নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সম্পদহীনদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ

চাঁদগাজী

শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।

চাঁদগাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনের আকাশের ধ্রূবতারারা

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৩৬



এ'কাহিনীটি আমদের প্রতিবেশী, এক দরিদ্র পরিবারের একটি ছোট মেয়ে, সিমোনের জীবনের একটি ছোট অংশকে নিয়ে। সিমোন আমার গ্রাম্য সম্পর্কের বড় ভাই, বদি মিয়ার ছোট মেয়ে: ৩ বোনের মাঝে সে তৃতীয়; বড় বোনের বিয়ে হয়েছে, মেঝো বোনের জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসছে, সিমোনের বয়স হয়তো ১০ বছরের মতো; সে বেশ ছোটকাল থেকে পরিবারের জ্বালানী যোগাড় করতো: পাতা কুড়াচ্ছে, গাছের শুকনো ডাল নিয়ে আসছে, শুকনো গোবর সংগ্রহ করছে, ধানের নারা কাটছে; আমি নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় সিমোন ক্রমেই আমার সামনে আসতে লাগলো; সে সব কিছু করতো খুব ভোরে; আর, আমিও ছিলাম ভোরের মানুষ: আমি কাছারীতে থাকি; খুব ভোরে উঠে পড়ালেখা, তারপর দরকার মতো চাষবাস, গরু, ছাগলগুলোর খোঁজ খবর নেয়া, ভোরে পুকুর থেকে মাছ ধরা; ৯টার পর থেকে স্কুলের যাওয়ার প্রস্তুতি।

নবম শ্রেণীতে থাকাকালে আমার উপর একটি বাড়তি কাজের দাযিত্ব পড়েছিলো, আমাদের সাদা গাভীর দুধ দোহানো; নামে সাদা হলেও, গাভীটি ছিল আসলে ধুসর; উহকে আমি কিনেছিলাম; এটি গাভী হলেও উহার মনমেজাজ ছিলো ক্ষিপ্ত যাঁড়ের মতো, আকারে বেশ লম্বা, শিংগুলো যাঁড়ের মতো; মানুষজন আশপাশ দিয়ে হাঁটতে পারতো না, সে আক্রমণ করার চেষ্টা করতো; আমাদের বুড়োমিয়া উহার দুধ দোহন করা তো দুরের কথা, উহার আশপাশ দিয়েও যেতেন না। দুধ দোহনের সময় বাচ্চাটা ধরার জন্য কাউকে পাওয়া যেতো না, আমাকে কোনভাবে একাই ম্যানেজ করতে হতো। এক ভোরে, গাভী ও বাচ্চা মিলে আমাকে যখন নাকাল করছিলো, সিমোন নিজের থেকে ভলনটিয়ার হয়ে আমাকে সাহায্য করতে এলো, সে কাছে এসে বললো,
-কাকু, বাচ্চাটা আমি ধরি?
-গাভী তোকে গুতো দিবে, এই গরুটি ভয়ংকর।
সে বাচ্চাটাকে ধরে, গাভীর সামনে নাগালের মাঝেই দাঁড়ালো; গাভী ২/৩ বার ফোঁসফাঁস করে বাচ্চাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো, সিমোনকে মেনে নিলো। এরপর থেকে প্রতি ভোরে সিমোন নিজে এসেই উপস্হিত। আমি সিমোনকে দুধ দিতে চাইলাম; সে নয়নি, সে শুধুমাত্র ছাগলের দুধ খায়। এরপর, সিমোন আমার মাছ ধরায় যোগ দিলো: বর্ষায় ও শীতে, সকালে পুকুরে মাছ ভাসতো, আমি জাল নিয়ে ব্যস্ত থাকলে, সিমোন মাছগুলো কুড়িয়ে নিতো, মাছের ঢুলায় রাখতো। মাছ দিলে সে মাঝেমাঝে নিতো।

