নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুলবুল ইসলাম

বুলবুল ৩৩৩

আমি বাংলাদেশপন্থী।লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশকে অনেক ভালোবাসি। ভালবাসি বই পড়তে,তার চেয়েও বেশি ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে।

বুলবুল ৩৩৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘের দেশ সাজেক ভ্রমণ - ২য় পর্ব (লুসাই ঝর্ণা)

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৬

সাজেক ভ্যালিতে আমরা উঠেছিলাম "মেঘের ঘর" রিসোর্টে।এটি সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়ার অবস্থিত। কাঠের তৈরি রিসোর্টের সুন্দর রুম এর পাশাপাশি রুমের বারান্দা ও বতায়ন আমাদের মন কেড়ে নিয়েছে। বারান্দা থেকে লুসাই পাহাড় এবং পায়ের নিচে মেঘ দেখে আমাদের মুগ্ধতার রেশ যেন কাটছিলই না। রিসোর্টে ফ্রেশ হয়ে রুইলুই পাড়া থেকে আমরা ছুটলাম লুসাই ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। স্থানীয় গাইড লুসাই ঝর্ণা বললেও এটি কমলক ঝর্ণা নামেই বেশি পরিচিত। চান্দের গাড়ি আমাদের ট্যুরের সম্পূর্ণ সময়জুড়ে আমাদের সাথেই থাকবে এমনভাবেই ঠিক করা হয়েছিল। চান্দের গাড়ি আমাদের লুসাই ঝর্না যাওয়ার রাস্তায় নামিয়ে দিল। রুইলুই পাড়ায় লুসাই,ত্রিপুরা ও পাঙখোয়া জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে। লুসাই ঝর্ণা যাওয়ার জন্য আমাদের লোকাল গাইড দরকার ছিল। আমরা তিন পিচ্চি বাচ্চা ঠিক করলাম আমাদের গাইড হিসাবে।

প্রায় দেড় ঘণ্টার ট্রেকিং করে লুসাই ঝর্ণা দেখার সাধ মেটাতে হয়। আমরা যাত্রা শুরু করলাম আমাদের তিন গাইডের পিছু পিছু। কিছুদুর সিঁড়ি তারপর শুরু মূল ট্রেকিং। পাহাড়ি উচু নিচু পিচ্ছিল রাস্তা দিয়ে চলছি তো চলছিই। গাইডত্রয় বলছে একটু সামনে ঝর্ণা কিন্তু ঝর্ণার দেখা নেই। কোন কোন জায়গা একদম খাঁড়া আর খুবই দূর্গম সাথে মশার কামড় ও জোঁক তো স্বাগত জানাচ্ছেই। কেউ কেউ আছাড় পরছে আবার উঠে ট্রেকিং শুরু করছে কারন লুসাই ঝর্ণার সৌন্দর্য যে উপভোগ করতেই হবে। সর্বোচ্চ আছাড় খেয়ে রেকর্ড গড়েছে আমাদের সদ্য বিবাহিত সাদাফ ভাই। হাত ধরে রাখায় ভাবীও তার আছাড়সঙ্গী হয়েছেন একবার।

কোথাও ঘন জঙ্গল কোথাও জুম চাষ আবার কোথাও জুম ফল এসব দেখতে দেখতে আমরা ট্রেকিং করে চলেছি। আমরা সাথে লাঠি না নিয়ে আসায় জঙ্গল থেকে বাশ বা অন্যান্য গাছের ডাল ভেঙ্গে লাঠি বানিয়ে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলছি। রাস্তা যেন শেষ হয় না। রাস্তার মাঝে পানির বোতল, ছিড়া সেন্ডেল, চিপসের প্যাকেট আমাকে মর্মাহত করেছে। সবার কাছে অনুরোধ যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না প্লিজ। ট্রেকিং এর রাস্তা গুলো কোন কোন জায়গায় খুবই ভয়ঙ্কর একটু আসাবধানতা আপনাকে কয়েকশ ফুট গভীর খাদে ফেলে দিতে পারে। রাস্তাগুলো হালকা ভেজা এবং পিচ্ছিল তাই আমাদের প্রতিটি কদম সাবধানে ফেলতে হচ্ছিল।

