নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট মুখে বড় কথা

আমিও শিশুর মতো/ তারই মতো মেনে নিতে পারি, যতো ব্যাথা না পাবার,/ ততো কাঁদি, ততো ঠুঁকি মাথা,/ যতো ক্ষতে বয়ে চলে- এ জীবনধারা।

বয়ানবাজ

আমি শাহরিয়ার রনি। দেশের একটি নামকরা পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছি। একজন স্বীকৃত কৃষিবিদ। ভালোবাসি প্রকৃতি, ভালোবাসি বিজ্ঞান।

বয়ানবাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে ডায়েরীগুলো পৃথিবীর বুকে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলো......... (ক্যুইজের উত্তর সহ আপডেট)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৩



আমরা যখন কোন নোটবুকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের ঘটনাগুলো বা অতীতের স্মৃতিগুলো লিপিবদ্ধ করতে থাকি তখন সেই নোটবুকটিকে বা খাতাটিকে ডায়েরী বলে। ডায়েরী যেন অতীত ও বর্তমানের সেতুবন্ধন রচনা করে। আমাদের সবার ডায়েরী লেখার অভ্যাস থাকুক আর না থাকুক,সবাই যে জন্মদিনে দু একটা ডায়েরী উপহার পেয়েছি তা নিশ্চতভাবেই বলা যা্য। তবে এ পৃথিবীতে এমন কিছু ডায়েরী আছে যা শুধুমাত্র তার লেখকের জীবনকেই তুলে ধরেনি, বরং তুলে ধরেছিলো সেই সময়ের ইতিহাসকে। আসুন আজ আমরা এমন কিছু ডায়েরীর সাথে পরিচিত হয় যা নিজেদেরকে তাদের লেখকের সম্পত্তি থেকে বেরিয়ে এসে ইতিহাসের সাক্ষীতে পরিনত করেছে।







১।আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরী:



বইয়ের জগতের সাথে যারা কম বেশী পরিচিত তারা প্রায় সবাই আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরীর কথা জানেন। আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরী বিশ্বজোড়া নাম করেছিলো। আনা ফ্র‌্যাংক তার ডায়েরীতে চিত্রিত করেছিলো সেইসব দুঃসহ স্মৃতিগুলো যা সে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে লুকায়িত অবস্থায় অর্জন করেছিলো।





আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরীর নাম ছিলো "কিটি"









আনার ডায়েরী নিয়ে তৈরি হয়েছে নাটক, ড্রামা, সিনেমা



আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরীর সময়কাল জুন ১২,১৯৪২ থেকে আগষ্ট ১, ১৯৪৪। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্র‌্যাংক পরিবার বিতাড়িত অবস্থায় আমস্টার্ডামে একটা গোপন কুঠুরীতে আশ্রয় নেয়। ফ্র‌্যাংক পরিবার ছিলো ইহুদী আর সেই সময় নাৎসি বাহিনী কর্তৃক নিধন ও বিতাড়িত হয়ে ইহুদীরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিলো। গোপন কুঠুরীতে বন্দী অবস্থায় কষ্টবহ সেই স্মৃতিগুলোই উঠে এসেছিলো তার লেখনীতে। পরবর্তীতে ফ্র‌্যাংক পরিবার নাৎসি বাহিনী কর্তৃক ধৃত হয় এবং তাদেরকে কনসেনট্রেসন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। এই ক্যাম্পে মাত্র ১৫ বছর বয়সে আনা টাইফাস রোগ সংক্রমনে মারা যান।









২।লুই ক্যারোল:



লুই ক্যারোলকে আমরা চিনি তার অমর রচনা "এ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড" এর মাধ্যমে। লুই ক্যারোলের প্রকৃত নাম চার্লস এল. ডগসন। ক্যারোল আরো রহস্যময় তার রহস্যমন্ডিত ডায়েরীর কারনে।







তিনি অনেকগুলো ডায়রী লিখেছিলেন। পরে ডায়রীগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৮৫৮ থেকে ১৮৬২ সালের লিখা পাতাগুলো(সেসময় ক্যারোলের বয়স ২২ থেকে ৩২) ছেঁড়া ও নষ্ট করে দেওয়া। ধারনা করা হয় লেখকের পরিবার হয়তো তথ্য গোপন রাখার উদ্দেশ্যেই ৪টা ভলিয়ুম ও ৭টা পাতা নষ্ট করে ফেলেছে।



ক্যারোলের ডায়েরীর পাতা







৩।স্যামুয়েল পেপিস:



স্যামুয়েল পেপিস আরেক রহস্যময় ডায়েরী লেখক। তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশ নৌ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ। পেপিস কখনও চাননি তার ডায়েরী জনসম্মুখে প্রকাশিত হোক। এজন্য তিনি শর্টহ্যান্ড টেকনিক ব্যবহার করতেন। অথচ তার ডায়রী ছিলো ১৬০০ শতকের ইংল্যান্ডের এক ঐতিহাসিক ঘটনাবহুল সংকলন। পরে তিনি রেভারেন্ড জন স্মিথ নামের একজনকে দিয়ে ডায়েরীগুলোর অনুলিপি তৈরি করেন।







পেপিসের ডায়রী ও পাতা



তার ডায়েরিতে স্থান পেয়েছিলো ১৬০০সালের লন্ডনের জীবন ব্যবস্থা, ব্যবসায়িক কর্মকান্ড, ১৬৬৫সালের লন্ডনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা, ১৬৬৬সালের প্লেগের প্রাদুর্ভাব, দ্বিতীয় এ্যাংলো-ডাচদের যুদ্ধের(১৬৬৫-৬৭) কথা।







৪।চে গুয়েভারার ডায়েরী:



মহান বিপ্লবী চে গুয়েভারা ১৯৬৭ সালে বলিভিয়ার সৈন্যদের হাতে নিহত হন। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত হয় তার ডায়েরি। আজ পর্যন্ত বিশ্বের বহুভাষায় অনূদিত হয়েছে চে'র ডায়েরি।





চে এর একটি ডায়রী



তবে গবেষকদের মতে, ভিন্ন ভাষায় অনূদিত হবার সময় ডায়রীর অনেক কিছুই পরিবর্তীত বা কাট-ছাট হয়েছে। সম্প্রতি তার হাতে লিখা ডায়েরি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। এবার হয়তো পাঠকরা আসল ডায়েরিটা পাঠ করতে পারবেন। (তথ্যসূত্র: প্রথম আলো)









৫।প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্রুম্যানের ডায়রী:



আমেরিকার অনেক প্রেসিডেন্টই তাদের ক্ষমতায় থাকাকালীন ডায়রী লিখতেন। যেমন- জর্জ ওয়াসিংটন, জন এডামস, টমাস জেফারসন। তবে ব্যতিক্রমধর্মী ডায়রি লেখক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের নাম।





ট্রুম্যানের ডায়েরীর পাতা



ট্রুম্যান তার নোটবুকে তার মিটিং ও কনফারেন্সের সময়সূচী, ঘটনা ইত্যাদি লিখে রাখতেন। আর তার সাথে লিখে রাখতেন ঘটনাগুলোর সম্পর্কে মজার মজার কমেন্ট। এই কমেন্টগুলোই তাকে পাঠকদের কাছে স্মরনীয় করে রেখেছে।









কয়েকটি জাল বা ভুয়া ডায়েরী:



১।হিটলারের ডায়েরী:



১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে পশ্চিম জার্মানির ম্যাগাজিন "Stern"এ হিটলারের এই ডায়েরি সম্পর্কে জনগন জানতে পারে। পরে প্রমানিত হয় ঐ ডায়েরীটি ভুয়া এবং ম্যাগাজিনকে ৯ মিলিয়ন জার্মান মার্ক ক্ষতিপূরন দিতে হয়।





২।মুসোলিনির ডায়েরী:



১৯৫৭ সালে আমেনিয়া ও রোসা নামের মা-মেয়ে ৩০টি ভলিয়ুমের ডায়েরি নিয়ে দাবী করে বসেন মুসোলিনির ডায়েরী বলে। পরে তা জাল বলে প্রমানিত হয়। আবার ২০০৭ সালে ইটালিয়ান সিনেটর মারসেলোদেলউর্ত্তি আরেকটি ডায়েরীকে মুসোলিনির ডায়েরি বলে দাবী করেন। সেটিও দুজন ইটালিয়ান ইতিহাসবিদ এমিলিও জেনটিল ও রবার্টো ট্রাভাগলিনি জাল বলে প্রমান করেন।





আমরা এখন ডায়েরী লিখার সময় পাইনা। ফেসবুক টুইটার এসে তো ডায়রী লিখা আরো ভুলে গেছি। কিন্তু ফেসবুক বা টুইটারে ব্যক্তিগত বিষয় বলে তো আর কিছু থাকেনা। ডায়েরীর মাহাত্য ডায়েরীই রক্ষা করতে পেরেছে। কখনো লেখক করেছে ডায়েরীকে ঐতিহাসিক দলিল আবার কখনো ডায়েরী করেছে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ।



কয়েকদিন আগে পোস্ট দেবার সময় পাঠকদের উদ্দেশ্যে ডায়েরী সংক্রান্ত একটা ক্যুইজ দিয়েছিলাম। উত্তর দেবার জন্য পাঠকদের সাড়া পড়েনি। তাতে কি? তাই বলে কি আমি উত্তর জানাবো না। ক্যুইজ সহ উত্তর নিচে.....।





ক্যুইজ:

একজন রাজনীতিবিদ তার ডায়েরীতে নিজেকে একজন সমকামীরূপে পরিচয় দিয়েছেন? বিশেষজ্ঞদের ধারনা সেই ডায়রীটি ব্রিটিশ সরকারের তৈরি একটা জাল ডায়েরী। বলতে হবে, সেই রাজনীতিবিদের নাম কি এবং তার ডায়েরী ইতিহাসের পাতায় কি নামে পরিচিতি?