সেবার শীতের এক খুব ভোরে, আমি কাছারীতে বসে পড়ছিলাম ও চা খাচ্ছিলাম; জানালা দিয়ে মাথা গলিয়ে দিয়ে সিমোন প্রশ্ন করলো,
-কাকু, তুমি কি খাচ্ছ, দুধ নাকি চা?
-চা।
-চা খেতে কেমন?
-তুই কোনদিন চা খাসনি?
-না।
-ভেতরে আয়, খেয়ে দেখ।
আসলে, চা সামান্যই ছিলো তলানীতে; সে সেইটুকু খেয়ে তৃপ্তি প্রকাশ করলো। মা আমাকে প্রতিদিন চা দিতেন না, বেশীরভাগ সময়ে দুধ দিতেন। আমি সিমোনকে ২ আনা পয়সা দিয়ে বললাম,
-মাদল কাকার দোকানে গিয়ে, ১ কাপ চা ও ১টা কুকি খেয়ে নিস।

পরদিন দেখা হওয়ার পর, তাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
-মাদল কাকার চা কেমন লাগলো?
-আমি চা দোকানে যাইনি!
-কেন?
-তোমার মাদল কাকা জানতে চাইতে পারে, আমি পয়সা কোথায় পেলাম?
-তুই বলতে পারতি যে, আমি দিয়েছি!
-সেই কারণেই যাইনি!
-সমস্যা কোথায়?
-সমস্যা আছে, সেটা তুমি বুঝবে না! পয়সাগুলো আমি মেলায় যাবার জন্য রেখে দিয়েছি।
-ঠিক আছে, আমার সাথে খালের ওপারের গ্রামে চা-দোকানে যাবি? ওখানে তোকে কেহ চিনবে না!
-না, যাবো না!
-সেখানে যেতে সমস্যা কি?
-তুমি পাশের সব গ্রামে যাও, তোমাকে অনেকে চেনার কথা!
-হয়তো চিনতে পারে, তুই সাথে গেলে তাতে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়!
-অসুবিধা আছে!
-কি অসুবিধা?
-আমার কাপড়ই একটা অসুবিধা।

মন্তব্য ৬৭ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৬৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৩৫

আখেনাটেন বলেছেন: সিমোনের এখন কি অবস্থা?

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোন নেই; আমি বিদেশে ব্যাচেলর ডিগ্রিতে পড়তে গিয়েছিলাম; টাকা পয়সার অভাবে ৪ বছর বাড়ী আসিনি; পড়ালেখা শেষ করে একবারেরই দেশে ফিরলাম; ঘরে ফিরে, ১ম ১০ মিনিটে আমি জানলাম যে, সিমোন জীবিত নেই; ওর জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসছিলো; সেই সময়ে, সে টাইপয়েডে মৃত্যু বরণ করে।

২| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৩৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: কাপড়ই একটি অসুবিধা , অসাধারণ গল্প ।
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল ।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


এটাই ছিল আমাদের জীবনের অংশ

৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪১

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
তৎকালিন গ্রামের অনেকটা .. কিছু তুলে ধরলেন।
ভাল লাগলো।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমরা ৫৫ পর, খুব সামান্যই বদলেছি মাত্র, ধীর জাতি, স্হির জাতি

৪| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪৫

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আপনার এধরনের লেখাগুলোর আলাদা একটা মাধুর্য আছে !

আখেনাটেনের মতো আমারও একই প্রশ্ন।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোনের যৌবনে, বিয়ের আগে, টাইপয়েডে মৃত্যু হয়।

৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪৬

আনমোনা বলেছেন: কেন জানি Fearless Girl এর কথা মনে পরলো। সিমোনকে শুভেচ্ছা।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোন আমার মাঝে জীবিত আছে!

৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৫৮

কালসৃষ্টি বলেছেন: অসাধারণ লেখাটি,,শুভকামনা রইলো।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার জন্যও সুভেচ্ছা রলো।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০৭

মৃন্ময়ী শবনম বলেছেন: -আমার কাপড়ই একটা অসুবিধা।
লেখাটি এমন জায়গাতে এসে থামবে তা আশা করছিলাম, বড় মাপের লেখকের লেখায় এই এক রহস্য। ধন্যবাদ নেবেন আর সিমোনের জন্য রইলো ভালোবাসা।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার লেখার হাত নেই আসলে; আমি আপনাদের সাথে আছি, এটাই আমার আনন্দ

