নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রহান্তরের বাসিন্দা

গ্রহান্তরের বাসিন্দা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোট ডাকাত লীগের কাছে গণতন্ত্র গুরুত্বহীন

২০ শে মে, ২০১৫ রাত ৩:০৮

শেখ হাসিনার শাসন আমলে (২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত) বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি নির্বাচন কমিশন দলীয় করণের নির্লজ্জ প্রচেষ্টা অব্যাহত থেকেছে। সিটি কর্পরেশনের তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থিত তিনটি প্রার্থীকেই যে কোনোভাবে বিজয়ী করার সকল পদক্ষেপ আওয়ামী লীগ নিয়েছে। যদিও, আমেরিকান রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট তার টুইটারে বলেছেন, ’উইনিং অ্যাট এনি কস্ট, ইজ নো ভিক্টরি অ্যাট অল’ (Winning at any cost, is no victory at all – যেকোনো মূল্যে জেতা, কোনো জয় নয়) – তবুও রূঢ় বাস্তবতা হচ্ছে দেশে ছদ্মবেশি এক দলীয় শাসন দৃঢ়ভাবে কায়েম করার দিকে আওয়ামী লীগ আরেকটা সাফল্য অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী ও শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাজউদ্দীন আহমদ-এর কন্যা শারমিন আহমদ, তাজউদ্দীন আহমদ: পিতা ও নেতা বইয়ে লিখেছেন :
বাকশাল গঠনের মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আব্বু তার চূড়ান্ত মতামত মুজিব কাকুকে জানিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত সচিব আবু সাঈদ চৌধুরীকে সাক্ষী রেখে তিনি মুজিব কাকুকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘আপনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন, কিন্তু আপনাকে আমি অনেকবারই বলেছি আমার দ্বিমতের কথা। আর আজ আমার চূড়ান্ত মতামত দিচ্ছি। আমি আপনার এই একদলীয় শাসনের সঙ্গে একমত নই… বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার হাতে এতই ক্ষমতা দেওয়া আছে যে, সেই ক্ষমতাবলে দেশে একদলীয় ব্যবস্থা বা আর কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আমরা বক্তৃতায় সব সময় বলেছি একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশের কথা, যার ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্র। যে গণতন্ত্রের গুণগান করেছি আমরা সব সময়, আজকে আপনি একটি কলমের খোচায় সেই গণতন্ত্রকে শেষ করে দিয়ে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন- বাই টেকিং দিস স্টেপ ইউ আর ক্লোজিং অল দি ডোরস টু রিমুভ ইউ পিসফুলি ফ্রম ইয়োর পজিশন।’ (অর্থাৎ, এই পদক্ষেপ (এক দলীয় শাসন) নিয়ে, আপনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর সব শান্তিপূর্ণ পথই আপনি বন্ধ করে দিচ্ছেন)।
সিটি কর্পরেশন নির্বাচনের পর যে দুর্ভাবনাটি দেশের মানুষকে গ্রাস করেছে, সেটি হলো, শেখ মুজিবুর রহমানকে সদুপদেশ ও সতর্কবাণী দেওয়ার মতো ব্যক্তি তাজউদ্দীন আহমদ তার পাশে ছিলেন। কিন্তু এখন সে রকম কোনো বাস্তবমুখী, দূরদর্শী ও সাহসী ব্যক্তিকে শেখ হাসিনার পাশে দেখা যাচ্ছে না।
২৬ এপ্রিল ২০১৫তে লন্ডনে প্রভাবশালী দৈনিক ফিনানশিয়াল টাইমস “বাংলাদেশ আর্মি ফানডেড টু ফরগেট ইটস রোল অ্যাজ নিউট্রাল রেফারি” (Bangladesh army funded to forget its role as neutral referee বা নিরপেক্ষ ভূমিকা ভুলে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ আর্মিকে টাকা দেওয়া হয়েছে) শীর্ষক সুদীর্ঘ রিপোর্টে (গুগল সার্চ – Financial Times, London -এ পাওয়া যাবে) একই উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কি বিচিত্র বৈপরীত্য! একদিকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশি ভোটারদের অভিযুক্ত করছেন তারা স্মৃতিবিভ্রমে ভুগছে – অন্যদিকে ফিনানশিয়াল টাইমস-এর মতে বাংলাদেশি সেনাদের পেছনে টাকা খরচ করে তাদের স্মৃতিবিভ্রম ঘটানো হচ্ছে!
বোধগম্য কারণে এই রিপোর্ট প্রকাশে বাংলাদেশের মিডিয়া সাহসী হয়নি। এই রিপোর্টের মূল বাণী হচ্ছে, কৌশলের খেলায় আপাতত শেখ হাসিনার বিজয় হলেও, গণতান্ত্রিকভাবে সরকার পরিবর্তনের সব পথ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে, এই বিজয় হতে পারে সাময়িক মাত্র।
তাজউদ্দীন আহমদের সুচিন্তিত মতামতকে শেখ মুজিবুর রহমান উপেক্ষা করেছিলেন।তার পরিণতি হয়েছিল ভয়াবহ কিন্তু অবধারিত।মর্মান্তিক কিন্তু অনিবার্য।শেখ হাসিনা ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দেশি ও বিদেশি গণতান্ত্রিক সৎউপদেশের বাইরে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তাহলে পরিণতি কি হতে পারে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.