নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asrafulalam

ব্যোমকেশ বাবু

ব্যোমকেশ বাবু › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্টুডেন্ট লোন , সময়ের দাবি

১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:০০



হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন " যদি শিক্ষার পেছনে খরচ করতে না পারো তবে অশিক্ষিত থাকতে পারো।" ভদ্রলোকের নাম ডেরেক বক। নিতান্তই বোকা ধরণের উক্তি। অন্তত আমাদের দেশের জন্য । তবে ভাগ্য ভালো উনি হার্ভার্ড এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। নইলে এতক্ষনে উনার ভয়াবহ অবস্থা হতো। আমেরিকা বা ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষা লোন নির্ভর। মানে কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়তে হলে ছাত্রদের হয় মেধা দিয়ে স্কলারশিপ নিতে হয় নাহয় লোন নিয়ে টুইশন ফি ভরতে হয়। এই লোন এর টাকা ছাত্ররা যখন লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে ঢুকে তখন মাসে মাসে অল্প অল্প করে শোধ করে। আর চাকরি না থাকলে না দিলেও চলে। মোটামুটি এই হলো উন্নত দেশের উচ্চশিক্ষার অর্থনীত।

আমাদের দেশে প্রায় সব সরকারি বিশ্ব বিদ্যালয় একেবারে ফ্রি। মানে তেমন কোনো টাকা পয়সা লাগে না। ফলাফল ১৫ টাকার ডাল ভাত আর ৩৫ টাকার বিছানা পাতি। ঠিক কি কারণে সরকার ১৫ টাকা্য় ভাত খাওয়ায় আর কি কারণে ছাত্ররা সেই ভাত খায় আমার জানা নেই । যেখানে মাথা পিছু আয় আমাদের হাজার ডলারের উপর। ছাত্রদের লোন নিয়ে লেখাপড়া করার কথা বলার মতো সাহস খোদ সরকারের আছে কিনা জানা নেই। অথচ এ নিয়ে কেউ কথা বলতেও রাজি না। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। কিন্তু কোন পর্যায়ের শিক্ষা পর্যন্ত এই মৌলিকতার ব্যাপ্তি তা কোথাও লেখা নেই। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা নিয়ে যেখানে সরকার হিমশিম খায় তখন উচ্চশিক্ষার পেছনে সরকার ঠিক কি কারণে টাকা লগ্নি করছে তা কারোরই জানা নেই। আমরা শুধু এটুকু জানি লেখাপড়া মানে ফ্রি।

উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্রদের লোন নেয়া বেশ যোক্তিক একটা ব্যাপার। এতে ছাত্ররা এক ধরণের কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যায় । তাদের মাথায় থাকে চাকরি করে এই দেনা পরিশোধ করতে হবে। অন্তত আমেরিকার মতো দেশে সরকার এমনটাই ভাবে। তবে এই ভাবনার সাথে আমার আপনার ভাবনার মিল নাও থাকতে পারে। যার ফলাফল হয়তো আমাদের অবাস্তব মুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। যেখানে ঘরে ঘরে এম বি এ পাশ করা ছাত্ররা বেকার। আমাদের দেশে যত এম বি এ পাশ করা ছাত্র বেকার আছে তা আমেরিকার মোট পাশ করা এম বি এ ছাত্রদের থেকে অনেক বেশি। যাই হোক যেহেতু ফ্রি তাই এম বি এ করা কোনো ব্যাপার না।

মৌলিক অধিকার এর সংজ্ঞা অনেক আগেই পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষা স্বাস্থ্য এই সব মৌলিক অধিকার ফ্রি তে পাবার সংজ্ঞা আদতে কোথাও ছিল কিনা জানা নেই। কারণ যে সব দেশের অনুকরণে আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সাজাই এদের কারোরই শিক্ষা বা স্বাথ্য কোনোটাই ফ্রি না। আমেরিকায় চিকিৎসা নিতে হলে ইন্সুরেন্স লাগে। নইলে আপনি মারা গেলেই কেউ টু শব্দটাও করবে না। হয়তো আমরা মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞা বুজতে ভুল করেছিলাম এক সময়।

