নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asrafulalam

ব্যোমকেশ বাবু

ব্যোমকেশ বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জঙ্গি দমন ও মেরুদন্ডহীন প্রাণীর কথা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৪:৫১


প্রায় প্রতি মাসেই আমেরিকার কোনো না কোনো শহরে শেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাজ্ঞ মারা যাবার ঘটনা নিত্য নৈমিত্তক একটা ব্যাপার । কিন্তু এই ইস্যু নিয়ে এই দেশের বেশির ভাগ মানুষের তেমন একটা ভ্রূক্ষেপ নেই । যদিও প্রতিটি পুলিশের কোমরের বেল্টে পিস্তলের ঠিক ছয় ইঞ্চি পেছনেই একটা ইলেক্ট্রিক গান থাকে । চাইলেই এই ইলেকট্রিক গান ব্যবহার করে রীতিমতো মেরে ফেলা থেকে বাচাতে পারে এখানকার পুলিশরা ।কিন্তু এই সহজ কাজটি এখানকার পুলিশরা খুব একটা করতে চায় না । আমার জানা মতে এই ধরণের হত্যার জন্য কোন পুলিশের এখনো চাকরি পর্যন্ত যায়নি । এখন ভাববার বিষয় হলো যে দেশে ট্রাম্পের মতো প্রেসিডেন্টকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেবার উপক্রম সেখানে কেন পুলিশের এই আচরণে প্রশাসন কিছু করে না ?

নিউইয়র্ক বা লন্ডনের মতো কসমোপলিটন শহরে দুনিয়ার নানা জাতের মানুষের বসবাস । আফ্রিকান জাপানি ইন্ডিয়ান চাইনিজ নানা জাতের মানুষের চেহারার গঠন আর শারীরিক আচার-আচরণ বেশ ভিন্ন । এতটাই ভিন্ন যে এখানকার আফ্রিকান মাইগ্রান্টদের আচার আচরণ দেখলে আমার আপনারও ভয় লেগে যেতে পারে । তবে এরা বেশির ভাগই নিরীহ । সমস্যা একটাই । যখন কোনো আফ্রিকান মাইগ্রান্টকে পুলিশ হাত তুলে দাঁড়াতে বলে তখন সে দৌড়ানো শুরু করে । ঠিক কি কারণে এরা দৌড়ায় এটা কারোরই জানা নেই । আর পুলিশের কাজ দোড়ানো মাত্র গুলি করা । এখন উপড় থেকে ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করলেও কোনো ভাবেই পুলিশকে দোষ দেয়া যাবে না । কারণ এখানকার পুলিশ যখন কাওকে থামতে বলে তখন হাত পর্যন্ত নাড়ানো যায় না । দৌড়ানো তো দূরের কথা । এই পর্যন্ত যত কৃষ্ণাজ্ঞ নিরীহ মানুষ শেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে মারা গেছে প্রায় সবাই অযথাই দৌড় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ।

সাম্প্রতিক দেশে জঙ্গি দমনের নানা ভিডিও নিয়ে নানা মহলের নানান মন্তব্য । অনেকে একে সাজানো নাটক বলে মানছেন । কিন্তু একই ধরণের অপরাধ এর দমন তো প্রায় একই রকম হবে । তাই না ? পালিশ বা সোয়াত এরা তো একই রকম ভাবেই জঙ্গি দমন করবে । কারণ আমেরিকার কালোদের মতো আমাদের দেশের জঙ্গিরাও ঠিক কি কারণে সবসময় আত্মঘাতী হচ্ছে তা বোধগম্য নয় । চাইলেই নিজে মারা না গিয়েও অন্যের ক্ষতি সাধন করা যেতেও পারে । আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে আমাদের ভাববার দৃষ্টিভঙ্গি । আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যা করছে এরপর মৃত জঙ্গিদের পক্ষে কি কেও কিছু বলছে বা তাদের আত্মীয় স্বজনরা কি বলছেন যে তাদের প্রতি অন্যায় হয়েছে ? যদি মানেন এরা সবাই জঙ্গি তাহলে প্রশাসনের পদক্ষেপকে অন্তত উল্টো চোখে দেখা উচিত নয় । ভিডিও ফুটেজে যদি দেখা যেত জঙ্গিরা সুইসাইডাল ভেস্ট পরে বসে আছে আত্নস্মর্পনরত জন্য তাহলে কি পুলিশের উচিত হতো জঙ্গিদের কাছে যাওয়া ?

