নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asrafulalam

ব্যোমকেশ বাবু

ব্যোমকেশ বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের বাংলাদেশ দখল : ফ্যাক্ট শিট ও নিয়মাবলী

১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:১৮


শেষ কবে আপনি বাংলাদেশের মানচিত্রের দিকে তাকিয়েছেন ? খুব সম্ভবত প্রাইমারি স্কুলে থাকাকালীন। একবার আবার দেখুন। এবার অন্যভাবে । অবাক হবেন । ভারত আর বাংলাদেশের মানচিত্রে দুটি চিকেন নেক বা সুক্ষ রেখা আছে যার একটি শিলিগুড়িতে আর একটি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফেনীতে । শিলিগুড়ির এই সুক্ষ রেখাটাই ভারতকে এর উত্তর পূর্ব প্রদেশের সাথে আটকে রেখেছে । এই একটি মাত্র পথ ছাড়া মূল ভারতের পক্ষে এর উত্তরের সাতটি প্রদেশের সাথে যোগাযোগ প্রায় অসম্ভব । তবে আরেক ভাবে সম্ভব । যদি বাংলাদেশের উপর দিয়ে যায় তবে । ঠিক একই জিনিসটি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ফেনীতে । চট্টগ্রামের এই অংশে বাংলাদেশ ভারতের সীমানা রেখা এতটাই কাছাকাছি যা রাস্তা থেকে দেখা যায় । একপাশে ভারতের বর্ডার আর অন্য পাশে বঙ্গপোসাগর । এই ধরণের চিকেন নেক সীমারেখা যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য খুবই স্পর্শকাতর । কারণ সুক্ষ এই রেখাটা যদি কেটে যায় চট্টগ্রাম যেমন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বাংলাদেশ থেকে ঠিক তেমনি ভারতের উত্তর পশ্চিমের সাতটি রাজ্য । সাধারণ আমরা এই ব্যাপারটিকে হালকা ভাবে নিলেও সামরিক বাহিনী কখনই এইগুলোকে হালকা ভাবে নেয় না। ব্যাপারটা সাবভৌমত্বের।


ফ্যাক্ট নম্বর এক । কলকাতা থেকে ভারতের উত্তর পূর্ব শহরে যেতে হলে শিলিগুড়ি দিয়ে ঘুরে যেতে হয় । যাতে সড়কপথে সময় লাগে প্রায় ২৭ ঘন্টা। আর যদি এই পথ বাংলাদেশের মাঝখান দিয়ে হয় তবে সময় লাগবে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা । আপনি যদি একজন ভারতীয় হতেন আপনি অবশ্যই চাইতেন এই পথ ১৬ ঘন্টার হোক । ভারতও অবস্যই এটি চাইবে । কিন্তু কেন এই পথের ব্যাপারে ভারত এতো দেরি করছে সেটিই প্রশ্ন । আমরা কখনোই চাইবো না আমাদের দেশের উপর দিয়ে এই রকম একটি পথ হোক । কিন্তু এতো দিন ভারত কেন চায়নি বা এখনই বা কেন এতো তাড়াহুড়ো করছে না ?

উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্য গুলো প্রচন্ড অস্থির । শিলং আসাম বা মিজোরামের মতো শহরগুলোতে এখনো সান্ধ্য আইন চলে । সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এই রাজ্যগুলো নিয়ে মুখ ভারত বেশ বেকায়দায় আছে । বিচ্ছন্নতাবাদ এতটা প্রকট কোনো ভাবেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না । আর পারার কথাও না । কারণ মূল ভারতের সাথে এই রাজ্য গুলোর তেমন একটা যোগাযোগ বা মিল কোনোটাই নেই । অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ মাঝামাঝি থাকায় ভারতের এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সরাসরি মূল ভারতের সীমানা চোখে দেখে না । আর বাংলাদেশ এদের কাছে বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্র । আমাদের সিলেটি ভাইরা অবাধে শিলং এর মতো শহরে ব্যবসা বাণিজ্য করছে । এই শহর গুলোর রেস্টুরেন্টে আমাদের বাংলা সিনেমার গান বাজে । অনেকটা বাংলাদেশ প্রিয় এই রাজ্যের বাসিন্দারা । সম্ভবত এই একটি কারণেই বাংলাদেশের সীমারেখা ভারতের কাছে এতো প্রিয় । কারণ আপনি যদি মানচিত্র থেকে বাংলাদেশকে মুছে দেন তাহলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ডার পড়বে আসাম বা শিলং এর সাথে । আর পশ্চিমবঙ্গ এখনো এই উগ্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ধকল সামলাতে প্রস্তুত নয় । সুতরাং বাংলাদেশের সীমারেখা অনেকটা মূল ভারতকে রক্ষা করছে সামরিকভাবে ।

ফ্যাক্ট নম্বর দুই । কিভাবে আপনি বুজতে পারবেন ভারত বাংলাদেশ কিনে নিয়েছে ( আপেক্ষিক ভাবে ) খুবই সহজ । যেহেতু ভারত বাংলাদেশেকে মানব বর্মের মতো রাষ্ট্র বর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে সেহেতু যতদিন ভারতের উত্তর পূর্বের সান্ধ্য আইন না উঠবে ততদিন অন্তত বাংলাদেশ নিরাপদ ।