ভুল সবারই হয়। তবে ভুল শিকার করে পরিবর্তন না করলে আরো ভয়াবহ ভুল হয়ে যেতে পারে। সরকার যে পরিমান অর্থ ১৫ টাকার ভাতের পেছনে খরচ করছে তা কতটা যোক্তিক ভাবার সময় এসেছে। কারণ ১৫ টাকার ডাল ভাত কখনই মৌলিক অধিকার হতে পারে না। আর সরকার কেন উচ্চশিক্ষার পেছনে টাকা লগ্নি করবে আর উচ্চশিক্ষিত ছাত্ররা বিদেশে এসে ট্যাক্সি চালাবে তার সঠিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। সরকারের ফ্রি সার্ভিস নিয়ে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে ইউরোপে আমেরিকার ভিসা নিয়ে বিদেশে পাড়ি জামালেই দায়িত্ত্ব শেষ হয়ে যায় না। আজকে যদি শিক্ষা লোণের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে এই সব ছাত্ররা বিদেশে এসে ট্যাক্সি চালানোর আগে অন্তত একবার ভাবতো। অথবা বিদেশে ভিসা পাবার আগে তাকে এই লোন শোধ করে আসতে হতো। খুব সম্ভব এটাই সরকারের মৌলিক অধিকার। সরকার তার লগ্নি করা অর্থ ফেরত চাইতেই পারেন। কারণ এই লগ্নি কৃত অর্থ আমার আপনার ট্যাক্স এর টাকা।

তারমানে ঘুরে ফিরে আমি আর আপনি মিলে একটা উচ্চশিক্ষিত জাতি তৈরী করছি যারা ভালো করে ইংরেজিও বলতে পারছে না আর যাদের বেশির ভাগের স্বপ্ন নিউ ইয়র্কের রাস্তায় ট্যাক্সি চালানো দিয়ে শেষ হয়। নিউ ইয়র্কে ট্যাক্সি চালাতে এম বি এ পাশ করতে হয় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেই চলে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের উচিত ছাত্রদের নানা রকমের অপশন দেয়া। যেমন মেধা . ছাত্র লোন অথবা অন্য কিছু। কিন্তু কোনোভাবেই ফ্রি সার্ভিস দেয়া উচিত না। ছাত্রদের ধ্যান ধারণাই হয়ে যাচ্ছে সব কিছুই ফ্রি আর সরকার ফ্রি দিতে বাধ্য। শুধু তাই নয় চাকরি ক্ষেত্রে নতুন কোটার ব্যবস্থা করলে আরো ভালো। যেমন যারা লোন নিয়ে পড়বে তাদের জন্য আলাদা কোটা। কারণ এই ছাত্ররা অন্তত অন্যদের চেয়ে একটা ভালো চাকরির দাবিদার। কারণ তার চাকরি হলেই সরকার তার লগ্নি করা টাকা ফেরত পাবে।

এভাবে ভাবা কি রীতিমতো অন্যায় ? হয়তো অনেকের কাছে। কিন্তু এতো আমার নিজের ভাবনা না। সারা পৃথিবী চলছে এই নিয়মে। তাহলে আমাদের চলতে বাধা কোথায় ? দ্বিমত থাকতেই পারে। অনেক বছরের ১৫ টাকার ভাতের মেনু এক দিনে পরিবর্তন সম্ভব নয়। তবে এই ভাতের মেনু পরিবর্তন খুবই জরুরি। নাহয় অপুষ্টিতে উচ্চ শিক্ষিত বেকার ছাত্ররা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:২২

রিফাত হোসেন বলেছেন: হক কথা বলেছেন। উদ্দেশ্য সৎ হলে কি হবে, যদি ঠিকমত কাজে না লাগানো যায়। কিন্তু ব্যাপারটা একটু স্পর্শকাতর। আমি মোটামোটি একমত, কিঞ্চিত দ্বিমত পোষণ করছি। :) আলোচনায় না গেলাম। খেলা শেষের দিকে। ফ্রান্স জিতেছে। উপভোগ করেছি।

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৫

রাকু হাসান বলেছেন: কিছু ক্ষেত্রে আংশিক একমত...

