পূরণ করে: এটা অনুমান করতে পারে এবং তাকে মিথ্যা বর্ণনা করা যায়।

বিজ্ঞানীরা প্রধানত চার ধরনের ভিন্ন লেভেল নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। তাই মূল প্রশ্নটি প্যারালাল ইউনিভার্স আসলেই সম্ভব কিনা তা নয় বরং এর প্রকৃতি কেমন সেটা।

যাই হোক আর কথা না বাড়াই দারুন এক পোষ্টে ++++

০২ রা মে, ২০২০ রাত ১১:৩৫

কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার কমেন্ট।

প্যারালাল ইউনিভার্স চমৎকার একটি বিষয়। আমি এর আগে এগুলো নিয়ে লিখেছি ব্লগে, আমার ৭ পর্বের একটি ধারাবাহিক লিখেছিলাম এই বিষয়গুলোর উপর "মহাজগৎ, সৃষ্টি এবং স্রষ্টা" নামে, সেখানে আধুনিক কসমোলজি, ছায়াপথ এবং গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি যেভাবে, আপেক্ষিক তত্ত, স্টিফেন হকিং এর দুটা বই এই আলোচনা, বিবর্তন তত্ত্ব ইত্যাদি নিয়ে লিখেছিলাম। তাছাড়া প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়েও লিখেছি আলাদা পোষ্টে। তাই বিষয়গুলো আমাকে খুব আকৃষ্ট করে।

আমার আধুনিক কসমোলজি নিয়ে পড়ার এবং জানার অনেক আগ্রহ আছে সবসময়।
আপনার মন্তব্যে অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে ।

ধন্যবাদ অসংখ্য।

১০| ০২ রা মে, ২০২০ রাত ১১:৫০

শের শায়রী বলেছেন: সেই সাত পর্বের লিংক দেন পড়ব সময় করে, আমার খুব ইন্টারেষ্ট এই সব ব্যাপারে।

০২ রা মে, ২০২০ রাত ১১:৫৯

কাছের-মানুষ বলেছেন: মহাজগৎ, সৃষ্টি এবং স্রষ্টা সিরিজ

১১| ০৩ রা মে, ২০২০ রাত ১২:২৭

আখেনাটেন বলেছেন: আপনার বহু আগের এই গল্প পড়ে বেশ মজা পেলুম। ইসাই মিঞার পরের পর্বও আনুন। :D

০৩ রা মে, ২০২০ রাত ১২:৩৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: এত আগের গল্পটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

দেখি লেখতে পারি কিনা আবার ইসাই মিঞাকে নিয়ে!! আপাদত একটা সাইফাই উপন্যাস লেখা শেষ করেছি, এখন সেটাকে নিয়ে রিভিশন দিচ্ছি, কিছু পর্ব বাড়াচ্ছি। এগুলো শেষ করলে আবার লেখতেও পারি! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.