ফ্যাক্ট নম্বর তিন । ভারত কেন বার্মাকেও বন্ধু রাষ্ট্র ভাবে ? কলকাতা থেকে মিজোরাম পর্যন্ত সড়ক পথে প্রায় তিন দিন লেগে যায় । তাই ভারত বার্মার উপর দিয়ে একটা সড়কপথ ব্যবহার করে এই দুরুত্ব কমাচ্ছে । যেহেতু বার্মার সড়কপথ ব্যবহার করছে সুতরাং বার্মার সাথে সম্পর্ক তো ভালো থাকবেই । কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে ভারত চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে চাইছে এই পথের জন্য । কারণ একটা জাহাজ কলকাতা না গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসলে সময় এবং খরচ দুটোই কমে যায় । এই জায়গায় সম্ভবত মূল সমস্যা । কারণ যেহেতু আগেই বলেছি চট্টগ্রাম একটা সুক্ষ চিকেন নেক বা শুরু রেখা দিয়ে বাংলাদেশের সাথে জড়িত সেহেতু চট্টগ্রামকে নিয়ে মাথা ব্যাথা হতেই পারে ।

তাহলে কিভাবে বুজবেন চট্টগ্রাম সামরিকভাবে অনিরাপদ একটা ভূখণ্ড ? বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সেনানিবাস গুলোর অবস্থান দেখুন । বুজতে পারবেন সমস্যা কতটা গুরুতর ।

ফ্যাক্ট নম্বর চার। কেন পচ্শিমবঙ্গ বাংলাদেশের সাথে মিশে যাচ্ছে না ? কারণ বাংলাদেশ যত বেশি কলকাতা ঘেঁষা হবে তত ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিশানায় পরিণত হবে । সুতরাং চাইলেই বাংলাদেশ কলকাতা হয়ে যেতে পারবে না । নিশ্চিন্ত থাকুন । লক্ষ্য করলে দেখবেন নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশকে আলাদা ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পক্ষে । এবং এটাই সামরিক ভাবে নিজেদের জন্য সুবিধাজনক অবস্থান ।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী হয়তো দেশবাসীকে পরিষ্কার করে দিবেন আসলে কি এমন সামরিক চুক্তি হয়েছে ভারতের সাথে । কিন্তু যারা বারবার বলছেন সামরিক চুক্তির কথা তারা কি একবার ভাবছেন না যে সামরিক চুক্তি দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মাঝে হয় । আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করাকেই দুই দেশের সামরিক বাহিনী প্রাধান্য দিবে । সামরিক বাহিনী কোনো ভাবেই চেইন অফ কমান্ড এর বাইরে যাবে না। যেমনটি দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে আমেরিকার বা জাপানের আছে অনেকটা ওই রকম । আর এই ধরণের কিছু হয়ে থাকলে ঐটা কখনই রাজনৈতিক কিছু না । ব্যাপারটা সামরিক ।

ভারত প্রীতি বা ভারত বিদ্বেষ এই দুটোই কিন্তু মানচিত্রের মাঝে আছে । যখনই আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে এই মানচিত্র গুলো নিয়ে ফ্যাক্ট সিট গুলো চেক করে নিবেন । উত্তর পেয়ে যাবেন । কারণ সমস্যা একদিনের না । এটি রবীন্দ্রনাথের আমল থেকে শুরু । ষড়যন্ত্র আগরতলা হলেও সাহায্য আসে অপর প্রান্ত থেকে । বুজতে হবে ।

https://www.quora.com/Can-India-develop-the-Northeast-without-the-help-of-Bangladesh
https://www.facebook.com/asraful.alam

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৪:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



সামরিক চুক্তি হয়তো হয়েছে; আপনাকে হেলমেট পরে রাস্তায় বের হতে হবে সব সময়।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৪:২৭

ব্যোমকেশ বাবু বলেছেন: কেন ভাই ?

২| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৪:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


কেন, কোন সময় ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ দখল করার শুরু করে, আপনি তো অগ্রিম জানবেন না।

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:০২

মাকার মাহিতা বলেছেন: গুগল ম্যাপে তো ডেইলি তাকানো হয়। বাংলাদেশের মানচিত্রে!

৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:৫৩

বনসাই বলেছেন: ফ্যাক্ট নম্বর পাচ- উত্তর-পশ্চিম ভারতের সাথে বাংলাদেশের সীমানা প্রাইমারি স্কুলের মানচিত্রে ছিল না, এখনও নেই।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:৫৯

ব্যোমকেশ বাবু বলেছেন: ধন্যবাদ ...ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য ....উত্তরপূর্ব করে দেয়া হয়েছে ...