ভিন্নমত থাকতেই পারে । এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো । মানুষে জীবনের অধিকার নিয়ে কথা বলাই তো মানবিকতা । তবে ঠিক আমরা যেভাবে জঙ্গি দমন অপেরেশন গুলোকে দেখি যারা আর্মি বা পুলিশের মাঝে আছেন তারা ওই ভাবে দেখেন না । কারণ আমার আপনার অফিসের কাজের ধরণ যেমন একজন আর্মি অফিসার সঠিক ভাবে বুজবে না আমরাও একজন আর্মি অফিসার এর কোড বা নিয়ম নীতি বুজবো না । যারা বাংলাদেশ আর্মিতে কমিশন পদের জন্য আবেদন করছেন তারা জানেন আবেদনের প্রথম দিন কি নিদারুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় প্রতিটি আবদেনকারীকে । যা ওই দিন হয় তা যদি সাধারণ কোনো মানুষকে বলা হয় তাহলে সাথে সাথেই এই প্রক্রিয়াকে প্রচন্ড অমানবিক বলে লিখা লিখি শুরু করে দেবেন । যা আমার আপনার কাছে নিয়ম লঙ্ঘন তা অন্যের কাছে হয়তো নিয়ম । এটাই ব্যালান্স অফ ডেমোক্রেসি । সবাই সব কাজ করবে না । একজন কবির কখনো কমান্ডো হবার স্বপ্ন দেখা উচিত নয় । কারণ এতে রোল কনফ্লিক্ট হতে পারে ।

টাকা পয়সার দিক থেকে মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলো বেশ ধনী । কিন্তু উন্নত দেশের তালিকায় এই দেশ গুলোর নাম নেই । এর কারণ টাকা পয়সা গুলোর সমবন্টন নেই এই দেশ গুলোর । একটা দেশের উন্নত হবার পেছনে টাকা পয়সার সমবন্টন যেমন প্রয়োজনীয় ঠিক তেমনি জ্ঞানের সমবন্টনও প্রয়োজন । অর্থাৎ দেশের সবাই যখন এক সাথে একই চিন্তা করতে পারবে ঠিক তখনি একটা দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে । যেমন আমেরিকা বা ইউরোপে বেশির ভাগ মানুষ জন মোটামুটি একই রকম ভাবে ভাবতে পারে । একই রকম ভাববার জন্য জানতে হয় ভাববার নিয়ম কানুন । যদি সাধারণ নিয়ম কানুন এবং রোল ডেফিনেশন জানা থাকে তাহলে কখনোই অন্য কারো দায়িত্ব নিয়ে গল্প বানানোর চিন্তা মাথায় আসবে না ।

সম্ভবত সাধারণ মানুষের পক্ষে এই অসাধারণ গল্প গুলুকে হজম করতে সমস্যা হচ্ছে । মানুষের চিন্তা ধারার সীমাদ্ধতা তার বেড়ে উঠার পরিবেশের উপর নির্ভর করে । প্রায় সব সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা সটান বা মেরুদন্ড একেবারে সোজা করে হাটতে পারে । যেখানে বেশির ভাগ আমরা এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না । একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন আমাদের বেশির ভাগ যখন দাঁড়ায় তখন একটু হেলে থাকি । একটু হেলে থাকা মানুষের পক্ষে সটান দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের চিন্তা ধারা করাটা এতো সহজেই হবার কথা নয়।

ধন্যবাদ সটান দাঁড়াতে পারে এই মানুষ গুলোকে । আর যারা এখনো জঙ্গি দমন গল্পের নানা দিক ব্যাখ্যা করে চলছেন তাদের বলছি । আয়নায় আগে দেখুন আপনি যখন দাঁড়ান তখন বেঁকে থাকেন কিনা ? মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকা এতো সহজ কাজ নয় । চেষ্টা করে দেখতে পারেন ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৬:৫০

তোমার জন্য মিনতি বলেছেন: ভালো বলেছেন। ভালো লাগলো আলোচনা

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩

টারজান০০০০৭ বলেছেন: কথা খারাপ কন নাই। তয় জজ মিয়া থেইকা শুরু কইরা ক্রসফায়ারের যেসব যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত হইছে জনগণেরও খুব একটা দোষ দেওন যায় না। প্রত্যেক মৃত্যুই কষ্টের। আহ ! :(

৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৩১

আহা রুবন বলেছেন: দেশের সবাই যখন এক সাথে একই চিন্তা করতে পারবে ঠিক তখনি একটা দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে । আমাদের মূল সমস্যাটা তো সবাই আমরা :-B দার্শনিক!

৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

আহমেদ জী এস বলেছেন: ব্যোমকেশ বাবু ,




ভালো লিখেছেন ।
সহব্লগার "আহা রুবন" এর সাথে একমত ---- দেশের সবাই যখন এক সাথে একই চিন্তা করতে পারবে ঠিক তখনি একটা দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ।
আমাদের মূল সমস্যাটা তো সবাই আমরা :-B দার্শনিক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.