৮| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:১২

বলেছেন: আমার কাপড়ই একটি অসুবিধা -- যার মাধ্যমে গ্রামীণ জনগনের কথা উঠে এসেছে --

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাংলা অনে দু:খকে বুকে ধারণ করে রেখেছে।

৯| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:২১

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: সুন্দর।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


খুশী হলাম শুনে

১০| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৩৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: -আমার কাপড়ই একটা অসুবিধা।
চাঁদগাজী ভাই, সমস্যা হচ্ছে আমরা একসময় যথেষ্ট সাবলম্বি হই কিন্তু দুঃখ লাগে সিমোনদের জন্য কি তেমন কিছু করতে পেরেছি?
উত্তর একটাই আসে - না পারিনি। আপনার লেখা পড়ে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমাদের জীবনটা পুর্ণাংগ নয়।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৩৯

রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: সিমোনের শেষ কথাটা মনে দাগ কাটলো! অসাধারণ একটি গল্প।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলা মা অনেক কষ্টকে হৃদয়ে ধরে রেখেছেন।

১২| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৪৭

ক্লে ডল বলেছেন: কিছু কিছু ধ্রুবতারা আছে মনের আকাশে আজীবন জ্বলজ্বল করে যায়।

উদারচিত্ত সাধারণ এক বালক, একটি কোমলমতি সরল বালিকা, তার দারিদ্র্যতা, তৎকালীন গ্রামীণ ছবি.... অনেক দৃশ্যই সামনে এসে গেল।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার ভাবনার পরিসরটা দিগন্ত থেকেও প্রসারিত।

১৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৪৮

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চমৎকার গল্পটি পড়ে মনে হলো আপনি একজন শক্তিমান লেখক। যে চিত্রটি ফুটিয়েছেন এমন দিনও ছিল? সেইদিনকার কথা হয়তো আমাদের প্রজন্ম জানবেই না। হয়তো তার চেয়েও আরো করুণ পরিনতি দেখতে হবে। মানুষ চেষ্টা করছে দিন বদলের। সরকার হয়তো তার অন্তরায়।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমাদের সরকার সম্পর্কে কোন এক ইউরোপিয়ান লেখক শত বছর আগে লিখে গেছেন, " দৈত্যের বাগানে শিশুরা"।

১৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৫৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভালো লিখেছেন ।আপনার গল্প লেখার হাত ভালো।। :) সিমোন বেশ ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


জীবনের এই সময়ে এসে দেখছি, সিমোন অনেক বড় চরিত্র

১৫| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:০৬

ঢাকার লোক বলেছেন: " মনের আকাশের দ্রুবতারা" নামটা দারুন দিয়েছেন ! লেখায় প্রানভরে ঢেলে দেয়া দরদ সে তারাকে করেছে উজ্জ্বলতর !!

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:


এসব শুনলে, অশেষে একদিন আমার চোখের জল ঝরবে

১৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:০৮

আরোগ্য বলেছেন: গল্পে ভালোলাগা থাকলেও সিমোনের জন্য করুনাই থাকলো।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোন জীবনকে আলিংগন করার সময় পায়নি, সে কাহার কাহার মনে আছে, আমি জানি না; তবে, সিমোন আমার মনের মাঝে এখনো জীবিত।

১৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৪

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: আচ্ছা গ্রাম আপনাকে এখনো টানে না? যেতে ইচ্ছে করেনা?

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৫:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি যখন বাংলাদেশে অবস্হান করি, গ্রামেই থাকি; কোন শহরে আমার কোন কাজ নেই!

১৮| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৪:২৫

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:

সিমোনের মত অনেক সিমোন-ই আমাদের আশপাশে বড় হয়ে উঠে কিন্তু আবার নিভে যায় টাইফোয়েট বা অন্য কোন সাধারণ/অসাধারণ রুগে। এমন সিমোনরা বেঁচে থাকুক,আমাদের চতুর্থপাশ আলোকিত রাখুক। আর আমরাও যত্নশীল হয়ে উঠি দরিদ্র, অসহায় ও অনাতদের অধিকার আদায়ে।


১৩ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৫:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



এখন অবস্হা সামান্য ভালোর দিকে গেছে, কিন্তু টোকাইদের অবস্হা সিমোন তেকে হাজার গুণে খারাপ।