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০১

পদ্মপুকুর বলেছেন: ফ্যাক্টশিট নিয়ে বসার দিন শেষ বস, এখন খালি আবেগ আর ধান্ধার সময়

৬| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৩৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পাকিস্তান আমলে মুসলিম লীগ সরকার, পরে সামরিক সরকারের কমন ডায়লগ ছিল ওরা দেশ বিক্রি করে ফেলবে, ভারত গিলে খাবে।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এক জনসভায় বলেছিলেন, ১৯৪৭ এর পর থেকেই তো ভারতের কাছে বিক্রি ই করতেছি। আর এখন নতুন করে বিক্রির বাকী আছে কি ?
ছোটকালে শুনেছিলাম মুজিবকে মারা না হলে ১৫ই আগষ্ট সকালেই মুজিব দেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিত।

৭১ এ পাকি সামরিক জান্তা ও দালালদের দের তো একই ডায়ালগ কথা তো সবাই জানে।
পরাজয়ের পর দেশে ফিরলে পাকিরা পুর্বপাকিস্তানে নাস্তানাবুদ হওয়ার কারন জানতে একটা বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন করেছিল। বিচারপতি হামিদুর রহমান কমিশন। এক সেনা কে সাখ্যাতকারে ডাকা হয়েছিল সেই সেনা নাকি একাই একহাজার মেরেছিল, তাকে জিজ্ঞেস করা হল - "কেন এই নিরিহ গ্রামবাসিদের মেরেছ"?
জবাবে সে বললো "আমাকে বলা হয়েছে, বাংগালী সবাই হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেছে, পুর্বপাকিস্তান ভারতে যোগ দিছে, এখন এরা সবাই দুশমন, তাই নিশ্চিন্তে এদের খতম করেছি"

এখনো মনে হয় এ দেশের কিছু মানুষ ১৬ কোটি মানুষকে মূর্খ মনে করে। তা না হলে এই২০১৭ সালে এসেও পাকিস্তানের মহব্বত ভুলতে পারছেন না। বেকুবের মত সেই পুরোনো আমলের পাকিস্তানী কবিতা পাঠ চলছেই ...

৭| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭

রহমান আসাদ বলেছেন: এত বিশদ জানা ছিল না। ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২৫

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: @কালবৈশাখী, একটা রাষ্ট্র আরেকটা রাষ্ট্রকে কিভাবে গিলে খায়?

৯| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০১

শোভন১ বলেছেন: "শিলং আসাম বা মিজোরামের মতো শহরগুলোতে এখনো সান্ধ্য আইন চলে ।"
- আমি গিয়েছি শিলং... ওরকম কোন সান্ধ্য আইন ওখানে চলছেনা।

" চট্টগ্রামের এই অংশে বাংলাদেশ ভারতের সীমানা রেখা এতটাই কাছাকাছি যা রাস্তা থেকে দেখা যায় । একপাশে ভারতের বর্ডার আর অন্য পাশে বঙ্গপোসাগর । "
- প্রাইমারী স্কুলে যে শেষবার ম্যাপের দিকে তাকিয়েছিলো, তার ওরকমই ধারনা হবে। ম্যাপে ওরকম চিকন দেখালেও বাস্তবে এতো চিকন না যে ওখানে দাঁড়ালে একপাশে বঙ্গোপসাগর, আরেকপাশে বর্ডার দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া যদি বাংলাদেশ দখল করতে পারতো, এতোদিন বসে থাকতোনা। বহু আগেই করে ফেলতো। আগা-মোটা গোড়া-চিকন ম্যাপ দেশ দখলের জন্য কোন সমস্যা না, আবার কোন প্রটেকশনও না। সমস্যা হলো বিশ্বের অন্যান্য দেশ আরেকটা দেশ দখল কখনো মেনে নিবেনা, এক ইঞ্চি জমি দখলও না।

১০| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:১৬

ইফতি সৌরভ বলেছেন: সমস্যা একদিনের না । এটি রবীন্দ্রনাথের আমল থেকে শুরু ।
অপেক্ষায় আছি শেষ দেখার ......

১১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৯

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: মানুষ কতো কিছু জানে, আমি কিছুই জানিনা :(

১২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫৫

টারজান০০০০৭ বলেছেন: "দেশতো কেবল ভূগোলের ব্যাপার , হাজার বছরে যার হাজার বার সীমানা পাল্টায়। আসল ব্যাপার হলো সময়ের প্রয়োজনে"-- জহির রায়হান।
ভারতের দেশ দখলের দরকার হবে যদি চীনের সাথে যুদ্ধ বাধে।কারণ বাংলাদেশ ও বার্মা , ভারত ও চীনের মধ্যে বাফার কান্ট্রি হিসেবে কাজ করে। বাফার কান্ট্রিগুলো সবসময় রিস্কের মধ্যে থাকে। ভারত যা চায় তাতো পাচ্ছেই। শুধু শুধু দখলের কি প্রয়োজন ! তবে সামরিক স্ট্র্যাটেজিতে কোনো বন্ধুরাষ্ট্র বলিয়া কিছু নাই। সব প্রতিবেশীই সিকিউরিটি রিস্ক হিসেবে গণ্য হয় এবং সামরিক বিন্যাসও সেভাবেই করা হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.