নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বনসাই

বনসাই

বনসাই

বনসাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুরোনো সেই দিনের কথা (তৃতীয় বারো)

০৯ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

প্রথম বারো
দ্বিতীয় বারো

25. প্রথম আগমণ সময়ে কম্পিউটার ছিল খুবই স্পর্শকাতর ইকুইপমেন্ট; এসি রুমে রাখতে হতো, জুতো পায়ে যেখানে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল।

26. লেখালেখির জন্যে কম্পিউটার সফটওয়ার ছিল ওয়ার্ডস্টার পরে এলো ওয়ার্ডপারফেক্ট। হিসাবনিকাশের জন্যে ব্যবহৃত হতো লোটাস১২৩। প্রোগ্রামিং-এ ছিল ডি-বেইস।

27. ডট প্রিন্টারই ছিল বেশি; প্রিন্টিং-এর সময় ভীষণ শব্দ করতো, লেজার প্রিন্টার শব্দ শোনা থাকে রক্ষা করে। একই সাথে ঝকঝকে পরিস্কার স্পষ্ট লেখা ছাপায়।

28. প্রথম সেল ফোন ছিল সিমেন্স-এর C 10, ১৯৯৮ সালে জিপির মোবাইল-টু-মোবাইল কানেকশন এর সিম পেতে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়। পরে T&T মানে ল্যান্ড ফোনে কল করার সুবিধা কম খরচে দেয় সিটিসেল। আর সরকারী টেলিটকের সিমের জন্যে লটারী করা হয়; সুখের কথা তাতে নাম উঠেছিল।

29. বিচিত্রা, আনন্দবিচিত্রা, তারকালোক, খেলার জন্যে ক্রীড়াজগত, বর্তমান দিনকাল পাঠকপ্রিয় ছিল।

30. ঢাকার প্রথম দু’টি ফুট ওভারব্রিজ হলো ফার্মগেট ও নিউমার্কেটের কংক্রিটেরগুলো। আজও এ দু’টোই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।

31. ইস্টার্ন প্লাজা এই শহরের প্রথম এসি মার্কেট। ঠান্ডা বাতাস গায়ে মাখতে মানুষ সেখানে যেতো। আগে ঢাকার পশ মার্কেট ছিল নিউমার্কেট। আজিজ ক্লথ স্টোরে নিউ মার্কেট গেলে যাওয়া হতো।

32. এরশাদের সময় প্রথম ভিআইপি সড়ক চালু হয় শাহবাগ থেকে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ জাহাঙ্গীর গেট হয়ে কুর্মিটোলা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রথম নাম ছিল স্থানের নামেই; পরে প্রেসিডেন্ট জিয়ার নামে বদলে গিয়েছিল।

33. ১৯৮৮ সালের বন্যায় ডুবে ছিল বনানী-গুলশান-রামপুরা-মিরপুর-মোহাম্মদপুর-উত্তরাসহ ঢাকার অধিকাংশ স্থান। ২ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা ছিল, দুপুরে তিতুমীর কলেজে আর বিকালে ঢাকা সিটি কলেজে। সন্ধ্যার আগে আগে হলো প্রচন্ড বৃষ্টি। সেই বছর বেশ বৃষ্টি পড়েছিল। বাসায় ফিরে দেখি বন্যা দুর্গত আত্মীয়রা আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় প্রতি বাসায় আত্মীয়রা এসে উঠেছিলেন, কয়েক মাস বয়সী শিশুসহ ৩৪ জন, ছিলেন ২২ দিন। ঢাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রয়োজনীয়তা সেবার এরশাদ সরকার ভালোভাবে উপলব্ধি করে। আমরা পুরানা ঢাকার বন্যা কবলিতদের জন্যে আটার রুটি, কাপড় সংগ্রহ করি, লায়নস ক্লাবের আহ্বানে প্রতি ঘর থেকে প্রতিদিন ২০টি করে আটার রুটি সংগ্রহ করি। অধিকাংশ পরিবার আগ্রহের সাথে সহযোগিতা করেছিলেন। কলেজের বাংলা টিচার শামীম আজাদ-এর আহ্বানে ধানমন্ডিতে আমরা কিছু ছেলে ও মেয়ে খাবার স্যালাইন বানাতাম বিকালে।

34. রাতের ঢাকায় স্ট্রিট লাইট হিসেবে জ্বলতো টিউবলাইট, সোডিয়াম লাইট ঝুলিয়ে প্রেসিডেন্ট এরশাদ কালোরাতকে হলুদ করে তুলে। নতুন আলোতে ঢাকা অচেনা নগরী মনে হয়েছিল।

