নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asrafulalam

ব্যোমকেশ বাবু

ব্যোমকেশ বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাসুক ভাইয়ের আইইএলটিএস

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫০


লন্ডন থেকে দেশে ফিরে পুরোপুরি বেকার। নিজের ইচ্ছেতে বিলেত ফেরত হবার সমস্যা হলো বাসা থেকে হাত খরচের টাকা পর্যন্ত চাওয়া যায় না। নিদারুন অর্থকষ্টে এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে গেলাম এক বড় ভাইয়ের কাছে। উনি আইবিএ থেকে এমবিএ করে একটা আইইএলটিএস সেন্টার চালাতো। বিশাল জ্ঞান গরিমা। কিন্তু কি কারণে চাকরি বাকরি ছেড়ে কচি কাচাদের নিয়ে উনার এই আয়োজন আজও আমার জানা হলো না। তীব্র ক্ষোভ ছিল আমার। কারণ উনার সেন্টার থেকেই আইইএলটিএস দিয়ে আমার এই অবস্থা। বিলেত ফেরত বেকার। সুতরাং উনাকে আমার বেকার জীবনের অবসান করতেই হবে। মামা বাড়ি আবদার।

সব শুনে আমার জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা হলো। কাঁচ ঘেরা রুমে। আমার কাজ ছিল কচি কাচাদের সাথে ফটফট করে ইংরেজিতে কথা বলা। এর জন্য বিশাল মাইনেও দেয়া হতো। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ ছিল ডজন খানেক কচি কাচার সাথে প্রায় একই রকম অঙ্গ ভঙ্গি করে ইংরেজি কপচানো। দিন কাল বেশ ভালোই যাচ্ছিলো।

ইংরেজি ক্লাসের এক টিচার না আসায় আমাকে বলা হলো উনার ক্লাসটি নিতে। ক্লাসে ঢুকে দেখি আমার পৃত্তিতুল্য সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। আমি বুজতে পারছিলাম না কি পড়াবো। সাধারণত ওই ধরণের ক্লাসগুলু ইউনিভার্সিটির বেশ যোগ্য স্যাররা নিতেন। ভয়াবহ অবস্থা। মুহূর্তে আবার বেকার হবার ভয় পেয়ে বসলো। ক্লাসে আবার বাংলায় কথা বলা নিষেদ। হাঁচি কাশি দিলেও ইংরেজিতে দিতে হতো।

শেষমেশ একটা উপায় বের হলো। ক্লাসের সবাইকে একটা করে ইংরজি গালি দিতে বললাম। যার যা মনে আসে। সবচেয়ে কমন ফ বর্গীয় গালিটা দিয়ে শুরু করলাম। পৃত্তিতুল্ল্য সবার হা করা মুখের চোয়াল জুলে পড়ার অবস্থা। প্রথমে শুরু করলাম আমি। ফ বর্গীয় গালিটা দিয়ে। মুখ থেকে বের করার পর বেশ সাহস বোধ করলাম। নিজের চাকরি হারানোর ভয় কিছুটা কমে আসলো। আশ্চর্য এই ফ বর্গীয় গালিটার মাঝে একটা জাদু আছে। একবার বলার পর বার বার বলতে ইচ্ছে করছে। এক সময় পৃত্তিতুল্ল্য সবাই আমার সাথে শুরু করলো ইংরেজিতে কঠিন কঠিন গালি গালাজ। এয়ার কন্ডিশন রুমের বাইরে শব্দ খুব একটা যায়না বিধায় রক্ষা। ওই দিন প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো আমরা সবাই ইংরেজির গুষ্টি উদ্ধার করলাম। সবার চোখে মুখে এক অনাবিল আনন্দ।

বড় ভাই জানলেন কিন্তু কিছুই বললেন না। এরপরের ক্লাসে ইউনিভার্সিটির স্যাররা এসে কি জানলেন তা নিয়ে আমার খুব একটা মাথা ব্যথা ছিল না। চাকরীটা রক্ষা হলো। ফিরে গেলাম কাঁচ ঘেরা রুমে। চিবিয়ে চিবিয়ে এলিয়ে বেলিয়ে ইংরেজি বলতাম। কচি কাঁচারা বেশ অবাক হয়ে শুনতো। বুজতো না এটা কি জাতীয় ইংরেজি। তাদের ধারণা ছিল স্যার যেহেতু লন্ডন থেকে আসছে অবশ্যই কঠিন ধাতের কিছু একটা হবে। দিন বেশ ভালোই ছিল আমার।

মাসুক ভাইয়ের ওই আইইএলটিএস সেন্টারটা এখনো আছে। আইডিপি অস্ট্রেলিয়ার চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চ। শত শত কচি কাঁচা পৃত্তিতুল্ল্য প্রতিদিন ইংরেজি শিখতে আসে এখানে। সবার চোখে মুখে থাকে লন্ডন আমেরিকার স্বপ্ন। অনেক নামি দামি ইংরেজি স্যাররা আসেন জ্ঞান গরিমা দেবার জন্য। তবে ফ বর্গীয় ইংরেজি গালি কজন শেখায় আমার জানা নেই। এটুকু জানি একবার মুখ থেকে এই শব্দটি বের করতেই পাওয়া যায় ভয়ঙ্কর এক সাহস। যেটা আমাদের অনেকের নেই বলেই আমরা ইনিয়ে বিনিয়ে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করি।

একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সাহস করে বলে ফেলুন। দেখবেন সব পরিষ্কার ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

সুমন কর বলেছেন: এ যেন, ফাঁকা রাস্তায় চিৎকার করে কাউকে ডাকার মতো...........হাহাহাহা

ভালো লিখেছেন।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

টারজান০০০০৭ বলেছেন: দাদা , আফনেতো সৃজনশীল দেহা যায় ! গালির সাথে এক্টিভিটিস দিলে এক্কেরে প্রাকটিক্যাল লার্নিং হইত ! হে হে হে ! :D

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

আল ইফরান বলেছেন: সবই অভ্যস্ততার বিষয়, একবার শুরু করলেই চর্চার মাধ্যমে রপ্ত হয়ে যায়।

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩২

সোহানী বলেছেন: হাহাহাহাহাহা............. ভালো বালেছেন!!!!!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.