অবশেষে আমরা ঝর্ণায় পৌছালাম।ঝর্ণার মুখে গিয়ে সর্বশেষ আছাড় খেল আমাদের জিম ম্যান কাদের। এই ট্যুরে কাদেরের নতুন নামকরন করে করেছে মোরসালিন। ওবাইদুল কাদেরের সংক্ষিপ্ত নাম ওকে।

প্রাণভরে সবাই ঝর্ণার জলে স্নান করলাম। ঝর্ণার পানি খেয়ে পিপাসা নিবারণ করলাম। একগাদা ছবি উঠালাম। এবার ফিরে যাবার পালা। এমনিতে পিচ্ছিল তার উপর এবার আমাদের কাপড় ভেজা আবার আকাশে মেঘ বৃষ্টি নামবে যেকোন সময়। যাত্রা শুরু হলো কিন্তু এযাত্রার যেন শেষ নেই উঠছি তো উঠছিই। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ওজনদার বন্ধু তন্ময় সামনে সামনে চলছে ওকে দেখে অন্যান্য গ্রুপের লোকজন সাহস পাচ্ছে অনেকেই ওর সাথে সেলফি নিচ্ছে। তখনও আমরা জানিনা আমাদের জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে। কিছুক্ষণ পর মেয়েদের অবস্থা খারাপ হওয়া শুরু হলো। আমার বোন শশীর গলা শুকিয়ে আসছে বার বার ততক্ষণ আমাদের পানি শেষ। সুদীপ্তা বৌদি সামনে এগোতে পারছে না, তন্ময় সর্বশক্তি শেষ করে ফেলেছে এখন এগোচ্ছে মনের শক্তি দিয়ে। মনের শক্তি দিয়ে নিজে উঠতে পারলেও উঠাতে পারছে না বউকে।ওদিকে সাদাফ ভাই ও ভাবী পিছনে পিছনে কষ্ট করে করে পাহাড় বেয়ে উঠার চেষ্টা করছে। সেই সময়টা সত্যিই খুবই দুর্বিষহ ছিল। অনেক কষ্টে আমরা উপরে উঠেছিলাম সেই কষ্টের নমুনা লিখে বুঝানো সম্ভব না। এই কষ্টের কোন ছবিও তোলা সম্ভব হয় নি।

ফিরে এসে সবাইকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আর কখনো যাবেন লুসাই ঝর্ণায়?? বেশিরভাগের উত্তর সেটাই যেটা আপনি এখন ভাবছেন।
সাজেকের খাওয়া দাওয়া,সাজেকের বৃষ্টি, মেঘ ছোঁয়া, রংধনু, কংলাক পাড়া নিয়ে পরবর্তীতে লিখবো...
(চলবে)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০৮

চাঙ্কু বলেছেন: সাজেক জায়গাটা দেখলেই বিদেশ বিদেশ মনে হয়। এত সৌন্দর্য!!

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৫

আরজু পনি বলেছেন: যদি প্রথম ছবির তিনজন গাইড হয়....তবে মজা পেয়েছি বেশ।
অভিজ্ঞতা নিতে ইচ্ছে করছে।
আরো ছবি শেয়ার করতে পারতেন।
আচ্ছা পরবর্তী পোস্টে পাবো আশাকরি।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪০

বুলবুল ৩৩৩ বলেছেন: প্রথম ছবির তিনজনই আমাদের গাইড, ওরা সাজেকের নাড়ীনক্ষত্র সব চেনে। পরবর্তী পোষ্টে আরো ছবি শেয়ার করবো ইনশাল্লাহ...

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: সাজেক যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাহা!! বেশ মনোমুগ্ধকর। দারুণ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন তাহলে দুর্গম সাজেকে গিয়ে।

বর্ননার গুনে মনে হল আমি আপনার সঙ্গে ঘুরে এলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

শুভকামনা রইল।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪২

বুলবুল ৩৩৩ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:০৯

শুপ্ত বলেছেন: সাজেক যেন সৃষ্টিকর্তার অপার সৃষ্ঠির নিদর্শন।

৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬

ব্যর্থ সৈনিকের দিনলিপি বলেছেন: ভাই লুসাই ঝর্না রুইলুই পাড়া থেকে বেশী দূরে যে চান্দের গাড়িতে যেতে হয়? হেটে যাওয়া যাবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.