উত্তর:

সেই রাজনীতিবিদ হচ্ছেন আয়ারল্যান্ডের বিখ্যাত বিপ্লবী নেতা রজার কেইসমেন্ট। ইতিহাসে তার সেই ডায়েরীটি ব্ল্যাক ডায়েরী নামে পরিচিত।



রজার কেইসমেন্ট





রজার কেইসমেন্ট ও তার ব্ল্যাক ডায়েরী আজও রহস্যময়

Roger Casement's "Black diary"









তথ্যসূত্র: বরাবরের মতোই.......... ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩২

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: শিরোনাম দেখেই বুঝেছিলাম আনা ফ্যাঙ্কের ডায়েরীটাই প্রথমে থাকবে। সব যুক্তি তর্ক শেষ করে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যাক্তিগত ভাবনা ইত্যাদি থেকে কিছু বিষয়ে এক ধরনের বিশ্বাস জন্ম নেয় যেটা কোন যুক্তি মানেনা তথ্য মানেনা, শুধুই বিশ্বাস। যার থেকে আনা ফ্র্যাঙ্কের ডায়েরীটাকে মন থেকে মেনে নিতে পারিনা। এই ডায়েরীটার কথা আসলেই মনেহয় এটি একটি পরিকল্পিত সৃষ্টি। যদিও এব্যাপারেও কিছু মত আছে বলে শুনেছি।

যাইহোক, ভালো লাগল আপনার পোষ্ট। অনেক নতুন ডায়েরীর ব্যাপারে জানতে পারলাম। তথ্যবহুল পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪

বয়ানবাজ বলেছেন: বিশ্বরাজনীতির অনেক কিছুই তো জানা হলো না। আসলে সেই পর্যন্ত আর আমাদের মাথা কাজ করেনা। চেষ্টা করবো আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরী সম্পর্কে আরো তথ্য জানার।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪১

বিপদেআছি বলেছেন: আনা ফ্র্যাঙ্কের ডায়েরীর ব্যপারে আমার মনোভাব *কুনোব্যাঙ* এর মতই।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫

বয়ানবাজ বলেছেন: বিশ্বরাজনীতির অনেক কিছুই তো জানা হলো না। আসলে সেই পর্যন্ত আর আমাদের মাথা কাজ করেনা। চেষ্টা করবো আনা ফ্র‌্যাংকের ডায়েরী সম্পর্কে আরো তথ্য জানার।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৫

শের শায়রী বলেছেন: ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬

বয়ানবাজ বলেছেন: অসংখ্যা ধন্যবাদ দিলাম।

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

আনা ফ্র্যাঙ্কের ডায়েরি সম্পর্কে কখনো মনে স্নদেহ জাগেনি। কিন্তু কুনোব্যাঙ এর কথায় খটকা লাগলো। উনি না জেনে কোন কথা বলেন না আমি জানি !!


এখন কি বিশ্বাস করুম??

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

বয়ানবাজ বলেছেন: দেখি কি হয়!! আমার নিজের মনেও খটকা লাগলো। মনে হয় এ বিষয়ে একটু পড়াশোনা করার দরকার হতে পারে।

৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

আহমেদ সাব্বির পল্লব বলেছেন: গুড পোস্ট

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৭

বয়ানবাজ বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার..............।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৩

অন্তহীন বালক বলেছেন: আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী টা কয়েকদিন আগেই পড়লাম,
খুব ভালো একটা বই। আনা'র সব কথা-ই কিটি (ডায়েরী) কে বলেছে।

প্রিয়তে নিলাম।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১২

বয়ানবাজ বলেছেন: এবার আমার ধন্যবাদ নিন।

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৬

অন্তহীন বালক বলেছেন: আর আপনি কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করছেন?
আমি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করছি।

মশিউর, লেভেল-৩, সেমিস্টার-২

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৮

বয়ানবাজ বলেছেন: ধন্যবাদ, পরিচয় দেবার জন্য। ব্লগে আমি পুরো পরিচয় দিইনা। তবে আপনার প্রশ্নের উত্তর রহস্যের ছলে দিচ্ছি। আমি এদেশের সবচেয়ে বড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ;) ;) ;)

যেহেতু পরিচয় দিয়েছেন, তাই বলছি। আপনার ক্যাম্পাসে এলে দেখা করবো কিন্তু। :) :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.