১৯| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:১৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এখনো অনেক মানুষ আছে যাদের পরার জন্য পরিষ্কার কাপড় নেই।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


দরিদ্র বিধবাদের ভয়ংকর অবস্হা; বেশীরভাগ দরিদ্র সন্তানেরা মায়ের খবর রাখে না।

২০| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: সিমোন নামটাও বেশ সুন্দর।
আপনার এরকম পোষ্ট গুলো বেশ ভালো লাগে।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোনের চরিত্র, শারীরিক গঠন, সৌন্দয্যের সাথে নামটি মিশেছিলো!

২১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ধারাবাহিকভাবে আপনার অতীত দিনের ঘটনা গুলো নিয়মিত লিখুন।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ঠিক আছে, লিখবো!

২২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:১৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন।

জীবনের গভির গহিন সত্যকে ধ্রুবতারা নাম দিয়ে সম্মানীত করা যথার্থই বটে।
আহা টাইফয়েডে তার মৃত্যুর কথা জেনে ব্যাথিত হলাম।

পোষ্টে +++

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


অন্য কারো মৃত্যু আমাকে এতো ব্যথিত করেনি; আমার মনে একটা ধারণা, আমি সেই সময় দেশে থাকলে, সিমোনের মৃত্যু এভাবে হতো না; জ্বরের শুরুতেই ওর চিকিৎসা করানো সম্ভব হতো; সিমোন তার জীবনটাকে অনুভব করার সুযোগ পায়নি, এ ব্যথাটা আমার মনে রয়ে গেছে।

২৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৪০

নীলপরি বলেছেন: খুবই আন্তরিক লেখা । এরকম ঘটনা আমাদের মতো দেশে কতো আছে , আমরা হয়তো দেখেও দেখি না । আপনি তাও কিছু করেছেন । আমরা অনেকে তো সেটুকু করার সুযোগও নষ্ট করি । ব্যর্থ লাগে ।

শুভকামনা

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি বিদেশে পড়তে গিয়ে অনেক কিছু হারায়েছি; আমি চাষী হয়ে গ্রামে থেকে গেলে, অনেক শান্তি পেতাম জীবনে।

২৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৩৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এক সিমোন চলে গিয়েছে, কিন্তু হাজারো সিমোন দেশের আনাচে-কানাচে এখনও আছে। কোনও সময় সিমোনদের জন্য কিছু করার পরিকল্পনা করলে জানাবেন। পাশে থাকার আপ্রান চেষ্টা করবো।

আপনার লেখায় কষ্ট আর ভালোলাগা, দু'টোই হলো। মিশ্র অনুভূতি!!

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি চেষ্টা করছি, সময় হলে জানাবো।

২৫| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:১২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: another masterpiece...

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি আমার পোষ্টের বেলায় একটু ইমোশানেল হয়ে গেছেন?

২৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০

হাসান রাজু বলেছেন: ছোট বাচ্চারা রাস্তায় ভিক্ষে করে। মন চায় কিছু দেই বা অনেক কিছু দিয়ে দেই। কিন্তু একটা টাকাও দেই না। মাথায় শুধু কাজ করে একে কিছু দিলে সে ভিক্ষা করাটাকে আয়ের মাধ্যম হিসেবে ধরে নিবে। উৎসাহিত হবে ভিক্ষাবৃত্তিতে। এরচেয়েও বড় কথা, যা বেশি ভয় পাই। সেটা হল, ওরা ভিক্ষা করে না ।ওদের দিয়ে ভিক্ষা করানো হয়। একটা র‍্যাকেট কাজ করে পিছন থেকে। আয় হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তি যত বেগবান হবে সেই র‍্যাকেট তত শক্তিশালী হবে। কোলে নবজাত শিশু নিয়ে তপ্ত দুপুরে ভিক্ষা করে কিছু মা। আসলে নাকি এই শিশুদের ভাড়ায় আনা হয়। কয়দিন পরপর যে শুনতে পাই হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি হচ্ছে। এর কারন নাকি এই রকম ভিক্ষা বৃত্তি ।
অন্যদের মাঝে মাঝে বুঝাই ভিক্ষা দিও না। পারলে যে টাকাটা ভিক্ষা দিবা সেটা জমিয়ে বছর শেষে কোন গরীবকে সাহায্য করো। সবাইকে বলি না কারন কে জানে সে যাকে ভিক্ষা দিবে সে হয়ত সত্যি ভিক্ষুক।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


