নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুলবুল ইসলাম

বুলবুল ৩৩৩

আমি বাংলাদেশপন্থী।লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশকে অনেক ভালোবাসি। ভালবাসি বই পড়তে,তার চেয়েও বেশি ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে।

বুলবুল ৩৩৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাজেক ও খাগড়াছড়ির খানাপিনা

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১০

আমি ভোজন রসিক না, বেঁচে থাকার জন্য খাই। তবে ভিন্ন ভিন্ন খাবারের টেস্ট নিতে ভালবাসি।কোন একটা ভ্রমণ কাহিনীতে পড়েছিলাম যখন যেখানে যাবেন সেখানকার স্থানীয় খাবার টেষ্ট করবেন। সবসময় বেড়াতে গেলে আমার এই চেষ্টা থেকে। সাজেক ও খাগড়াছড়ির খানাপিনা আমি সহ আমার টিমমেটদের খুবই পছন্দ হয়েছে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে না পেরে লিখতে বসা।

কুমিল্লায় রাত তিনটায় খাওয়াদাওয়া করার ফলে সকালে খাগড়াছড়ি শহরে নেমে নাস্তা না করেই আমরা সাজেকের উদ্দ্যশ্যে রওনা করি। রাস্তায় চান্দের গাড়ি থামিয়ে এক ছড়ি পাহাড়ি কলা ও আখ কিনলাম। খাগড়াছড়ি থেকে অনেক শুকনো খাবার কিনেছিলাম যা সাজেক ঘুরে আবার খাগড়াছড়ি ফেরত এসেছে না খাওয়ার জন্য। পাহাড়ি কলা ও আখ খেতে খুব মজার ছিল।

বেশি মানুষের জন্য সাজেকে রেডি খাবার পাওয়া যায় না তাই যাওয়ার আগেরদিন খাবার অর্ডার করে রেখেছিলাম।লুসাই ঝর্ণা থেকে ক্লান্ত হয়ে রিসোর্টে ফিরে দুপরের খাবার খেয়েছিলাম। ঝুম বৃষ্টির মধ্যে টিনের চালের নিচে বসে খুব তৃপ্তি নিয়ে খেয়েছিলাম। ব্যম্বু চিকেন,ভাত,ডাল,বিভিন্ন পাহাড়ি সব্জী, জুম শাক, জুমের পেঁপের তরকারি, সালাদ, পাহাড়ি কলা ভর্তা, আলু ভর্তা দিয়ে ভরপুর খাওয়া খেলাম।আমার কাছে সবচেয়ে ভাল লেগেছিল পাহাড়ি পেঁপের তরকারি। ওহ আসাধারণ। মেঘের ঘর রিসোর্টের মালিক জয়নাল ভাই নিজেই আমাদের খাবারের তদারকি করলেন। খাবার শেষে মজা করে বললেন এখন তো ব্যাম্বু চিকেন খেলেন রাতে বাশ খাবেন।সত্যিই কচি বাশ আর ডিম দিয়ে একটা সব্জী আমরা রাতে খেয়েছিলাম। দুপুরের খাবার শেষ করে সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলাম। ঢেকুর তোলাকে বিদেশে নাকি কটু চোখেই দেখা হয় কিন্তু আমাদের সংস্কৃতিতে খাবারের পর ঢেকুর তোলা সুস্বাদু খাবার ও পেটপুরে খাওয়ার লক্ষণই প্রকাশ করে।

রাতের খাবার আয়োজন শুরু হলো খোলা আকাশের নিচে চিকেন বারবিকিউ। বৃষ্টির কারণে শেষপর্যন্ত ভিতরেই নিতে হল। পরোটা,চিকেন আর কচি বাশের সাথে ডিম মিক্স করে আসাধারণ এক সব্জী দিয়ে আমরা রাতের খাবার শেষ করলাম। ঘুমের আগে আমাদের রিসোর্টের পাশের এক চাকমা দিদির কফিশপের কফি টেষ্ট করেছিলাম, বেশ ভাল লেগেছে।

ভোরে পৌঁছে গেলাম কংলাক পাড়ায় সেখানে পাহাড়ি কলা, সিদ্ধ ডিম আর চা খেলাম। কংলাক থেকে ফিরে রিসোর্টে সকালের নাস্তা করলাম। খোলা আকাশের নিচে পরোটা ডাল-সব্জী ও ডিম ভাজি খেলাম, আবার কেউ কেউ খিচুড়ি দিয়ে নাস্তা সেরে নিল। নাস্তা খাবার সময় আমাদের শরীরে মেঘ ছুঁয়ে যাচ্ছিল সে এক অন্যরকম অনুভূতি। আসার আগে রিসোর্টের মালিক জয়নাল ভাই তরতাজা পাহাড়ি ফল "সিনাল" দিয়ে বিদায়ী ভোজন করালেন।


সাজেক কে বিদায় জানিয়ে খাগড়াছড়ি আসলাম দুপুর বেলায়।রাস্তায় বিজিবি ক্যাম্পে বন্ধু সেলিম দই খাইয়েছিল। বগুড়ার লোক হয়ে বলছি দইটাও ভাল ছিল। দুপরের খাবার খেলাম "সিস্টেম রেস্টুরেন্ট" এ, এই রেস্টুরেন্ট এ এত ভিড় আর সিরিয়াল কেন তা বুঝতে পারছিলাম না, বুঝতে পারলাম খাবার খাওয়া শুরু করার পর। সিস্টেমের হাঁসের মাংসের টেষ্ট আমি লিখে বুঝাতে পারবো না বুঝতে হলে আপনাকে খেতেই হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের খাবারের স্বাদ আমাকে আগেও মুগ্ধ করেছে এবার যেন চট্টলার খাবারের প্রেমে পরে গেলাম। ডালের মধ্যে কচি বাশ গোল গোল করে কেটে দিয়েছে যা ডালের স্বাদ বাড়িয়েছে বহুগুণ। মুরগির মাংস,লাউ চিংড়ির সব্জী,আলু ভর্তা, সবুজ লাউ শাক আর মাশরুম এর রেসিপি তো আসাধারণ লেগেছে। সারাদিন ঘোরাফেরা শেষ করে হোটেলে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবারের উদ্যেশ্যে বের হলাম। রাতে খেলাম খাগড়াছড়ি শহরের "এফ এন্ড এফ রেস্টুরেন্ট" এ। সাজানো গোছানো সুন্দর পরিবেশ শুরুতেই আমাদের আকৃষ্ট করে নিল। এদের পরিবেশন খুবই ভাল লেগেছে - সবকিছুই সুন্দর নকশা করা মাটির পাত্রে করে পরিবেশন করে।

এই রেস্টুরেন্টেও হাঁসের মাংস খুব টেষ্ট। বাঁশের ডাল, লাল শাক, লইট্টা মাছ, মুরগীর মাংস, বেগুন ভর্তা খেয়েছিলাম সবকিছুই খুবই টেষ্টি। শুটকি ভর্তাও নাকি খুবই টেষ্টি ছিল, শুঁটকি যেহেতু আমি খাই না তাই জোড় দিয়ে বলতে পারছি না। শেষে কফি খেয়ে খাবার পর্ব শেষ করলাম। এবারের ট্যুরের খানাপিনা বেষ্ট ছিল, সাজেকের রং চা ছাড়া সবকিছুই ভাল ছিল।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: বাহ! দারুন। সাজেকে আসলে পরিবেশটাই এমন। আমিও কোথাও বেড়াতে গেলে সেই অঞ্চলের খাওয়া দাওয়া অবশ্যই ট্রাই করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.