35. ফুটবলের স্বর্ণযুগ ছিল তখন, ক্রিকেট ছিল মৌসুমী খেলা। আবাহনী-মোহামেডানের খেলা যেন যুদ্ধ; আবাহনী হেরে গেলে পরের দিন স্কুলে তো বটেই বিকালে মাঠে যেতেও ইচ্ছা করতো না। লীগের খেলায় দল জিতলে আবাহনীর সমর্থক গোষ্ঠী বিজয় মিছিল নিয়ে ধানমন্ডিতে ফিরতো। মিছিলের চিৎকার শোনার জন্যে উদগ্রীব থাকতাম।

36. স্টেডিয়ামে সাধারণ গ্যালারিতে চেয়ারের ব্যবস্থা ছিল না, গাদাগাদি করেই দর্শক বসতো, মহিলারা কমই খেলা দেখতে যেতেন। খেলার উত্তেজনায় সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হতো নিয়মিত। একবার আবাহনীর কয়েকজন খেলোয়াড়কে হাজতেও যেতে হয়েছিল। টয়লেটের অপর্যাপ্ততার জন্যে উপরের গ্যালারী উপচে প্রস্রাব-বন্যা ঢাকা স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকানী-ক্রেতার মাথায় পড়তো।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নষ্টালজিক সব স্মৃতি ভাবনা ;)

ডসে পিসি চালূ করে ডাব্লিউআইএন কমান্ড দিয়ে গিয়ে চা বানিয়ে নিয়ে এসে খেতে খেতে উইনন্ডোজ চালূ হতো :P
হা হা হা

৫.২৫ বা ৩.৫ ফ্লপি সাথে থাকা ছিল প্রেস্টিজিয়াস সামথিং ;)

প্রথম বছর যখন িপিস নিয়ে এল, ওরে সেকি ভাবস! ছুনা না ছুনা না টাইপ ;)
বছর ঘুরতে না ঘুরতে আমার কার্ডওয়ার করা শেষ হলে পরের বছর ভাই যখন ছুটিতে এল
ফটাফট সব খুলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলাম! হা হা করে ছূটে এল!
মুচকি হেসে সব আবার এসেম্বল করে বুটাপ দিতেই যেন তার ধরে প্রাণ এল!
আর আমার শার্টের কলার ঝাকানো ভাবস ;) হা হা হা

০৯ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩১

বনসাই বলেছেন: ফ্লপি ডিস্ক সাথে থাকা আসলেই প্রেস্টিজিয়াস ছিল, ভাবও ধরা যেতো। সে সময় কম্পিউটার জানা মানে বহুত কিছু। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি এডভান্টেজ থাকতো। টাইপিস্টরা বাধ্য হয়ে কম্পিউটার শিখেছে। পদের নাম বদলে হয়েছে কম্পিউটার অপারেটর।
আর হার্ডওয়ার এসেম্বল করতে জানাদের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মনে করা হতো। আর তখন টাওয়ার সিপিইউ ছিল না; মনিটর ছিল সিআরটি, আইবিএম ব্রান্ড ভালো চলতো। ক্লোন পাওয়া যেতো না। দামও অনেক ছিল। ল্যাপটপ তো ছিলই না। প্রিন্টার ইউজ করতাম এপসন ডট ম্যাট্রিক্স।

চমৎকার স্মৃতি যোগ করায় আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভাল লাগছে আপনার স্মৃতিচারণ।

১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩

বনসাই বলেছেন: আপনি সাথে থাকায় লিখতে আগ্রহী হচ্ছি আরো; আশায় আছি এই ধারাবাহিক লেখাতে আপনার চমৎকার সংযোজন আমাদের সকলকে স্মৃতিমুখর করবে।

৩| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি সাথে থাকায় লিখতে আগ্রহী হচ্ছি আরো; আশায় আছি এই ধারাবাহিক লেখাতে আপনার চমৎকার সংযোজন আমাদের সকলকে স্মৃতিমুখর করবে। - ধন্যবাদ, আপনার এ প্রতিমন্তব্যের জন্যে।
তবে আমার মনে হয়, আপনার আরেকটু বেশী করে অন্যের ব্লগেও যাওয়া উচিত।

১০ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:১১

বনসাই বলেছেন: আন্তরিক পরামর্শের জন্যে ধন্যবাদ।

৪| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫

কালীদাস বলেছেন: কম্পিউটারের রুমকে মসজিদ, মন্দিরের মত ডিল করা হত ২০০০এর আগে। এসি, খালি পা, .... ডট প্রিন্টার এখনও ব্যাপক আকারে ইউজ হয় অফিসআদালতে, যদিও লেজারের ব্যবহার বাড়ছে দাম কমার পর থেকে!

