নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asrafulalam

ব্যোমকেশ বাবু

ব্যোমকেশ বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যরকম ভালোবাসার গল্প

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:১৩



নির্দয় , বিকৃত আসামি বদরুল আর গুলশান হামলায় জড়িত আরেক ঠান্ডা মাথার খুনি তাহমিদকে কারাগার এর একই কক্ষে রাখা হলো । বিশেষ নির্দেশে এই বিশেষ বেবস্থা । কারাগারের এই রুমটির মধ্যে আবার একটা বিশাল সাইজ এর LED টিভিও আছে । টিভির স্ক্রিনে হাসপাতালের ICU থেকে খাদিজাকে liVE দেখা যাচ্ছে । বদরুল টিভির দিকে মোটেই তাকাচ্ছে না, শুধু মুখে বিচ্ছিরি গালি গালাছ করছে । তাহমিদ টিভিতে খাদিজার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে । নাকে মুখে পাইপ লাগানো মেয়েটার কিছুই তেমন দেখা যাচ্ছে না । শুধু লাইভ সাপোর্ট এর বিপ শোনা যাচ্ছে ।

বদরুল বা তাহমিদ কেওই কারো সাথে কথা বলছে না । নিজেদের দিকে তাকাচ্ছেও না । হটাৎ করে তাহমিদ যেন খাদিজাকে নড়ে উঠতে দেখলো । মুখ থেকে নিজের অজান্তেই বের হয়ে গেলো Oh Jesus. বদরুল ভ্রু কুঁচকে বললো, কি বললি তুই , হারামজাদা আবার বল । তাহমিদ বুজতে পারলো বদরুল খেপে আছে । তারাতারি করে তাহমিদ বললো , Sorry Sorry আমি বুজতে পারি নি । বদরুল কম যায় না , চিৎকার করে বললো আর একবার যদি আওয়াজ করোস তো চাপাতির কোপ মাটিতে পরবে না । তাহমিদ মুচকি একটা হাসি দিলো ।বদরুল এই হাসির অর্থ বুজলো না বা বোঝার চেষ্টাও করলো না ।

কিন্তু এই ঘটনার পরও তাহমিদ কোনো ভাবেই খাদিজার ICU এর লাইভ টেলিকাস্ট থেকে চোখ সরাতে পারছে না ।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।বদরুল কিছুই বুজতেসে না , তাহমিদ এই রকম হা করে কেন মৃত প্রায় মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে । তাকিয়ে থাকতে থাকতে , তাহমিদের চোখে কখন পানি চলে এলো , নিজেই বুজতে পারলো না । তাহমিদ কান্নার পানি টুকু মোছার চেষ্টা করলো না । টপ টপ করে তাহমিদের চোখ থেকে পানি ঝরছে ।পুরো রুমটাতে তাহমিদের কান্নার পানি পড়ার শব্দ আর খাদিজার ICU এর লাইফ সাপোর্ট এর বিপ ছাড়া বাকিটা পিনপন নীরবতা ।

করাপক্ষ বদরুল আর তাহমিদের রাতের খাবার এর সাথে একটা লম্বা চাপাতি দিলো , খাবার এর চাপাতি না ,ছুরি জাতীয় চাপাতি ।বদরুল আঁতকে উঠলো এই চাপাতি দেখে , এটা হুবহু সেই চাপাতি যেটা দিয়ে সে খাদিজাকে কুপিয়েছে ।দুজনের কেয়ই বুজলো না রাতের খাবারের সাথে ছুরি চাপাতি দেবার মানে কি ? অবশ্য দুই জনের কারোরই এই সব বোঝার মতো অবস্থা নেই । এদিকে টিভির স্ক্রিনে খাদিজার নড়াচড়া স্পষ্ট ধরা পড়লো । এইবার বদরুল জিনিসটা লক্ষ্য করলো আর সাথে সাথে দুই হাত জড়ো করে বললো " আল্লাহ এই বার বাঁচাইয়া দাও , আমার ভুল হয়েছে, অনেক বড় ভুল "