এই ভয়ংকর জটিল অর্তনীতির মোড় ঘুরানো নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব নয়; কারণ, শেখ হাসিনা, উনার সরকারের লোকেরা, উনার প্রশাসন ও ব্যুরোক্রেটরা মানুষের কথা শুনে না, মানুষের কষ্ট অনুভব করে না; এই যাঁতাকলে পড়ে, ১৯৭২ সাল থেকে আজ অবধি ৪/৫ কোটী সিমোন জীবন থেকে বন্চিত হয়েছে, ভিক্ষা করে নিজকে অপমাণিত করেছে।

২৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫১

আহা রুবন বলেছেন: সহজ-সরল কিন্তু হৃদয়ে দাগ কাটার মত গল্প। জীবনের টুকরো টুকরো বিষয়ের গল্পগুলো আপনি বেশ লেখন। আরও লিখবেন। এগুলো আমাদের সেই সময়টা বুঝতে সহায়তা করবে। সময়ের পরিবর্তনে হয়ত সিমোনদের এখন একাধিক জামা আছে কিন্তু সিমোনরা আমাদের চারপাশেই আছে। সিমোনের জন্য মনটা খারাপ হয়ে গেল।

১৪ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



সিমোনরা এখন ঝি'তে প্রমোশন পেয়েছে; যাদের অতীত ছিলো না, ভবিষ্যতও নেই; আছে আন-সিকিউরড বর্তমান।

২৮| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:২৪

কানিজ রিনা বলেছেন: অসাধারন সীমনের ছোট্ট ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে
তুলেছেন। মনে পড়ল রসুল পুরের আসমানী।
এখন বলতে পারব কি ফুটপাত স্টেশনের
ফুল বিক্রেতা সীমন সুমনেরা কয়টা জামা
পড়ে? না জানিনা।

১৪ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


অনেকদিন থেকে আপনার সাপোর্ট পাচ্ছিলাম না; আমি কি ঠিক পথে ফিরে এসেছি?

২৯| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:১১

কালো যাদুকর বলেছেন: পরলাম এইমাত্র। তারমানে সীমোন আপনার মনের গভীরে বাসা বেধে আছে। আপনার লেখাতেই বোঝা যাচ্ছে। এরকম লেখা আরো লিখুন। আপনাকে অভিনন্দন।

আচ্ছা ১০ বছরে একটা বাচ্চা মেয়ে কি কাকুর সাথে গ্রামের চায়ের দোকানে চা খেতে পারে আজকাল? দিন কি বদলেছে?

১৪ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


২০১৭ সালে, ভাগনেয়ীর ২ মেয়েকে (১০ম ও ৭ম শ্রেনী ) নিয়ে অনেকবার চা খেয়েছি গ্রামের চা দোকানে; ওদের মা ঘরে ওদেরকে চা তেমন দিতে চাহে না; ওরা আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হতো চা খাবার জন্য।

১৪ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


সিমোনকে ওর ২ বোন কতটুকু স্মরণ করে, আমি জানি না; তবে, সিমোন প্রায় প্রতিদিনই আমার ভাবনায় আসে। শুধু সিমোন একা নয়, আমার কৈশোরে যারা আমার কাছে ছিলো, এ রকম অনেক কিশোরী আমার ভুবন জুড়ে আছে।

৩০| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৪৭

বঙ্গদুলাল বলেছেন: আপনি সত্যিকার একজন গ্রামীণ যুবক ছিলেন।জীবনটাকে ভালভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন।অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে আমাদের শৈশব কৈশোরও সেইম ওয়েতে কেটেছে।আরো লিখুন।আপনারা আমাদের মাঝে যতদিন বেঁচে আছেন,এটাই আমাদের সেরা সময়।

১৭ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি নিজকে অনুধাবন করতে পেরেছেন, আমি এজন্য আনন্দিত!