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৬

নতুন বলেছেন: শিক্ষায় জাতী যতবেশি ব্যয় করে জাতী ততবেশি উন্নত হয়...

আগে প্রাথমিক থেকে উন্নত শিক্ষার ব্যবস্তা করুক...তারপরে উচ্চশিক্ষার উচ্চ পদ্বতীর কথা ভাবা যাবে...।

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৬:৫৭

কল্পদ্রুম বলেছেন: বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা নিষ্ফল পরিকল্পনা।আপনি যেটা বলছেন সেটা ভবিষ্যতে হয়তো উন্নত বাংলাদেশে সম্ভব হতে পারে।এখন নয়।'ফ্রি বলে এম বি এ করা ব্যাপার না।'কথাটা মানতে পারলাম না।ফ্রি কিন্তু সবখানে না।প্রতিবছর কতজন ভর্তি পরিক্ষা দিয়ে কতজন পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পায় তা কি খেয়াল করেছেন?সরকারের আপাত ফ্রি সার্ভিস যারা নিচ্ছে তারা কিন্তু মেধার প্রমাণ রেখেই নিচ্ছে।মেধার যাচাই এর পদ্ধতি ঠিক আছে কি না সেটা ভিন্ন আলোচনা।

৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১১

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে শিক্ষা মানে টাকার খেলা।
একটা ইংলীশ মিডিয়াম স্কুলে ক্লাশ ওয়ান এর বেতন ২৩ হাজার টাকা।
হাই স্কুলে ৫০০ টাকার উপরে।

৬| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৪৫

গরল বলেছেন: উচ্চ শিক্ষা অধিকার নয়, বড়জোর স্কুল শিক্ষাটাকে অধিকার হিসাবে ধরা যায় বা বাধ্যতামূলক শিক্ষা যে পর্যন্ত সে পর্যন্তই। তবে উচ্চ শিক্ষায় ব্যায়টাকে একটা বিনিয়োগ হিসাবে ধরা যায়। কারণ আমাদের দেশে এখনও শিক্ষালোন কার্য্যকর হবে না যেখানে চাকুরীর নিশ্চয়তা নেই। তবে সরকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্বুদ্ধ না করে যদি সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেক ছাত্র বিনা বেতনে আর বাকি অর্ধেক প্রাইভেটের মত মূল্য দিয়ে পড়ার সুযোগ করে দেয় তাহলে অন্তত একটা মাণসম্মত উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিৎ করতে পারবে। যত্র তত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সার্টিফিকেট বিক্রির ব্যাবসায় পরিণত হচ্ছে।

৭| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৪৫

এলিয়ান বলেছেন: একমত হতে পারলাম না।
আমাদের দেশ উন্নত না। আর উন্নত করতে হলে দেশের মেধাকে লালন করতে হবে।
আমি হলফ করে বলতে পারি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের মেধাবীরাই সুযোগ পায়। হাজার হাজর ছাত্র আবেদন করে। শুধু মেধাবীরাই সুযোগ করে নেয়। ১৫ টাকা আর ৩৫ টাকার সুযোগ দিয়ে সরকার মেধার লালন করার সুযোগ করে দেয়। এই পদ্ধতিতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যা অন্য জায়গায়।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ছাত্র রাজনীতি আর শিক্ষক রাজনীতিতে ভরা। হলের সিটের জন্য ছাত্ররা রাজনীতিতে জড়াতে একপ্রকার বাধ্য। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাররা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অন্য জায়গায় ক্ষেপ মারতে ব্যাস্ত। ফলাফল , শিক্ষার মান দিন দিন নিম্ম মুখি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বই পড়িয়ে জ্ঞান বিতরন করা না , গাবেষোনার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। যেখানে ক্লাসেই হয় না , সেখানে নতুন গবেষোনা, নতুন জ্ঞান এসবতো দুরের কথা ।

আমি নিজে বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম , আর বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম বি এ করেছি।
লেখাগুলো নিজের অভিজ্নতা থেক লেখলাম। আপনি একমত নাও হতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.