তাহমিদ নেড়ে ছোড়ে বসলো, বদরুলের দিকে তাকালো আর ভুরুটা কুঁচকে রাখলো । কোনো এক অদৃশ্য কারণে বদরুল এর এই কথাটা তাহমিদ মেনে নিতে পারছিলো না । তাহমিদের মনে হলো , মৃতপ্রায় খাদিজার জন্য বদরুল কোনো ভাবেই যোগ্য ছিল না, নাকি এই ঘন্টা খানেক সময়ের মধ্যে তাহমিদ খাদিজার জন্য অন্যরকম কিছু বোধ করছে ?এর কোনো উত্তর পেলো না তাহমিদ । চুপ করে থাকলো ।

তাহমিদের আচরণ মোটেই ভালো লাগছে না বদরুলের । এই রকম আচরণের সাথে বদরুল পরিচিত না , তবে সে নাটক সিনেমায় দেখেছে বড়লোকের ছেলে পেলেদের এই রকম করতে ।দুই জনের চোখ হটাৎ করে চাপাতিটার দিকে গেলো ।এর মাঝে টিভি স্ক্রিনে দেখা গেলো খাদিজা উঠে বসলো , ডাক্তার এসে সব চেক করে বললো "খাদিজা এখন ভালো আছে" । বদরুল এর চোখ দিয়ে পানি নেমে এলো ।

সকালে জেলার সাহেব বদরুল আর তাহমিদের রুমে ঢুকলেন, দেখলেন রক্তাক্ত অবস্থায় বদরুল মেজেতে পড়ে আছে আর তাহমিদের হাতে রক্ত মাখা চাপাতি । জেলার সাহেব দেখেও না দেখার ভান কর তাহমিদকে বললেন " চলো তোমার জামিন হয়ে গেছে /

তাহমিদ জামিন শেষে মায়ের সাথে গাড়িতে উঠে হটাৎ মাকে বললো " আম্মু আমি হসপিটালে যাবো , খাদিজা যেই হসপিটালে আছে ওই খানে " । তাহমিদের মা একটা দীর্ঘশাস ফেলে ড্রাইভারকে বললো গাড়ি ঘুরিয়ে হসপিটালের দিকে যেতে আর মনে মনে ভাবলেন, ছেলে আমার ঘরে ফিরে আসছে এটাই সব, বরং ছেলের এই আচরণে তিনি মনে হলো খুশিই হলেন ।

ছেলেটাকে তো আর কেও জঙ্গি বলবে না ।

খাদিজা মাত্র চোখ খুললো , অনেক গুলো মাঁনুষ এর মাজে , সে তাহমিদকে দেখলো । কেন জানে না , হটাৎ করে মনে হলো , ছেলেটা একটু অন্য রকম ।

((তাহমিদ , বদরুল এর চেয়ে হিংস্র এবং পেশাদার খুনি।খাদিজাদের ভাগ্য ঘুরে ফিরে, চাপাতির নিচেই যায় । সমাজ তাহমিদদের মাফ করে দেয় আর খাদিজারাও তাহমিদের মতো ছেলেদের প্রেমে পরে .....))

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১০

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: ভালোই লিখেছেন।

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৫৫

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: হুম, অন্যরকম, ভাল... :)

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:৫৬

ভ্রান্ত বিলাস বলেছেন: বদরুল খারাপ কাজ করলো। তাহমিদ কি তাহলে ভালো করলো। কেন ভালো করলো। বিকৃতির লক্ষন স্পস্ট। গুলশানের তান্ডবের জিহাদি তাহমিদ, বদরুলের কাজই গুলশানে করে এখন ভালো ছেলে !!!!!!! তাহমিদকে ভালো বানানোর প্রচেস্টা চলে নাকি?

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫১

ব্যোমকেশ বাবু বলেছেন: তাহমিদ , বদরুল এর চেয়ে হিংস্র এবং পেশাদার খুনি।খাদিজাদের ভাগ্য ঘুরে ফিরে, চাপাতির নিচেই যায় .....সমাজ তাহমিদদের মাফ করে দেয় আর খাদিজারাও তাহমিদের মতো ছেলেদের প্রেমে পরে .....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.