ফ্লপি X( এই জিনিষ ইউজ করা যে কি প্যারা ছিল!! সারা রাত কাজ করে পরেরদিন পিসিতে চেক করতে যেয়ে দেখতাম সব গায়েব। ফ্লাশ ড্রাইভ না আসলে খবর ছিল।

ইস্টার্ণ প্লাজা মার্কেটটার আলাদা একট ভাবই ছিল যখন চালু হয়, ঢাকার সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত মার্কেট ছিল নিউমার্কেটের পাশাপাশি, বনানীর কয়েকটা মার্কেট চালু হবার আগে। বসুন্ধরা চালু হওয়ার পর বসুন্ধরা সেই পজিশনটা নিয়ে নেয় অনেক দিনের পর। ইদানিং মনে হয় মার্কেটের সংখ্যা আর মুদির দোকানের সংখ্যা সমানই হবে ঢাকায়।

নস্টালজিয়া, স্মৃতি তুমি বেদানা /:)

১০ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪৯

বনসাই বলেছেন: চমৎকার কিছু স্মৃতি তুলে ধরার জন্যে ধন্যবাদ। বসুন্ধরা সিটি আর যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং এর ঝক্কি বেশ কমিয়ে দিয়েছে।

৫| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬

কালীদাস বলেছেন: মিস করেছিলাম: আবাহনী, মোহামেডানে সারা দেশ দুই ভাগ হয়ে যেত। আমি একজন হিডেন মোহামেডান ফ্যান ছিলাম :#)

১০ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫৫

বনসাই বলেছেন: আমার তো মনে হয় আওয়ামী লীগ আর বিএনপির বিভক্তির চেয়ে আবাহনী আর মোহামেডানের বিভক্তি আরো প্রকট ছিল। তৃতীয় ক্লাব হিসেবে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে মনে করা হলেও রাজনীতির তৃতীয় শক্তির মতো অবস্থা ছিল তাদের।

৬| ১০ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৭

বারিধারা ২ বলেছেন: এবার অডিও ক্যাসেট, ভিএইচপি এবং ফাস্টফুডের দোকান (দামসহ) নিয়ে কিছু লিখুন। ব্যাঙের ছাতার মত সেইসময় গড়ে ওঠা ভিডিও গেমসের দোকান এবং তাকে কেন্দ্র করে বাচ্চাকাচ্চাদের ক্যাচাল নিয়েও লিখতে পারেন।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:০৮

বনসাই বলেছেন: ভালো পরামর্শ, আপনারও এখানে সংযোজন করার সুযোগ আছে কিন্তু।

৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

কালীদাস বলেছেন: ব্রাদার্স ইউনিয়নের ব্যাপারে একমত, ফুটবলে বেশ ভাল ছিল ওরা। কেবল ক্রিকেটেও এরকম ভাল টিম ছিল একটা: বিমান! কখনও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিনা খেয়াল নেই এখন, তবে ভাল প্লেয়ারদের জন্য টপ তিনটা টিমের মধ্যে বিমান থাকত সাধারণত! কর্পোরেট একটা টিম আর কখনও এত ভাল করেনি দেশে।

১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:০৭

বনসাই বলেছেন: বিস্মৃত একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিলেন, সেই সময় ক্রিকেট খেলে আয় রোজগার ভালো হতো না।

৮| ১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: ২০০৩ বা ২০০৪ এর দিকে আমার পরিচিত সদ্য বুয়েট পাস এক আর্কিটেক্টকে দেখেছি ১৫ মেগার এক পেনড্রাইভ চওড়া এক ফিতা দিয়ে বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে বেড়াচ্চে.... :P

১২ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০০

বনসাই বলেছেন: আমার কাছে আজো আছে ১২৮এমবি'র পেনড্রাইভ। সে সময় ওটার দাম ছিল ১,৩৫০ টাকা। সাথে ফিতা ফ্রি। আমিও দেখেছি গলায় ঝুলাতে।

৯| ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৩:৪৪

হাসান রাজু বলেছেন: আজও এক ক্লাসমেট কে চেনাতে বলি, " যে ছেলেটার বাসায় কম্পিউটার ছিল । " একদিন আমাদের তার কম্পিউটার দেখার দাওয়াত ছিল । আমার যাওয়া হয়ে উঠেনি ।

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:১২

বনসাই বলেছেন: পরিচয়ের ভালো সূত্র দিয়েছেন; আসলে সে সময় দাম,যত্ন ও প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জানাতে একটু বেশিই সচেতন ছিলাম সকলে। আমরা তখন মনিটর, টাওয়ার সিপিইউ, কী-বোর্ড কাভার দিয়ে ঢেকে রাখতাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.