৩১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: এটি একটি অত্যন্ত চমৎকার ছোটগল্প, যার কাহিনী পুরোপুরি বা অনেকটা সত্য। একজন প্রতিষ্ঠিত কথাশিল্পীর মতই আপনি গল্পটি বেশ স্বাচ্ছন্দে লিখে গেছেন বলে মনে হলো। গল্পটি ব্লগের পাঠক কর্তৃক সমাদৃতও হয়েছে। অন্য কোথাও প্রকাশিত হলে সেখানেও এটা পাঠক কর্তৃক সমাদৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
গল্পের শেষ লাইনটিতে একজন বিশ্বমানের লেখকের মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন। গল্পে প্লাস ++
“শুধু সিমোন একা নয়, আমার কৈশোরে যারা আমার কাছে ছিলো, এ রকম অনেক কিশোরী আমার ভুবন জুড়ে আছে" – এমন সব কিশোরীদের নিয়েই একটা একটা করে গল্প লেখা শুরু করে দেন। রাজনীতি নিয়ে লিখে আর কী করবেন? ওটা দেশে যারা থাকে, তাদের জন্য ছেড়ে দেন। এ সমাজ এত সহজে বদলাবে না।

০২ রা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি বক্তব্য আমার জন্য বেশ বড় ধরণের ভাবনার বিষয়।

৩২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি নবম-দশম শ্রেণীতে থাকাকালে স্কুলের পাঠ্য বই এ একটা গল্প পড়েছিলাম, নাম একই সমতলে। কার লেখা সেটা মনে নেই, হয়তো তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় এর হতে পারে। আপনার সাদা গাভী দোহানোর কথা পড়ে সে গল্পটার কথা মনে পড়ে গেল।
সেই গল্পে আপনার সিমোন এর মতই এক কিশোরী, তার বাবা যখন গাভী দোহাতো, তখন বাছুরটাকে সামলে রাখতো। বাছুরটি গাভীর ওলানে মুখ দিতে চাইলে সে টেনে তাকে সরিয়ে দিত।
অনেক দিনের পরের ঘটনা। এক গৃহস্থ বাড়ীর বাহিরে একটি গাভী দোহানো হচ্ছিল। একদিন এক শীতের সকালে সেই বাড়ীর আঙিনায় বসে এক নব্যমাতা রোদ পোহাচ্ছিলেন আর তার সদ্য প্রসূত নবজাতককে স্তন্যদান করছিলেন। হঠাৎ বাহিরে হই চই শুনে তিনি বের হয়ে দেখেন, দোহানো অবস্থায় এক গাভী লাথি মেরে দুধের পাত্র ফেলে দিয়েছে আর তার বাছুরটিকে এক কিশোরী অনেক কষ্টে আটকে রেখেছে। তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন, 'এই ছেমরি, বাছুর ছাইড়া দে। গাই এর দুধ তোরার লাইগা না, বাছুরের'!
তিনিই ছিলেন সেদিনকার সেই কিশোরী, যিনি বাছুরকে টেনে ধরে রাখতেন। তার নাম ছিল জৈগুন

০২ রা আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



অদ্ভুত; স্কুলে থাকতেও আমার চোখের সমস্যা ছিলো কিছুটা, আমি সিলেবাসের বাইরের কিছু পড়ার চেষ্টা করতাম না; এই গল্পটি পড়া হয়নি

৩৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৫৩

মিরোরডডল বলেছেন: খুবই কষ্ট পেলাম লেখাটা পড়ে । খুব ভালো লাগছিলো পড়তে কিন্তু শেষটা যে এতটা বেদনাদায়ক হবে বুঝতে পারিনি ।
আসলে আমাদের জীবনে কিছু প্রিয় মানুষ আসে আবার চলেও যায় । তাদের কথা ভাবতে যতটা ভালো লাগে , তারচেয়েও বেশী কষ্ট লাগে । মনে হয় আর একটা বার যদি ফিরে পেতাম !!!

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


গরীব দেশে, জীবনের কষ্টকর দিকটা হলো, আমরা অনেক দু:খের সাক্ষী হয়ে আছি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.